Ajker Patrika

হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশকে জবাব দেওয়া হয়নি, লোকসভাকে জানাল সরকার

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের পরও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারত এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সাড়া দেয়নি। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮-এর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল বুধবার কেরালার কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার (মার্কসবাদী) সাংসদ জন ব্রিটাসের প্রশ্নের জবাবে কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে সংঘটিত অপরাধের জন্য বাংলাদেশর অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকারকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব দেওয়া হয়নি।’

উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে তাঁর নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনের পতন ঘটে। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্যমতে, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সংঘর্ষ ও দমনপীড়নে ৮০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

প্রথমে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলেও পরবর্তী সময়ে এটি শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ থেকে হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এরপর একাধিক বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলেও এ বিষয়টি আর তেমন আলোচনায় আসেনি। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের এই অনুরোধ মেনে নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যদিও দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে। কিন্তু রাজনৈতিক অপরাধের এ প্রত্যর্পণ চুক্তি এড়ানোর সুযোগ আছে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার মহেশ সাচদেব ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যর্পণ অনুরোধের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতের প্রত্যর্পণ অনুরোধ যেভাবে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ বিভিন্ন শর্তে প্রত্যাখ্যান করেছিল, হাসিনাও তেমনি বলতে পারেন—তিনি তাঁর দেশের সরকারকে বিশ্বাস করেন না এবং তাঁর প্রতি অবিচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ সাচদেব আরও বলেন, ‘প্রত্যর্পণ চুক্তি রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যর্পণের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়।’

ওয়াশিংটন ডিসির উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান এ বিষয়ে বলেন, ‘ভারত কখনোই বাংলাদেশের এই অনুরোধ মেনে নেবে না। হাসিনা ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু। দিল্লি তাঁকে ফিরিয়ে দেবে না। তারা সম্ভবত প্রত্যর্পণ চুক্তির কোনো একটি ধারা প্রয়োগ করবে, যাতে তাঁকে ঢাকায় ফিরিয়ে দেওয়া না যায়।’

ভারতের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য দুই দেশের সুসম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

একই সঙ্গে ভৌগোলিকভাবে ভারত এমন একটি অঞ্চলে রয়েছে, যেখানে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সীমান্ত পরিস্থিতি সব সময় উত্তেজনাপূর্ণ থাকে। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক দেশটির জন্য উদ্বেগের। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনে প্রক্রিয়া মানা হয়নি: ইউনেসকো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত