Ajker Patrika

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা আর ফিরবে না: অমিত শাহ

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা আর ফিরবে না: অমিত শাহ

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা আর ফিরবে না। অঞ্চলটির আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নিজ দলের ইশতেহার উন্মোচনের পর সরকারের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। অমিত শাহ বলেন, অঞ্চলটিকে বিশেষ মর্যাদা দানকারী সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ আর কখনো ফিরে আসবে না। এই ধারাটি এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ন্যাশনাল কনফারেন্স তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অনুচ্ছেদ ৩৭০ পুনর্বহালের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে দলটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ২০১৪ সালের পর জম্মু ও কাশ্মীরে এটি প্রথম বিধানসভা নির্বাচন। এর মাধ্যমে কাশ্মীরের মানুষ অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের বিষয়ে কী চিন্তা-ভাবনা করছেন, তা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

 ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। যার মধ্যে একটি হলো লাদাখ। 

দুই দিনের সফরে অঞ্চলটিতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, ২০১৪ সাল পর্যন্ত কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদের ছায়া ছিল। সেই সময় বিভিন্ন শক্তি এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। পূর্ববর্তী সরকারগুলো তোষণের নীতি অনুসরণ করেছে। তবে ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়টি ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। 

অমিত শাহ বলেন, ‘অনুচ্ছেদ ৩৭০-এর ছায়ায় একসময় আমরা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও হুররিয়াতের মতো সংগঠনগুলোর দাবির সামনে সরকারকে মাথা নত করতে দেখেছি। তবে গত ১০ বছরে অনুচ্ছেদ ৩৭০ এবং ৩৫-এ ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। এসব আর সংবিধানের অংশ নয়।’ 

অমিত শাহ বলেন, ‘২০১৯ সালের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের ফলে জম্মু ও কাশ্মীরে উন্নয়নের নতুন যুগ শুরু হয়েছে। এসব অনুচ্ছেদ আর কখনো ফিরে আসবে না। সেই সুযোগ আমরা দেব না। কারণ, এই অনুচ্ছেদ যুবকদের হাতে অস্ত্র ও পাথর তুলে দিয়েছিল।’ 

বিধানসভা নির্বাচন সম্পর্কে অমিত শাহ বলেন, বিজেপির ইশতেহারে জম্মু ও কাশ্মীরকে ‘শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, উন্নত ও সমৃদ্ধ’ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, আসন্ন নির্বাচন তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ চলবে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত। ভোট গণনা হবে ৮ অক্টোবর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতা, বর্ণবাদ ও নাৎসি প্রশংসা: যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক গ্রুপ চ্যাটের অন্ধকার দিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সহিংসতা, বর্ণবাদ ও নাৎসি প্রশংসা: যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক গ্রুপ চ্যাটের অন্ধকার দিক

তিনটি আলাদা ঘটনায় চলতি মাসে ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত অনলাইন গ্রুপ চ্যাটগুলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বার্তাগুলোতে উঠে এসেছে বর্ণবাদী, ইহুদিবিদ্বেষী ও সহিংস বক্তব্য, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যক্তিদের থেকেই এসেছে।

জনসমক্ষে আসা ব্যক্তিগতভাবে পাঠানো এ বার্তাগুলোর মধ্যে রয়েছে বর্ণবাদী গালাগাল, নাৎসিদের প্রশংসা এবং রাজনৈতিক সহিংসতার হুমকি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রকাশিত হওয়ার ও সমালোচিত হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা কেন এমন মতামত প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে যে, দেশটিতে সহিংস ভাষা ও বর্ণবাদী বক্তব্য ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। বিশেষ করে কয়েক দশক ধরে কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত নাগরিক অধিকার বিজয়ের পর, যা এ ধরনের মতাদর্শগুলোকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিল।

মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই ব্যক্তিগত পরিসরে সহিংস বা বর্ণবাদী মতামত প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেক্সট মেসেজ ফাঁস হওয়ার এ ঘটনাগুলো উল্লেখযোগ্য, কারণ এগুলো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের চিন্তাভাবনা জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে।

পলিটিকোর ১৪ অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ডজনের বেশি তরুণ রিপাবলিকান নেতা জানুয়ারি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত টেলিগ্রামে একে অপরের কাছে বর্ণবাদী এবং ইহুদিবিদ্বেষী বার্তা পাঠান। তাঁরা কৃষ্ণাঙ্গদের ‘বানর’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের একজন দ্বিধাহীনভাবে বলেন, ‘আমি হিটলারকে ভালোবাসি।’

এর আগে ৩ অক্টোবর ন্যাশনাল রিভিউ প্রকাশিত আরেকটি ফাঁস হওয়া বার্তায় দেখা যায়, ভার্জিনিয়ার শীর্ষ আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা পদপ্রার্থী ডেমোক্র্যাট নেতা জে জোনস ২০২২ সালে একটি ব্যক্তিগত টেক্সট পাঠিয়ে বলেছিলেন, ওই অঙ্গরাজ্যের এক রিপাবলিকানকে গুলি করে মেরে ফেলা উচিত।

আর এ সপ্তাহে একটি ফেডারেল পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী পল ইনগ্রাসিয়া তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

কারণ তাঁর সম্পর্কে প্রকাশিত হয়েছিল, তিনি একটি ব্যক্তিগত টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদানে নিজেকে ‘নাৎসিপ্রবণ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং এ খবর প্রকাশের পর তিনি রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সমর্থন হারান।

সমাজবিজ্ঞানী অ্যালেক্স টারভির মতে, গ্রুপ চ্যাটে উসকানিমূলক বক্তব্য অব্যাহত থাকার কারণ একধরনের ভ্রান্ত নিরাপত্তাবোধ। অথচ অনলাইনে পাঠানো সব বার্তারই স্থায়ী রেকর্ড থাকে এবং তা যেকোনো সময় ফাঁস হতে পারে।

টারভি মনে করেন, গ্রুপ চ্যাটের সদস্যরা কখনো কখনো ভুল করে ধরে নেন, তাঁরা তাঁদের সহ-অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাস করেন; যদিও রাজনীতিতে আনুগত্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং উদ্দেশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘এখানে ঘনিষ্ঠতার ভ্রম কাজ করে। মনে হয় যেন একান্ত আলাপ হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে আপনি ধরে নিচ্ছেন, গ্রুপ চ্যাটের প্রতিটি সদস্য চিরকাল আপনাকে রক্ষা করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরব সাগরে ১ বিলিয়ন ডলারের মাদক জব্দ করল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তান নৌবাহিনীর একটি বহর। ছবি: এএফপি
পাকিস্তান নৌবাহিনীর একটি বহর। ছবি: এএফপি

আরব সাগরে যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে পাকিস্তান নৌবাহিনী। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশের সমন্বয়ে গঠিত বহুজাতিক নৌবাহিনী জোট ‘কম্বাইন্ড মেরিটাইম ফোর্সেস’ (সিএমএফ)।

বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ পিএনএস ইয়ারমূক গত সপ্তাহে টানা ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ‘রাষ্ট্রহীন’ নৌযান আটক করেছে। জাহাজ দুটিতে বিপুল পরিমাণ ক্রিস্টাল মেথ (মেথামফেটামিন) ও অল্প পরিমাণ কোকেন পাওয়া যায়। আটক নৌযানগুলোর উৎপত্তিস্থল বা গন্তব্য সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সিএমএফ টাস্কফোর্সের কমান্ডার ও সৌদি নৌবাহিনীর কমোডর ফাহাদ আলজোইয়াদ বলেছেন, ‘সিএমএফ-এর ইতিহাসে এটি অন্যতম সফল মাদকবিরোধী অভিযান। পিএনএস ইয়ারমূক এর মাধ্যমে রেকর্ড পরিমাণ মাদক জব্দ করা সম্ভব হয়েছে।’

সামাজিক মাধ্যম এক্সে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড এই অভিযানের প্রশংসা করে লিখেছে, ‘সৌদি নেতৃত্বাধীন কম্বাইন্ড টাস্ক ফোর্স ও পাকিস্তান নৌবাহিনীর ইয়ারমূক জাহাজ ৪৮ ঘণ্টায় আরব সাগরে দুটি ছোট নৌযানে তল্লাশি চালিয়ে ৯৭২ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে।’

এর আগে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর একই অঞ্চলে সৌদি নেতৃত্বাধীন কমান্ডের অধীনে থাকা পাকিস্তান নৌবাহিনীর পিএনএস ইয়ামামা-২৭৪ নামের জাহাজটি ১২ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের মাদক জব্দ করেছিল। সে সময়ের অভিযানে ১৫৫ কেজি ক্রিস্টাল মেথ ও ৬৫ কেজি কোকেন উদ্ধার হয়েছিল।

ধারাবাহিক এই অভিযানের মাধ্যমে আরব সাগরে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান রোধে পাকিস্তান নৌবাহিনী ও তার আন্তর্জাতিক সহযোগীদের ভূমিকা আরও জোরদার হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কট্টরপন্থী টিএলপিকে নিষিদ্ধ করল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
১৩ অক্টোবর পাকিস্তানের লাহোরে টিএলপির বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়। ছবি: এএফপি
১৩ অক্টোবর পাকিস্তানের লাহোরে টিএলপির বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়। ছবি: এএফপি

কট্টরপন্থী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তানকে (টিএলপি) আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। আজ শুক্রবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের কাছে এই প্রজ্ঞাপনের একটি কপি এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, ফেডারেল সরকার বিশ্বাস করে, টিএলপি সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত এবং এ-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাই সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ১৯৯৭-এর ধারা ১১বি (১)(এ) অনুযায়ী টিএলপিকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে পাঞ্জাব প্রদেশ সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী টিএলপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় ফেডারেল মন্ত্রিসভা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, এই সিদ্ধান্ত একযোগে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভাকে জানায়, টিএলপি বারবার সহিংসতা উসকে দিয়েছে এবং দেশব্যাপী অস্থিরতা তৈরি করেছে।

২০১৫ সালে টিএলপি একটি আন্দোলনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। এরপর ২০১৬ সালে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। টিএলপি পাকিস্তানে বিতর্কিত একটি ইসলামপন্থী দল, যারা প্রায়ই সহিংস বিক্ষোভের জন্য পরিচিত। ২০১৮ সালের নির্বাচনে টিএলপি আলোচনায় আসে দেশের ধর্ম অবমাননা আইনের (ব্লাসফেমি আইন) পক্ষে প্রচার চালিয়ে। এর পর থেকে দলটি বেশ কয়েকবার সহিংস বিক্ষোভ করেছে, বিশেষত বিদেশে কোরআন অবমাননার ঘটনায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২১ সালের নিষেধাজ্ঞা ছয় মাস পর তুলে নেওয়া হয়েছিল—শর্ত ছিল, দলটি আর সহিংসতায় জড়াবে না। কিন্তু তারা সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ইমরান খানের তৎকালীন সরকার সহিংস বিক্ষোভের ঘটনায় টিএলপিকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশ কর্মকর্তা ৪ বার ধর্ষণ করেছে—মহারাষ্ট্রে নারী চিকিৎসকের হাতে লেখা সুইসাইড নোট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৩
ছবি: এনডিটিভি
ছবি: এনডিটিভি

ভারতের মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলায় একটি হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক নারী চিকিৎসক ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। গত পাঁচ মাসে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) তাঁকে চারবার ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করে গেছেন তিনি।

ওই চিকিৎসক এসআই গোপাল বাদনের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ বাঁ হাতের তালুতে লিখে গেছেন।

ওই চিকিৎসক লিখেছেন, বাদনের লাগাতার হয়রানিই তাঁকে নিজের জীবন দিতে বাধ্য করেছে। এ ছাড়া আরও এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রশান্ত বাংকারের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ হাতে লিখে যান ওই নারী।

তাঁর হাতে লেখা ছিল, ‘পুলিশ ইন্সপেক্টর গোপাল বাদনেই আমার মৃত্যুর কারণ। সে আমাকে চারবার ধর্ষণ করেছে। পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে সে আমাকে ধর্ষণ করেছে। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সাতারা জেলায় ফাল্টান মহকুমা হাসপাতালে মেডিকেল কর্মকর্তা ছিলেন ওই চিকিৎসক। আত্মহত্যার কয়েক মাস আগে গত ১৯ জুন ফাল্টান সাবডিভিশনাল অফিসের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশকে (ডিএসপি) লেখা এক চিঠিতে একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক ফাল্টান গ্রামীণ পুলিশ বিভাগের দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ আনেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।

চিঠিতে তিনি গোপাল বাদনে, সাবডিভিশনাল পুলিশ ইন্সপেক্টর পাটিল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ ইন্সপেক্টর লাদপুত্রের নাম উল্লেখ করেন।

চিঠিতে ওই চিকিৎসক বলেছিলেন, ‘চরম মানসিক চাপের মধ্যে আছি। অনুরোধ করছি, গুরুতর বিষয়টি তদন্ত করা হোক এবং দোষী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

একাধিক সূত্র বলছে, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নির্দেশে গোপাল বাদনেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাতের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মহারাষ্ট্রজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

রাজ্য কংগ্রেস নেতা বিজয় নামদেভরাও ওয়াদেত্তিবার এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বিজয় নামদেভরাও বলেন, ‘যখন রক্ষকই ভক্ষক হয়! পুলিশের কাজ হলো সুরক্ষা দেওয়া। কিন্তু তারাই যদি একজন নারী চিকিৎসককে নির্যাতন করে, ন্যায়বিচার তাহলে কীভাবে হবে? মেয়েটি যখন অভিযোগ করেছিল, তখন কেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? রাজ্য সরকার বারবার পুলিশকে আড়াল করছে। ফলে পুলিশের নৃশংসতা বাড়ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত