Ajker Patrika

অভিভাবকদের চাপে সহকর্মীর আত্মহত্যা, কোরিয়াজুড়ে প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিক্ষোভ

আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১: ০৪
অভিভাবকদের চাপে সহকর্মীর আত্মহত্যা, কোরিয়াজুড়ে প্রাথমিকের শিক্ষকদের বিক্ষোভ

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের আত্মহত্যার ঘটনায় দেশটির শিক্ষক সমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দেশটিতে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, শিক্ষকেরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের মা–বাবারা প্রায়ই বিদ্যালয়ে গিয়ে তাঁদের কর্তৃত্ব ফলানোর চেষ্টা করেন। শিক্ষকদের হয়রানি করেন। দিনে রাতে যেকোনো সময়, এমনকি ছুটির দিনেও তাঁরা ফোন করে অবিরাম অভিযোগ করতে থাকেন। 

শিক্ষক লি মিন–সো গত ৫ জুন তাঁর ডায়েরিতে লেখেন, শ্রেণিকক্ষে ঢুকতেই তাঁর মধ্যে ভয় ঢুকে যায়। ‘আমার বুক ভারী হয়ে আসছে। আমার মনে হচ্ছে আমি কোথাও পড়ে যাব। আমি কোথায় আছি তাও জানি না!’ 

গত ৩ জুলাই ডায়েরিতে তিনি লেখেন, কাজের চাপে তাঁর উন্মাদ হওয়ার অবস্থা। চাকরি ছেড়ে দিতে চান। 

এর দুই সপ্তাহ পরে সহকর্মীরা শ্রেণিকক্ষের আলমারি থেকে ২৩ বছর বয়সী এ শিক্ষকের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা। বিবিসি ভুক্তভোগীর পরিবারের অনুরোধে তাঁর নাম গোপন রেখেছে। 

এ মর্মান্তিক ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে প্রাথমিকের শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। 

মিন–সোর শূন্য অ্যাপার্টমেন্টে এখন শুধু অ্যাকুয়ারিয়ামে যত্ন করে রাখা গোল্ডফিশই থাকে। তাঁর এলোমেলো বিছানার পাশে জমে আছে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবির স্তূপ। সেসব ছবিতে শিক্ষার্থীরা লিখে রেখেছে তারা মিন–সোকে কতটা ভালোবাসে! এর নিচেই পড়ে আছে হতাশার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটি ডায়েরি। 

মিন–সোর শূন্য ঘর গোছানোর ছুতোয় চোখের পানি লুকোচ্ছিলেন তাঁর চাচাতো ভাই পার্ক দু ইয়ং। তিনি বলেন, ‘এক বছরের বেশি সময় মিন–সো শিক্ষকতা করেছেন। মায়ের দেখাদেখি এ পেশায় আসা তাঁর ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল। বাচ্চাদের খুব পছন্দ করতেন।’ 

মিন–সোর মৃত্যুর পর পুলিশ এ আত্মহত্যার জন্য সাম্প্রতিক কোনো বিচ্ছেদকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এরপর পার্ক নিজেই গোয়েন্দার ভূমিকা নিয়ে মিন–সোর ডায়েরি, মেসেজ ও কাজের নথি খুঁজে বের করেন। 

সে কাগজপত্রগুলো থেকে জানা যায়, গত কয়েক মাস ধরে মিন–সোকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা অযথা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করছিলেন। সম্প্রতি তাঁর এক শিক্ষার্থী পেনসিল দিয়ে আরেক শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত করে। এ নিয়ে তিনি অভিভাবকদের সঙ্গে গভীর রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়েন। 

ছয় সপ্তাহ ধরে ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষক সিউলে বিক্ষোভ করছেন। তাঁরা বলছেন, তাঁরা শিশু নির্যাতনকারী হিসেবে অভিহিত হওয়ার ভয়ে এতটাই ভীত যে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা শেখাতে বা তাদের মারামারির মধ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারছেন না। 

শিক্ষকেরা অভিভাবকদের বিরুদ্ধে শিশু কল্যাণ আইনের অপব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন। ২০১৪ সালে পাস হওয়া এ আইন অনুসারে, কোনো শিক্ষক শিশু নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি বরখাস্ত হবেন। 

কোনো আক্রমণাত্মক শিশুকে বাধা দিলে সে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ আনা হতে পারে। শিশুকে মুখে বাধা দিলেও তা হবে মানসিক নির্যাতন। এসব অভিযোগের ফলে শিক্ষকদের তাৎক্ষণিক চাকরিচ্যুত করা হতে পারে। 

এরকম একটি ঘটনার বর্ণনায় জানা যায়, এক অভিভাবক তাঁর সন্তানকে প্রতিদিন সকালে ফোনকল করে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। শিক্ষক সে অনুরোধ ফিরিয়ে দিলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। এমনকি সহপাঠীর চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়ায় শিক্ষক এক শিক্ষার্থীর পুরস্কারের স্টিকার তুলে ফেলার ঘটনাতেও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। 

বিক্ষোভে ২৮ বছর বয়সী এক শিক্ষক কিম জিন–সিও বলেন, তাঁরও আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় এসেছিল এবং নিজেকে সামলাতে তিনি তিন মাসের ছুটি নিয়েছিলেন। তিনি এক অবাধ্য শিক্ষার্থীকে বাথরুমে ৫ মিনিট সময় নিয়ে শান্ত হয়ে আসতে বলেন। আরেক ঘটনায়, তিনি এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তাঁর বাবা–মায়ের কাছে মারামারির অভিযোগ দেন। দুই ঘটনাতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে। 

কিম বলেন, তিনি এতোটাই কোণঠাসা বোধ করছেন যে, তাঁর মনে হয়, তিনি আর নিরাপদে শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষকেরা অত্যন্ত অসহায় বোধ করি। যারা সরাসরি ভুক্তভোগী তাঁরা মানসিকভাবে বদলে গেছেন, আর যারা ভুক্তভোগী নন তাঁরা অন্যদের ভুগতে দেখেছেন।’ 

দক্ষিণ কোরিয়ায় এমন অভিযোগের সংস্কৃতির পেছনে ভয়ানক প্রতিযোগিতাপূর্ণ সমাজও কিছুটা দায়ী। শিশুরা ছোটকাল থেকেই সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে, যাতে ভবিষ্যতে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। স্কুলের বাইরে অভিভাবকেরা সন্তানকে অতিরিক্ত–পাঠ্যক্রম এমন ব্যয়বহুল স্কুলে পাঠান। স্কুলের পরে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তারা সেখানেই থাকে। 

আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় দম্পতিরা যেখানে ৫–৬টি সন্তান নিতেন, এখনকার দম্পতিরা সেখানে মাত্র একটি সন্তান নেন। ফলে সেই সন্তানের ওপর তাঁদের প্রত্যাশাও থাকে অনেক বেশি। 

অধ্যাপক কিম বং–জে সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশনে ভবিষ্যৎ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান অসমতাও এ পরিস্থিতির জন্য অনেকটা দায়ী। 

কোরিয়ার সংস্কৃতিতে শিক্ষকদের সম্মান করার কঠোর নীতি রয়েছে। কিন্তু দেশটির রকেট গতির অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে অনেক অভিভাবকই এখন উচ্চশিক্ষিত। এই অভিভাবকেরা শিক্ষকদের অবজ্ঞার চোখে দেখেন। 

শিক্ষক কেওন বলেন, তাঁর ১০ বছরের শিক্ষকতায় তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কারণে বিষণ্নতা ও হতাশা কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ অসুস্থতার ছুটি নিয়েছিলেন। 

চার বছর আগেও অবাধ্য শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষের পেছনে বা বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু কয়েক বছর থেকে অভিভাবকেরা শিশু নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করা শুরু করেছেন। শিক্ষক কেওন সম্প্রতি একটি তুলনামূলক দরিদ্র এলাকার স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘ধনী এলাকার অভিভাবকদের আচার–ব্যবহার বেশি আপত্তিকর।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইতিহাসের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে জ্যামাইকায়, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

হারিকেন মেলিসা স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৮২ কিলোমিটার বেগে স্থায়ী বাতাস নিয়ে জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে যাচ্ছিল। ধীর গতিতে অগ্রসরমাণ এই ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঝড় হিসেবে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) তথ্য অনুযায়ী, গ্রিনিচ মান সময় বিকেল ৬টা (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত ১২ টা) পর্যন্ত মেলিসাকে ‘বিপর্যয়কর’ ঝড় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এটি স্যাফির-সিম্পসন স্কেলের সর্বোচ্চ স্তর, অর্থাৎ ক্যাটাগরি–৫ হারিকেন।

এনএইচসি জানায়, মেলিসা সোমবার গভীর রাতে বা মঙ্গলবার ভোরে জ্যামাইকার ওপর দিয়ে বয়ে যাবে। মঙ্গলবার রাতে পূর্ব কিউবা অতিক্রম করে বুধবারের মধ্যে বাহামা ও টার্কস অ্যান্ড কাইকোস দ্বীপপুঞ্জের দিকে অগ্রসর হবে। ক্যারিবীয় সাগরের অস্বাভাবিক উষ্ণ জলে ধীর গতিতে অগ্রসর হওয়ায় মেলিসার আকার ও শক্তি বেড়ে গেছে বলে এনএইচসি–এর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এর ফলে জ্যামাইকা একাধিক দিনের নজিরবিহীন ঝোড়ো বাতাস ও প্রায় তিন ফুট বৃষ্টিপাতের মুখে পড়তে পারে।

বর্তমানে মেলিসার বাতাসের পরিধি জ্যামাইকার দৈর্ঘ্যের চেয়েও বেশি। কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যের সমান আকারের এই দ্বীপটির প্রধান বিমানবন্দরগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থিত—যা বিপদের আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে। দক্ষিণ জ্যামাইকার কিছু অংশে, বিশেষ করে ঐতিহাসিক বন্দরনগর পোর্ট রয়্যালে বাধ্যতামূলক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ জারি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে আবেদন জানান। তিনি সতর্ক করেন, ঘূর্ণিঝড়টি কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, সেতু, সড়ক, বন্দর ও বিমানবন্দরের মতো অবকাঠামোর ভয়াবহ ক্ষতি করতে পারে।

সরকারি নির্দেশ সত্ত্বেও অনেক স্থানীয় বাসিন্দা রয়টার্সকে জানান, লুটপাটের আশঙ্কায় তারা ঘর ছাড়তে চান না। কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় ২৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হোলনেস বলেন, ‘এই অঞ্চলের কোনো অবকাঠামোই ক্যাটাগরি–৫ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত সহ্য করতে পারবে না।’

স্যাফির–সিম্পসন স্কেল অনুযায়ী, ক্যাটাগরি–৫ হলো সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ধাপ। এই স্কেল ঘূর্ণিঝড়ের স্থায়ী বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগের ওপর নির্ভর করে এবং সম্ভাব্য সম্পত্তি ক্ষতির মাত্রা অনুমান করতে ব্যবহৃত হয়। ক্যাটাগরি–৩ বা তদূর্ধ্ব ঘূর্ণিঝড়কে ‘মেজর হারিকেন’ বা বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ধরা হয়।

ক্যাটাগরি–৫ বলতে ঘণ্টায় ২৫২ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগের ঝড়কে বোঝানো হয়। এমন ঝড়ে অধিকাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, ছাদ উড়ে যেতে পারে, দেয়াল ধসে পড়তে পারে, গাছ ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়তে পারে। এই স্কেলে ঝড়ের সঙ্গে আসা জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, ভূমিধস বা টর্নেডোর মতো অন্যান্য প্রাণঘাতী ঝুঁকি বিবেচনা করা হয় না।

এনএইচসি ১৯৭৩ সাল থেকে এই স্কেল ব্যবহার করছে। এটি প্রণয়ন করেন প্রকৌশলী হারবার্ট স্যাফির ও আবহাওয়াবিদ রবার্ট সিম্পসন। হোলনেস জানান, তাঁর সরকার যতটা সম্ভব প্রস্তুতি নিয়েছে। ৩৩ মিলিয়ন ডলারের জরুরি বাজেট রাখা হয়েছে, পাশাপাশি গত বছরের ভয়াবহ হারিকেন বেরিলের ক্ষতির চেয়েও বেশি পরিমাণে বিমা ও ঋণ সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে।

বেরিল ছিল আটলান্টিক মহাসাগরে রেকর্ড করা সবচেয়ে দ্রুতগতির ক্যাটাগরি–৫ পর্যায়ে পৌঁছানো হারিকেন। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘূর্ণিঝড়গুলো আগের চেয়ে অনেক দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

অ্যাকুওয়েদার–এর প্রধান আবহাওয়াবিদ জোনাথন পোর্টার বলেন, ‘দশ হাজারেরও বেশি পরিবার ঘণ্টায় ১০০ মাইলের বেশি গতির প্রবল দমকা হাওয়ার মুখে পড়বে এবং কয়েক দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি আরও বলেন, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে ত্রাণ পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে।

পশ্চিম ক্যারিবীয় অঞ্চলের উষ্ণ জলবায়ুর কারণে জ্যামাইকা প্রতি বছরই উষ্ণমণ্ডলীয় ঝড় ও হারিকেনের মুখোমুখি হয়। জ্যামাইকার হারিকেন মৌসুম জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়, যার চূড়ান্ত সময় অক্টোবরের দ্বিতীয়ার্ধে। সাধারণত প্রতি বছর দ্বীপটি দুই থেকে তিনটি ট্রপিক্যাল ঝড় বা হারিকেনের প্রভাব অনুভব করে, তবে সরাসরি আঘাতের ঘটনা বিরল। ১৯৮৮ সালের পর থেকে জ্যামাইকাকে সরাসরি আঘাত করেছে মাত্র তিনটি বড় হারিকেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন দিনের বৈঠকেও সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি আফগানিস্তান-পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ১৯ অক্টোবর দোহায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ ও আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব। ছবি: এএফপি
গত ১৯ অক্টোবর দোহায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ ও আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুব। ছবি: এএফপি

তিন দিনের বৈঠক শেষেও কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। জানা গেছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় আলোচনা শেষ হলেও সীমান্তে সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে দুই দেশের। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন একটি কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।

বৈঠকের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, অধিকাংশ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলেও আফগান ভূখণ্ড থেকে সক্রিয় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ গ্রহণের প্রক্রিয়াই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পাকিস্তানের এক কূটনৈতিক বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম শিগগির আফগানিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব। এরপর যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে। কিন্তু সেটি এখনো আমাদের নাগালের বাইরে।’

বৈঠকের প্রথম ভাগে পরিবেশ ছিল বেশ ইতিবাচক। অংশগ্রহণকারীরা তখন আলোচনা সম্পর্কে বেশ অগ্রগতির কথা বলেছিলেন। তবে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আশা কমতে থাকে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী এক কূটনীতিক স্বীকার করেন, ‘এখন পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে। সন্ধ্যার দিকে বৈঠক স্থবির হয়ে পড়ে এবং রাতেও আলোচনায় নতুন কোনো গতি দেখা যায়নি।’

কূটনৈতিক সূত্রটি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, আফগান তালেবান প্রতিনিধিদল এখনো কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে অনিচ্ছুক। বিশেষত পাকিস্তানবিরোধী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) সমর্থন বন্ধের বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রশ্নে তালেবান প্রতিনিধিদল কোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না। একজন পাকিস্তানি কূটনীতিক বলেন, ‘তুর্কি আয়োজকেরা আমাদের উদ্বেগ বুঝতে পারছেন, কিন্তু কাবুল ও কান্দাহার কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চাইছে না।’

পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমাদের অবস্থান শুরু থেকেই পরিষ্কার—টিটিপির সমর্থন বন্ধ করতে হবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।’

সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকেরা জানান, ‘বহিরাগত প্রভাব’ (ভারতের দিকে ইঙ্গিত) সত্ত্বেও পাকিস্তান ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো ‘সততা ও গুরুত্বের সঙ্গে’ আলোচনাকে ইতিবাচক দিকে নিতে চেষ্টা করছে। তাই রোববারের বৈঠকের পর যে হতাশা তৈরি হয়েছিল, সোমবার পরিবেশ কিছুটা ইতিবাচক ছিল। রোববার পাকিস্তানি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ইসলামাবাদ তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে। আফগান প্রতিনিধিদলও তখন আশাবাদী ছিল। তারা জানিয়েছিল, ইস্তাম্বুলের আলোচনায় অগ্রগতি সম্ভব এবং বাকি মতপার্থক্যগুলো সীমিত কিন্তু সমাধানযোগ্য।

এ সময় তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরাও একই মনোভাব প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, আলোচনার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া জরুরি এবং সেটি যেন ভেঙে না পড়ে। কিন্তু শত চেষ্টা সত্ত্বেও সীমান্তে সন্ত্রাস দমনের বিষয়ে দুই দেশের সমঝোতার বিষয়টি অধরা রয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠক আরও এক দিন বাড়ানো হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৩৫
বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ছবি: এএফপি
বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্র এবার জাপানের সঙ্গে বিরল খনিজ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। জাপান সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির লক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ‘রেয়ার আর্থ বা বিরল মৃত্তিকা খনিজ’ উপাদানের খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, টোকিওতে বৈঠকের শুরুতেই জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের এক ‘সুবর্ণ যুগ’ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন।

এশিয়া সফরের দ্বিতীয় ধাপে বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন ট্রাম্প। বৈঠকের শুরুতেই তাকাইচি ও ট্রাম্প চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার লক্ষ্য হলো—গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ‘রেয়ার আর্থ বা বিরল মৃত্তিকা খনিজের’ উপাদানের খনন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করা।

সম্প্রতি চীন বিরল মৃত্তিকা খনিজের রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করার পর এই চুক্তির ঘোষণা এল। এই বিরল মৃত্তিকা খনিজ বৈশ্বিক প্রযুক্তি ও শিল্প উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য উপাদান। ট্রাম্প এ সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন—বাণিজ্যযুদ্ধের টানাপোড়েনের মধ্যেই এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

চুক্তির বিষয়ে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দুই দেশ অর্থনৈতিক নীতি ও যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এবং রেয়ার আর্থ উপাদানের জন্য বৈচিত্র্যময়, স্বচ্ছ ও ন্যায্য বাজার গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো ‘গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও রেয়ার আর্থ সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দেশকে সহায়তা করা।’

তাকাইচি বৈঠকের আগে বলেন, ‘আমি এমন এক নতুন সুবর্ণ যুগ দেখতে চাই, যেখানে জাপান-যুক্তরাষ্ট্র মিত্রতা আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হবে।’ গোপন বৈঠকের বিষয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, তাকাইচি ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেবেন। এই পুরস্কারের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ বহুদিনের। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি কয়েকটি সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছেন, যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ তাঁর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

গত সপ্তাহে জাপানের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তাকাইচি। তিনি গাজা ও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাতের অস্ত্রবিরতি প্রচেষ্টায় ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করেন। পরে দুই নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে স্মরণ করেন।

তাদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল বাণিজ্য ও নিরাপত্তা। কয়েক মাস আগেই তাকাইচির পূর্বসূরি শিগেরু ইশিবা যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল বিনিয়োগের বিনিময়ে হোয়াইট হাউস থেকে শুল্ক ছাড় পেয়েছিলেন। এবারও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও ছাড় পেতে জাপান আমেরিকান সয়াবিন, পিকআপ ট্রাক ও অন্যান্য পণ্য কেনার পরিকল্পনা করছে। আজ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে দুই নেতা বলেন, ‘আমরা এই মহান চুক্তি বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’, যা ‘দুই দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জোরদার করবে, প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে এবং বৈশ্বিক সমৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখবে।’

তাকাইচি যুক্তরাষ্ট্র-জাপান নিরাপত্তা সম্পর্ককে ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ জোট’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং বলেন, জাপান ‘বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদান রাখতে প্রস্তুত।’ টোকিও পৌঁছানোর পর সোমবার সন্ধ্যায় সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেন, জাপানের পক্ষ থেকে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনা ‘অত্যন্ত ইতিবাচক সংকেত।’ তিনি যোগ করেন, ‘দুই অর্থনীতি এখন প্রচুর বাণিজ্য করবে।’

ট্রাম্প তাকাইচিকে জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এটি সত্যিই বড় অর্জন।’ তিনি বলেন, ‘জাপানের জন্য আমি যা পারি, করব। তুমি অসাধারণ কাজ করবে, আর আমাদের সম্পর্কও হবে অসাধারণ।’

উল্লেখ্য, এর আগে যুক্তরাষ্ট্র বিরল মৃত্তিকা খনিজ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া, ইউক্রেন ও আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে, কিংবা চুক্তি করার পথে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় ‘মাদুরোর দিন ফুরিয়ে আসছে’, ‘ভেতরে বা বাইরে’ থেকে কিছু একটা ঘটবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৩৩
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর রিক স্কট। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর রিক স্কট। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সিনেটর রিক স্কট বলেছেন, ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর এখনই দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। কারণ, ভেনেজুয়েলায় তাঁর ক্ষমতার দিন শেষের পথে। তিনি বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় ‘মাদুরোর দিন ফুরিয়ে আসছে।’ তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফ্লোরিডার রিপাবলিকান সিনেটর রিক স্কট বলেন, ‘আমি যদি মাদুরোর জায়গায় হতাম, এখনই রাশিয়া বা চীনে চলে যেতাম।’ স্কট সতর্ক করে বলেন, মাদুরোর ‘দিন গোনা শুরু হয়ে গেছে।’ তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘ভেতর থেকে হোক বা বাইরে থেকে কিছু একটা ঘটবেই।’

তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র কি ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালাতে যাচ্ছে? জবাবে স্কট বলেন, ‘আমি তা মনে করি না। যদি এমন হয়ও, তাহলে আমি বিস্মিত হব।’ তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন ওই অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে পৌঁছেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়িয়েছে।

মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় সিআইএর অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছেন। স্কট আরও বলেন, মাদুরোকে সরিয়ে দেওয়া মানে ওই অঞ্চলে আমেরিকার প্রভাব দীর্ঘদিন প্রতিরোধকারী দেশ ‘কিউবার পতনের সূচনা’। তাঁর ভাষায়, ‘আমেরিকা এখন দক্ষিণ গোলার্ধের দেখভাল করবে।’

স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে স্কট স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ-ক্লান্ত জনগণকে নতুন করে সামরিক অভিযানে রাজি করানো ‘খুব কঠিন’। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, প্রয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক বাহিনী হস্তক্ষেপ করতে পারে’। স্কটের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি।

এর আগে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতার নিন্দা জানিয়ে অভিযোগ করেন, ওয়াশিংটন ‘এক নতুন, অনন্ত যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চাইছে’। সম্প্রতি ভেনেজুয়েলা সারা দেশে ৫ হাজার রুশ নির্মিত ইগলা-এস অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে, আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারের অংশ হিসেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদি দোকানি সোহেল

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত