Ajker Patrika

ইন্দোনেশিয়ার নারীরা গোলাপী জামা পরে ঝাড়ু হাতে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করছে কেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। পুলিশের নির্যাতন, অযৌক্তিক সরকারি খরচ এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ বুধবার এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

জাকার্তাসহ বিভিন্ন শহরে টানা দ্বিতীয় সপ্তাহ ধরে চলছে এই বিক্ষোভ। সংসদ সদস্যদের অঢেল ভাতা ও সুবিধা এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন মোটরসাইকেল চালক আাফান কুরনিয়াওয়ানকে পুলিশের গাড়ি চাপা দিলে তাঁর মৃত্যু হয়।

প্রতিবাদ তীব্রতর হলেও প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ানতো প্রথমে চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়ার সফর বাতিলের ঘোষণা দেন। তবে বুধবার তাঁকে বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা যায়।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

গত সপ্তাহান্তে প্রাবোয়ো ঘোষণা করেছিলেন, সংসদ সদস্যদের কিছু বিশেষ ভাতা কমিয়ে দেওয়া হবে—যা বিক্ষোভকারীদের মূল দাবিগুলোর একটি। তবে নারীরা বলছেন, শুধু ভাতা নয়, রাষ্ট্রযন্ত্র ও নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের অবসান চাই।

নারী অধিকারভিত্তিক সংগঠন ইন্দোনেশিয়ান উইমেন্স অ্যালায়েন্স (আইডব্লিউএ)–এর সদস্যরা জানান, ঝাড়ু হাতে নেওয়ার অর্থ হলো রাষ্ট্র, সামরিকতাবাদ ও পুলিশি দমন–পীড়নের “ময়লা ঝেটে ফেলা।” গোলাপী জামার প্রতীকী ব্যাখ্যায় তাঁরা বলেন, গোলাপী রঙ তাঁদের কাছে সাহসের প্রতীক।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

আইডব্লিউএ প্রায় ৯০টি নারী সংগঠন, নাগরিক সমাজের আন্দোলন, শ্রমিক ইউনিয়ন, মানবাধিকার সংগঠন ও আদিবাসী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট। ইন্দোনেশিয়ায় নারীদের আন্দোলন নতুন কিছু নয়। এর আগেও ১৯৯৮ সালে স্বৈরশাসক সুহার্তোর পতনের আন্দোলনে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

বর্তমান আন্দোলনে আরেকটি প্রতীক যুক্ত হয়েছে। অনেক বিক্ষোভকারী সবুজ জামা পরেছেন, যা নিহত ট্যাক্সিচালক আাফানের ইউনিফর্মের রঙ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে বলা হচ্ছে “হিরো গ্রিন” এবং গোলাপী জামাকে বলা হচ্ছে “ব্রেভ পিংক”।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় বিক্ষোভ দমনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দ্রুত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, আরও প্রাণহানি এড়াতে সরকারকে অবিলম্বে জনতার দাবি মেনে নিতে হবে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগস্টের শেষ দিকে হওয়া বিক্ষোভে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের অনেকেই পুলিশের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শত শত নারী গোলাপী জামা পরে হাতে ঝাড়ু নিয়ে পার্লামেন্ট অভিমুখে পদযাত্রা করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আনিস হিদায়াহ বলেছেন, সংলাপের জায়গা সীমিত হয়ে যাওয়ায় সহিংসতা বাড়ছে। ‘মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা বলতে চাইলে জায়গা আছে বলে মনে হয়, কিন্তু বাস্তবে সেই জায়গা নাগালে পাওয়া যাচ্ছে না।’

অবস্থার উন্নতি ঘটাতে প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো ঘোষণা দিয়েছেন, রাজনীতিবিদদের জন্য বরাদ্দ কিছু রাষ্ট্রীয় ভাতা কমানো হবে। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, এটি যথেষ্ট নয়।

ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা হেরিয়ানতো বিবিসিকে বলেন, ‘এ আন্দোলন কেবল ভাতা নিয়ে নয়। এটি দীর্ঘদিনের বৈষম্য, দুর্বল শাসনব্যবস্থা ও জবাবদিহির অভাবের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। প্রতীকী পরিবর্তন দরকার, কিন্তু মানুষ আরও গভীর সংস্কার চায়—যা সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত, যেমন কৃষি নীতি, শিক্ষা ও ন্যায়সঙ্গত অর্থনৈতিক সুযোগ।’

তিনি আরও বলেন, ‘চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো আরও জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ ও জনগণকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতে ১৪ শিশুর চোখ কেড়ে নিল দিওয়ালির নতুন খেলনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ০১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দিওয়ালিকে কেন্দ্র করে ভারতে ছেয়ে গেছে ‘কার্বাইড গান’ নামে নতুন একটি খেলনা। কিন্তু এই খেলনাই এখন ভয়াবহ ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়েছে। বিপজ্জনক এই খেলনার বিস্ফোরণে দেশটির শুধু মধ্যপ্রদেশ রাজ্যেই অন্তত ১৪ শিশু স্থায়ীভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে এবং তিন দিনে রাজ্যজুড়ে ১২০ জনেরও বেশি শিশুকে গুরুতর চোখের আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ‘কার্বাইড গান’ দেখতে সাধারণ খেলনার মতো হলেও, এটি আসলে এক ধরনের রাসায়নিক বিস্ফোরক যন্ত্র। প্লাস্টিক বা টিনের পাইপে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই যন্ত্র। মিশ্রণে উৎপন্ন হয় অ্যাসিটিলিন গ্যাস, যা আগুনের সংস্পর্শে এলে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হয়। খেলনাটির দাম মাত্র ১৫০ থেকে ২০০ রুপি হলেও, এর ক্ষতি ভয়াবহ।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের শুধু হামিদিয়া হাসপাতালেই ৭২ ঘণ্টায় ২৬ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই প্রদেশের বিদিশা জেলা। সেখানকার স্থানীয় বাজারে খেলনাটি দেদারসে বিক্রি হচ্ছিল। এ অবস্থায় গত ১৮ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে খেলনাটির বিক্রয় বন্ধে নির্দেশ দিলেও দেওয়ালির সময় তা আর নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি।

চোখ হারানো শিশুদের চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি কোনো আতশবাজি নয়, বরং একটি রাসায়নিক বোমা। ভোপাল মেমোরিয়াল হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. হেমলতা যাদব জানিয়েছেন, এই খেলনাটিতে যে বিস্ফোরণ ঘটে তাতে চোখের কর্নিয়া, আইরিস ও রেটিনা সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে ড. আদিতি দুবে সতর্ক করে বলেছেন, অ্যাসিটিলিন গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে মস্তিষ্কে প্রদাহ, মাথা ঘোরা, এমনকি দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিভ্রংশ ঘটাতে পারে।

ভোপালের এখনো প্রায় ৬০ জন আহত শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ বিদিশা জেলায় অন্তত ছয়জন বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করেছে এবং রাজ্যজুড়ে অভিযান চলছে।

অন্যদিকে বিহারের রাজধানী পাটনায়ও অন্তত ৫০ শিশুর দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আইজিআইএমএস হাসপাতালের চোখের বিশেষজ্ঞ ড. বিভূতি প্রসন্ন সিনহা জানিয়েছেন, সঠিক পরিসংখ্যান জানা না গেলেও রাজ্যজুড়ে ১৫০–২০০ জন গুরুতর বা আংশিকভাবে আহত হয়েছেন বলে ধারণা।

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোই এই ‘কার্বাইড গান’–এর জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবে বহু ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ নিজে হাতে বানিয়ে এই যন্ত্র বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে—যার শেষ পরিণতি এখন এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চ্যাংরাবান্ধা সীমান্তে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার

কলকাতা প্রতিনিধি  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত এলাকা থেকে পাঁচজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় একই সঙ্গে এক ভারতীয় নারীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটক ব্যক্তিরা গতকাল বৃহস্পতিবার সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডোরাডাবরি সীমান্তসংলগ্ন একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন।

খবর পেয়ে মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে এক ভারতীয় নারীকে আটক করা হয়েছে। আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম—মো. রবিউল ইসলাম, মো. আরিফুল, মো. সোহাগ হোসেন, মো. লাজু ও রুবেল ইসলাম।

মেখলিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহবাজ জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাঁরা গরু পাচার, বিভিন্ন চোরাচালান ও সীমান্তের অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত থাকতে পারেন। আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে যে ভারতীয় নারী রয়েছেন, তিনি স্থানীয় বাসিন্দা এবং তাঁদের আশ্রয় দিয়ে আইন ভঙ্গ করেছেন। ওসি আরও জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সমস্ত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতা, বর্ণবাদ ও নাৎসি প্রশংসা: যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক গ্রুপ চ্যাটের অন্ধকার দিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সহিংসতা, বর্ণবাদ ও নাৎসি প্রশংসা: যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক গ্রুপ চ্যাটের অন্ধকার দিক

তিনটি আলাদা ঘটনায় চলতি মাসে ফাঁস হওয়া ব্যক্তিগত অনলাইন গ্রুপ চ্যাটগুলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বার্তাগুলোতে উঠে এসেছে বর্ণবাদী, ইহুদিবিদ্বেষী ও সহিংস বক্তব্য, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যক্তিদের থেকেই এসেছে।

জনসমক্ষে আসা ব্যক্তিগতভাবে পাঠানো এ বার্তাগুলোর মধ্যে রয়েছে বর্ণবাদী গালাগাল, নাৎসিদের প্রশংসা এবং রাজনৈতিক সহিংসতার হুমকি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, প্রকাশিত হওয়ার ও সমালোচিত হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা কেন এমন মতামত প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।

এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে যে, দেশটিতে সহিংস ভাষা ও বর্ণবাদী বক্তব্য ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। বিশেষ করে কয়েক দশক ধরে কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত নাগরিক অধিকার বিজয়ের পর, যা এ ধরনের মতাদর্শগুলোকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিল।

মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই ব্যক্তিগত পরিসরে সহিংস বা বর্ণবাদী মতামত প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেক্সট মেসেজ ফাঁস হওয়ার এ ঘটনাগুলো উল্লেখযোগ্য, কারণ এগুলো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের চিন্তাভাবনা জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে।

পলিটিকোর ১৪ অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ডজনের বেশি তরুণ রিপাবলিকান নেতা জানুয়ারি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত টেলিগ্রামে একে অপরের কাছে বর্ণবাদী এবং ইহুদিবিদ্বেষী বার্তা পাঠান। তাঁরা কৃষ্ণাঙ্গদের ‘বানর’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের একজন দ্বিধাহীনভাবে বলেন, ‘আমি হিটলারকে ভালোবাসি।’

এর আগে ৩ অক্টোবর ন্যাশনাল রিভিউ প্রকাশিত আরেকটি ফাঁস হওয়া বার্তায় দেখা যায়, ভার্জিনিয়ার শীর্ষ আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা পদপ্রার্থী ডেমোক্র্যাট নেতা জে জোনস ২০২২ সালে একটি ব্যক্তিগত টেক্সট পাঠিয়ে বলেছিলেন, ওই অঙ্গরাজ্যের এক রিপাবলিকানকে গুলি করে মেরে ফেলা উচিত।

আর এ সপ্তাহে একটি ফেডারেল পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী পল ইনগ্রাসিয়া তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

কারণ তাঁর সম্পর্কে প্রকাশিত হয়েছিল, তিনি একটি ব্যক্তিগত টেক্সট মেসেজ আদান-প্রদানে নিজেকে ‘নাৎসিপ্রবণ’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং এ খবর প্রকাশের পর তিনি রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের সমর্থন হারান।

সমাজবিজ্ঞানী অ্যালেক্স টারভির মতে, গ্রুপ চ্যাটে উসকানিমূলক বক্তব্য অব্যাহত থাকার কারণ একধরনের ভ্রান্ত নিরাপত্তাবোধ। অথচ অনলাইনে পাঠানো সব বার্তারই স্থায়ী রেকর্ড থাকে এবং তা যেকোনো সময় ফাঁস হতে পারে।

টারভি মনে করেন, গ্রুপ চ্যাটের সদস্যরা কখনো কখনো ভুল করে ধরে নেন, তাঁরা তাঁদের সহ-অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাস করেন; যদিও রাজনীতিতে আনুগত্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং উদ্দেশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘এখানে ঘনিষ্ঠতার ভ্রম কাজ করে। মনে হয় যেন একান্ত আলাপ হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে আপনি ধরে নিচ্ছেন, গ্রুপ চ্যাটের প্রতিটি সদস্য চিরকাল আপনাকে রক্ষা করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরব সাগরে ১ বিলিয়ন ডলারের মাদক জব্দ করল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৩৬
পাকিস্তান নৌবাহিনীর একটি বহর। ছবি: এএফপি
পাকিস্তান নৌবাহিনীর একটি বহর। ছবি: এএফপি

আরব সাগরে যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে পাকিস্তান নৌবাহিনী। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশের সমন্বয়ে গঠিত বহুজাতিক নৌবাহিনী জোট ‘কম্বাইন্ড মেরিটাইম ফোর্সেস’ (সিএমএফ)।

বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ পিএনএস ইয়ারমুক গত সপ্তাহে টানা ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ‘রাষ্ট্রহীন’ নৌযান আটক করেছে। জাহাজ দুটিতে বিপুল ক্রিস্টাল মেথ (মেথামফেটামিন) ও অল্প পরিমাণ কোকেন পাওয়া যায়। আটক নৌযানগুলোর উৎপত্তিস্থল বা গন্তব্য সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সিএমএফ টাস্কফোর্সের কমান্ডার ও সৌদি নৌবাহিনীর কমোডর ফাহাদ আলজোইয়াদ বলেছেন, সিএমএফের ইতিহাসে এটি অন্যতম সফল মাদকবিরোধী অভিযান। পিএনএস ইয়ারমুকের মাধ্যমে রেকর্ড পরিমাণ মাদক জব্দ করা সম্ভব হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যম এক্সে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড এই অভিযানের প্রশংসা করে লিখেছে, ‘সৌদি নেতৃত্বাধীন কম্বাইন্ড টাস্কফোর্স ও পাকিস্তান নৌবাহিনীর ইয়ারমুক জাহাজ ৪৮ ঘণ্টায় আরব সাগরে দুটি ছোট নৌযানে তল্লাশি চালিয়ে ৯৭২ মিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে।’

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর একই অঞ্চলে সৌদি নেতৃত্বাধীন কমান্ডের অধীনে থাকা পাকিস্তান নৌবাহিনীর পিএনএস ইয়ামামা-২৭৪ নামের জাহাজটি ১২ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের মাদক জব্দ করেছিল। সে সময়ের অভিযানে ১৫৫ কেজি ক্রিস্টাল মেথ ও ৬৫ কেজি কোকেন উদ্ধার হয়েছিল।

ধারাবাহিক এই অভিযানের মাধ্যমে আরব সাগরে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান রোধে পাকিস্তান নৌবাহিনী ও তার আন্তর্জাতিক সহযোগীদের ভূমিকা আরও জোরদার হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত