Ajker Patrika

পুতিনের হাত থেকে বাঁচতে কী খাবেন, কোথায় যাবেন প্রিগোঝিন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, ২০: ৪৫
Thumbnail image

রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের হুমকি দিয়ে দেশটিতে একটি অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছিল ভাড়াটে যোদ্ধার দল ভাগনার গ্রুপ। গত শুক্রবার ২৫ হাজার অনুগত সদস্য নিয়ে রুশ সীমান্তের ভেতরে প্রবেশ করে মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিলেন দলটির প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন।

তবে মস্কো থেকে কয়েক শ কিলোমিটার দূরে থাকতেই ক্রেমলিনের সঙ্গে দেন-দরবার করে থেমে যায় ভাগনার গ্রুপ। বেলারুশসহ পুতিনের মিত্র শক্তিগুলো প্রিগোঝিনের সঙ্গে ক্রেমলিনের এই দেন-দরবার করিয়ে দেন। ফলস্বরূপ মস্কোর দিকে যাত্রা থামিয়ে আবারও উল্টোদিকে যাত্রা শুরু করে ভাগনার গ্রুপ। প্রিগোঝিন দাবি করেন, রুশ রক্তপাত এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর দল।

পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, অনুগত সেনাদের নিয়ে আপাতত বেলারুশেই অবস্থান করবেন প্রিগোঝিন। কিন্তু মাথা গরম করা প্রিগোঝিনের জন্য সামনের দিনগুলো কেমন হতে যাচ্ছে তা-ই এখন আলোচনার বিষয়বস্তু। কারণ, তাঁর ওপর খেপে আছেন রাশিয়ার মহাশক্তিধর প্রেসিডেন্ট পুতিন। প্রিগোঝিনের অভ্যুত্থান চেষ্টাকে তিনি বিশ্বাসঘাতকতার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বলেছিলেন, রুশ জনগণের পিঠে ছুরি মেরেছেন প্রিগোঝিন।

পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো দাবি করে থাকে, বিরুদ্ধাচরণ করা ব্যক্তিদের কখনোই ক্ষমা করেন না পুতিন। বিরোধী কণ্ঠস্বর এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের নির্মূল করতে গুপ্ত হত্যা থেকে শুরু করে অনেক নির্মম পদ্ধতি বেছে নেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধী রাজনীতিবিদ অ্যালেক্সি নাভালনির শরীরে মারাত্মক রাসায়নিক প্রয়োগ করারও অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

একসময়ের বন্ধু হলেও প্রিগোঝিন যে পুতিনকে ভয়াবহভাবে বিচলিত করেছেন সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং বিষয়টি নিয়ে পুতিনের প্রতিক্রিয়াই তার প্রমাণ। এ অবস্থায় বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, পুতিনের রোষানল থেকে সহজে পার পাবেন না ক্রেমলিনের দিকে অস্ত্র তাক করা প্রিগোঝিন। ইতিমধ্যেই তাঁর দলকে রুশ সেনাবাহিনীর সহযোগীর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। 

বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলেও এ ঘটনায় নির্মম ফল অপেক্ষা করছে প্রিগোঝিনের জন্য। ভবিষ্যতে তিনি কীভাবে নিরাপদ থাকবেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। 

স্কাই নিউজের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ব্রিটিশ এমপি এবং যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স ডিফেন্স সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান টবিয়াস এলউড। তার মতে, নিজের সৈন্যদের নিরাপত্তায় থাকলেও খাদ্যে বিষক্রিয়াসহ গুপ্তহত্যার স্বীকার হতে পারেন প্রিগোঝিন। টবিয়াস বলেন, ‘যদি আমি তাঁর (প্রিগোঝিন) জায়গায় থাকতাম, তবে আমি কী খাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি—সেসব বিষয়ে অনেক সতর্ক থাকতাম।’

যেকোনো বিরোধী কণ্ঠকে পুতিন নিজেই চেপে ধরেন মন্তব্য করে টবিয়াস বলেন, ‘তিনি নিশ্চিতভাবে নীলনকশা করবেন।’

তবে ঘটনা শেষ হতে না হতেই প্রিগোঝিনের ওপর পুতিন পদক্ষেপ নিতে শুরু করবেন—এমনটাও মনে করেন না ব্রিটিশ নেতা। তাঁর মতে, ধীরে ধীরে মাসের পর মাস সময় নিয়ে পুতিন তাঁর ষড়যন্ত্রের জালে আটকে ফেলবেন প্রিগোঝিনকে।

পুতিন সম্পর্কে টবিয়াস বলেন, ‘তাঁর কণ্ঠস্বর এখনো বলিষ্ঠ এবং শক্তিশালী প্রভাবক। তিনি একজন ভয়ংকর ব্যক্তি।’

এদিকে, ভাগনার গ্রুপের সৈন্যদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলেও সোমবার রাশিয়ার প্রধান গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন বলছে, বিদ্রোহের অভিযোগে নিশ্চিতভাবেই বিচারের মুখোমুখি হবেন প্রিগোঝিন।

সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অসংখ্য গাড়ির হর্ন বাজিয়ে দলবল নিয়ে বেলারুশ যাচ্ছেন প্রিগোঝিন। সঙ্গীরা দারুণ উৎফুল্ল বলেও দাবি করেছেন তিনি। তবে অভ্যুত্থান নাটক শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো শব্দ করেননি পুতিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত