Ajker Patrika

থাইল্যান্ডে ফের নিষিদ্ধ হচ্ছে গাঁজা, হুমকির মুখে বিলিয়ন ডলারের শিল্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৫, ১৬: ০৮
থাইল্যান্ডের একটি গাঁজার দোকান। ছবি: এএফপি
থাইল্যান্ডের একটি গাঁজার দোকান। ছবি: এএফপি

থাইল্যান্ডের সরকার আবারও গাঁজাকে অবৈধ ঘোষণা করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে দেশটির ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের শিল্প খাত অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছে। ২০২২ সালে দেশটি গাঁজাকে মাদকদ্রব্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পর এই শিল্প ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহারে নতুন করে নিয়ন্ত্রণ আরোপের এই উদ্যোগ আসছে এমন সময়ে, যখন গাঁজার বৈধতার পক্ষে থাকা ভূমজাইথাই পার্টি গত সপ্তাহে ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে গেছে। কারণ, থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত মঙ্গলবার রাতে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক নির্দেশনা জারি করে গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, গাঁজা কিনতে হলে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন বাধ্যতামূলক। এই নতুন নিয়ম রাজকীয় গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পরই কার্যকর হবে, যা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হতে পারে।

এ বিষয়ে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সোমসাক থেপসুথিন বলেন, ভবিষ্যতে গাঁজাকে আবারও মাদকদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে।

তিন বছর আগে থাইল্যান্ড এশিয়ার প্রথম দিকের দেশগুলোর একটি হিসেবে গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহারের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তবে তখন এ খাতের জন্য কোনো নির্দিষ্ট আইন-কানুন তৈরি করা হয়নি। এরপর থাইল্যান্ডে হাজার হাজার দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে গাঁজা ক্রয় ও বিক্রয়কে কেন্দ্র করে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই দেশটির পর্যটন এলাকাগুলোতে অবস্থিত।

থাই চেম্বার অব কমার্সের এক পূর্ববর্তী হিসাব বলছে, চিকিৎসাসংক্রান্ত পণ্যসহ গাঁজাশিল্পের বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ১২০ কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারত। সরকারি মুখপাত্র জিরায়ু হুংসুব জানিয়েছেন, গাঁজার নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবহার সমাজে বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের জন্য বড় ধরনের সামাজিক সমস্যা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘নীতিকে অবশ্যই তার মূল লক্ষ্য—শুধু চিকিৎসার কাজে গাঁজা ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণে—ফিরে যেতে হবে।’

এই ঘোষণায় হতবাক হয়ে গেছেন গাঁজাশিল্পের অনেক উদ্যোক্তা। তাঁদের মধ্যে আছেন ব্যাংককের গ্রিন হাউস থাইল্যান্ড ডিসপেনসারির কর্মী পুনাথাত ফুট্তিসাওং। ২৫ বছর বয়সী পুনাথাত রয়টার্সকে বলেন, ‘এটাই আমার প্রধান আয়ের উৎস। অনেক দোকানিই হয়তো আমার মতো হতভম্ব, কারণ তারা প্রচুর বিনিয়োগ করেছে।’

ক্যানাবিস অ্যাকটিভিস্ট চকওয়ান কিটি চোপাকা বলেন, থাইল্যান্ডের কৃষি, চিকিৎসা ও পর্যটনে গাঁজাশিল্প বিপ্লব ঘটাতে পারত। কিন্তু অনিশ্চয়তা ও নীতির বারবার পরিবর্তনের কারণে টেকসই উন্নয়ন হয়নি। তিনি বলেন, ‘গাঁজাশিল্প এখন রাজনীতির জিম্মি হয়ে পড়েছে।’

গতকাল বুধবারও ব্যাংককের খাও সান রোড এলাকায় গাঁজার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা দেখা গেছে। বেশির ভাগই ছিলেন পর্যটক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ড্যানিয়েল উলফ। তিনি বলেন, ‘এখানে সর্বত্র গাঁজার দোকান। তারা কীভাবে এটা বন্ধ করবে? আমার তো মনে হয় এটা আর সম্ভব না। পুরো ব্যাপারটাই পাগলামি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

খামেনি কোথায়, কেমন আছেন—উৎকণ্ঠিত ইরানিদের প্রশ্নের বন্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত