Ajker Patrika

ইউক্রেনের ব্যাপক ড্রোন হামলার পর বন্ধ মস্কোর বিমানবন্দর

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২০ জুলাই ২০২৫, ২৩: ৩৯
সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের বিমান হামলায় মস্কোর কয়েকটি বিমানবন্দরে বেশ কয়েকবার ফ্লাইট ব্যাহত হয়েছে। ছবি: ইপিএ
সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের বিমান হামলায় মস্কোর কয়েকটি বিমানবন্দরে বেশ কয়েকবার ফ্লাইট ব্যাহত হয়েছে। ছবি: ইপিএ

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। হামলার পর রাজধানীর কয়েকটি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে অন্তত ১৪০টি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছে। অন্যদিকে রুশ বিমান হামলায় ইউক্রেনে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিবিসি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে, গতকাল শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে ২৩০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৭টি মস্কোর ওপর দিয়ে উড়ে আসা ড্রোন ছিল। রাশিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানীর চারটি প্রধান বিমানবন্দরে উড্ডয়ন-অবতরণে বিঘ্ন ঘটে এবং ১৩০টিরও বেশি ফ্লাইটকে অন্য রুটে ঘুরিয়ে দিতে হয়। তবে বর্তমানে সব বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।

রুশ অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটরস আজ জানিয়েছে, ড্রোন হামলার কারণে মস্কোর বিমানবন্দরগুলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দশবার বন্ধ ছিল। মস্কোর দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত কালুগা অঞ্চলও হামলার শিকার হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল সকাল থেকে কালুগা অঞ্চলে ৪৫টি ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে, যার ফলে কালুগা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।

এ ছাড়া ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রোস্তভ ও ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে এবং কৃষ্ণ সাগরের ওপরও ড্রোন ভূপাতিত করার খবর দিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব হামলায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগেও ইউক্রেনের ড্রোন হামলা রাশিয়ার বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। গত মে মাসে কিয়েভ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫০০টিরও বেশি ড্রোন হামলা চালানোর পর রাশিয়ার বিমানবন্দরগুলোতে অন্তত ৬০ হাজার যাত্রী আটকা পড়েছিল বলে জানায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে ইউক্রেনের আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিমান হামলায় দোনেৎস্কের বিভিন্ন অংশে দুজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া সুমি শহরে আবাসিক ভবনে আগুন লেগে ৭৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা মারা গেছেন। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, গতকাল রাতে তারা ৫৭টি রুশ ড্রোনের মধ্যে ১৮টি ভূপাতিত করেছে এবং আরও সাতটি ড্রোন তাদের রাডার জ্যাম করার কারণে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

সুমি ও দোনেৎস্ক ছাড়াও খারকিভ, দনিপ্রোপেত্রোভস্ক ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের ফ্রন্টলাইন এলাকাগুলোতেও হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলার মধ্যেই ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি চুক্তির দিকে এগোতে প্রস্তুত, তবে মস্কোর প্রধান অগ্রাধিকার হলো তাদের ‘লক্ষ্য অর্জন’।

তিনি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইউক্রেন সংকটকে শান্তিপূর্ণ সমাধানে নিয়ে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, এর জন্য প্রচেষ্টা দরকার এবং এটি সহজ নয়।

মস্কোর ইউক্রেনে পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের প্রায় সাড়ে তিন বছর পূর্ণ হতে চলেছে। গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোর সঙ্গে নতুন করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এর উদ্দেশ্য গত মাসে স্থগিত হওয়া আলোচনা পুনরায় শুরু করা। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এর আগে যুদ্ধ বন্ধের জন্য বেশ কয়েকবার আলোচনার চেষ্টা হলেও যুদ্ধবিরতি অর্জন করা সম্ভব হয়নি, তবে বন্দিবিনিময় হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত