Ajker Patrika

উত্তর কোরিয়ায় বড় ধরনের ইন্টারনেট বিভ্রাট, নেপথ্যে কী

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৫, ১৮: ৪০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিচ্ছিন্ন ও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত দেশ উত্তর কোরিয়া আজ শনিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য সম্পূর্ণরূপে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। দেশটির সরকারি ওয়েবসাইট, অনলাইন সংবাদমাধ্যমসহ সব ধরনের অনলাইন পরিকাঠামো হঠাৎ করেই অদৃশ্য হয়ে যায়। পরে ধীরে ধীরে দুপুর নাগাদ ইন্টারনেট সংযোগ ফিরে আসতে শুরু করে।

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, কী কারণে এমন বিভ্রাট ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি পরিকাঠামো পর্যবেক্ষণকারী গবেষকেরা ধারণা করছেন, এটি কোনো সাইবার হামলা নয়, বরং অভ্যন্তরীণ সমস্যার ফল হতে পারে। আরেকটি বিষয় হলো—চীন ও রাশিয়ার মধ্য দিয়ে যে সংযোগগুলো সচরাচর ব্যবহৃত হয়, সেগুলোতেও সমস্যার লক্ষণ দেখা গেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, বিভ্রাট চলাকালীন উত্তর কোরিয়ার প্রধান সরকারি বার্তা সংস্থা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় এয়ারলাইন এয়ার কোরিওর ওয়েবসাইট অচল হয়ে পড়ে। পরে ধীরে ধীরে সেগুলো আবার চালু হয়।

উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট সংযোগ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষক জুনাদ আলী। তিনি বলেন, ‘এটি ইচ্ছাকৃত না দুর্ঘটনাবশত, তা বলা কঠিন। তবে দেখেই মনে হচ্ছে—এটি বাইরের হামলা নয়, বরং অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়।’

উত্তর কোরিয়ার অনলাইন কর্মকাণ্ড সবচেয়ে বেশি পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির মধ্যে রাখেন মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার সাইবার সন্ত্রাস প্রতিরোধ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা। তবে সর্বশেষ ইন্টারনেট বিভ্রাটের বিষয়ে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে ওয়াশিংটন-ভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মার্টিন উইলিয়ামস বলেছেন, ‘চীন ও রাশিয়ার সংযোগে সমস্যা দেখা গেছে। তাই এটি বাইরের সাইবার হামলা নয়, বরং অভ্যন্তরীণ কারিগরি ত্রুটি বলেই মনে হচ্ছে।’

উত্তর কোরিয়া বিশ্বের সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট ব্যবস্থার অধিকারী দেশ। সেখানে সাধারণ মানুষের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট নেই। তারা শুধু সরকারের পরিচালিত একটি সীমিত পরিসরের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। দেশটিতে শুধু শাসকগোষ্ঠী ও নির্দিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যবহারের অনুমতি আছে। সরকারি ওয়েবসাইট ও সংবাদমাধ্যমগুলোও মূলত বিদেশি দর্শকদের উদ্দেশে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

এর আগেও কয়েকবার উত্তর কোরিয়ায় বড় ধরনের ইন্টারনেট বিভ্রাট দেখা গেছে। এসব বিভ্রাটের পেছনে সাইবার হামলার সন্দেহ করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, লাজারাস গ্রুপ নামে উত্তর কোরিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত একটি হ্যাকার দল রয়েছে। এই হ্যাকার গ্রুপের বিরুদ্ধে বিদেশি প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। যদিও পিয়ংইয়ং সব ধরনের সাইবার অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত