Ajker Patrika

নেপালে ঘনঘন বিমান দুর্ঘটনার কারণ কী?

আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৭: ০৬
নেপালে ঘনঘন বিমান দুর্ঘটনার কারণ কী?

নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা নতুন নয়। অ্যাভিয়েশন সেফটি ডেটাবেইজের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩০ বছরে নেপালে ২৭টি মারাত্মক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২০ টিরও বেশি ঘটেছে গত দশকেই।

সবশেষ রোববার (১৫ জানুয়ারি) ইয়েতি এয়ারলাইনসের ‘৯ এন–এএনসি এটিআর–৭২’ মডেলের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। পুরোনো বিমানবন্দর ও পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাঝামাঝি রানওয়েতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। উড়োজাহাজটিতে ৭২ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ৬৮ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু। 

 এর আগে বড় দুর্ঘটনার মধ্যে ২০১৮ সালের ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ। সেই দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত হন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের মে মাসে নেপালে তারা এয়ারের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ২২ আরোহীর সবাই নিহত হন। ২২ আরোহীর মধ্যে ১৬ জন নেপালের, ৪ জন ভারতের ও ২ জন জার্মানির নাগরিক ছিলেন।

কাঠমান্ডুতে যাওয়ার সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ১৬৭ আরোহীর সবাই নিহত হন। ১৯৯২ সালের পর এটি সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। 

 এর দুই মাস আগে, থাই এয়ারওয়েজের একটি উড়োজাহাজ একই বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হলে ১১৩ জনের মৃত্যু হয়। 

নেপাল এত বেশি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা কেন? 
ভারতের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার বেশির ভাগই দেশটির পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি, নতুন উড়োজাহাজ এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগের অভাব এবং শিথিল নিয়মের কারণে ঘটে।

নেপালের আকাশপথগুলো পাহাড়ি এলাকার ওপর দিয়ে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত নেপালের আবহাওয়া খুব দ্রুত বদলায়। ফলে অবতরণের জন্য উড়োজাহাজগুলোকে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। আর সেখান থেকেই ঘটে দুর্ঘটনা। 

 নেপালে সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। এই বিমানবন্দর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৩৩৮ মিটার ওপরে। ভূখণ্ডটি খুবই প্রতিকূল। কারণ এটি সরু ডিম্বাকার উপত্যকায় অবস্থিত। চারপাশে সুউচ্চ পর্বতমালা। পাহাড়ি ভাঁজের কারণে উড়োজাহাজ অবতরণের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পায় না। রানওয়েতে নামার জন্য একটি উড়োজাহাজকে উঁচু থেকে সোজা নেমে আসতে হয়। আর এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। 

ত্রিভুবন বিমানবন্দরে টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনসহ ছোট উড়োজাহাজ, যেমন—টুইন অটার—এখানে অবতরণ করতে পারে, তবে বড় জেটলাইনার নয়। এই ছোট উড়োজাহাজগুলো নেপালের অস্থিতিশীল ও প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে অনেক পাইলট ত্রিভুবন বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চালাতে চান না।

 কী করা যেতে পারে? 
২০২২-এর ৩০ মে, তারা এয়ার জেটের একটি উড়োজাহাজকে পাহাড়ের ধারে বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। উড়োজাহাজটিতে থাকা ২২ আরোহীর সবাইকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পোখারা-জোমসোম রুটে গত তিন দশকে বেশ কয়েকটি মারাত্মক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার মধ্যে এটি অন্যতম।

ঘটনার পর নেপালে আকাশপথের ভ্রমণ কীভাবে নিরাপদ করা যায় এ নিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের মতামত উদ্ধৃত করে বলা হয়, এ ধরনের বিমানবন্দরগুলোতে পুরোনো মডেলের উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করতে হবে। কারণ, পুরোনো মডেলের উড়োজাহাজগুলোতে আধুনিক রাডার ব্যবস্থা নেই, এটি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তারা জেট ১৯৭৯ সালে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। এতে জিপিএস প্রযুক্তি ছিল না, থাকলে হয়তো পাইলট প্রযুক্তির সহায়তায় জীবন বাঁচাতে পারতেন। কারণ দৃষ্টির সামনে কোনো বাধা থাকলে তখন জিপিএসের ওপর ভরসা করা ছাড়া উপায় থাকে না। 

অভিজ্ঞ পাইলট ক্যাপ্টেন বেড আপ্রেটি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, পাইলটেরা ৪৩ বছর বয়সী উড়োজাহাজ ওড়াতে পারেন না। তিনি ব্যাখ্যা করেন, নেপালে বেশির ভাগ ফিক্সড-উইং এয়ারক্রাফট দুর্ঘটনা ঘটে উড্ডয়নের পরপরই এবং অতরণের সময়। আর এই উড়োজাহাজগুলো নেপালের দর্শনীয় স্থান যেমন জোমসোম বা লুকলার মতো দুর্গম জায়গায় যাত্রীদের নিয়ে যায়। মাউন্ট এভারেস্ট দেখার জন্য এগুলো খুবই জনপ্রিয় স্থান। বিশেষ করে এগুলো যদি হয় স্টল এয়ারক্রাফট, তাহলে এই প্রযুক্তি অথবা প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি না থাকার কারণে নেপালের মতো আকাশে উড্ডয়ন অত্যন্ত বিপজ্জনক। 

 নেপাল সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ ডা. অর্চনা শ্রেষ্ঠা দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ১০ হাজার ফুটের নিচে চলাচল করা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট রুটগুলোতে তাঁরা প্রয়োজনীয় আবহাওয়া পরিষেবা দিতে অক্ষম। তাই নেপালের বিমানবন্দরগুলোতে অবতরণ বা উড্ডয়নের সময় পাইলটদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করা যায় না। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে হলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ এবং পূর্বাভাসে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আবহাওয়াসংক্রান্ত পরিষেবা সরবরাহের জন্য বিমানবন্দরের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন করতে হবে। 

এ ছাড়া পুরোনো মডেলের উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করে আধুনিক মডেলগুলোর জন্যই শুধু রানওয়ে সংরক্ষণ এবং একই সঙ্গে সমতলে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের পরামর্শও দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন ওমরাহ ভিসা নীতি ঘোষণা করল সৌদি আরব, কার্যকর আগামী সপ্তাহে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৩৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন দেশ থেকে ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও সুশৃঙ্খল করতে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রক ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছে। নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, ওমরাহ ভিসার প্রবেশপত্রের বৈধতার সময়কাল তিন মাস থেকে কমিয়ে ইস্যু করার তারিখ থেকে মাত্র এক মাস (৩০ দিন) নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে, এই পরিবর্তনের ফলে ওমরাহ যাত্রীদের সৌদি আরবে অবস্থানের মেয়াদের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। সূত্রের বরাত দিয়ে সৌদি সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়া জানিয়েছে, ওমরাহ যাত্রীরা রাজ্যে পৌঁছানোর পর তাঁদের অবস্থানের মেয়াদ আগের মতোই তিন মাস অপরিবর্তিত থাকবে। এই নতুন নীতি আগামী সপ্তাহ থেকে কার্যকর হবে।

নতুন সংশোধিত নিয়মানুযায়ী, ভিসা ইস্যু হওয়ার তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে যদি কোনো ওমরাহ যাত্রী সৌদি আরবে প্রবেশের জন্য নিবন্ধিত না হন বা প্রবেশ না করেন, তবে সেই ভিসাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। এই পদক্ষেপের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ভিসা ব্যবস্থাপনাকে আরও সুগম করা, অপ্রত্যাশিত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা এবং কেবল প্রস্তুত তীর্থযাত্রীরাই যেন ভিসার সুযোগ নেন, তা নিশ্চিত করা।

ন্যাশনাল কমিটি ফর ওমরাহ অ্যান্ড ভিজিট-এর উপদেষ্টা আহমেদ বাজাইফার আল-আরাবিয়াকে জানিয়েছেন, গ্রীষ্মের সমাপ্তি এবং মক্কা ও মদিনায় আবহাওয়া শীতল হওয়ায় ওমরাহ যাত্রীদের বিশাল ঢেউ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ভিড়কে সুচারুভাবে সামলানো এবং দুই পবিত্র শহরে অতিরিক্ত জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি বৃহত্তর প্রস্তুতির অংশ।

সৌদি গেজেটের তথ্যমতে, চলতি নতুন ওমরাহ মৌসুমের শুরুতে অর্থাৎ গত জুনের প্রথম দিক থেকে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ওমরাহ যাত্রীদের জন্য ৪০ লাখের বেশি ওমরাহ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে এই রেকর্ড সংখ্যক ভিসা প্রদান পূর্ববর্তী মৌসুমগুলোর পরিসংখ্যানকে উল্লেখযোগ্যভাবে ছাড়িয়ে গেছে।

এর আগে পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে গত মাসে হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় একটি ঘোষণা দেয়। সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) জানায়, এখন থেকে সকল প্রকার ভিসাধারী—যার মধ্যে ব্যক্তিগত, ফ্যামিলি ভিজিট, ইলেকট্রনিক ট্যুরিস্ট, ট্রানজিট এবং ওয়ার্ক ভিসাও অন্তর্ভুক্ত—সবাই সৌদি আরবে ওমরাহ পালনের জন্য অনুমতি পাবেন।

মন্ত্রণালয় বলেছে, সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্য অনুযায়ী ওমরাহ যাত্রীদের জন্য প্রক্রিয়া সহজ করা এবং ওমরাহ পরিষেবাগুলোতে প্রবেশাধিকার ব্যাপকভাবে প্রসারিত করার চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় ওমরাহ যাত্রীদের জন্য ‘নুসুক ওমরাহ প্ল্যাটফর্ম’ ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরেছে। এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী ওমরাহ প্যাকেজ বুকিং দিতে, ইলেকট্রনিকভাবে (অনলাইনে) ওমরাহ পালনের অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে এবং নিজেদের সুবিধামতো সময় বেছে নিতে পারেন। এই সমন্বিত ডিজিটাল ব্যবস্থা বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের জন্য ওমরাহ পালনকে আরও সহজ, প্রবেশগম্য এবং আধুনিক করবে বলে আশা করছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১০ বছরের প্রতিরক্ষা চুক্তি করল ভারত-যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৫৮
কুয়ালালামপুরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। ছবি: এক্স
কুয়ালালামপুরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। ছবি: এক্স

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ১০ বছর মেয়াদি একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বাড়াতে এই কাঠামোগত চুক্তি সই হয়েছে বলে উভয় দেশের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কুয়ালালামপুরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বৈঠকের পর এই চুক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়। হেগসেথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে ‘সমন্বয়, তথ্য আদান-প্রদান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা’ আরও জোরদার করবে। পাশাপাশি এটি ‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও ডিটারেন্স বা উত্তেজনা প্রশমন সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও’ ভূমিকা রাখবে।

চুক্তিটি এমন একসময়ে হলো, যখন দুই দেশ বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। রাশিয়ার জ্বালানি তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সব মিলিয়ে এখন ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিয়েছে ট্রাম্পের প্রশাসন।

চুক্তিটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা সম্পর্কের পুরো কাঠামোর জন্য নীতি নির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এক্সে লিখেছেন, ‘কুয়ালালামপুরে হেগসেথের সঙ্গে আমরা বৈঠক হয়েছে। আমরা একটি ১০ বছর মেয়াদি বড় আকারের ভারত-যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এটি আমাদের বিদ্যমান প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বে নতুন যুগের সূচনা। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে থাকবে। স্বাধীন, উন্মুক্ত ও সুশৃঙ্খল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের অংশীদারত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এই চুক্তির বিষয়ে থিঙ্কট্যাংক ইউরেশিয়া গ্রুপের বিশ্লেষক প্রমিত পাল চৌধুরী জানান, চুক্তিটি আসলে জুলাই-আগস্ট মাসেই সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের পাকিস্তান নিয়ে দেওয়া কিছু মন্তব্যে ভারতের অসন্তোষের কারণে বিষয়টি বিলম্বিত হয়। তাঁর মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে, যা ‘দুই সেনাবাহিনীর সমন্বিত কাজের সক্ষমতা বাড়িয়েছে, প্রযুক্তি বিনিময় সহজ করেছে এবং প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ উদ্যোগের সুযোগ সৃষ্টি করেছে’। তিনি আরও বলেন, ‘এই নতুন চুক্তি তিন ক্ষেত্রেই আরও সম্ভাবনার দরজা খুলে দিচ্ছে।’

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় প্রতিরক্ষা বিষয়টি ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের কাছে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি করবে, যার মধ্যে এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান দেওয়ার সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত।

তবে এর পর থেকে ভারতের রুশ জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা এবং মস্কোর সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনে তাদের অস্বস্তির কথা জানায়। রাশিয়া এখনো ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই নির্ভরতা ধীরে ধীরে কমছে। ভারত এখন নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্প বাড়াতে এবং সরবরাহের উৎস বৈচিত্র্যময় করতে চায়।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা পণ্য কেনা বৃদ্ধি করতে প্রস্তুত। বর্তমানে দুই দেশ উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য আলোচনা চালাচ্ছে। লক্ষ্য, নভেম্বরের মধ্যেই বহু প্রতীক্ষিত একটি বাণিজ্যচুক্তি সম্পন্ন করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিহারে এক কোটি চাকরি, লাখপতি দিদি তৈরি করবে মোদির জোট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিহারে এনডিএ জোটের ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
বিহারে এনডিএ জোটের ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

বিহার বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির এনডিএ জোট তাদের ইশতেহার প্রকাশ করেছে। ভোটের প্রথম ধাপের এক সপ্তাহও বাকি নেই। ঠিক এই সময়ে এসে এই ইশতেহারে এক কোটি সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ভারতের যে রাজ্য থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ কাজের খোঁজে অন্যান্য রাজ্যে যায়, সেখানে এই ঘোষণা বিশাল আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ইশতেহারে নারীর ক্ষমতায়নকেও দেওয়া হয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। এক কোটি নারীকে ‘লক্ষ্মী দিদি’ বা বছরে এক লাখ টাকা আয়ের উপযুক্ত করে তোলার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। পাশাপাশি চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সাতটি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।

এনডিএ জোট আরও জানিয়েছে, ৫০ লাখ নতুন পাকা ঘর তৈরি, বিনা মূল্যে রেশন, ১২৫ ইউনিট ফ্রি বিদ্যুৎ, ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনা মূল্যে চিকিৎসা এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় সামাজিক নিরাপত্তা পেনশন দেওয়া হবে।

বিহারের রাজধানী পাটনায় আজ শুক্রবার সকালে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা ও মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার যৌথভাবে এনডিএ–এর ‘সংকল্প পত্র’ প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বিজেপি, জেডিইউ, চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি ও অন্যান্য দলীয় নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

ইশতেহারে প্রধান প্রতিশ্রুতি—চাকরি। এনডিএ বলেছে, আবার ক্ষমতায় এলে রাজ্যের প্রতিটি যুবককে দক্ষতা অনুযায়ী কাজ দিতে ‘স্কিল সেনসাস’ চালু করা হবে। প্রতিটি জেলায় স্থাপিত হবে ‘মেগা স্কিল সেন্টার।’ এ ছাড়া, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হবে ‘স্পোর্টস সিটি’ ও ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’।

‘মুখ্যমন্ত্রীর নারী কর্মসংস্থান প্রকল্পে’ নারীদের দেওয়া হবে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা। এক কোটি নারীকে বছরে এক লাখ আয়ের উপযুক্ত করতে ‘লক্ষ্মী দিদি’ প্রকল্প চালু হবে। পাশাপাশি ‘মিশন কোটিপতি’ উদ্যোগের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের কোটি টাকার ব্যবসায় উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে এনডিএ।

রাজ্যে সাতটি এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার রেলপথ আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাটনা, দারভাঙ্গা, পূর্ণিয়া ও ভাগলপুরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চারটি শহরে মেট্রো নেটওয়ার্ক স্থাপনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে জোট। এ ছাড়া, প্রতিটি জেলায় ১০টি করে নতুন শিল্পপার্ক ও অন্তত ১০০টি এমএসএমই পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ৫০ হাজার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প স্থাপনের কথাও বলা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা করিডর, সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং পার্ক, বিশ্বমানের মেডিসিটি ও প্রতিটি জেলায় মেডিকেল কলেজ গড়ার অঙ্গীকারও করেছে এনডিএ। পাশাপাশি বিহারকে দক্ষিণ এশিয়ার টেক্সটাইল ও সিল্ক হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

সব ফসলের জন্য এমএসপি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি নতুন ‘কারপুরি ঠাকুর কৃষক সম্মান নিধি’ প্রকল্প চালু হবে। এর আওতায় কৃষকেরা পাবেন অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা, অর্থাৎ বছরে মোট ৯ হাজার টাকা। জেলেদের সহায়তাও বাড়ানো হবে ৯ হাজার টাকায়। কৃষি পরিকাঠামো উন্নয়নে ১ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।

রাজ্যে তৈরি হবে ‘এডুকেশন সিটি’। বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস খোলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে এনডিএ। দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘কেজি থেকে পিজি’ পর্যন্ত বিনা মূল্যে ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। স্কুলে মধ্যাহ্নভোজের পাশাপাশি দেওয়া হবে পুষ্টিকর সকালের নাশতা।

তফসিলি জাতির (এসসি) শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটি উপবিভাগে আবাসিক স্কুল খোলা হবে। উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত এসসি শিক্ষার্থীদের মাসে ২ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হবে। অনগ্রসর শ্রেণির (ইবিসি) শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হবে।

সীতার জন্মস্থানকে ‘সীতাপুরম’ নামে বিশ্বমানের আধ্যাত্মিক শহরে রূপান্তর করা হবে। এ ছাড়া বিষ্ণুপদ ও মহাবোধি করিডর নির্মাণ, রামায়ণ, জৈন, বৌদ্ধ ও গঙ্গা সার্কিট উন্নয়নও এনডিএ–এর ইশতেহারের অন্তর্ভুক্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভালুক নিয়ন্ত্রণে শিকারি খুঁজছে জাপান, কেন এই সিদ্ধান্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫: ৫৩
জাপানের হোক্কাইদো প্রিফেকচারের একটি শহরের রাস্তায় দুই ভালুক। ছবি: এএফপি
জাপানের হোক্কাইদো প্রিফেকচারের একটি শহরের রাস্তায় দুই ভালুক। ছবি: এএফপি

জাপানে হঠাৎ বেড়েছে ভালুকের আক্রমণ। দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতি সামলাতে সরকার এবার শিকারি নিয়োগের পরিকল্পনা করছে, যাতে তারা বিপজ্জনক ভালুকগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লাইসেন্সধারী শিকারি ও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নিয়োগে বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করা হবে। তারা আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়া বা মানুষের ওপর আক্রমণ করা ভালুক নিয়ন্ত্রণ করবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, একই দিন জাপান সরকার উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ভালুকের আক্রমণের ক্রমবর্ধমান সমস্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু পদক্ষেপের প্রস্তাব দিয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ভালুকের আক্রমণে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে এটি সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন হোক্কাইদো দ্বীপে সংবাদপত্র বিলি করতে যাওয়া এক ব্যক্তি এবং ইওয়াতে অঞ্চলের ৬৭ বছর বয়সী বৃদ্ধ, যিনি নিজের বাগানেই প্রাণ হারান।

সরকার বলছে, ভালুক এখন জননিরাপত্তার জন্য ‘গুরুতর হুমকি’। তাই পুলিশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ভালুক মারার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেশটির বিভিন্ন জায়গায় ভালুক সুপারমার্কেট, স্কুল এমনকি বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে বলেও জানা গেছে। অনেক মানুষ দৈনন্দিন কাজের সময় হামলার শিকার হয়েছেন।

জাপানে দুই প্রজাতির ভালুক আছে—জাপানি কালো ভালুক এবং হোক্কাইদো দ্বীপের বড় আকৃতির বাদামি ভালুক, যা বেশি হিংস্র বলে পরিচিত। এ বছর ১০০ জনের বেশি মানুষ ভালুকের আক্রমণে আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় বাসস্টপেজের কাছে এক বিদেশিও আছেন।

সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখা গেছে উত্তরের আকিতা প্রিফেকচারে। সেখানে পাহাড়ি এলাকায় সবচেয়ে বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই সপ্তাহে সরকার ঘোষণা করেছে, আকিতা অঞ্চলে ভালুক ধরতে ও তাড়াতে আত্মরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি বলেছেন, ‘মানুষের জীবন ও জীবিকা এখন হুমকির মুখে।’

তবে বর্তমান আইনে সৈন্যরা ভালুককে গুলি করতে পারবে না। তারা শিকারিদের সঙ্গে ফাঁদ পেতে বা মৃত ভালুক সরানোর কাজে সাহায্য করবে। আকিতার গভর্নর কেন্তা সুজুকি বলেন, মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করছেন, তাঁরা এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।

দেশজুড়ে শিকারির সংখ্যা দ্রুত কমছে। অনেকেই বৃদ্ধ, আর ভালুক শিকার এখন আর জনপ্রিয় নয়। ফলে ভালুকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, আর তারা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ে বিচগাছের ফল কমে গেছে। এতে ক্ষুধার্ত ভালুকগুলো গ্রামে ও শহরে ঢুকে খাবার খুঁজছে। অন্যদিকে গ্রামীণ জনসংখ্যা কমে যাওয়াও এর একটি কারণ। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সরকার বন্দুক ব্যবহারের নিয়ম শিথিল করেছে, যাতে মানুষ সহজে আবাসিক এলাকায় ভালুককে গুলি করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১৬ ডিসেম্বরের পর পুরোনো ও নতুন মোবাইল ফোনের রেজিস্ট্রেশন হবে যেভাবে

১৪ বছরের মেয়ে যেন নির্বিঘ্নে ভিডিও বানাতে পারে, তাই দেশ ছাড়ল ইনফ্লুয়েন্সার পরিবার

প্রতিদ্বন্দ্বীর ক্ষতি করতে বিদেশ থেকে সাইবার হামলা, কিছু আইএসপিকে শনাক্ত করেছে সরকার

সাপের ছোবল খেয়ে সাপসহ হাসপাতালে নারী

গাংনীতে কাঠমিস্ত্রির মরদেহ উদ্ধার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত