Ajker Patrika

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাওনাদার এখন চীন: প্রতিবেদন

আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ১২
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাওনাদার এখন চীন: প্রতিবেদন

চীন ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ১ দশমিক ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ অব উইলিয়াম অ্যান্ড মেরির গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এইডডাটা। যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। 

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ সালে শুরু হওয়া ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিআরআইয়ের আওতায় চীনের পাওনার পরিমাণ এখন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি, যা দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ঋণের পাওনাদারে পরিণত করেছে।

এ ছাড়া মোট ঋণের প্রায় ৮০ শতাংশ আর্থিক সংকটে থাকা বিভিন্ন দেশ পেয়েছে বলেও গত সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায় এইডডাটা।

চীন বলছে, দেড় শতাধিক দেশ বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে সেতু, বন্দর, মহাসড়কসহ নানা অবকাঠামো তৈরিতে ঋণ দিয়েছে চীন।

১৬৫টির বেশি দেশে প্রায় ২১ হাজার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের খবর পেয়েছে এইডডাটা। তারা বলছে, ২০১৬ সালে প্রায় ১৩৬ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। আর ২০২১ সালে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের বিভিন্ন দেশকে ঋণ ও সহায়তা হিসেবে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিল চীন। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র এক বছরে ৬০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে।

বিআরআইয়ের আওতায় চীনের পাওনার পরিমাণ এখন এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি।এই বিপুল পরিমাণ ঋণসহায়তা দেওয়ার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো চীনের মিত্র হয়ে উঠেছে। তবে একই সময়ে পশ্চিমা বিশ্বসহ শ্রীলঙ্কা, জাম্বিয়ার মতো কিছু ঋণগ্রহীতা দেশ এর সমালোচনাও করেছে। তাদের দাবি, চীনের অর্থায়ন বিভিন্ন দেশের ওপর এমন ঋণের বোঝা চাপিয়েছে, যা তারা পরিশোধ করতে সক্ষম নয়।

খেলাপির ঝুঁকি ও পদক্ষেপ
এইডডাটার গবেষকেরা বলছেন, চীনের ঋণ দেওয়ার পরিমাণ যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রকল্প বাস্তবায়ন স্থগিত, এমনকি বাতিল হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও বেড়েছে। সে কারণে ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে বেইজিং চিন্তিত হয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে এইডডাটা।

তাই ঝুঁকি কমাতে চীনের নীতিনির্ধারকেরা বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। এর মধ্যে একটি হলো, অবকাঠামো খাতে ঋণের পরিমাণ কমিয়ে জরুরি সহায়তায় ঋণের পরিমাণ বাড়ানো। সে কারণে ২০১৫ সালে মোট ঋণের ৬০ শতাংশের বেশি অবকাঠামো খাতে দেওয়া হলেও ২০২১ সালে সেটি ৩০ শতাংশে নেমে আসে।

চীন ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি কমাতে বৈদেশিক মুদ্রার এসক্রো অ্যাকাউন্ট চালু করছে। ব্যবস্থাটি বিতর্কিত কারণ এটি চীনকে ঋণ ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে হুকুমদাতার ক্ষমতা দেয়। অর্থাৎ বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ অন্যান্য ঋণদাতারা যেকোনো সমন্বিত ঋণের ক্ষেত্রে দ্বিগুন অর্থ ফেরত পেতে পারে।

ঋণের গন্তব্য
২০১৮ সালের চীনের দেওয়া মোট ঋণের ৩১ শতাংশ পেয়েছিল আফ্রিকার দেশগুলো। ২০২১ সালে সেটি ১২ শতাংশে নেমে যায়। আর ২০২১ সালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকে দেওয়া চীনের ঋণের পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে, যা এখন মোট ঋণের ২৩ শতাংশ।

একটি ভিন্ন তথ্যে দেখা গেছে, ২০২২ সালে আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য ঋণের প্রতিশ্রুতি ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত