Ajker Patrika

জাতিসংঘের ভ্রমণনিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, ভারত সফরে যাচ্ছেন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: এএফপি
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: এএফপি

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ১০ অক্টোবর ভারত সফরে যাচ্ছেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) এই তালেবান নেতার ওপর আরোপিত ভ্রমণনিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার পরই এ সফরের পথ সুগম হলো।

এর আগে নিষেধাজ্ঞার কারণে মুত্তাকির ভারত সফর বাতিল হয়ে গিয়েছিল। গত মাসেও ইউএনএসসির ১৯৮৮ নিষেধাজ্ঞা কমিটির কাছে মুত্তাকির ভারত সফরের জন্য একটি ছাড় চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাব, বিশেষ করে পাকিস্তানের আপত্তির কারণে তা মঞ্জুর হয়নি।

তবে ইউএনএসসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ রেজল্যুশন ১৯৯৮ (২০১১) অনুযায়ী ৯ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত আমির খান মুত্তাকির নয়াদিল্লি সফরের জন্য ভ্রমণনিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আশরাফ গনি সরকারের পতনের পর এটিই হবে কোনো তালেবান কর্মকর্তার প্রথম ভারত সফর।

যদিও ভারত কাবুলে ক্ষমতায় থাকা তালেবান সরকারকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে তারা আফগান রাজধানীতে একটি কারিগরি মিশন চালু রেখেছে এবং গত এক বছরে এই সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগ করে আসছে।

ইউএনএসসি রেজল্যুশন ২২৫৫ (২০১৫) অনুযায়ী, জাতিসংঘের (রেজল্যুশন ১৯৮৮) নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা যেকোনো ব্যক্তি তাঁর ভ্রমণের জন্য ছাড়ের অনুরোধ করতে পারে। এই অনুরোধ তাঁদের নিজ নিজ দেশের জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনের মাধ্যমে জমা দিতে হয়।

ইউএনএসসির ১৫ সদস্যই এই ১৯৮৮ নিষেধাজ্ঞা কমিটির সদস্য, যারা তালেবানের ওপর আরোপিত সম্পদ জব্দ, ভ্রমণনিষেধাজ্ঞা এবং অস্ত্রনিষেধাজ্ঞার বিষয়গুলো তদারকি করে। এই কমিটির সব সিদ্ধান্ত ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হয় এবং একটি দেশ আপত্তি জানালেও সিদ্ধান্ত আটকে দেওয়া যেতে পারে। জানা যায়, আগেরবার ইসলামাবাদই মুত্তাকির ভারত সফর আটকে দিয়েছিল।

ভারত সরকার ও তালেবানের সম্পর্ক গত কয়েক মাসে আরও জোরদার হয়েছে। বিশেষ করে গত ডিসেম্বরে যখন আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তান বিমান হামলা চালায়। ওই হামলায় নারী, শিশুসহ ৪৬ জন আফগান নিহত হয়েছিল।

এর আগে মে মাসে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মুত্তাকির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। ২০২১ সালের আগস্টের পর নয়াদিল্লি ও কাবুলের মধ্যে এটিই ছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রথম যোগাযোগ। জয়শঙ্করের বৈঠকের আগে, এই বছরের জানুয়ারিতে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দুবাইয়ে মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে আফগানিস্তানে ৫০০টিরও বেশি প্রকল্পে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছিল ভারত। যদিও তালেবান ফিরে আসার পর উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত রয়েছে, তবে নয়াদিল্লি ২০২১ সাল থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন এবং খাদ্যশস্য সরবরাহের মাধ্যমে কাবুলের জন্য মানবিক সহায়তা বজায় রেখেছে।

এদিকে, বৈশ্বিকভাবে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকির পরিচিতি বেড়েছে। চলতি বছরের মে মাসে তিনি চীন সফর করেন। এ ছাড়া তিনি ৬ অক্টোবর মস্কো সফরে যাচ্ছেন এবং ৭ অক্টোবর আফগানিস্তান নিয়ে মস্কো ফরম্যাট কনসালটেশনের সপ্তম রাউন্ডে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে দেখা করবেন। মস্কো সফরের পরই মুত্তাকির নয়াদিল্লি যাওয়ার কথা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সমুদ্রে মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

মার্কিন সামরিক বাহিনী ক্যারিবীয় সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদকবাহী সন্দেহে বিভিন্ন নৌযানে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২৩টি নৌযানে ৮৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে এসব হামলায় অন্তত পাঁচজন প্রথম বিস্ফোরণে বেঁচে গিয়ে পানিতে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ভাগ্য নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

সিএনএন জানিয়েছে, মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে মার্কিন বাহিনী প্রথম হামলাটি চালায় গত ২ সেপ্টেম্বর। ওই হামলায় একটি নৌযান ধ্বংস হলেও দুই ব্যক্তি জীবিত ছিলেন। পানিতে সাঁতার কাটছিলেন তাঁরা। কিন্তু এরপরই দ্বিতীয় আরেকটি হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র ও অসহায় ওই দুজনকে হত্যা করা হয়। এ ক্ষেত্রে মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করেছে—ডুবন্ত নৌযানে মাদক থাকতে পারে, যা উদ্ধার হলে আবার পাচারে ব্যবহার হতো। এই যুক্তিতেই দ্বিতীয়বার হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানান সেই সময়ের জয়েন্ট স্পেশাল অপারেশনস কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল ফ্রাঙ্ক ‘মিচ’ ব্রাডলি।

এদিকে অসহায় ও নিরস্ত্র দুজনকে দ্বিতীয় আঘাতে হত্যার ঘটনাটিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সমালোচনা করছেন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, যোদ্ধা বা শত্রু যদি আহত বা আত্মসমর্পণকারী অবস্থায় থাকে, তাহলে তাকে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে।

আবার, গত ১৬ অক্টোবর ক্যারিবীয় সাগরে মাদকবাহী একটি সাবমেরিনে হামলার পর দুজনকে জীবিতকে উদ্ধার করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে তাদের ইকুয়েডর ও কলম্বিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। তবে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে—এই দুজনকে প্রথমে এল সালভাদরের কুখ্যাত মেগা-প্রিজনে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন পেন্টাগনের আইন উপদেষ্টারা, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে কোনো আইনি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি না হয়। পররাষ্ট্র দপ্তর সেই প্রস্তাব তীব্রভাবে বাতিল করে।

গত ২৭ অক্টোবরের আরেক হামলায় মৃতদেহের মধ্যে একজন জীবিত থাকতে পারে—এমন বার্তা পেয়ে ম্যাক্সিকান নৌবাহিনী অনুসন্ধান শুরু করে। তবে কেউ উদ্ধার হয়নি বলা হলেও এখন তাকে মৃত হিসেবেই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে—একই ধরনের পরিস্থিতিতে কেন ভিন্ন আচরণ? প্রতিরক্ষা দপ্তর বলছে—নীতি বদলায়নি, পরিস্থিতি বদলেছে। তবে সমালোচকদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এখনো এই অভিযানের বৈধতা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেনি।

হামলার গতি এখন কমে গেলেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ জানিয়েছেন—মাদকবাহী নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযান ‘মাত্র শুরু হয়েছে’।

এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও সামরিক কৌশল—সবকিছুই নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরওয়েতে থেকেও মাচাদো নোবেল শান্তি পুরস্কার নিতে গেলেন না যে কারণে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: এএফপি
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: এএফপি

ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো নরওয়ের রাজধানী অসলোতেই ছিলেন। তবু নোবেল শান্তি পুরস্কার নেওয়ার জন্য অসলো সিটি হলের অনুষ্ঠানে যাননি। নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।

৫৮ বছর বয়সী মাচাদোর আজ বুধবার নরওয়ের রাজপরিবার ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন নেতার উপস্থিতিতে পুরস্কার নেওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই ও ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়াও উপস্থিত ছিলেন।

ভেন্তে ভেনেজুয়েলা দলের এই নেতা গত অক্টোবর শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। নোবেল কমিটি তাঁর ভূমিকা ও গণতন্ত্রের প্রতি ‘অটল’ সমর্থনের জন্য তাঁকে সম্মানিত করে।

ডানপন্থী নানা মতাদর্শে বিশ্বাসী মাচাদো এ পুরস্কারের একটি অংশ উৎসর্গ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, পুরস্কারটি তাঁরই প্রাপ্য ছিল এবং না পাওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

নোবেল ইনস্টিটিউট জানায়, ‘যদিও অনুষ্ঠানে তিনি পৌঁছাতে পারবেন না, তবে মাচাদো নিরাপদ আছেন এবং অসলোতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’

ইনস্টিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টিয়ান বার্গ হারপভিকেন এএফপিকে জানান, তিনি আজ সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালের কোনো এক সময়ে অসলো পৌঁছাতে পারেন। অনুষ্ঠানে তাঁর হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তাঁর মেয়ে আনা কোরিনা সোসা মাচাদো।

ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত এক অডিওবার্তায় মাচাদো বলেন, ‘আমি অসলোতে থাকব, পথে আছি।’

এ ঘোষণা পুরো বিষয়টিকে আরও নাটকীয় করে তুলেছে, কারণ, এর আগে ইনস্টিটিউট জানিয়েছিল, মাচাদোর অবস্থান অজানা। তাঁর অনুপস্থিতির কারণে আগের দিনের নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনও বাতিল করা হয়।

মাচাদোর ওপর এক দশকের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এবং তিনি এক বছরের বেশি সময় ধরে লুকিয়ে আছেন।

ডানপন্থী কঠোর অবস্থানের সঙ্গে সমন্বয়

মাচাদো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। সমালোচকদের মতে, বিষয়টি লাতিন আমেরিকার অন্ধকার অতীত ফিরিয়ে আনছে।

বিশেষ করে, ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলজুড়ে স্বৈরশাসকদের সমর্থন দিয়েছিল। বিভিন্ন লাতিন দেশে অভ্যুত্থান এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন করেছিল। এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করা হয়।

মাচাদো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও হস্তক্ষেপকে সমর্থন করায় ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করে ভেনেজুয়েলা সরকার। তিনি ওই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। মাচাদোর দাবি, মাদুরো নির্বাচনে জালিয়াতি করেছেন।

অক্টোবর মাসে নোবেল পাওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ইসরায়েলের পক্ষেও সমর্থন জানান—গাজায় চলমান গণহত্যার মধ্যেই।

মাচাদো আগেও বলেছেন, তাঁর রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এলে ভেনেজুয়েলার দূতাবাস ইসরায়েলের জেরুজালেমে স্থানান্তর করবেন, যেমনটি ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে করেছিলেন। লাতিন আমেরিকার আরও কিছু ডানপন্থী নেতা, যেমন আর্জেন্টিনার মিলেই ও ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো একই অবস্থান নিয়েছিলেন।

মাচাদো আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছেন ট্রাম্পপন্থী ‘কট্টোর ডানপন্থী’ মহলের সঙ্গে। তাঁদের দাবি, মাদুরোর সরকার অপরাধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

গত কয়েক মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ক্যারিবিয়ান ও লাতিন আমেরিকার প্রশান্ত উপকূলে কথিত মাদকবাহী জাহাজে ২০টির বেশি সামরিক হামলা চালিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন, মার্কিন ডেমোক্র্যাট নেতা ও কিছু লাতিন দেশ এই হামলাকে বেআইনি এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিনা বিচারে হত্যার অভিযোগে নিন্দা করেছে।

হুগো শ্যাভেজের মৃত্যুর পর ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মাদুরো বলেছেন, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিপুল তেলসম্পদের দখলের জন্য ‘ক্ষমতার পালাবদল’ করতে চাইছেন। তিনি এমন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অঙ্গীকার করেছেন।

রয়টার্সের দেখা নথি ও সূত্র অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য আকাশ বা স্থল হামলার ক্ষেত্রে ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনী গেরিলা কৌশলে প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলে মোবাইল নিষিদ্ধের এক বছর পর কী ফল পেল নিউজিল্যান্ড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে এবং শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা কমাতে ২০২৪ সালের এপ্রিলে বিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল নিউজিল্যান্ড সরকার। তবে এক বছর পর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিশ্র অনুভূতি দেখা গেছে।

ওই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীরা যেন পড়াশোনায় মনোযোগী হয় এবং প্রযুক্তিজনিত বিভ্রান্তি কমে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাকসন ঘোষণা করেছিলেন—শিশুদের শেখার পরিবেশ আরও ভালো করতেই এই উদ্যোগ। বিশ্বের আরও অনেক দেশ—যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাজ্যও এমন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে।

তবে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, প্রত্যাশিত ফল সব সময় মিলছে না। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় পাওয়া গেছে—কঠোর নিষেধাজ্ঞা আর শিথিল নীতিমালার স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের ফলাফল বা মানসিক স্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো পার্থক্য নেই।

নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রে গবেষকেরা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৭৭ জন শিক্ষার্থীর মতামত নিয়েছিলেন। তাদের কেউ কেউ বলেছে, নিষেধাজ্ঞা তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়তা করেছে এবং সামাজিক মাধ্যম থেকে বিরত রেখেছে। একজন মন্তব্য করেছে, ‘তা না হলে তো সারা দিন ফোনেই কেটে যাবে, যা মানসিকভাবে ভালো নয়।’

তবে অন্যদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। কেউ কেউ জানিয়েছে, পরিবার বা অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তারা উদ্বেগে থাকে। অনেকের অভিযোগ—নীতিমালা সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করা হয় না। কিছু শিক্ষক নিজেরা ফোন ব্যবহার করলেও শিক্ষার্থীদের নিষেধ করা হয়, যা তাদের কাছে অন্যায্য মনে হয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই গোপনে ফোন ব্যবহার করতে শুরু করেছে।

আরও একটি অভিযোগ হলো—নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হয়নি। কেউ কেউ বলেছে—‘বড়রা শুধু নিষেধ করে, যেন এতে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

এদিকে, প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প পথও খুঁজে নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। যেমন অকল্যান্ডের একটি স্কুলে শিক্ষার্থীরা ফোনের পরিবর্তে ওয়াকি-টকি ব্যবহার শুরু করেছে।

গবেষকেরা বলছেন—সামগ্রিকভাবে ফোন নিষিদ্ধের পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও দায়িত্বশীলভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা শেখানোই বেশি কার্যকর হতে পারে। খাবার বিরতি বা ক্লাসের বাইরে ফোন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া এবং শিক্ষকদেরও স্বাস্থ্যকর ডিজিটাল অভ্যাসে উৎসাহিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গবেষণাটির সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ বলছে—শিক্ষার্থীরা শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী নয়, বরং সমস্যা সমাধানকারীও। তাই নিষেধাজ্ঞার বদলে তাদের যুক্ত করে বাস্তবসম্মত নীতিমালা তৈরি করাই হবে অধিক কার্যকর পথ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তানের সরকার নয়তো জঙ্গি—যে কোনো একটি বেছে নেওয়ার পরামর্শ আফগান তালেবানকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) এর কয়েক যোদ্ধা। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি) এর কয়েক যোদ্ধা। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনির আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন—কাবুলকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে নাকি পাকিস্তানি তালেবান (টিটিপি)-কে সমর্থন করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে বেড়ে ওঠা সহিংসতা ও হামলার পেছনে টিটিপি-কে দায়ী করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাওয়ালপিন্ডির সামরিক সদর দপ্তরে গার্ড অব অনার গ্রহণের সময় ওই বার্তা দেন আসিম মুনির। তিন বাহিনীর সমন্বয়ে নতুন যৌথ সামরিক কমান্ড গঠনকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা কাঠামোয় একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের দাবি—নতুন কাঠামো আর্মি, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয় আরও শক্তিশালী করবে এবং সাইবার নিরাপত্তা থেকে তথ্যযুদ্ধ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াবে।

মুনির বলেন, আফগান সরকারকে ইতিমধ্যে স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হয়েছে—পাকিস্তান আর টিটিপি—এই দুইয়ের মধ্যে একটি বেছে নিতে হবে। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ টিটিপি-কে ‘ফিতনা আল-খাওয়ারিজ’ নামে অভিহিত করে থাকে। আফগান তালেবান পৃথক সংগঠন হলেও তাদের সঙ্গে টিটিপি-র ঘনিষ্ঠ আদর্শিক সম্পর্ক রয়েছে এবং ২০২১ সালে তালেবানের ক্ষমতায় ফেরার পর টিটিপি আরও সক্রিয় হয়েছে।

আসিম মুনিরের বার্তার বিষয়ে কাবুল এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এই উত্তেজনার জেরে গত অক্টোবরে দুই দেশের সীমান্তে কয়েক দিনের সংঘর্ষে সৈন্য, বেসামরিক এবং সন্দেহভাজন জঙ্গিসহ বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এরপর কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গত নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আলোচনাগুলো দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।

জেনারেল মুনির বলেন—ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের সামরিক অভিযানের সাফল্য ভবিষ্যৎ যুদ্ধনীতির দালিলিক উদাহরণ হয়ে থাকবে। তিনি কড়া ভাষায় সতর্ক করেন—পরবর্তী সংঘাতে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া আরও দ্রুত এবং কঠোর হবে।

তিনি দাবি করেন, পাকিস্তান শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র হলেও সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা এবং স্থিতিশীলতার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর পাকিস্তান ও ভারত তিনবার যুদ্ধ করেছে। কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে এখনো দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত