Ajker Patrika

সৈনিকদের রেডিও স্টেশন এখন ইউক্রেনের এক যোদ্ধা কবি

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
নিজের ব্রিগেডের সঙ্গে সের্হি ঝাদান (সবার সামনে)। ছবি: দ্য টাইমস

ইউক্রেনের শিল্পীদের ওপর রাশিয়ার দমন-পীড়নের ইতিহাস বহু পুরোনো। সেই ১৯২০-এর দশকে স্তালিনের শুদ্ধিকরণের সময় থেকে শুরু করে বর্তমানে পুতিনের যুদ্ধক্ষেত্রে হারিয়ে যাওয়া ইউক্রেনের বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।

তাই সের্হি ঝাদান যখন যুদ্ধে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন, তখন অনেকেই শঙ্কিত হলেন এই ভেবে যে—তাঁর নামও বুঝি দুঃখজনক সেই তালিকায় যোগ হবে।

সের্হি ঝাদান—ইউক্রেনের বিখ্যাত কবি এবং গীতিকার। ডনবাস অঞ্চলে একটি সামরিক পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি।

সোভিয়েত-পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ রুশ প্রভাবের শতাব্দী পেরিয়ে ইউক্রেনের জাতীয় সংস্কৃতির পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখা বর্তমান প্রজন্মের লেখক ঝাদান। কবিতা, গান এবং ‘ঝাদান অ্যান্ড দ্য ডগস’ নামে একটি ব্যান্ডের মাধ্যমে তিনি এই নতুন আন্দোলনের অন্যতম প্রধান আলোচক হয়ে উঠেছেন।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দ্য টাইমস জানিয়েছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন যখন ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু করলেন, সেই সময়টিতে ঝাদানের ব্যান্ড একটি কনসার্টে যাওয়ার পথে ট্রেনে ছিল। কিন্তু খবরটি শুনে তারা খারকিভে ফিরে আসেন। এখানেই বসবাস করেন ঝাদান। পরে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিলে তিনি ‘খার্তিয়া’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী ব্রিগেড গঠন করেন। এই ব্রিগেড খারকিভ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর ঝাদান বুঝতে পারেন, যুদ্ধ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তথ্যের একটি ফাঁক রয়েছে। আর এই ফাঁকটি নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে সহজেই পূরণ করছে রাশিয়া।

বিষয়টি বুঝতে পেরে যুদ্ধক্ষেত্রে একটি রেডিও স্টেশন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন ঝাদান। এই রেডিওর মাধ্যমে তিনি মূলত রাশিয়ার প্রোপাগান্ডা এবং যুদ্ধক্ষেত্র নিয়ে ভ্রান্ত ধারণাগুলো মোকাবিলা করেন। ঝাদান বলেন, ‘আমরা বোঝাতে চাই, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া মানে আর ফিরে না আসা—এমন নয়।’

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নিজ ব্যান্ড দলের সঙ্গে গাইছেন ঝাদান। ছবি: দ্য টাইমস
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নিজ ব্যান্ড দলের সঙ্গে গাইছেন ঝাদান। ছবি: দ্য টাইমস

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অনেক সাহিত্যিক প্রাণ হারিয়েছেন। এঁদের মধ্যে কবি ভলোদিমির ভাকুলেঙ্কোকে ২০২২ সালে অপহরণ করেছিল রুশ বাহিনী। পরে একটি গণকবরে তাঁকে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ভাকুলেঙ্কোর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আরেক সাহিত্যিক ভিক্টোরিয়া আমেলিনা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন।

ঝাদানের মতে, সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া মানে শুধু মুখোমুখি যুদ্ধ নয়, একই সঙ্গে এটি সাংস্কৃতিক অস্তিত্বেরও লড়াই। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শুধু রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিহত করা নয়, আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখাও।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত