Ajker Patrika

নির্বাচনের আগে চা-শ্রমিকদের জমির মালিকানা দিতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা প্রতিনিধি  
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩২
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

দুর্গাপূজার আগে উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর শিলিগুড়ি পৌঁছানোর কথা রয়েছে। আগামীকাল বুধবার ডুয়ার্সে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী চা-শ্রমিকদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেবেন।

উল্লেখ্য, জমির পাট্টা হলো একটি সরকারি নথি বা দলিল, যা নির্দিষ্ট শর্তে কোনো ব্যক্তিকে জমি চাষ বা ব্যবহারের জন্য প্রদান করা হয় এবং এটি জমির মালিকানা বা স্বত্বের প্রমাণপত্র হিসেবে কাজ করে।

জানা গেছে, ডুয়ার্সের মাটিয়ালি ব্লকের আটজন শ্রমিককে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি মঞ্চ থেকে পাট্টা প্রদান করবেন। এ ছাড়া বাকি শ্রমিকদেরও ওই দিনই জমির পাট্টা হস্তান্তর করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। তৃণমূল একে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করছে। মাটিয়ালি ব্লকের তৃণমূল সভানেত্রী স্নোমিতা কালান্দি বলেন, ‘শ্রমিকদের জমির অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা শ্রমিক সমাজকে আত্মবিশ্বাসী করবে।’

শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাও বলছেন, পাট্টা হাতে এলে শ্রমিক পরিবারগুলো সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে আরও স্বচ্ছন্দ হবে।

উচ্ছ্বসিত শ্রমিকেরাও। স্থানীয় শ্রমিক লক্ষ্মী মুন্ডা বলেন, ‘অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল নিজের জমিতে ঘর তৈরি করার। মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে সেই কাগজ পেলে আমরা আর ভাসমান থাকব না।’ অঞ্জলি সাবাররা নামের আরও এক শ্রমিক বলেন, ‘এত বছর চা-বাগানে শ্রম দিয়ে এসেছি, কিন্তু মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। এবার সেটি হবে।’

তবে, বিজেপি একে কেবলই একটি স্টান্ট বলে আখ্যা দিচ্ছে। তাদের ভাষ্য—সামনে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন। উত্তরবঙ্গ বরাবরই রাজনৈতিক দিক থেকে সংবেদনশীল। এই অঞ্চলে বিজেপির অবস্থান শক্ত। ফলে জমির পাট্টা দিয়ে শ্রমিকদের কাছে জনপ্রিয় হতে চাইছে তৃণমূল।

বিরোধীরা বলছে, ‘মুখ্যমন্ত্রী প্রতি নির্বাচনেই চা-বাগানের শ্রমিকদের নানা প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বাস্তবে কতটা পূরণ হয়?’ একই কথা বলছে কংগ্রেসও। তাদের অভিযোগ, জমির পাট্টা বিতরণ আসলে একধরনের নির্বাচনী প্রচার। শ্রমিক ভোটারদের টানতেই এই পদক্ষেপ নিলেন মমতা।

বিশ্লেষকদের মতে, জমির পাট্টা দেওয়া নিঃসন্দেহে শ্রমিকদের জীবনে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। কিন্তু এই পদক্ষেপের রাজনৈতিক তাৎপর্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ সময়টা নির্বাচনের আগে। গত কয়েক মাস ধরেই মুখ্যমন্ত্রী জেলার পর জেলায় প্রশাসনিক সভা করছেন। সব জায়গায়ই বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবা বিলি করে জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালো করেই জানেন, উত্তরবঙ্গের প্রতিটি আসন আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ। আর এই অঞ্চলের শ্রমিক সমাজ সংখ্যায় অনেক বেশি। এখানে আসন পেতে হলে ফলে তাঁদের আস্থা অর্জন ছাড়া উপায় নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত