Ajker Patrika

পোলিশ নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে গ্রিসে বাংলাদেশি যুবকের যাবজ্জীবন

অনলাইন ডেস্ক    
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫: ০০
Thumbnail image
নিহত আনাস্তাসিয়া। ছবি: সংগৃহীত

পোল্যান্ডের নাগরিক আনাস্তাসিয়াকে (২৭) অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার অপরাধে বাংলাদেশি যুবক সালাহউদ্দিনকে (৩৩) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন গ্রিসের একটি আদালত। গতকাল শুক্রবার ঘোষিত এই রায় গ্রিসের গণমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গ্রিসের কস দ্বীপে সংঘটিত এ ঘটনার মামলাটি সাম্প্রতিক দশকগুলোর অন্যতম নৃশংস অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে গ্রিক গণমাধ্যমে।

পোল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম টিভিএন-২৪ গ্রিক গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলার শুনানি শুরু হয়। মামলার কৌঁসুলি সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে আনাস্তাসিয়াকে অপহরণ, ধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগ আনেন। পরে শুনানি ও অন্যান্য যুক্তিতর্ক শেষে গতকাল শুক্রবার আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

গ্রিক সংবাদমাধ্যম রোদিয়াকি জানিয়েছে, পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় আসামি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। তবে তাঁর আবেদন আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। এদিকে নিহত পোলিশ নারীর বাবা পোলিশ গণমাধ্যম ভার্চুয়ালনা পোলাস্কাকে জানিয়েছেন, এই রায় এখনো চূড়ান্ত নয়।

মামলার ঘটনাপ্রবাহ থেকে জানা গেছে, এ ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। কারণ মামলার কাগজপত্রের কিছু অংশ ২ ডিসেম্বরেই বিবাদীপক্ষের হাতে পৌঁছায়। কস দ্বীপের একটি হোটেলে কাজ করতেন আনাস্তাসিয়া। ২০২৩ সালের জুনের কোনো এক দিনে তিনি তাঁর কর্মঘণ্টা শেষ হওয়ার পর নিখোঁজ হন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি দক্ষিণ এশীয় কিছু কর্মীর সঙ্গে কেনাকাটা ও আড্ডা দিচ্ছেন, যাদের মধ্যে সালাহউদ্দিনও ছিলেন। পরে তাঁকে ওই ব্যক্তির স্কুটারে চড়ে তাঁর বাসায় যেতে দেখা যায়। এটিই ছিল আনাস্তাসিয়াকে জীবিত অবস্থায় শেষবার দেখা।

আনাস্তাসিয়া তাঁর প্রেমিককে একটি বার্তা পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন, তবে এরপর থেকে তাঁর সঙ্গে আর কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। সালাহউদ্দিনকে শুরু থেকেই প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, কারণ তিনি ছিলেন আনাস্তাসিয়ার সঙ্গে দেখা করা শেষ ব্যক্তি।

এই মামলার তদন্তকারী ডেভিড বুরজাকি জানান, সালাহউদ্দিন ইতালিতে যাওয়ার জন্য একটি বিমানের টিকিট কিনেছিলেন এবং দ্বীপ ছাড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। ডেভিড বুরজাকি বলেন, ‘তিনি (সালাহউদ্দিন) গুগলে টাইপ করেছিলেন, “মৃতদেহ কীভাবে লুকানো যায়, আঙুলের ছাপ কীভাবে মোছা যায় এবং তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার উপায়।” গ্রেপ্তারের পর আসামি তাঁর অপরাধ অস্বীকার করেন।’

স্থানীয় পুলিশের ভাষ্য অনুসারে, নিহত আনাস্তাসিয়ার মরদেহ একটি স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা খুঁজে পান। কস দ্বীপের একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান সল্ট লেকের কাছে প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় ডালপালার নিচে লুকানো অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয় মরদেহ। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আনাস্তাসিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় এবং হত্যার আগে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছিল।

কস দ্বীপে কাজ করা সালাহউদ্দিনের আচরণ গ্রেপ্তারের আগে থেকেই অস্বাভাবিক ছিল বলে জানা যায়। এই অপরাধ ব্যাপক ঘৃণার জন্ম দিয়েছে এবং গ্রিসে নিরাপত্তা ও অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি আচরণ নিয়ে আলোচনা উসকে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত