Ajker Patrika

আরেকটি সামরিক ঘাঁটি দখল, রাখাইনের রাজধানীতে দৃষ্টি আরাকান আর্মির

আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২: ৪২
আরেকটি সামরিক ঘাঁটি দখল, রাখাইনের রাজধানীতে দৃষ্টি আরাকান আর্মির

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান আক্রমণের মধ্যেই জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) গত মঙ্গলবার সেখানে আরেকটি সামরিক ঘাঁটি দখল করেছে। থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত মিয়ানমারের গণমাধ্যম দ্য ইরাবতী এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

এএ বলেছে, ঐতিহাসিক ম্রাউক-ইউ টাউনশিপে বেশ কয়েক দিনের লড়াইয়ের পর লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন (এলআইবি) ৫৪০কে তারা পরাজিত করেছে। সেখানে এলআইবি ৩৭৭ এবং ৭৭৮ ব্যাটালিয়নের অন্তর্গত ঘাঁটিগুলোও ঘেরাও করেছে তারা।

রাখাইনের সাবেক রাজধানীতে অবস্থিত ম্রাউক-উ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, ঐতিহাসিক মঠ এবং অন্যান্য ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনায় গোলাবর্ষণ করেছে এলআইবির ব্যাটালিয়নগুলোকে। এএ দাবি করেছে, গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে এলআইবি-৫৪০-এর সদর দপ্তরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। এএ এখন টাউনশিপের অবশিষ্ট দুটি সামরিক ঘাঁটি এবং অন্যান্য জান্তা ফাঁড়িকে লক্ষ্যবস্তু করছে।

এএ হলো ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য। এই অ্যালায়েন্সে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) এবং তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিও (টিএনএলএ) রয়েছে।

গত বছরের ২৭ অক্টোবর অপারেশন-১০২৭ শুরুর পর থেকে এই জাতিগত জোট উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের বেশির ভাগ অংশ দখল করেছে,যার মধ্যে রয়েছে প্রায় ২০টি শহর এবং চীনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ। মিয়ানমারের সামরিক শাসকের সঙ্গে চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর জোটটি জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তাদের আক্রমণ বন্ধ করেছিল।

তবে অপারেশন-১০২৭-এর অংশ হিসেবে গত ১৩ নভেম্বর থেকে প্রতিবেশী চিন রাজ্যের উত্তর রাখাইন ও পালেতওয়া জুড়ে বড় আকারের আক্রমণ পরিচালনা করছে এএ। এই অ্যালায়েন্স পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এবং কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) সঙ্গেও জোট করে কাচিন রাজ্য ও সাগাইং অঞ্চলে জান্তার সামরিক ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ করছে।

ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স জানায়, গত বুধবার রাখাইনের উপকূলীয় রামরিতে জান্তা সৈন্য বাড়ালে সেখানেও সংঘর্ষ হয়। স্থলযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর রামরিতে আরও সৈন্য পাঠায় মিয়ানমার জান্তা। বুধবার যুদ্ধবিমান ও গানবোট থেকে রামরিতে তারা গুলি চালায়।

এএ সৈন্যরা জান্তার অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করেছে। শহর জুড়ে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা জান্তা সৈন্যদের মৃতদেহ খুঁজে পায়।

বুধবার সকালে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছাকাছি উপকূলেও জান্তার সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ হয়। অং জায়া এবং অং মায়া কোন গ্রামের মধ্যে অবস্থিত, সেই যুদ্ধস্থল থেকেও পিছু হটেছে জান্তা সৈন্যরা।

একই দিন সকালে জান্তা সৈন্যরা জাহাজে পৌঁছে পান্নাগিউনের সার কোন বোকের পুরো গ্রামে আগুন দেয়। ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স বলছে, সিত্তওয়েতে অবস্থিত সামরিক গানবোট এবং পুলিশ অ্যাটাক ব্যাটালিয়ন-১২ গ্রামটির আশপাশের এলাকায় প্রায় ১০০ বার গোলাবর্ষণ করেছে।

একই দিনে রাখাইনের মিনবিয়া, কিউকতাও এবং রাথেদাউং শহরেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

গত ১৩ নভেম্বর রাখাইনে অপারেশন-১০২৭ আবারও শুরু করার পর থেকে এএ ১৬০টিরও বেশি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে, যার মধ্যে সিত্তওয়ের কাছে পাউকতাও শহর এবং চিন রাজ্যের পালেতওয়া টাউনশিপও রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত