Ajker Patrika

ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন সরাসরি আলোচনা আজ, ফলাফল কী হতে পারে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ মে ২০২৫, ১৪: ১৭
ফ্রান্সের এলিসি প্রাসাদে ২০১৯ সালের এক বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি
ফ্রান্সের এলিসি প্রাসাদে ২০১৯ সালের এক বৈঠকে ভ্লাদিমির পুতিন ও ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: এএফপি

প্রায় তিন বছর পর সরাসরি আলোচনায় বসতে যাচ্ছে লড়াইরত দুই প্রতিবেশী রাশিয়া ও ইউক্রেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের ঐতিহাসিক শহর ইস্তাম্বুলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সবার নজর এখন ইস্তাম্বুলের দিকে। কারণ, এই বৈঠকই রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।

গতকাল বুধবার গভীর রাতে রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন ঘোষণা দিয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই আলোচনায় উপস্থিত থাকবেন না। অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে আলোচনায় যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও তিনিও উপস্থিত থাকবেন না বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত রোববার পুতিন তুরস্কে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব দেন। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যরা যেখানে এত দিন প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার চেষ্টা চালিয়েছিল, সেখানে পুতিন সরাসরি বৈঠকের কথা বলেন। তিনি ২০২২ সালে তুরস্কে হওয়া সরাসরি আলোচনার কথা উল্লেখ করে তা আবার শুরু করার পক্ষে যুক্তি দেন।

পুতিন বলেন, ‘২০২২ সালে আলোচনা রাশিয়া ভেঙে দেয়নি। কিয়েভই সেটা করেছিল। তবু আমরা কিয়েভকে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই সরাসরি আলোচনা আবার শুরু করার প্রস্তাব দিচ্ছি।’ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করে। এর অল্প সময় পরই তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেন আলোচনা করেছিল।

ভলোদিমির জেলেনস্কির মতে, রাশিয়া ইউক্রেনের কাছ থেকে দনবাস অঞ্চলের দখল ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানানোয় সেই আলোচনা ভেঙে যায়। দনবাস অঞ্চল ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত, যার কিছু অংশ রাশিয়া দখল করে নিয়েছে।

জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়া চেয়েছিল ইউক্রেন দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র সমর্পণ করুক, নিরপেক্ষতা ঘোষণার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনুক এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীর আকার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে ফেলুক। জেলেনস্কি সে সময় বলেছিলেন, ‘কোনো আলোচনাই হয়নি, এটি ছিল এক খুনির চরমপত্র।’

জেলেনস্কি আগে বলেছিলেন, যেকোনো শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়াকে দখল করা ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি বলেন, ন্যাটো যদি বর্তমানে কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউক্রেনের অংশের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেয় তবে যুদ্ধের ‘উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়’ শেষ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া যে ভূমি দখল করেছে তা কূটনৈতিকভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।

লন্ডনভিত্তিক থিংক ট্যাংক চ্যাথাম হাউসের সিনিয়র কনসালটিং ফেলো কিয়ের জাইলস আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য আমেরিকা যে চাপ সৃষ্টি করেছে, তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে। মনে হচ্ছে এই পরিবর্তনের সাম্প্রতিক উপাদানগুলো, বিশেষ করে ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপীয় সংহতি, রাশিয়াকে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে বাধ্য করেছে।’

ইউক্রেনের চার প্রধান ইউরোপীয় মিত্র পুতিনকে নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বা নতুন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে বলে চরমপত্র দেওয়ার একদিন পর আলোচনায় পুতিনের আগ্রহ দেখা দেয়। এই ৪ ইউরোপীয় দেশ হলো—ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং পোল্যান্ড। তারা কিয়েভ সফরের পর এই চরমপত্র দেয়।

এই চার দেশ পুতিনকে ১২ মে পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয়। ১১ মে পুতিন যুদ্ধবিরতি মানার প্রতিশ্রুতি না দিয়ে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে কার্যকর আলোচনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর উদ্দেশ্য হলো—সংঘাতের মূল কারণ দূর করা, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে একটি দীর্ঘমেয়াদি, স্থায়ী শান্তি স্থাপন করা।’

আলোচনা আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনাটি ইস্তাম্বুলের দোলমাবাগ প্রাসাদে রুদ্ধদ্বার কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। ইস্তাম্বুল শহর এশিয়া ও ইউরোপের সীমানা জুড়ে অবস্থিত। বসফোরাস প্রণালির ওপর অবস্থিত এই প্রাসাদটি ১৯ শতকের মাঝামাঝি থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল।

চার ইউরোপীয় নেতা—ব্রিটেনের কিয়ের স্টারমার, ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ এবং পোল্যান্ডের দোনাল্দ তুস্ক—বলেছেন, তাঁরা পুতিনকে তাদের চরমপত্র সম্পর্কে ফোন কলের মাধ্যমে ট্রাম্পকে জানিয়েছেন এবং ইঙ্গিত দেন, ট্রাম্পও এর পক্ষে। কিন্তু পুতিন যখন কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানান, তখন ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে ইউক্রেনকে ‘অবিলম্বে’ রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন।

ট্রাম্প ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ অবসান ঘটাবেন। ট্রাম্প প্রশাসন ফেব্রুয়ারি থেকেই সেই প্রচেষ্টা শুরু করে। সে সময় সৌদি আরবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের পৃথক বেশ কয়েক দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কোনো চুক্তি সে সময় হয়নি।

এ ছাড়া, গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার অবস্থান থেকে একধাপ পিছিয়ে আসার ইঙ্গিত দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছিল, তারা চায় ইউরোপ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষায় নেতৃত্ব দিক। দেশটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অগ্রাধিকার রয়েছে, যার মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা অন্যতম। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহে ট্রাম্প এবং তাঁর দল আলোচনায় অর্থপূর্ণ অগ্রগতির অভাবে ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং শান্তি মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা থেকে সরে আসার হুমকি দিয়েছেন।

আজ ইস্তাম্বুলে যে আলোচনা হবে, তাতে ইউক্রেনের যোগদানের ওপর জোর দেওয়ার ব্যাখ্যায় ট্রাম্প যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘অন্তত তারা নির্ধারণ করতে পারবে যে একটি চুক্তি সম্ভব কিনা এবং যদি সম্ভব না হয় তবে ইউরোপীয় নেতারা এবং যুক্তরাষ্ট্র জানতে পারবে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়িয়েছে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারবে!’

এদিকে, পুতিনের আহ্বানের পর জেলেনস্কি সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প (রুশ প্রেসিডেন্ট) পুতিনের সঙ্গে সরাসরি যে আলোচনার ধারণা দিয়েছেন, তা সমর্থন করেছি। আমি প্রকাশ্যে সাক্ষাতের জন্য আমার প্রস্তুতি তুলে ধরেছি। আমি তুরস্কে থাকব। আমি আশা করি, রাশিয়ানরা সাক্ষাৎ এড়িয়ে যাবে না।’

গত মঙ্গলবারও জেলেনস্কি ঘোষণা করেন, তিনি বৃহস্পতিবার আঙ্কারায় থাকবেন। এ সময় তিনি সেখানে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে দেখা করবেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা পরবর্তীতে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইউক্রেন ও রাশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগকে ইস্তাম্বুলের আলোচনায় যোগ দিতে পাঠাবেন। বুধবার রাতে রাশিয়া আলোচনার জন্য তাদের দলের ঘোষণা দিয়েছে। এতে পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোমিন এবং প্রধান গোয়েন্দা অধিদপ্তরের পরিচালক ইগর কোস্তিউকভ।

জেলেনস্কি আগে বলেছিলেন, পুতিন উপস্থিত থাকলেই কেবল তিনি সরাসরি আলোচনায় থাকবেন। জেলেনস্কি মঙ্গলবার এক্স পোস্টে বলেন, ‘রাশিয়ায় সবকিছুর সিদ্ধান্ত পুতিন নেন, তাই তিনিই যুদ্ধের সমাধান করবেন। এটা তাঁর যুদ্ধ। সুতরাং, আলোচনা তারই সঙ্গে হওয়া উচিত।’ পুতিন যেহেতু এখন উপস্থিত থাকার জন্য প্রস্তুত নন, তাই জেলেনস্কি নিজে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনায় অংশ নেবেন কিনা বা তিনি তাঁর দলের ওপর ছেড়ে দেবেন কিনা তা স্পষ্ট নয়।

তবে, জেলেনস্কি অনেক দিক থেকে পুতিনের চেয়ে এগিয়ে গেছেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে এবং তাঁকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে। কিয়ের জাইলস বলেছেন, ‘জেলেনস্কি রাশিয়ার সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যাতে তারা দেখাতে পারে যে, তাদের সত্যিকারের আগ্রহ আছে; রাশিয়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে নাকি করবে না, সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে।’

এদিকে, তুরস্কের বৈঠকে ঠিক কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তা অনুমান করা কঠিন। জাইলস বলেছেন, ‘বৈঠকে কোনো অর্থপূর্ণ আলোচনা হবে কি না তা ভবিষ্যদ্বাণী করা হঠকারিতা হবে। কারণ, দুই পক্ষের গ্রহণযোগ্য ফল এখনো অনেক দূরে। রাশিয়া ইউক্রেনকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিষ্ক্রিয় করতে চায়, আর ইউক্রেন টিকে থাকতে চায়।’

বর্তমানে, ইউক্রেন ৩০ দিনের নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে, রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে—তারা এই ধরনের যুদ্ধবিরতিতে যোগ দেওয়ার আগে তাদের বেশ কয়েকটি দাবি মানতে হবে। মস্কো বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থার ব্যাপারে নিশ্চয়তা চায় এবং ইউক্রেন যেন এই সুযোগে পুনরায় অস্ত্র সংগ্রহ ও আরও সৈন্য সমাবেশ না করে। এর পরিবর্তে, পুতিন সম্প্রতি সংক্ষিপ্ত, একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। তবে ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া আসলে কখনো মেনে চলেনি।

পুতিন রোববার বলেন, ‘আমরা এটা উড়িয়ে দিচ্ছি না যে এই আলোচনা চলাকালে, কিছু নতুন যুদ্ধবিরতি, একটি নতুন যুদ্ধবিরতি এবং একটি বাস্তব যুদ্ধবিরতি সম্পর্কে একমত হওয়া সম্ভব হবে, যা কেবল রাশিয়াই নয়, ইউক্রেনীয় পক্ষও মেনে চলবে। (এটি) হবে প্রথম পদক্ষেপ। আমি আবারও বলছি, এটি দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীল শান্তির দিকে এবং সশস্ত্র সংঘাত চালিয়ে যাওয়ার কোনো পূর্বাভাস নয়।’

জাইলস বলেছেন, যদি আলোচনা হয়, ‘তবে তা-ই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত শান্তি আলোচনা বলে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনোটিই আসলে সেরকম ছিল না।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে হওয়া দুটি সমান্তরাল আলোচনার কথা উল্লেখ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১২৩ বন্দী মুক্তির বিনিময়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার পেল বেলারুশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি ও বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা। ছবি: এএফপি
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি ও বেলারুশের বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা। ছবি: এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পর ১২৩ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা ও শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াতস্কি। বেলারুশে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জন কোয়ালের সঙ্গে আলোচনার পরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দী মুক্তির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার মিত্রদেশ বেলারুশের ওপর আরোপিত কিছু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সার উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পটাশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা। পটাশ বেলারুশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য।

১২৩ বন্দী মুক্তির পর জন কোয়াল বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে পর্যায়ক্রমে আরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’ বেলারুশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, পটাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়া হবে।

২০২০ সাল থেকে কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোলেসনিকোভা দীর্ঘ সময় একাকী বন্দিত্বে ছিলেন। মুক্তির পর তাঁর বোন তাতিয়ানা খোমিচ ভিডিও কলে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খোমিচ বলেন, ‘সে মুক্ত। তাকে ভালো ও সুস্থই দেখাচ্ছে। তাকে জড়িয়ে ধরার অপেক্ষায় আছি।’ তিনি আরও জানান, কোলেসনিকোভা প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আলোচনায় অংশ নেওয়া বেলারুশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে, বেলারুশের একটি আদালত ২০২৩ সালের মার্চে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধিকারকর্মী অ্যালেস বিলিয়াতস্কিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। সে সময় দেশটির আদালত চোরাচালান ও জনজীবনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কর্মকাণ্ডে অর্থায়নে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

৬৩ বছর বিলিয়াতস্কি ২০২২ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী তিনজনের একজন। ২০২১ সালে বেলারুশের বিতর্কিত নির্বাচনের পর বিক্ষোভে জড়িয়ে পড়লে বিলিয়াতস্কিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী দলকে সহযোগিতার জন্য অবৈধভাবে বাইরে থেকে বেলারুশে অর্থ আনার অভিযোগে আনা হয়।

মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকজনকে শিগগিরই লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বাইরে লোকজন জড়ো হচ্ছেন।

এই সমঝোতাকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর জন্য বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পর ব্যাপক বিক্ষোভ নিরাপত্তা বাহিনী কঠোরভাবে দমন করে। সে সময় শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন, তাঁদের মধ্যেই ছিলেন কোলেসনিকোভা।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর বেলারুশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরও কড়া হয়। কারণ, দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করেই রুশ সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কোয়াল জানান, আলোচনায় তিনি লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেছেন এবং সম্ভাব্য শান্তি আলোচনায় মিনস্ক কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে, সে বিষয়েও মতবিনিময় হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, মিনস্কের সঙ্গে ওয়াশিংটনের এই সম্পৃক্ততা যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের ইঙ্গিত, যা ইউরোপের অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ইউরোপ যেখানে এখনো বেলারুশকে বিচ্ছিন্ন ও নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চাপে রাখতে চায়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাশিয়ার হামলায় বিদ্যুৎবিহীন ইউক্রেনের ১০ লাখ পরিবার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা শহরের বর্তমান চিত্র। ছবি: ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা শহরের বর্তমান চিত্র। ছবি: ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ

রাতভর রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে দেশটির অন্তত ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেঙ্কোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, রাতভর চালানো এসব হামলায় দেশের পাঁচটি অঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগুন নেভানো এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামো রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। তবে শীতকাল ঘনিয়ে আসায় সাম্প্রতিক সময়ে এসব হামলার মাত্রা আরও বেড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে জার্মানি সফরে যাচ্ছেন। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবেন। বার্লিনে প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির সর্বশেষ খসড়া নিয়েই মূলত আলোচনা হবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, রাতভর হামলায় রাশিয়া ৪৫০টির বেশি ড্রোন ও ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লাইমেঙ্কো জানান, হামলার শিকার অঞ্চলগুলো হলো—দনিপ্রোপেত্রোভস্ক, কিরোভোহরাদ, মাইকোলাইভ, ওডেসা ও চেরনিহিভ।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, এসব হামলায় তারা কিনঝাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো মাঝপথে দিক পরিবর্তন করতে পারে, ফলে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন।

আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংযোগ সারা রাত বিচ্ছিন্ন ছিল। হামলার কারণে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে আবার বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। রুশ নিয়ন্ত্রণাধীন এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বর্তমানে চালু নেই, তবে রিঅ্যাক্টর ঠান্ডা রাখতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রয়োজন।

এদিকে রাশিয়ার সারাতোভ অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় একটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর রোমান বুসারগিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থাইল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করল কম্বোডিয়া

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া মধ্যকার পোইপেট আন্তর্জাতিক সীমান্ত চেকপয়েন্ট। ছবি: বিসিবি
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া মধ্যকার পোইপেট আন্তর্জাতিক সীমান্ত চেকপয়েন্ট। ছবি: বিসিবি

চলমান সংঘর্ষের জেরে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সব সীমান্তপথ বন্ধ করে দিয়েছে কম্বোডিয়া। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ থাকবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তাঁর এমন দাবির কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার ভোর থেকে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে।

শুক্রবার রাতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, দুই দেশ ‘আজ সন্ধ্যা থেকে সংঘর্ষ বন্ধ করতে’ এবং অক্টোবরে তাঁর সামনে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘উভয় দেশ শান্তির জন্য প্রস্তুত।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার পরও থাইল্যান্ড বা কম্বোডিয়া কেউই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলের বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে—তিনি (থাই প্রধানমন্ত্রী) ট্রাম্পকে বলেছেন, কম্বোডিয়া তাদের সব সেো প্রত্যাহার করলে এবং সীমান্ত থেকে ভূমি মাইন অপসারণ করলেই কেবল যুদ্ধবিরতি সম্ভব।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমাদের দেশের ক্ষতি ও দেশের মানুষের ওপর হুমকি অব্যাহত রয়েছে। আমরা যত দিন পর্যন্ত নিরাপদ বোধ করছি না, তত দিন থাইল্যান্ড সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। আমি এই কথাটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই। আজ সকালে আমাদের সামরিক পদক্ষেপই তার প্রমাণ।’

অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এতে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির তোয়াক্কা না করে আজ শনিবারও সীমান্তে বোমা ও ভারী হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, থাই যুদ্ধবিমান সীমান্তের আশপাশের হোটেল ও একটি সেতুতে বোমা হামলা করেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

কম্বোডিয়া আরও জানিয়েছে, থাই সামরিক বাহিনী দুইটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সাতটি বোমা ফেলেছে। তারা এখনো বোমা হামলা বন্ধ করেনি।

নতুন করে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে এবং উভয় পক্ষের প্রায় ৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই দুই দেশ তাদের ৮০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত নিয়ে বিরোধে লিপ্ত। ১৯০৭ সালে ফ্রান্স যখন কম্বোডিয়ার ঔপনিবেশিক শাসক ছিল, তখন ফরাসি মানচিত্রকারদের আঁকা সীমান্তরেখা থেকেই এই বিরোধের সূত্রপাত।

গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দেশ দুটি একটি ‘তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছিল। কিন্তু এরপর উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার সেনারা ভূমি মাইন স্থাপন করছে, যার ফলে সাতজন থাই সৈন্য হাত-পা হারিয়েছে। কম্বোডিয়া অবশ্য দাবি করেছে, মাইনগুলো ১৯৮০-এর দশকের গৃহযুদ্ধের সময়কার।

এদিকে, থাইল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে যে তারা যেন এই সংঘাতকে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত না করে, যেমনটা গত জুলাইয়ে ট্যারিফ ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘর্ষ চলছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘাতে পুরসাত প্রদেশে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। ছবি: এএফপি
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘাতে পুরসাত প্রদেশে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। ছবি: এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তাঁর এমন দাবির কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার ভোর থেকে দুই দেশের বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু রয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, দুই দেশ ‘আজ সন্ধ্যা থেকে সংঘর্ষ বন্ধ করতে’ এবং অক্টোবরে তাঁর সামনে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘উভয় দেশ শান্তির জন্য প্রস্তুত।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলার পরও থাইল্যান্ড বা কম্বোডিয়া কেউই অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুলের বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে—তিনি (থাই প্রধানমন্ত্রী) ট্রাম্পকে বলেছেন, কম্বোডিয়া তাদের সব সেনা প্রত্যাহার করলে এবং সীমান্ত থেকে ভূমি মাইন অপসারণ করলেই কেবল যুদ্ধবিরতি সম্ভব।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমাদের দেশের ক্ষতি ও দেশের মানুষের ওপর হুমকি অব্যাহত রয়েছে। আমরা যত দিন পর্যন্ত নিরাপদ বোধ করছি না, তত দিন থাইল্যান্ড সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। আমি এই কথাটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই। আজ সকালে আমাদের সামরিক পদক্ষেপই তার প্রমাণ।’

অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সরকার জানিয়েছে, তাদের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের অবশ্যই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

এতে স্পষ্ট হয়, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির তোয়াক্কা না করে আজ শনিবারও সীমান্তে বোমা ও ভারী হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, থাই যুদ্ধবিমান সীমান্তের আশপাশের হোটেল ও একটি সেতুতে বোমা হামলা করেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, কম্বোডিয়ার রকেট হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।

কম্বোডিয়া আরও জানিয়েছে, থাই সামরিক বাহিনী দুটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সাতটি বোমা ফেলেছে। তারা এখনো বোমা হামলা বন্ধ করেনি।

নতুন করে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে এবং উভয় পক্ষের প্রায় সাত লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই দুই দেশ তাদের ৮০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত নিয়ে বিরোধে লিপ্ত। ১৯০৭ সালে ফ্রান্স যখন কম্বোডিয়ার ঔপনিবেশিক শাসক ছিল, তখন ফরাসি মানচিত্রকারদের আঁকা সীমান্তরেখা থেকেই এই বিরোধের সূত্রপাত।

গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় দেশ দুটি একটি ‘তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছিল। কিন্তু এরপর উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকে। থাইল্যান্ড অভিযোগ করেছে, কম্বোডিয়ার সৈন্যরা ভূমি মাইন স্থাপন করছে, যার ফলে সাতজন থাই সৈন্য হাত-পা হারিয়েছে। কম্বোডিয়া অবশ্য দাবি করেছে, মাইনগুলো ১৯৮০-এর দশকের গৃহযুদ্ধের সময়কার।

এদিকে, থাইল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে যে তারা যেন এই সংঘাতকে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত না করে, যেমনটা গত জুলাইয়ে ট্যারিফ ব্যবহারের মাধ্যমে করা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামান

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

ব্রিটেনে নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে কোটি মুসলিম, বেশির ভাগই বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি

মা-বাবাকে নির্যাতন, ছেলেকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখল প্রতিবেশীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত