Ajker Patrika

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাওনাদার এখন চীন: প্রতিবেদন

আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ১২
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাওনাদার এখন চীন: প্রতিবেদন

চীন ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ১ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব উইলিয়াম অ্যান্ড মেরির গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এইডডাটা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ সালে শুরু হওয়া ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিআরআইয়ের আওতায় চীনের পাওনার পরিমাণ এখন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি, যা দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঋণের পাওনাদারে পরিণত করেছে।

এ ছাড়া মোট ঋণের প্রায় ৮০ শতাংশ আর্থিক সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশ পেয়েছে বলেও গত সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায় এইডডাটা।

চীন বলছে, দেড় শতাধিক দেশ বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে সেতু, বন্দর, মহাসড়কসহ নানা অবকাঠামো তৈরিতে ঋণ দিয়েছে চীন।

১৬৫টির বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের খবর পেয়েছে এইডডাটা। তারা বলছে, ২০১৬ সালে প্রায় ১৩৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। আর ২০২১ সালে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের বিভিন্ন দেশকে ঋণ ও সহায়তা হিসেবে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র এক বছরে ৬০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে।

বিআরআইয়ের আওতায় চীনের পাওনার পরিমাণ এখন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি।এই বিপুল পরিমাণ ঋণসহায়তা দেওয়ার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের মিত্র হয়ে উঠেছে। তবে একই সময়ে পশ্চিমা বিশ্বসহ শ্রীলঙ্কা, জাম্বিয়ার মতো কিছু ঋণগ্রহীতা দেশ এর সমালোচনাও করেছে। তাদের দাবি, চীনের অর্থায়ন বিভিন্ন দেশের ওপর এমন ঋণের বোঝা চাপিয়েছে, যা তারা পরিশোধ করতে সক্ষম নয়।

খেলাপির ঝুঁকি ও পদক্ষেপ
এইডডাটার গবেষকেরা বলছেন, চীনের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রকল্প বাস্তবায়ন স্থগিত, এমনকি বাতিল হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও বেড়েছে। সে কারণে ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে বেইজিং চিন্তিত হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে এইডডাটা।

তাই ঝুঁকি কমাতে চীনের নীতিনির্ধারকেরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। এর মধ্যে একটি হলো, অবকাঠামো খাতে ঋণের পরিমাণ কমিয়ে জরুরি সহায়তায় ঋণের পরিমাণ বাড়ানো। সে কারণে ২০১৫ সালে মোট ঋণের ৬০ শতাংশের বেশি অবকাঠামো খাতে দেওয়া হলেও ২০২১ সালে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে আসে।

চীন ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি কমাতে বৈদেশিক মুদ্রার এসক্রো অ্যাকাউন্ট চালু করছে। ব্যবস্থাটি বিতর্কিত কারণ এটি চীনকে ঋণ ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে হুকুমদাতার ক্ষমতা দেয়। অর্থাৎ বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ অন্যান্য ঋণদাতারা যেকোনো সমন্বিত ঋণের ক্ষেত্রে দ্বিগুন অর্থ ফেরত পেতে পারে।

ঋণের গন্তব্য
২০১৮ সালের চীনের দেওয়া মোট ঋণের ৩১ শতাংশ পেয়েছিল আফ্রিকার দেশগুলো। ২০২১ সালে সেটি ১২ শতাংশে নেমে যায়। আর ২০২১ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে দেওয়া চীনের ঋণের পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে, যা এখন মোট ঋণের ২৩ শতাংশ।

একটি ভিন্ন তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২ সালে আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য ঋণের প্রতিশ্রুতি ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাখোঁর স্ত্রীর লিঙ্গ ও যৌনতা নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ১০ জনের বিচার শুরু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ও তাঁর স্ত্রী ব্রিজিত। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর স্ত্রী ব্রিজিত মাখোঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ঘৃণামূলক ও মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে প্যারিসে ১০ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—তাঁরা অনলাইনে ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডিকে হয়রানি করেছেন এবং তাঁর লিঙ্গ নিয়ে ভিত্তিহীন অপপ্রচার ছড়িয়েছেন।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, মামলাটি শুরু হয়েছে ব্রিজিত মাখোঁর ২০২৪ সালে করা অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযুক্ত ১০ জনের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। তাঁদের বয়স ৪১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। তাঁরা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ব্রিজিত মাখোঁর লিঙ্গ ও যৌনতা নিয়ে ঘৃণামূলক মন্তব্য করেছেন এবং স্বামীর সঙ্গে তাঁর বয়সের ব্যবধানকে নির্দেশ করে তাঁকে ‘শিশুকামী’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

মামলাটিতে অন্যতম অভিযুক্ত দুই নারীর একজন হলেন অরেলিয়ান পুয়াসোঁ-আতলান। সামাজিক মাধ্যমে তিনি ‘জোয়ে সাগাঁ’ নামে পরিচিত এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচারের সঙ্গে যুক্ত। আরেকজন হলেন দেলফিন জে। তিনি একটি আধ্যাত্মিক পরিমণ্ডলে ‘আমানদিন রোয়া’ নামে পরিচিত। ২০২১ সালে তিনি ইউটিউবে চার ঘণ্টার এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন এবং দাবি করেন, ব্রিজিত মাখোঁ একসময় পুরুষ ছিলেন।

এই দুই নারীকে ২০২৪ সালে ব্রিজিত ও তাঁর ভাইয়ের মানহানি করার দায়ে জরিমানা দিতে বলা হয়েছিল। পরে অবশ্য আপিলের মাধ্যমে তাঁদের সাজা বাতিল হয়। তবে ফরাসি সর্বোচ্চ আদালতে এখনো এই মামলার আপিল চলছে।

এদিকে এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রে মাখোঁ দম্পতির করা আরেকটি মানহানির মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। গত জুলাইয়ে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে ডানপন্থী পডকাস্টার ক্যান্ডেস ওয়েন্সের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওয়েন্স মিথ্যাভাবে প্রচার করেছেন যে, ব্রিজিত আসলে ‘জ্যঁ-মিশেল ট্রগনু’ নামে জন্ম নেওয়া এক পুরুষ। এই দাবি ‘ভয়াবহভাবে মিথ্যা ও অপমানজনক’—এমনটাই দাবি করেছেন মাখোঁ দম্পতি।

আসলে জ্যঁ-মিশেল ট্রগনু ব্রিজিত মাখোঁর বড় ভাই। তিনি ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলীয় শহর অ্যামিয়েঁতে বাস করেন। তিনি ব্রিজিতের সঙ্গে ২০১৭ ও ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিজিত মাখোঁ পুরুষ—এই মিথ্যা গুজব প্রথম ছড়ায় ২০১৭ সালে মাখোঁ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর। পরবর্তীতে এটি ফরাসি ও মার্কিন ডানপন্থী ষড়যন্ত্র তত্ত্ববাদীদের হাতে আরও জোরালো হয়।

২০২২ সালে ব্রিজিত মাখোঁ ফরাসি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, এই অভিযোগ ‘অসম্ভব’ এবং তাঁর পরিবারের জন্য ‘অপমানজনক আঘাত’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত করল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: বিবিসি
ছবি: বিবিসি

লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন (ইউএনআইএফআইএল) জানিয়েছে, রোববার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ লেবাননে টহলরত বাহিনীর ওপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে উড়তে থাকা একটি ইসরায়েলি ড্রোন তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ঘটনাটি সীমান্তবর্তী শহর কফর কিলার কাছে ঘটেছে।

বিবৃতিতে ইউএনআইএফআইএল জানায়, ড্রোনটি শান্তিরক্ষী দলের খুব কাছাকাছি চলে আসায় প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ড্রোনটি ছিল তাদের নিয়মিত গোয়েন্দা তৎপরতার অংশ।

ইসরায়েলের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদাভ শোশানি এক্স-এ লিখেছেন, ‘ইউএনআইএফআইএল ইচ্ছাকৃতভাবে ড্রোনটিতে গুলি চালায়, যদিও এটি কোনো হুমকি তৈরি করেনি।’

শোশানি জানান, পরে ইসরায়েলি বাহিনী ওই এলাকায় একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে যেখানে ড্রোনটি পড়ে ছিল। তবে এ সময় শান্তিরক্ষীদের দিকে কোনো গুলি চালানো হয়নি। ঘটনাটি সামরিক সমন্বয় চ্যানেলের মাধ্যমে তদন্তাধীন আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ইউএনআইএফআইএল জানিয়েছে, এরপর আরেকটি ইসরায়েলি ড্রোন কাছাকাছি এলাকায় একটি গ্রেনেড ফেলে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে একটি ইসরায়েলি ট্যাংক শান্তিরক্ষীদের দিকে গুলি চালায়। সৌভাগ্যক্রমে এতে কেউ আহত হয়নি।

গত বছরের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির পরও ইসরায়েল নিয়মিতভাবে লেবাননের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। তাঁরা দাবি করে, এসব হামলার লক্ষ্য হিজবুল্লাহর পুনর্গঠন রোধ করা। তবে জাতিসংঘ ও লেবানন সরকার বলছে, এসব অভিযান লেবাননের সার্বভৌমত্ব ও যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করছে।

১৯৭৮ সালে গঠিত ইউএনআইএফআইএলের হাতে ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের অক্টোবরে—সে সময় ইউনিফিলের অংশ হিসেবে থাকা একটি জার্মান নৌযান লেবাননের উপকূলে একটি ড্রোন আটক করেছিল।

এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, বর্তমান উত্তেজনা সীমান্তজুড়ে আবারও সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। আগামী সপ্তাহে মার্কিন, ফরাসি ও আরব কূটনীতিকদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করা ও দক্ষিণ লেবাননে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সে একবারও আমার চোখে তাকায়নি—হামলাকারী সম্পর্কে সালমান রুশদি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সালমান রুশদি। ছবি: ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড
সালমান রুশদি। ছবি: ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড

নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতে এক চোখ হারানো লেখক সালমান রুশদি বলেছেন, তিনি কখনোই ওই আক্রমণের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন না। ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জীবন বদলে দেওয়া ওই হামলার কথা স্মরণ করেন সামলান।

২০২২ সালে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের চাটাকুয়া ইনস্টিটিউশনে বুকার পুরস্কারজয়ী এই লেখকের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে তিনি এক চোখে অন্ধ হয়ে যান এবং তাঁর এক হাত আংশিকভাবে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

ঘটনার তিন বছর পর, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হাদি মাতারকে হত্যাচেষ্টা ও হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। চলতি বছরের মে মাসে তাঁকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সাক্ষাৎকারে ট্যাটলার ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘ওকে (আক্রমণকারী) আমি খুবই তুচ্ছ একজন মানুষ মনে করেছি—এই ছোট্ট বোকা লোকটা। এতে আমার মনে ঘৃণা জাগে। পরে ভাবলাম, এমন তুচ্ছ লোকও মানুষকে হত্যা করতে পারে—আমাকেও প্রায় মেরে ফেলেছিল। সে একবারও আমার চোখের দিকে তাকায়নি।’

রুশদি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘যখন বিচার শুরু হয়, তখন আক্রমণের পর প্রায় তিন বছর কেটে গেছে। এত দিনে বিষয়টা হজম করতে, ভাবতে ও কিছুটা সেরে উঠতে সময় লেগেছে। তাই আমি শুধু আমাকে করা প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছি এবং বাড়ি ফিরে এসেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি চোখ হারানো আর একটি হাত সঠিকভাবে কাজ না করা—এই বিষয়গুলো প্রতিদিনই অনুভব করি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবি, ধুর! আমি তো ডান চোখে কিছুই দেখতে পাই না। আমি কখনোই এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব না। এটা শুধু মেনে নিয়ে বাঁচতে হয়। কিন্তু আমি ভাবি না যে, ঠিক আছে, আরেকটা চোখ তো আছেই।’

তবে এসব সত্ত্বেও রুশদি জানালেন, তিনি লেখালেখি চালিয়ে যাবেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমি এখনো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ভাবি। তাই যত দিন বাঁচি, লিখে যেতে চাই।’

সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইভনিং টাইমস জানিয়েছে, সালমান রুশদির এই পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হবে ট্যাটলার ম্যাগাজিনের ডিসেম্বর সংখ্যায়। তবে ৩০ অক্টোবর থেকে এটি ম্যাগাজিনের ডিজিটাল সংস্করণেও পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিএনএ বিশ্লেষণে বেরিয়ে এল নেপোলিয়নের সেনাদের মৃত্যুর নতুন রহস্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০০: ০৮
চিত্রকর্মে দুর্দশাগ্রস্ত নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী। ছবি: সংগৃহীত
চিত্রকর্মে দুর্দশাগ্রস্ত নেপোলিয়নের সেনাবাহিনী। ছবি: সংগৃহীত

১৮১২ সালে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট রাশিয়া আক্রমণের উদ্দেশ্যে অর্ধ লক্ষাধিক সেনা নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ছয় মাস পর সেই অভিযানের এমন পরিণতি হয় যে, এটিকে ইউরোপের ইতিহাসের এক ভয়াবহ বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। যুদ্ধ, অনাহার, তীব্র শীত ও টাইফাস মহামারির কারণে হাজার হাজার সৈন্য মারা যায়। অবশেষে মাত্র কয়েক হাজার সৈন্য ফ্রান্সে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়।

তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা নেপোলিয়নের সৈন্যদের দেহাবশেষের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে নতুন তথ্য পেয়েছেন। ২০০১ সালে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে উদ্ধার হওয়া একটি গণকবর থেকে পাওয়া দাঁতের নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, সৈন্যদের মৃত্যু শুধু টাইফাস মহামারিতে হয়নি, বরং আরও অন্তত দুই ধরনের ব্যাকটেরিয়া তখন মারাত্মক ভূমিকা রেখেছিল।

গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ব্যাকটেরিয়া দুটিকে ‘সালমোনেলা এন্টেরিকা’ ও ‘বোরেলিয়া রিকারেন্টিস’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘সালমোনেলা এন্টেরিকা’ প্যারাটাইফয়েড জ্বর ঘটায় এবং ‘বোরেলিয়া রিকারেন্টিস’ রিল্যাপসিং বা পুনরাবৃত্ত জ্বর ঘটায়।

গবেষণার প্রধান লেখক ও বর্তমানে এস্তোনিয়ার টার্টু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রেমি বারবিয়েরি বলেন, আগে মনে করা হতো, টাইফাসই ছিল সৈন্যদের মৃত্যুর একমাত্র কারণ। কিন্তু নতুন ডিএনএ বিশ্লেষণ প্রমাণ করছে, সেখানে একাধিক সংক্রমণ একযোগে কাজ করেছিল।

২০০৬ সালে প্রথমবার টাইফাস ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছিল নেপোলিয়নের সৈন্যদের দাঁতে। তবে তখনকার প্রযুক্তি সীমিত ছিল। এবার গবেষকেরা ব্যবহার করেছেন ‘হাই-থ্রুপুট সিকোয়েন্সিং’ পদ্ধতি, যা একসঙ্গে লাখ লাখ ডিএনএ খণ্ড বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ফলে দুই শতাব্দী পুরোনো জিনগত উপাদান থেকেও নতুন তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়েছে।

গবেষণায় ১৩টি দাঁতের নমুনা বিশ্লেষণ করা হলেও তাতে টাইফাসের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গবেষক নিকোলাস রাসকোভান জানান, এটি আগের গবেষণাকে অস্বীকার করছে না, বরং নতুন প্রমাণ দিচ্ছে যে, নেপোলিয়নের সৈন্যদের মধ্যে একাধিক সংক্রামক রোগ ছড়িয়েছিল। হয়তো আরও অনেক অজানা রোগ তখন ছিল, যা এখনো শনাক্ত হয়নি।

বিশেষজ্ঞ সিসিল লুইস বলেন, এই গবেষণা ইতিহাস বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। কারণ, প্রাচীন ডিএনএ বিশ্লেষণ এখন অতীতের রোগবালাই ও তার বিবর্তন সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিচ্ছে।

প্যারাটাইফয়েড ও রিল্যাপসিং জ্বর পৃথিবীতে এখনো বিরাজমান। তবে এ জ্বরগুলো অতীতের মতো আর প্রাণঘাতী নয়। নেপোলিয়ন নিজে বেঁচে গেলেও তাঁর পরাজিত ও রুগ্‌ণ সেনাবাহিনীই শেষপর্যন্ত তাঁর পতনের পথ তৈরি করে দিয়েছিল।

গবেষকদের মতে, মাত্র এক দশকের মধ্যেই ডিএনএ প্রযুক্তির এই অগ্রগতি ভবিষ্যতে ইতিহাস ও জীববিজ্ঞানের আরও বহু অজানা রহস্য উন্মোচনের সুযোগ এনে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইতালিপ্রবাসী স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে যুবকের আত্মহত্যা

অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতি পোষাতে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিজেরাই গুদাম বানাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

৩৬ বার অপারেশন, অবশেষে বাড়ি ফিরল মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী নাভিদ

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাপানে ‘খোলামেলা’ পোশাক পরায় রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হলো ২ চীনাকে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত