Ajker Patrika

মুম্বাইয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ মুসলিমদের জন্য গড়ে উঠছে হালাল টাউনশিপ, হিন্দুত্ববাদীরা ক্ষুব্ধ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। ছবি: সংগৃহীত
মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। ছবি: সংগৃহীত

মুম্বাইয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্প ঘিরে ভারতে নতুন করে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক বিতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে ভাইরাল হয় ‘সুকুন এম্পায়ার হালাল টাউনশিপ’ নামের ওই আবাসন প্রকল্পের বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, পেন্টহাউস, ইনফিনিটি পুলসহ নানা বিলাসবহুল সুবিধা রয়েছে ওই আবাসন প্রকল্পে।

ওই বিজ্ঞাপনে হিজাব পরিহিত এক নারী ‘অথেনটিক কমিউনিটি লিভিং’, ‘হালাল পরিবেশ’, ‘শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ’, ‘একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রতিবেশী’—ইত্যাদি সংলাপ ব্যবহার করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বর্ণনার সঙ্গে ভিজ্যুয়ালে দেখানো হয় টুপি পরা এক ব্যক্তি কোরআন পড়ছেন, ‘প্রার্থনার জায়গা’র কথা যখন উল্লেখ করা হয় তখন গম্বুজযুক্ত একটি স্থাপনার ভিজ্যুয়াল দেখানো হয়—মূলত সেটিকে মসজিদ বোঝানো হয়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই হিন্দুদের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।

বিশেষ করে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রবল ক্ষোভের কারণ হয়েছে এই বিজ্ঞাপন। তাদের ভাষ্য—এই প্রকল্পের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম বিভেদ উসকে দেওয়া হচ্ছে। সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটিকে ভারতের সংহতি বিনষ্টের একটি ‘গোপন ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করছে তারা। তারা বলছে, ভারতের আইন ও রীতির বাইরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আলাদা করে ‘শরিয়াহ ভিত্তিক সমান্তরাল ব্যবস্থা’ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।

ব্যাপারটা এখানেই থামেনি। এই ইস্যুতে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন প্রিয়াংক কনুনগো ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিসকে বলেছেন, ‘এই প্রকল্প “দেশের মধ্যে দেশ” তত্ত্বের বাস্তবায়ন। আর এই বিজ্ঞাপন ইঙ্গিত দেয় যে মুসলিমরা অসহিষ্ণু। আজ তারা আলাদা টাউনশিপ চাচ্ছে, কাল মুসলিম চিকিৎসক চাইবে, এরপর মুসলিম পুলিশ চাইবে।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের শহরাঞ্চলে মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যকে নতুন করে সামনে এনেছে এই প্রকল্প। আর এই বৈষম্যের কারণেই শহরগুলোতে গেটো ধরনের কমিউনিটির চাহিদা বেড়েছে। শুধু নিরাপদ আবাসন নয়, ধর্ম চর্চার স্বাধীনতার জন্যও এই ধরনের প্রকল্পগুলোর চাহিদা বেড়েছে।

সুকুন এম্পায়ার প্রকল্পটি এমন সময়ে সামনে এসেছে, যখন ভারতে মুসলিমদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন ক্রমশ বাধার মুখে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, পার্ক বা অন্যান্য জায়গায় নামাজ পড়াকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন না অনেক হিন্দু। এমন ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপও দেখা গেছে।

২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর দেশটি ধর্মীয়ভাবে আরও বিভক্ত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

কিন্তু এরপরও এই ‘হালাল টাউনশিপ’গুলোকে সমর্থন করেন না অনেক মুসলিমও। তাঁদের আশঙ্কা, এতে ইসলামি রক্ষণশীলদের প্রভাব বাড়বে, ধর্মের কঠোর রূপ চাপানো হবে এবং ভারতের বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য নিষিদ্ধ করলেও, বাস্তবে দেশে আবাসনের ক্ষেত্রে বৈষম্য ব্যাপকভাবে দেখা যায়। শুধু ধর্ম নয়, বরং বর্ণ, বৈবাহিক অবস্থা, লিঙ্গ পরিচয়, এমনকি খাদ্যাভ্যাসের ভিত্তিতেও মানুষকে আবাসিক কমপ্লেক্সে অবাঞ্ছিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, সব শাকাহারী (নিরামিষাশী) কমপ্লেক্সে আমিষাশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

২০২১ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দিল্লি ও মুম্বাইতে সাধারণ আবাসিক এলাকায় মুসলিমরা নিজেদের অবাঞ্ছিত মনে করছেন। সেখানে বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। তিন বছর ধরে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ করে এমন পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের এই গবেষণা প্রতিবেদনে।

গবেষণা প্রতিবেদনের সহ-লেখক ড. এম. মোহসিন আলম ভাট এবং আসাফ আলি লোন বলেন, ‘অনেক মুসলিম যাঁরা মুসলিম সংখ্যালঘু এলাকায় বাসা ভাড়া নেন, তাঁরা মূলত আগে অন্য জায়গায় বাড়িওয়ালাদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছেন এবং পরবর্তীতে আরও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় ওই সংখ্যালঘু এলাকায় গিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।’

দিল্লি ও মুম্বাইয়ে ৩৪০ জনের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট, বাড়িওয়ালা ও মুসলিম ভাড়াটিয়াদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, প্রধানত খাদ্যাভ্যাস এবং ইসলামোফোবিয়ার (ইসলামভীতি) কারণে মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া দিতে চান না হিন্দুরা। বিশেষ করে হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলোতে মাসের পর মাস চেষ্টা করেও বাড়ি ভাড়া পাননি মুসলিমরা—এমন উদাহরণও অনেক।

লোন বলেন, ‘ভারতের শহরগুলোতে বাস্তবেই মুসলিমদের (ধর্মীয়) বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে।’

সারা ভারতে বছরের পর বছর ধরে ধর্ম ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে নানা পাড়া গড়ে উঠেছে। মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মুসলিমদের জন্য গেটেড কমিউনিটি বা গেটো (এক সময় ইউরোপে গড়ে ওঠা ইহুদিদের আলাদা বসতির মতো) এখন অনেক শহরে সাধারণ ঘটনা। গবেষক লোরাঁ গায়ার ও ক্রিস্টোফ জাফ্রেলো বলেন, এটি মূলত ভারতজুড়ে ‘সংগঠিত সহিংসতার ফল।’ উচ্চ-মধ্যবিত্তদের মধ্যেও বিভাজন দেখা যায়। মুম্বাইয়ে কিছু অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স অঘোষিতভাবে নির্দিষ্ট ধর্ম, বর্ণ ও ভাষার মানুষের জন্য সংরক্ষিত থাকে, যেমন—জৈন, ক্যাথলিক খ্রিষ্টান, বোহরা মুসলিম (ইসমাইলি শিয়া সম্প্রদায়) এবং গুজরাটি হিন্দু। দিল্লিতে জাতীয় রাজধানী অঞ্চলেও অন্তত দুটি গেটো শুধু মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত বলে ধারণা করা হয়।

মুসলিম পেশাজীবী নারী মারিয়া সালিম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে জানিয়েছেন, ২০২০ সালে দিল্লিতে অ্যাপার্টমেন্ট খুঁজতে খুঁজতেই তাঁর পাঁচ মাস চলে গেছে! ব্রোকারদের অনেকেই তাঁকে জানাতেন, বাড়িওয়ালা মুসলিমদের ভাড়া দিচ্ছেন না। একজন তো বলেই বসেন যে মুসলিমেরা ভালো নয়।

আসাফ আলি লোন স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, মুসলিমদের মধ্যে সুকুন এম্পায়ার-এর মতো আবাসিক প্রকল্পের চাহিদা মূলত এই বৈষম্যেরই ফল। তিনি বলেন, ‘যদি মুসলিমদের আলাদা কলোনিতে থাকতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তাঁরা আর কোথায় যাবেন?’

সুকুন এম্পায়ার-এর নির্মাতারা স্ট্রেইটস টাইমসের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। তবে উচ্চবিত্ত ভারতীয় মুসলিমদের লক্ষ্য করে এমন প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৮ সালে কেরালার কোচিতে ভারতে প্রথমবারের মতো অ্যাসেট জেনেসিস নামে ‘শরিয়াহ মেনে চলা ও হালাল সনদপ্রাপ্ত’ আবাসিক প্রকল্প নির্মাণের কথা ওঠে। তখনও একই ধরনের প্রতিবাদের কারণে প্রকল্পটি বাতিল হয়।

কিছু ক্ষেত্রে হিন্দুপ্রধান কমপ্লেক্সে বসবাসরত উচ্চ-মধ্যবিত্ত মুসলিমরা প্রকাশ্যে ধর্মীয় আচার পালন করতে বাধার সম্মুখীন হন। ২০২৩ সালে, নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডায় দুটি হাইরাইজ কনডোমিনিয়ামে মুসলিমরা তাঁদের হিন্দু প্রতিবেশীদের বাধার কারণে রমজান মাসে জামাতে নামাজের আয়োজন বাতিল করতে বাধ্য হন। যদিও, এই কমপ্লেক্সগুলোতে হিন্দু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনেক জায়গায় অবৈধভাবে মন্দিরও বানানো হয়েছে।

২০২৪ সালে, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুজফফরনগরের রাজনীতিবিদ রাও নাদিম একটি হিন্দু এলাকায় ব্যাংক নিলামে একটি বাড়ি কিনেন। সেটিকে তিনি মসজিদে রূপান্তর করবেন এই অভিযোগ তুলে ব্যাপক প্রতিবাদ করেন স্থানীয় হিন্দুরা। শেষ পর্যন্ত, বাধ্য হয়ে তাঁকে বাড়িটি একটি হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করতে হয়।

হাউজিং ডিসক্রিমিনেশন প্রজেক্টের সাক্ষাৎকারে মুসলিমরা জানান, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসের সবচেয়ে বড় কারণ হলো নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার অনুভূতি। তবে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সময় এ ধরনের এলাকাগুলোই সহজ লক্ষ্য হয়ে ওঠে।

রাও নাদিমও স্ট্রেইটস টাইমসকে জানান, তিনি শুধু মুসলিমদের জন্য কনডোমিনিয়ামের ধারণারও বিরোধী। কারণ এটি জাতীয় ঐক্যে বিভেদের ঝুঁকি তৈরি করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন মধ্যস্থতায় ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার সরাসরি আলোচনায় লেবানন–ইসরায়েল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম। ছবি: এএফপি
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম। ছবি: এএফপি

লেবানন ও ইসরায়েলের বে সরকারের প্রতিনিধিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতিত্বে নাকোউরায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এটি চার দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার প্রথম সরাসরি আলোচনার সূচনা। খবর আল–জাজিরার।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম গতকাল বুধবার বলেছেন, বৈরুত নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের বাইরে আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি কোনো শান্তি আলোচনা নয় এবং সম্পর্ক ‘স্বাভাবিকীকরণ শান্তির প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত।’ তিনি বলেন, এই আলোচনা শুধুমাত্র ‘শত্রুতা বন্ধ করা’, ‘লেবাননের জিম্মিদের মুক্তি’ এবং লেবাননের ভূখণ্ড থেকে ‘ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার’-এর লক্ষ্যে করা হয়েছে।

সালাম জানান, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—যা ইসরায়েলের ১৯৬৭ সালে দখল করা অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কের পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণের প্রস্তাব দেয় এবং ইসরায়েলের সাথে কোনো পৃথক শান্তি চুক্তি করার কোনো ইচ্ছা লেবাননের নেই।

তিনি বলেন, বেসামরিক দূতদের অংশগ্রহণ ‘উত্তেজনা কমাতে’ সাহায্য করতে পারে। এসময় তিনি সম্প্রতি ইসরায়েলের মারাত্মক বিমান হামলা ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার স্পষ্ট লক্ষণ বলেও উল্লেখ করেন।

কমিটি ব্লু লাইন (Blue Line) বরাবর—লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যবর্তী সীমান্ত—প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছে। পরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বেসামরিক দূতদের সংযোজনকে ‘স্থায়ী বেসামরিক ও সামরিক সংলাপের’ মাধ্যমে প্রক্রিয়াটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দিকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে কমিটি দীর্ঘদিন ধরে অস্থির এই সীমান্ত বরাবর "শান্তি বজায় রাখতে" আশা করছে।

যুক্তরাষ্ট্র মাসখানেক ধরে উভয় পক্ষকে শুধুমাত্র ২০০৪ সালের ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি তদারকি করার বাইরে কমিটির পরিধি প্রসারিত করার জন্য অনুরোধ করে আসছে। গত মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী আক্রান্ত হওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার মধ্যে এই সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।

ইসরায়েল লেবাননে নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব হামলার বৈধতা দেওয়ার জন্য সাধারণত তারা বলে যে তারা হিজবুল্লাহর সদস্য ও স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে এবং যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী সম্পূর্ণভাবে সরে আসার কথা থাকলেও তারা দক্ষিণের পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন রেখেছে।

ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেড্রোসিয়ান সাংবাদিকদের একটি অনলাইন ব্রিফিংয়ে বুধবারের বৈঠকটিকে ‘একটি ঐতিহাসিক অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন।

বেড্রোসিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এই সরাসরি বৈঠকটি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দেওয়ার প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেমন বলেছেন, আমাদের প্রতিবেশীদের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অনন্য সুযোগ রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুতিনের নয়াদিল্লি সফর: ঐতিহাসিক কৌশলগত সম্পর্কের পুনর্নবায়ন নাকি কেবলই আনুষ্ঠানিকতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের সফরে আজ বৃহস্পতিবার ভারতে আসবেন। সময়সূচী অনুসারে, আজ স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ভারতে পৌঁছানোর কথা তাঁর। এই সফরে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আয়োজিত এক ব্যক্তিগত নৈশভোজ এবং ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। খবর এনডিটিভির।

খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের আজ সন্ধ্যায় নয়াদিল্লি পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তিনি পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভর্তির প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর সম্মানে ব্যক্তিগত নৈশভোজের আয়োজন করবেন। এর মাধ্যমে তিনি ২০২৪ এর জুলাইয়ে মোদির মস্কো সফরের সময় রুশ নেতার আয়োজিত অনুরূপ আতিথেয়তার প্রত্যুত্তর জানাবেন। নৈশভোজটি অনানুষ্ঠানিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা আনুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে দুই নেতাকে একান্তে আলোচনা শুরু করার সুযোগ দেবে।

আগামীকাল শুক্রবার সকালে প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে তাঁর সরকারি সফরের কর্মসূচী শুরু করবেন। এরপর তিনি রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন, যা বিদেশী সফরকারী রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য একটি প্রথাগত কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এরপর নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদি শীর্ষ সম্মেলনের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রুশ প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর প্রতিনিধিদলের জন্য একটি কার্যনির্বাহী মধ্যাহ্নভোজেরও আয়োজন করবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কিছু সামরিক সরঞ্জামের সরবরাহে বিলম্ব হওয়ায় ভারত মুলতুবি থাকা সামরিক হার্ডওয়্যারগুলির দ্রুত ডেলিভারির জন্য চাপ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির মধ্যে অতিরিক্ত এস–৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত ২০১৮ সালে পাঁচটি এস–৪০০ ইউনিটের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তিন স্কোয়াড্রন এরই মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে এবং আরও দুটি আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়ার কথা রয়েছে। অপারেশন সিন্দুরের সময় এই সিস্টেমগুলি ব্যবহৃত হয়েছিল।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, আলোচনায় সুখোই–৫৭ পঞ্চম-প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের প্রতি ভারতের আগ্রহ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। ভারত বর্তমানে রাফালে, এফ–২১, এফ/এ–১৮ এবং ইউরোফাইটার টাইফুনের মতো যুদ্ধবিমান দিয়ে সাথে পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রতিস্থাপনের বিষয়টি মূল্যায়ন করছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানির ওপর কী প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে আলোচনা কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় জ্বালানি সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাবে। পেসকভ বলেছেন যে ভারতের ক্রয় ‘সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য’ কমতে পারে, যদিও রাশিয়া সরবরাহ বজায় রাখার জন্য চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের বৈঠক ছাড়াও, উভয় দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী—রাজনাথ সিং এবং আন্দ্রে বেলোসভ—গুরুত্বপূর্ণ সামরিক হার্ডওয়্যার নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কয়েকটি ধাক্কার সম্মুখীন। ওয়াশিংটন সম্প্রতি বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক এবং বিশেষ করে ভারতের রুশ অপরিশোধিত তেল সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ২৫ শতাংশ লেভি আরোপ করেছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের সংঘাত সংক্রান্ত সর্বশেষ মার্কিন কূটনৈতিক উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে অবহিত করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। ভারত এই অবস্থান বজায় রেখেছে যে সংলাপ এবং কূটনীতিই এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ, এবং মস্কোর সমালোচনা এড়িয়ে নিজেকে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১৪
পুলিশের হাতে আটক পুনম (মাঝে মুখ ঢাকা)। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশের হাতে আটক পুনম (মাঝে মুখ ঢাকা)। ছবি: সংগৃহীত

হরিয়ানার পানিপথের একটি গ্রামে বিয়ের সানাই বাজছিল। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সবে শেষ হতে শুরু করেছে, তখনই বাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। বিয়েবাড়িতে শোরগোল পড়ে গেল, ছয় বছর বয়সী এক শিশু নিখোঁজ। মুহূর্তেই উৎসবের পরিবেশ বদলে যায় বিষাদে। দিন শেষে পুলিশ এক নৃশংস হত্যারহস্য উন্মোচন করে, যেখানে মূল অভিযুক্ত ব্যক্তির কার্যকলাপ জার্মান রূপকথা স্নো হোয়াইটের সেই দুষ্ট রানির কথা মনে করিয়ে দেয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি স্থানীয় পুলিশের বরাতে জানিয়েছে, চার শিশুকে হত্যার দায়ে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার পেছনের কারণটি ভয়ংকর। অভিযুক্ত নারী চাননি কেউ তাঁর চেয়ে ‘বেশি সুন্দর’ হোক।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই নারী পুনম তাঁর ভাতিজি বিধিসহ (৬) পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আসেন। সেখানে ভাতিজিকে দেখে পুনমের মনে হয়, সে তাঁর চেয়েও বেশি সুন্দরী। এরপর পুনম তাঁকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন।

বিধি তার দাদু পাল সিং, দাদি ওমবতী, বাবা সন্দীপ, মা ও ১০ মাসের ছোট ভাইকে নিয়ে পানিপথের ইজরানা এলাকার নৌলথা গ্রামে এক আত্মীয়ের বিয়েতে এসেছিল। গত সোমবার বেলা ১টা ৩০ মিনিটের দিকে বরযাত্রী নৌলথায় পৌঁছালে তার পরিবারও সেখানে যায়। কিছুক্ষণ পরে সন্দীপের ফোনে খবর আসে, বিধি হারিয়ে গেছে। পরিবার তখনই খোঁজাখুঁজি শুরু করে।

প্রায় এক ঘণ্টা পর দাদি ওমবতী বাড়ির প্রথম তলার একটি স্টোররুমে যান। দরজাটি বাইরে থেকে আটকানো ছিল। দরজা খুলে তিনি দেখেন, পানিভর্তি একটি চৌবাচ্চায় শিশুটির মাথা ডুবানো। বিধিকে দ্রুত স্থানীয় এনসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সন্দীপ থানায় গিয়ে হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, শিশু বিধির খুনের পেছনে ছিলেন তার ফুফু পুনম। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর উঠে আসে ভয়ংকর তথ্য। তিনি আগে আরও তিনটি শিশুকে একইভাবে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেছেন।

পুলিশ বলছে, পুনমের হত্যার ধরন একই—প্রতিবার পানিভর্তি চৌবাচ্চায় শিশুকে ডুবিয়ে মারা। কারণ, সুন্দর শিশুদের প্রতি তাঁর তীব্র ঈর্ষা, বিশেষ করে, ছোট ও সাজগোজ করা মেয়েদের প্রতি।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, পুনম ২০২৩ সালে প্রথম তাঁর ননদের মেয়েকে হত্যা করেন। ওই ঘটনা দেখে ফেলায় একই বছর তিনি নিজের ছেলেকেও হত্যা করেন। চলতি বছরের আগস্টে তিনি সিওয়া গ্রামে আরও একটি মেয়েকে ‘নিজের চেয়ে সুন্দর’ মনে হওয়ায় হত্যা করেন।

বিধির হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুনম সত্য স্বীকার করার আগপর্যন্ত এই শিশুদের মৃত্যুগুলো দুর্ঘটনাজনিত বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ১২
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: সংগৃহীত
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। ছবি: সংগৃহীত

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক বক্তব্যে বলেন, ইউরোপ যদি যুদ্ধ করতে চায় বা যুদ্ধ শুরু করে, তবে রাশিয়া ‘এই মুহূর্তেই প্রস্তুত।’ তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সরকার।

ডাউনিং স্ট্রিটের ভাষ্য অনুযায়ী—পুতিনের ওই বক্তব্য শান্তি নিয়ে অনাগ্রহী এক প্রেসিডেন্টের মুখে আরও একটি ক্রেমলিন–ঘটিত আজগুবি কথা বা ‘ক্রেমলিন-ক্ল্যাপট্রেপ’ ছাড়া আর কিছু নয়।

অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান অনুযায়ী, ‘ক্ল্যাপট্রেপ’ মূলত নাটকে দর্শকের করতালি পাওয়ার জন্য ব্যবহৃত একধরনের ফন্দি। আধুনিক অর্থে এর মানে—সম্পূর্ণ বাজে কথা বা অর্থহীন মন্তব্য।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের এক মুখপাত্রকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন—ব্রিটেন কি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। এই প্রশ্নের জবাবে ওই মুখপাত্র জানান, ‘সরকারের প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ সবার সামনে পরিষ্কার এবং ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনী দেশ রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত।’

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনকে সহায়তায় সম্পূর্ণ একযোগে কাজ করছে। পাশাপাশি ন্যাটো জোট যে কোনো হুমকির মোকাবিলায় ঐক্য ও শক্তি নিয়ে প্রস্তুত।

এদিকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে কোনো সমঝোতায় আসতে চান না। মস্কোতে মার্কিন দূতদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্য সব ধরনের উপায়ে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে থাকবে।

এর আগে পুতিন অভিযোগ করেছিলেন, ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করছে। তিনি শান্তি পরিকল্পনায় ইউরোপ ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোও প্রত্যাখ্যান করেন।

পার্লামেন্টে এক প্রশ্নের জবাবে স্টারমার বলেন, ‘আমরা সবাই জানি, পুতিনই আগ্রাসনের জনক এবং আলোচনায় নারাজ।’ তিনি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও ডাউনিং স্ট্রিট জানায়, ন্যাটো যেকোনো হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।

এদিকে মার্কিন প্রেরিত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে পুতিনের দীর্ঘ আলোচনা থেকেও শান্তি প্রক্রিয়ায় কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভেট কুপার পুতিনকে ‘বাগাড়ম্বর বন্ধ করে রক্তপাত থামানোর’ আহ্বান জানান এবং ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো মেরামতে অতিরিক্ত ১০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তার ঘোষণা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রূপের ঈর্ষায় ৩ মেয়েশিশুকে চুবিয়ে হত্যা, দেখে ফেলায় রেহাই পায়নি নিজের ছেলে

সিসিইউতে নিবিড় তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়া, আশাবাদী চিকিৎসকেরা

ইউরোপ চাইলে রাশিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত—পুতিনের এই মন্তব্যে ব্রিটেনের তীব্র প্রতিক্রিয়া

কে এই কৃষ্ণ নন্দী, তাঁকে জামায়াত প্রার্থী করল কেন

জামায়াতে ইসলামীর প্রথম হিন্দু প্রার্থী খুলনার কৃষ্ণ নন্দী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত