Ajker Patrika

পশ্চিমাবিরোধী ঐক্য জোরদারে ‘প্রিয় বন্ধুর’ সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বেইজিংয়ে পুতিন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ১১: ৫৯
Thumbnail image

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণে বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালের দিকে বেইজিংয়ে পৌঁছান তিনি। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ‘সীমাহীন বন্ধুত্ব’ আরও গভীর এবং পশ্চিমাবিরোধী ঐক্য জোরদার করতেই চীন সফরে পুতিন—এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকেরা। চীন সফরে পুতিন বেইজিংয়ের আয়োজনে বেল্ট অ্যান্ড ফোরামেও যোগ দেবেন। 

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামীকাল বুধবার বেইজিংয়ে পুতিন ‘প্রিয় বন্ধু’ সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়া চীন আয়োজিত ও সি চিন পিং প্রবর্তিত রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভ ফোরামেও অংশ নেবেন পুতিন। ফোরামে পুতিন ছাড়াও বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা যোগ দেবেন। 

গত বছরের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। গত মাসে তিনি কিরগিজস্তান সফরে গিয়েছিলেন। এরপর এই প্রথম সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশের বাইরে সফরে গেলেন পুতিন। এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেনে আক্রমণের ঠিক আগে চীন সফর করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তিনি চীন ও রাশিয়ার মধ্যকার বন্ধুত্বকে ‘সীমাহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। এর পর থেকে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন খাতে লেনদেন ও সহযোগিতা বাড়িয়েছে।

চীন ও রাশিয়া দুই দেশকেই যুক্তরাষ্ট্র নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ও শত্রু বলে ঘোষণা করেছে। চীন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী এবং জাতিরাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শত্রু রাশিয়া। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়া-চীন অক্ষের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের লড়াইকে গণতন্ত্র বনাম স্বৈরশাসকের মধ্যকার লড়াই বলে আখ্যা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিল ক্লিনটনের অধীনে সাবেক সহকারী প্রতিরক্ষাসচিব গ্রাহাম অ্যালিসন রয়টার্সকে বলেছেন, ‘গত এক দশকে সি চিন পিং পুতিনের সঙ্গে মিলে বিশ্বের সবচেয়ে ফলপ্রসূ অঘোষিত জোট গড়ে তুলেছেন।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে এই অস্বস্তিকর সত্যটি মানতে হবে যে, দ্রুত বর্ধনশীল পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী (চীন) ও বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রাগারের মালিক (রাশিয়া) পুনর্গঠনবাদী একক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা করার জন্য দৃঢ়ভাবে একত্র হয়েছে।’ 

তবে বিশ্লেষকেরা বলছেন, হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে চীন ও রাশিয়ার শীর্ষ দুই নেতার মধ্যকার বৈঠকটি খুব বেশি আলো পাবে না। পশ্চিমা বিশ্ব বেইজিং-মস্কোর অংশীদারত্ব নিয়ে বারবার সমালোচনা করলেও দুই দেশই সেই সব সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। চীন ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য বেড়েছে, অন্যান্য দেশ রাশিয়ার আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও বেইজিং রাশিয়ার তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। 

চীন সফরের আগে চীনা সম্প্রচারমাধ্যম সিজিটিএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সি চিন পিংয়ের গৃহীত বৈশ্বিক উদ্যোগের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে পুতিন বলেন, ‘একটি বহুমেরুক বিশ্ব রূপ নিচ্ছে এবং রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং যেসব ধারণা ও উদ্যোগ উত্থাপন করেছেন, তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক এবং তাৎপর্যপূর্ণ।’

এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন আক্রমণের মাত্র কয়েক দিন আগে চীন সফর করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। সে সময় তিনি রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ককে ‘সীমাহীন’ বলে আখ্যা দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত