Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা, কেন্দ্রের বাইরে নেই অভিভাবকদের ভিড়বাট্টা

ফজলুল বারী, অস্ট্রেলিয়া থেকে
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১৫: ২৫
অস্ট্রেলিয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা, কেন্দ্রের বাইরে নেই অভিভাবকদের ভিড়বাট্টা

অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসসহ বিভিন্ন রাজ্যে আজ বুধবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের পাবলিক পরীক্ষার মতো এমন দিনে স্কুলের বাইরে অভিভাবকদের ভিড়বাট্টা এখানে নেই। কাজপাগল মানুষের দেশের বেশির ভাগ অভিভাবকের অত সময়ও নেই। ছাত্রছাত্রীরা অন্য স্বাভাবিক দিনগুলোর মতোই স্কুলের শেষ পরীক্ষায় অংশ নিতে গেছেন। বাংলাদেশের মতো দেশের অভিভাবকেরাই হয়তো এমন দিনে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে নামিয়ে দিয়েছেন অথবা পরীক্ষা শেষে বাসায় নিয়ে এসেছেন। 

ব্রিটিশ কারিকুলামের ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের মতো এ দেশের হাইস্কুল দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিকে কলেজ ওয়ান ও কলেজ টুতে সাজানো হয়। তাই হাইস্কুল শেষেই এ দেশের ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা বৃত্তিমূলক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যান। বাংলাদেশে বাংলা বিষয় দিয়ে যেমন পাবলিক পরীক্ষা শুরু হয়, এ দেশের প্রথম দিনের পরীক্ষার বিষয়বস্তু ছিল ইংরেজি। 

অস্ট্রেলিয়ার এই পরীক্ষা ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, চীনের কিছু স্কুলেও আজ শুরু হয়েছে। এবার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে প্রায় ৭০ হাজার ছাত্রছাত্রী এই পরীক্ষা দিচ্ছেন। 

শিক্ষাব্যবস্থাটি দীর্ঘ পরিকল্পনার অংশ হওয়ায় অভিভাবকদের উদ্বেগ এখানে বাংলাদেশের মতো নয়। স্কুল পর্যন্ত এখানে পড়াশোনা ফ্রি। তাই পরীক্ষার ফিসহ নানা কিছু চিন্তার দায়িত্বও রাষ্ট্রের। ২৩ নভেম্বর এই পরীক্ষা শেষ হবে। ফলাফল বেরোবে ১৪ ডিসেম্বর। সেদিন থেকে স্কুলগুলোও ক্রিসমাস-গ্রীষ্মের লম্বা ছুটিতে চলে যাবে। 

এইচএসএসি পরীক্ষার কোর্স নম্বরের ৫০ ভাগ ছাত্রছাত্রী স্কুলের ক্লাস শেষেই অর্জন করেছেন। পরীক্ষা হচ্ছে বাকি ৫০ ভাগ নম্বরের। বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগাম ভর্তির কাজও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। ডাক্তারি তথা মেডিসিনের মতো বিষয়গুলোর চূড়ান্ত সুযোগ নির্ভর করবে এইচএসসির চূড়ান্ত ফলাফলের ওপর। ডাক্তারি পড়ার জন্য এ দেশে আলাদা মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশলী হওয়ার জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় নেই। প্রচলিত পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই এসবের বিভাগ রয়েছে। 

শুধু ডাক্তারি বা প্রকৌশল বিষয়েই পড়তে হবে এমন হাহাকারও এখানকার ছাত্রছাত্রীদের মধ্য নেই। বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী স্কুল শেষে বিভিন্ন কাজের বাজারে চলে যান। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মূল টার্গেট বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিদেশি ছাত্রছাত্রী। 

স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বা উচ্চতর পড়াশোনা নিয়েও কোনো উদ্বেগ নেই অভিভাবকদের। কারণ, এসব পড়াশোনার ব্যয় সরকার দেবে ফি হেল্প নামের শিক্ষা বৃত্তির মাধ্যমে। প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর ট্যাক্স ফাইল নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এরই মাঝে তৈরি হয়ে গেছে। এসব অ্যাকাউন্টের অনুকূলে শিক্ষা ঋণ সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলে যাবে। কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পর সরকার বেতন থেকে কিস্তি করে কেটে নিয়ে যাবে শিক্ষা ঋণের টাকা। 

মা-বাবা পড়াশোনার খরচ দেবেন এমন ধারণা প্রচলিত নয়। ছাত্রছাত্রীদের সিংহভাগই এ দেশে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজও করেন। কাজ না করলে সরকার তাঁদের অস্টাডি, ইয়ুথ অ্যালাউন্স নামের ভাতা দেয়। ছাত্রছাত্রীরা আইনত সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারেন না। 

এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগমুহূর্তে নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মিন্স লেবার সরকার জানিয়েছে, বাজেটে তারা রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় এবার রেকর্ড বিনিয়োগ করেছে, যার মধ্যে রাজ্যের ৯৫ হাজার শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগ করা হয়েছে। ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে ওয়েস্টার্ন সিডনি স্কুলগুলো তৈরি ও আপগ্রেড করতে। আর রাজ্যের গ্রাম অঞ্চলগুলোর স্কুলগুলো আপগ্রেড করতে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে৷ 

নিউ সাউথ ওয়েলস এডুকেশন স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটির সাইবার, তথ্য নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি প্রোগ্রাম, এজেন্সির নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য খরচ করা হচ্ছে ৪৫ মিলিয়ন ডলার। 

নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স বুধবার পরীক্ষা শুরুর আগে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজ আমাদের এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রত্যেকের জন্য, যাঁরা তাদের পরীক্ষায় বসে আছেন, আমি আপনাদের সবার জন্য শুভকামনা করছি। আপনি এই পরীক্ষার সময়কালে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যবাসী আপনার পেছনে রয়েছে।’ 

ডেপুটি প্রিমিয়ার এবং শিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘এটি আমাদের সিনিয়র স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বড় মুহূর্ত এবং এর জন্য তারা কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছর কাটিয়েছে প্রস্তুতির জন্য। 

ডেপুটি প্রিমিয়ার এবং শিক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘২০২৩ সালের এইচএসসি ক্লাসের প্রতি আমার বার্তা হলো, আপনার ক্ষমতার ওপর আস্থা রাখুন, আপনি যা শিখেছেন, তার প্রতিফলন করুন এবং আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিটি পরীক্ষার কক্ষে প্রবেশ করুন। নিয়মিত ডাউন টাইমের সঙ্গে আপনার পরীক্ষা ও অধ্যয়নের সময়সূচিতে ভারসাম্য বজায় রাখুন, বন্ধু ও প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং প্রচুর ঘুমাবেন।’ 

ডেপুটি প্রিমিয়ার বিশেষ করে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেছেন, ‘যারা আমাদের এইচএসসি শিক্ষার্থীদের এই মাইলফলক পৌঁছানোর জন্য সমর্থন করেছেন; সন্তানদের এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শেখার প্রতি অনুপ্রাণিত, শিক্ষিত ও লালন-পালন করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।’ 

রাজ্যের প্রধান শিক্ষা নির্বাহী কর্মকর্তা পল মার্টিন বলেছেন, এইচএসসি একটি বড় অপারেশন এবং এটি স্কুল, শিক্ষক ও পরীক্ষাকর্মীদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে ৷ আগামী ১৮ দিনের মধ্যে আমরা পরীক্ষা সম্পন্ন করব ৷ এনএসডব্লিউ প্রিন্সিপাল, শিক্ষক এবং স্কুল স্টাফসহ স্কুলের সবাইকে ধন্যবাদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের সহায়তায় বিদ্রোহীদের কাছে হারানো অঞ্চল আবার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ২৫
মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের টহল। ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের টহল। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নিরবচ্ছিন্ন বিমান হামলার মাধ্যমে নিজেদের হারানো এলাকাগুলো আবারও দখলে নিচ্ছে। চীনের প্রত্যক্ষ সহায়তার ফলে জান্তা সরকার বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে এখন সাফল্য পেতে শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) বিবিসি জানিয়েছে, বেশ কয়েক মাসের তীব্র লড়াইয়ের পর গত বছর মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের পাহাড়ি শহর কিয়াউকমে দখল করে নিয়েছিল বিদ্রোহী তাআং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)। এই শহরটি এশিয়ান হাইওয়ে ১৪–এর পাশে অবস্থিত, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ‘বার্মা রোড’ নামে পরিচিত ছিল। শহরটির পতনকে সামরিক জান্তার মনোবল ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হয়েছিল।

কিন্তু চলতি অক্টোবরেই মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই সেনাবাহিনী আবারও শহরটি দখল করে নিয়েছে। কিয়াউকমের এই পালাবদল দেখিয়ে দিয়েছে—মিয়ানমারের যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য এখন স্পষ্টভাবে জান্তার পক্ষে ঝুঁকে পড়েছে। টানা বিমান হামলায় শহরটির একটি বিশাল অংশ এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেনারা সেখানে ৫০০ পাউন্ডের বোমা ফেলেছে, ড্রোন ও কামান দিয়ে টিএনএলএর অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। অধিকাংশ মানুষ শহর ছেড়ে পালিয়ে গেলেও এখন আবার কিছু লোক ফিরে আসছে।

টিএনএলএর মুখপাত্র তার-পান লা বিবিসিকে বলেছেন, ‘কিয়াউকমে ও হিসপাও এলাকায় প্রতিদিনই যুদ্ধ চলছে। জান্তা এবার বেশি সৈন্য, ভারী অস্ত্র ও বিমান শক্তি ব্যবহার করছে।’ সেনাবাহিনী হিসপাও শহরটিও পুনর্দখল করেছে, ফলে চীনা সীমান্তে যাওয়ার প্রধান সড়কটি এখন পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে।

বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমার সেনার এই পুনরুত্থানের পেছনে মূল চালিকা শক্তি চীন। দেশটি ডিসেম্বরের প্রস্তাবিত নির্বাচনের জন্য জান্তাকে সমর্থন দিচ্ছে। এই নির্বাচন থেকে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী যতটা সম্ভব হারানো এলাকা ফিরে পেতে মরিয়া।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় মিয়ানমারের সেনারা এখন অনেক বেশি প্রস্তুত। তারা চীনের তৈরি হাজার হাজার ড্রোন ও মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করছে। চীন ও রাশিয়ার সরবরাহ করা যুদ্ধবিমান দিয়ে ধারাবাহিক বোমা বর্ষণে দেশটিতে বহু বেসামরিক মানুষ মারা পড়েছে।

অন্যদিকে, দেশটির প্রতিরোধ বাহিনীগুলো এখন দুর্বল ও বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দেশটিতে গ্রামীণ তরুণদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল শত শত ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ বা স্থানীয় প্রতিরোধ বাহিনী। কিন্তু তাদের মধ্যে এখন পারস্পরিক আস্থার অভাব প্রবল। তারা জাতীয় ঐক্য সরকারের নেতৃত্বও মানে না, ফলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি।

২০২৩ সালের অক্টোবরের ‘অপারেশন ১০২৭’ এর মাধ্যমে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামে তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী একযোগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় আক্রমণ শুরু করেছিল। পরবর্তীতে কয়েক সপ্তাহেই তারা প্রায় ১৮০টি ঘাঁটি দখল করে নেয়। তখন অনেকেই ভেবেছিল, জান্তা সরকার পতনের মুখে। কিন্তু বিদ্রোহীরা সেই ধারাবাহিকতা রাখতে পারেনি।

গবেষক মরগান মাইকেলস বলেন, ‘তখন সেনাদের মনোবল খারাপ ছিল ঠিকই, কিন্তু নেতৃত্বের ভাঙন ততটা গভীর ছিল না।’ ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সেনাবাহিনী জোরপূর্বক সৈন্য সংগ্রহ শুরু করে। এর ফলে এই বাহিনীতে ৬০ হাজারেরও বেশি তরুণ যোগ দেয়, যা লড়াইয়ে নতুন গতি আনে।

বিশ্লেষক সু মোন বলেছেন, একের পর এক ড্রোন হামলায় বিদ্রোহীদের বড় ক্ষতি হয়েছে। আবার চীনের সীমান্তে কঠোর নজরদারি এবং দ্বৈত প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর ড্রোন সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া চীনের চাপেই এমএনডিএএ ও ইউডব্লিউএসএ-এর মতো অনেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। কারণ তারা সীমান্ত বাণিজ্যের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল। এ অবস্থায় দক্ষিণের কারেন রাজ্যেও সেনারা আবার সীমান্ত সড়ক দখল করেছে।

চীন প্রকাশ্যে বলেছে, ‘আমরা মিয়ানমারে বিশৃঙ্খলা চাই না।’ বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বেইজিং জান্তা সরকারকে পছন্দ করে না, কিন্তু রাষ্ট্র ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় এই বাহিনীকে টিকিয়ে রাখতে চায়।

এদিকে মিয়ানমারের জনগণের ওপর সামরিক বাহিনীর যে ভয়াবহ দমননীতি চলছে, তা দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষোভ ও বিভাজনের বীজ বপন করেছে। বিশ্লেষক মাইকেলসের ভাষায়, ‘এক লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রায় প্রত্যেক পরিবার কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাই রাজনৈতিক সমঝোতা এখনো অনেক দূরের স্বপ্ন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বেলারুশের মডেল ‘খুন’ নিয়ে রহস্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ২৫
বেলারুশের মডেল ভেরা ক্রাভৎসোভা। ছবি: এক্স
বেলারুশের মডেল ভেরা ক্রাভৎসোভা। ছবি: এক্স

বেলারুশের মডেল ভেরা ক্রাভৎসোভার নিখোঁজ ও মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ২৬ বছর বয়সী এই মডেলকে থাইল্যান্ড থেকে অপহরণ করে মিয়ানমারের একটি প্রতারণা কেন্দ্রে বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলেও খবর ছড়ায়। তবে থাই কর্তৃপক্ষ এসব দাবি অস্বীকার করেছে।

থাই ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, ভেরা ক্রাভৎসোভা গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্যাংককের সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন এবং ২০ সেপ্টেম্বর থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি নিজেই বিমানবন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থান করেছেন। অর্থাৎ, তাঁকে কেউ অপহরণ করেনি।

থাই পুলিশ মেজর জেনারেল চেরংগ্রন রিমফাদি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি নিজের ইচ্ছাতেই যাচ্ছিলেন, কোনো জোরজবরদস্তির চিহ্ন নেই। থাইল্যান্ডের বাইরে কী ঘটেছে, সেই বিষয়ে আমাদের এখতিয়ার নেই।’

এদিকে মিয়ানমারে নিযুক্ত বেলারুশের রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির বরোভিকভ গণমাধ্যমে প্রচারিত হত্যার খবরকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ভেরার মৃত্যুর খবর এখনো যাচাই করা হয়নি। যাচাইবিহীন তথ্য ছড়ানো তাঁর পরিবারের জন্য কষ্ট বাড়াচ্ছে। রাষ্ট্রদূত জানান, ভেরা গত ২০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকক থেকে ইয়াঙ্গুনে যান এবং পরিবারের সঙ্গে তাঁর শেষ যোগাযোগ হয় ৪ অক্টোবর।

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘কমসোমলস্কায়া প্রাভদা’ দাবি করেছে, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের একটি নথিতে বলা হয়েছে, ভেরার মৃত্যু হয়েছে হার্ট অ্যাটাকে এবং ১৬ অক্টোবর তাঁর দেহ দাহ করা হয়। তবে এই নথির সত্যতা নিশ্চিত হয়নি। অপর দিকে কয়েকটি ট্যাবলয়েড দাবি করেছে, থাইল্যান্ডে মডেলিংয়ের চাকরির প্রলোভনে গিয়ে অপহৃত হন ভেরা এবং মিয়ানমারের এক প্রতারণা কেন্দ্রে তাঁকে দাসত্বে বাধ্য করা হয়।

থাই সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নেশন থাইল্যান্ড’ জানিয়েছে, ঘটনাটি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচিত হওয়ায় থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সংস্থাটির গভর্নর থাপনি কিয়াতফাইবুল জানিয়েছেন, অনলাইনে ছড়ানো গুজব থাইল্যান্ডের নিরাপদ পর্যটন ভাবমূর্তিতে আঘাত হানতে পারে। তিনি বিদেশি পর্যটকদের সতর্ক থাকতে এবং বিপদের আশঙ্কা হলে স্থানীয় পুলিশ বা নিজ দেশের দূতাবাসে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।

অন্যদিকে বেলারুশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা ভেরার পরিবারের সহায়তায় তাঁর দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে নিতে কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে প্রতারণা কেন্দ্রগুলোর ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী, এসব কেন্দ্রে এশিয়া ও আফ্রিকার হাজার হাজার মানুষকে অপহরণ করে অনলাইন প্রতারণায় বাধ্য করা হয়। প্রায় ৭ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হলেও এখনো সেখানে এক লাখের বেশি মানুষ অমানবিক অবস্থায় বন্দী রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাশিয়ার এলএনজির ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম নিষেধাজ্ঞা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে রাশিয়ার ওপর ১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদন দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এই প্যাকেজে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এলএনজি দেশটির যুদ্ধ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান উৎস বলে বিবেচিত।

এ নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে রাশিয়ার শ্যাডো ফ্লিট বা গোপনে তেল-গ্যাস পরিবহনকারী জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইইউ। এ জাহাজগুলো পশ্চিমা মূল্যসীমা এড়িয়ে তেল পরিবহনে ব্যবহৃত হয়।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় নেতারা ব্রাসেলসে ইউক্রেন সহায়তা বিষয়ে বৈঠকে যোগ দিতে আসার আগে প্যাকেজটি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেন। নতুন নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে ইউরোপ রাশিয়ার তরল গ্যাস আমদানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করবে।

ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লিয়েন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ঘোষণা দেন, ‘প্রথমবারের মতো আমরা রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। এটাই তাদের যুদ্ধ অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু। ইউক্রেনের জনগণ ন্যায়সংগত ও স্থায়ী শান্তি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।’

২০২৪ সালে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় রাশিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ এলএনজি কিনেছিল ইউরোপ। এতে ইউক্রেনের পক্ষে ইইউর অবস্থান দুর্বল হয়ে যায়, কিন্তু লাভবান হয় রাশিয়া। অবশেষে রাশিয়ার সেই গ্যাসের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিল ইইউ।

এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইইউ এবার ১১৭টি শ্যাডো ফ্লিট ট্যাংকার বা ছায়া বহর যুক্ত করেছে। এ নিয়ে রাশিয়ার মোট ৫৫৮টি জাহাজ ইউরোপীয় বন্দর ব্যবহার করতে পারবে না। ধারণা করা হয়, রাশিয়ার এ ধরনের ৬০০ থেকে ১ হাজার ৪০০টি ছায়া বহর রয়েছে। এগুলো মূলত পুরোনো জাহাজ, এগুলোর কোনো নির্দিষ্ট মালিকানা নেই। রাশিয়া এই জাহাজগুলো ব্যবহার করে পশ্চিমা মূল্যসীমার চেয়ে বেশি বা কম দামে চীন ও ভারতে তেল পৌঁছে দেয়।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে জি-৭ জোটভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার তেলের ওপর মূল্যসীমা নির্ধারণ করেছিল। পরে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনের মিত্র ইউরোপীয় দেশগুলো সেই সীমা আরও কমায়।

১৯তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে কর্মরত রুশ কূটনীতিকেরা আর স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন না। অন্য সদস্য রাষ্ট্রে যেতে চাইলে আগেই সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ অনুমোদনের পর ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেন বলেন, রুশ এলএনজি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত ইউরোপকে রাশিয়ার জ্বালানিনির্ভরতা থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করার পথে একটি বড় পদক্ষেপ। এ নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর হলে রাশিয়ার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

ইইউর সিদ্ধান্তটি এসেছে স্লোভাকিয়ার ভেটো প্রত্যাহারের পরপরই এবং রসনেফট ও লুকঅয়েল নামের রাশিয়ার দুই বৃহৎ তেল কোম্পানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর। ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পদক্ষেপ।

ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি ভন ডার লিয়েন জানান, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপ হয়েছে। তিনি বলেন, এটি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র—উভয় পক্ষ থেকে রাশিয়ার জন্য স্পষ্ট বার্তা।

ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ইইউ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও যোগ দেবেন। ইউক্রেনকে সমর্থনের অঙ্গীকার জোরালোভাবে তুলে ধরতে এটি আয়োজন করা হয়েছে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনকে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি।

আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউরোক্লিয়ারে (বেলজিয়ামে) রাশিয়ার প্রায় ১৮৩ বিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১৫৯ বিলিয়ন পাউন্ড) আটকা আছে। তবে এই তহবিলের নিরাপত্তা ও বৈধতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেলজিয়াম। আজ ব্রাসেলসে পৌঁছে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট দে ওয়েভার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি এই সিদ্ধান্তের আইনি ভিত্তিও দেখিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও কেউ কোনো দেশের আটক করা সম্পদে হাত দেয়নি। তাই এটি অত্যন্ত গুরুতর পদক্ষেপ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২৫ বছর পর নতুন গ্র্যান্ড মুফতি পেল সৌদি আরব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রখ্যাত আলেম শেখ সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান সৌদি আরবে নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
প্রখ্যাত আলেম শেখ সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান সৌদি আরবে নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের শীর্ষ ধর্মীয় পদে নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দেশটির প্রখ্যাত আলেম শেখ সালেহ বিন ফাওজান আল-ফাওজান। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে রাজকীয় এক আদেশে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘সৌদি প্রেস এজেন্সি’ (এসপিএ) জানিয়েছে, ছেলে ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পরামর্শ অনুযায়ী বাদশাহ সালমান এই নিয়োগ দিয়েছেন।

৯০ বছর বয়সী শেখ সালেহ আল-ফাওজান ১৯৩৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের আল-কাসিম প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়সে বাবাকে হারানোর পর এক স্থানীয় ইমামের কাছে কোরআন শিক্ষা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি হয়ে ওঠেন রাজ্যের অন্যতম প্রভাবশালী আলেম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ‘নূর আলা আল-দারব’ (অর্থাৎ আলোয় পথচলা) নামে একটি জনপ্রিয় রেডিও অনুষ্ঠানে ধর্মীয় আলোচনায় অংশ নেন। তাঁর অসংখ্য বই, টেলিভিশন বক্তব্য ও ফতোয়া সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে।

তবে শেখ সালেহ অতীতে বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হন। ২০১৭ সালে মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ জানিয়েছিল, একবার একটি প্রশ্নের জবাবে শেখ সালেহ বলেছিলেন—‘শিয়া মুসলমানেরা শয়তানের ভাই।’ একই সঙ্গে তিনি শিয়াদের ‘মিথ্যাবাদী’ ও ‘অবিশ্বাসী’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন। এই ধরনের মন্তব্য অবশ্য সৌদি আলেমদের মুখে প্রায় সময়ই শোনা যায়, বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সময়।

২০০৩ সালে শেখ সালেহ এক ভাষণে বলেন, ‘দাসপ্রথা ইসলামের অংশ, এটি জিহাদের একটি অংশ এবং ইসলাম যত দিন থাকবে, জিহাদও তত দিন থাকবে।’ ২০১৬ সালে তিনি জনপ্রিয় মোবাইল গেম পোকেমন গো নিষিদ্ধ করে ফতোয়া দেন এবং এটিকে তিনি জুয়া হিসেবে আখ্যা দেন। তবে বর্তমানে সৌদি সরকার নিনটেন্ডো ও নিয়ান্টিক—এই দুই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছে, যারা ওই গেমটির মালিক।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) অ্যাসোসিয়েট প্রেস জানিয়েছে, শেখ সালেহ দায়িত্ব নিচ্ছেন সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ আল-শেখের মৃত্যুর পর। প্রয়াত মুফতি আল-শেখ গত প্রায় ২৫ বছর ধরে এই পদে ছিলেন। ঐতিহাসিকভাবে এই পদটি আল-শেখ পরিবারভুক্তদের হাতে ছিল—যারা অষ্টাদশ শতকের ধর্মীয় সংস্কারক শেখ মুহাম্মদ ইবনে আবদুল-ওয়াহাবের বংশধর।

গ্র্যান্ড মুফতির পদ সুন্নি মুসলিম বিশ্বে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ধর্মীয় অবস্থানগুলোর একটি। মক্কা ও মদিনার দেশ হিসেবে সৌদি মুফতির ফতোয়া বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে ভারত কেন বেজার

রাশিয়ার জব্দ ১৬২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইউক্রেনের জন্য কোথা থেকে অস্ত্র কেনা হবে, তা নিয়ে বিভক্ত ইইউ

প্রধান উপদেষ্টাকে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব আবেগতাড়িত, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না: সালাহউদ্দিন

‎টঙ্গী থেকে নিখোঁজ ইমামকে পঞ্চগড়ে উদ্ধার

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত