Ajker Patrika

ভারতের সিকিম সীমান্তে চীনের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান মোতায়েন

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

ভারতের সিকিম সীমান্ত থেকে ১৫০ কিলোমিটারের কম দূরত্বে ৬টি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান জে-২০ স্টিলথ ফাইটার মোতায়েন করেছে চীন। গত ২৭ মের স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিগাৎসেতে অবস্থিত সামরিক এবং বেসামরিক দ্বৈত ব্যবহার উপযোগী বিমানবন্দরের ফ্লাইট লাইনে চীনা বিমানবাহিনীর জে-২০ স্টিলথ ফাইটারের উপস্থিতি দেখা গেছে স্যাটেলাইট ইমেজে। বিমানবন্দরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২ হাজার ৪০৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এটি বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ বিমানবন্দর। একটি কেজে-৫০০ এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং এবং কন্ট্রোল এয়ারক্রাফটও চোখে পড়েছে।

চীনা যুদ্ধবিমানগুলোর উপস্থিতি সম্পর্কে ভারতীয় বিমানবাহিনী (আইএএফ) অবগত থাকলেও এ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।

অল সোর্স অ্যানালাইসিস বলছে, জে-২০ স্টিলথ ফাইটার হচ্ছে এখন পর্যন্ত চীনের সবচেয়ে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। তিব্বতের শিগাৎসেতে এই যুদ্ধবিমানগুলো মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকাটি চীনের স্বাভাবিক অপারেশন এলাকার বাইরে এবং ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত।

চীনের জে-২০ যুদ্ধবিমানকে মোকাবিলার জন্য ভারত মোতায়েন করেছে ফ্রান্সে নির্মিত ৩৬টি রাফায়েল যুদ্ধবিমানের বহর। এর মধ্যে আটটি রাফায়েল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর (ইউএসএএফ) সঙ্গে বিমান যুদ্ধ অনুশীলনের জন্য আলাস্কায় রয়েছে।

উল্লেখ্য, যেখানে চীনা জে-২০ যুদ্ধবিমানগুলোকে দেখা গেছে সেই স্থানটি পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা থেকে ২৯০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থিত। আর হাসিমারাতেই ভারত তার ১৬টি রাফায়েলের দ্বিতীয় স্কোয়াড্রন স্থাপন করেছে।

তিব্বতে চীনা জে-২০ যুদ্ধবিমান মোতায়েনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০২০ এবং ২০২৩ সালের মধ্যে চীনের হোটান প্রিফেকচারের জিনজিয়াংয়ে যুদ্ধবিমানগুলো দেখা গিয়েছিল। তবে এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জে-২০ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চেংডু জে-২০ যুদ্ধবিমান মাইটি ড্রাগন নামেও পরিচিত। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো চালু করা হয়েছিল দ্বৈত ইঞ্জিনের এই যুদ্ধবিমান। জে-২০ কে রাডারে পর্যবেক্ষণ করা বেশ কঠিন। বেশ কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, চীন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২৫০টির মতো জে-২০ মোতায়েন করেছে।

বিমানবাহিনীতে এই যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে চীন বিশ্বের তৃতীয় দেশ হয়েছে যাদের ‘স্টিলথ’ যুদ্ধবিমান আছে, আর এই স্টিলথ যুদ্ধবিমানের রয়েছে রাডারকে ফাঁকি দেওয়ার বিশেষ দক্ষতা। জে-২০ যুদ্ধবিমানের আধুনিকায়ন চলছেই। আকাশে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখাই এর প্রাথমিক ভূমিকা। চীনের সবচেয়ে উন্নত এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম এই যুদ্ধবিমান। এর মধ্যে রয়েছে পিএল-১৫ দূরপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র—যা ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম বলে ধারণা করা হয়।

অল সোর্স অ্যানালাইসিস সিম টাক বলছে, চীন গত পাঁচ বছরে তিব্বত এবং ভারতের নিকটবর্তী অন্যান্য অঞ্চলে ক্রমাগতভাবে তার আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ছিল নতুন বিমান ঘাঁটি নির্মাণ এবং বিদ্যমান বিমান ঘাঁটির অবকাঠামোগত উন্নত করা। চীন অন্তত অস্থায়ী ভিত্তিতে এই সীমান্ত অঞ্চলে জে-২০ এবং এইচ-৬ এর মতো পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বোমারু বিমান মোতায়েন শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত