Ajker Patrika

দিল্লিতে বাংলাদেশি পাঁচ ট্রান্সজেন্ডার গ্রেপ্তার: কী বলছে পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী মেট্রোস্টেশনের কাছে থেকে পাঁচজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। পুলিশের দাবি, তাঁরা সবাই ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরকামী) এবং অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে দীর্ঘদিন ধরে নাম পাল্টে সেখানে বসবাস করছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দিল্লিতে হরমোন থেরাপি নিচ্ছিলেন এবং শিগগির তাঁদের লৈঙ্গিক পরিবর্তনের সার্জারি হওয়ার কথা ছিল। পুলিশের ধারণা, তাঁরা লৈঙ্গিক পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার উদ্দেশ্যে।

জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন মোহাম্মদ শাকিদুল (শেরপুর), মোহাম্মদ দুলাল আখতার ওরফে হাজরা বিবি (জামালপুর), মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম ওরফে মোনিকা (ঢাকা), মোহাম্মদ মাহির ওরফে মাহি (টাঙ্গাইল), সাদ্দাম হুসেন ওরফে রুবিনা (দিনাজপুর)।

তাঁদের প্রত্যেকের কাছ থেকে জাল পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব পরিচয়পত্র তৈরির পেছনে দিল্লিভিত্তিক একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।

পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গিরপুরীতে ট্রাফিক সিগন্যালে তাঁরা ভিক্ষা করতেন। গোপন সূত্রে তথ্য পেয়ে পুলিশের বিশেষ একটি দল কয়েক দিন ধরে নজরদারির পর তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তির স্বীকার করেছেন, তাঁরা কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকেন এবং একটি চক্রের সাহায্যে দিল্লি পৌঁছান। ভারতে এসে তাঁরা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এবং দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আইএমও অ্যাপ ব্যবহার করতেন, যা ভারতে নিষিদ্ধ।

দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার অঙ্কিত চৌহান জানান, ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সহযোগিতার জন্য কিছু সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব চক্র ভারতে প্রবেশ, জাল পরিচয়পত্র তৈরি, বাসস্থানের ব্যবস্থাসহ নানা সহায়তা দিয়ে থাকে।

গত মার্চ মাসেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এক চক্র, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মোহাম্মদ মইনুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি, যিনি দিল্লিতে একটি কম্পিউটারের দোকান চালাতেন। তাঁর দোকান থেকেই তৈরি হতো আধার কার্ড ও জন্মনিবন্ধনের মতো জাল পরিচয়পত্র।

তবে তাঁদের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁরা কি সত্যিকারের ট্রান্সজেন্ডার, নাকি শুধুই পরিচয় গোপন করতে এই পন্থা অবলম্বন করেছেন, তা নিয়ে চলছে আলোচনা। অনেকে মনে করেন, ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য ভারতে চিকিৎসা নেওয়া স্বাভাবিক ঘটনা এবং শুধু পরিচয় বদলের জন্য এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

স্থানীয় সাংবাদিক আশিস গুপ্ত বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় এমন বহু চক্র কাজ করে, যারা অনুপ্রবেশে সহায়তা করে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়ে এসব চক্র বহুদিন ধরে সক্রিয়।’

ফরেনার রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারের পর অনেক অনুপ্রবেশকারীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। কারণ, এসব মানুষের প্রত্যর্পণ একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া।

এর আগে, মার্চ মাসে দিল্লিতে আট বাংলাদেশি অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যাঁরা অনলাইন ফুড ডেলিভারিসহ বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত