Ajker Patrika

মণিপুরে আরেক রোমহর্ষক ঘটনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৩, ০৯: ৫০
Thumbnail image

ভারতের মণিপুরে মেইতি ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার জেরে একের পর এক হত্যাকাণ্ড এবং গণধর্ষণের মতো ঘটনা প্রকাশ পাচ্ছে। এবার আরও একটি গণধর্ষণের রোমহর্ষক ঘটনা সামনে এল। এক নারী পুলিশের কাছে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। বর্ণনা করেছেন তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি গত বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত মে মাসে মেইতি ও কুকিদের মধ্যে জাতিগত সংঘাত শুরু হয়। তিন সপ্তাহ আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো ও গণধর্ষণের ঘটনা ভাইরাল হয়। এর পর থেকে নারীরা পুলিশের কাছে একের পর এক অভিযোগ নিয়ে আসছে। কর্তৃপক্ষ তাঁদের কথা বলতে উৎসাহিত করায় নারীরা যে বর্বরতার মুখোমুখি হয়েছিলেন সেসব বর্ণনা করছেন।

সবশেষ অভিযোগকারী ৩৭ বছর বয়সী নারী মণিপুরের চূড়চন্দ্রপূরের বাসিন্দা। ওই নারী বলেছেন—গত ৩ মে তাঁর বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর দুই ছেলে, ভাগনি এবং ননদকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একদল পুরুষের কাছে ধরা পড়েন তিনি। এরপর তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। ওই দিনই মণিপুরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা বেঁধে যায়।

তবে এত দিন গণধর্ষণের শিকার হওয়ার বিষয়টি ওই নারী কাউকে জানাননি। কিন্তু যখন দেখছেন, অনেকেই এ বিষয়গুলো নিয়ে মুখ খুলছেন তখন তিনি নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনাটি সামনে এনেছেন।

গত বুধবার বিষ্ণুপুর থানায় দায়ের করা অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেন, ‘নিজেকে, পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে এবং একঘরে হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে আমি বিষয়টি কাউকে জানাইনি। আমি এমনকি নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম।’

ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতের দণ্ডবিধি ৩৭৬ ডি,৩৫৪, ১২০বি এবং ৩৪ ধারায় বিষ্ণুপুর থানায় মামলা (জিরো এফআইআর) করা হয়েছে।

বর্তমানে ওই নারী বাস্তুচ্যুতদের জন্য তৈরি একটি আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন। এফআইআরে ওই নারী বলেছেন, ‘৩ মে বাড়িতে আগুন দেওয়ার পর আমি ভাগনিকে আমার পেছনে নেই এবং দুই ছেলের হাত ধরে আমার ননদকে নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকি। আমার ননদও একটি শিশুকে কোলে নিয়েছিলেন এবং সে আমার আগে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে আমি রাস্তায় পড়ে যাই এবং উঠে দাঁড়াতে পারছিলাম না। তখন আমার ননদ আমার কথা অনুযায়ী, ভাগনি ও আমার দুই ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকেন।’

এফআইআরে ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, ‘যখন আমি ওঠে দাঁড়াতে সমর্থ হই, পাঁচ থেকে ছয়জন দুর্বৃত্ত আমাকে ধরে ফেলে। তাঁরা আমাকে গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করা শুরু করেন এবং হামলা করেন। বাধা দিলে তাঁরা আমাকে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর যৌন নির্যাতন শুরু করেন।’

ওই নারী আরও জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।

গত মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মণিপুরের দুই নারীকে বিবস্ত্র করে সড়কে হাঁটানোর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ভারতজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে।

ভিডিওতে দেখে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর থানায় অভিযোগ আসা শুরু করে। মণিপুর পুলিশ গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, ৩ মে থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত