Ajker Patrika

স্ত্রীকে অচেতন করে শতবার অন্যকে দিয়ে ধর্ষণ করিয়েছেন স্বামী, যা বললেন ভুক্তভোগী 

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ৪৭
Thumbnail image

স্ত্রীকে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে দিয়ে প্রথমে অচেতন করতেন স্বামী। পরে বিভিন্ন ধরনের লোক ডেকে আনতেন নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণ করানোর জন্য। এমনই জঘন্য ঘটনা ঘটেছে ফ্রান্সে। সম্প্রতি ফরাসি পুলিশ এই বিষয়ে তদন্ত করতে শুরু করেছে। নিজের সঙ্গে এই নিগ্রহের ব্যাপারে মুখ খুলেছেন ভুক্তভোগী বর্তমানে ৭২ বছর বয়সী নারী জিসেল পেলিকোঁ। 

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জিসেল পেলিকোঁ আদালতকে জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী তাঁকে অচেতন করে বিগত কয়েক দশক ধরে অর্ধশতাধিক লোককে দিয়ে ধর্ষণ করিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর স্বামী তাঁকে ‘ন্যাকড়ার পুতুলের’ মতো ব্যবহার করেছে এবং তাঁকে ‘পাপের বেদি’তে তাঁকে বলি দিয়েছিল। 

দক্ষিণ ফ্রান্সে এভিনিও শহরের বাসিন্দা জিসেল পেলিকোঁ জানান, তাঁর স্বামী ডমিনিক পেলিকোঁ তাঁর সঙ্গে বিগত কয়েক দশকে প্রায় ১০০ বার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ডমিনিক জিসেলের খাবার বা ওয়াইনের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে আগে অচেতন করত। এরপর লোকজন ডেকে এনে জিসেলকে ধর্ষণ করাত। এই সময় ডমিনিক নিজে এই ধর্ষণের ঘটনার ছবি তুলত ও ভিডিও করে রাখত। তদন্তকারীরা পরে এসব ভিডিও ও ছবি খুঁজে পান। 

আদালতে জিসেল বলেন, ‘আমাকে পাপের বেদিতে বলি দেওয়া হয়েছিল...তাঁরা আমাকে ন্যাকড়ার পুতুলের মতো, ময়লার ব্যাগের মতো ব্যবহার করেছে। আমার কোনো পরিচয় বা সত্তাই ছিল না। আমি জানি না, আমি আর কোনো দিন আমাকে ফিরে পাব কি না।’ জিসেল আরও বলেন, ‘আমার যা ছিল সব ভেঙে পড়েছে। বর্বরতার, ধর্ষণের এসব দৃশ্য আমাকে শেষ করে দিয়েছে।’ 
 
ফরাসি এই নারী আরও জানান, তাঁর স্বামী এমন এক ব্যক্তিকে দিয়ে তাঁকে ছয়বার ধর্ষণ করান, যে কি না এইডস আক্রান্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘আমার জীবন বিপন্ন ছিল, কিন্তু কেউ একটা সেকেন্ডের জন্যও বর্বরতা থামায়নি। আমার এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়েছিল। কারণ, একজন লোক ছয়বার এসেছিল (আমাকে ধর্ষণ করতে) যে কি না এইচআইভি পজিটিভ ছিল।’ 

জিসেল জানান, দক্ষিণ ফ্রান্সের একটি গ্রামে তাঁদের বাড়ির কাছে একটি সুপার মার্কেটে একজন নিরাপত্তারক্ষীর হাতে ধরা পড়ার পরে তিনি তাঁর স্বামীর কম্পিউটার তদন্ত করেন এবং পরে ‘পুলিশ আমার জীবন বাঁচায়’। জিসেল তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া এই বর্বরতাকে ‘বিস্ফোরণ’ ও ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করেন। 

ভুক্তভোগী এই নারী আরও বলেন, ‘আমার পৃথিবী ভেঙে পড়ছে। আমার সবকিছু ভেঙে পড়ছে; ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি যা কিছু তৈরি করেছিলাম...সত্যি বলতে, এগুলো আমার জন্য ভয়ংকর।’

পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদনে আদালতকে জানিয়েছে, মামলাটি তদন্ত করার সময় পুলিশ ডমিনিক পেলিকোঁর কম্পিউটারের সঙ্গে সংযুক্ত ইউএসবি ড্রাইভে একটি ফাইল দেখে। সেটি অনুসন্ধান করার সময় কর্মকর্তারা প্রায় ১০০ বার ধর্ষণের শিকার ওই নারীর প্রায় ২০ হাজার ছবি ও ভিডিও খুঁজে পান। 

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ডমিনিক ঘুমের ওষুধ এবং অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি ওষুধ গুঁড়ো করে স্ত্রীর খাবার বা ওয়াইনে মিশিয়ে দিতেন। তারপর তিনি একটি অনলাইন চ্যাটরুমের মাধ্যমে পুরুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে ধর্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানাতেন। ২৬ থেকে ৭৪ বছর বয়সী ৫০ জন পুরুষের এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। 

জিসেলের স্বামী এবং অন্য ১৪ অভিযুক্ত ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তবে ৩৫ জন পুরুষ অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে যৌনতায় জিসেলের সম্মতি ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত