Ajker Patrika

করোনা টিকার দুই ডোজের মধ্যকার দীর্ঘ বিরতি ঝুঁকিপূর্ণ: ফাউসি

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ১৩: ৪৫
Thumbnail image

ঢাকা: সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. অ্যান্টনি ফাউসি জানিয়েছে, করোনা প্রতিরোধক টিকার দুই ডোজের মধ্যকার লম্বা বিরতি ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। 

গত শুক্রবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ডা. ফাউসি।

করোনা টিকা ফাইজারের প্রথম ডোজ এবং দ্বিতীয় ডোজের মধ্যকার সঠিক বা আদর্শ বিরতি হলো ৩ সপ্তাহ। মডার্নার ক্ষেত্রে এটি ৪ সপ্তাহ জানিয়ে ফাউসি বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে দীর্ঘ বিরতি দেন, সে ক্ষেত্রে তিনি করোনাভাইরাসের যে কোনো ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন।

টিকার ডোজের ঘাটতি দেখা দিলে অবশ্য এই বিরতি বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে ফাউসি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে এমনটা দেখা গেছে। প্রচুর মানুষ সেখানে করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এটি ঘটেছে টিকার দুই ডোজের মধ্যকার দীর্ঘ বিরতির কারণে। এ কারণে আমরা সবাইকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দেবো।’

এনডিটিভি অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফাউসিও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভারতের বেশির ভাগ রাজ্যে করোনাভাইরাসের ডেলটা ধরন শনাক্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের এই ধরনটি মূল ভাইরাসের তুলনায় অনেক দ্রুত ও নিখুঁতভাবে মানবদেহে সংক্রমিত হওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং এরই মধ্যে তা প্রমাণিত। কোনো দেশে যদি ডেলটা ধরন শনাক্ত হয় তাহলে এখন প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে সেখানে খুব দ্রুত উচ্চহারে করোনা সংক্রমণ দেখা দেবে, বিশেষ করে ওই দেশের বেশির ভাগ নাগরিক যদি টিকা না নিয়ে থাকেন।’

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তৃতীয়বারের মতো গত মাসে করোনা টিকার দুই ডোজের মধ্যকার বিরতি বাড়িয়েছে। মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন বা যে কোনো দুই ডোজের করোনা টিকার প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজের মধ্যকার বিরতিকাল হবে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ। এর আগে গত মার্চে এই বিরতি ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ করা হয়েছিল। তারও আগে, দুই ডোজের মধ্যকার বিরতি ছিল ২৮ দিন। 

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যদিও বলছে, দুই ডোজের মধ্যকার দীর্ঘ বিরতিতে মানবদেহে অ্যান্টিবডি বাড়ে বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, মূলত দেশজুড়ে টিকার ডোজের তীব্র ঘাটতি দেখা দেওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে পরিত্রাণ পেতে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোকে গণ টিকাদান কর্মসূচির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন এবং যত দ্রুত সম্ভব অধিকসংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনা উচিত উল্লেখ করে ফাউসি বলেন, ‘যদিও গবেষণায় দেখা গেছে, ডেল্টার সংক্রমণ ক্ষমতা এতই বেশি যে টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পরও অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তবে তারপরও আমি বলব, মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র এটি। বিশ্বের যত বেশিসংখ্যক মানুষকে আমরা টিকার আওতায় আনতে পারব, তত দ্রুত এই মহামারি থেকে মুক্তি মিলবে।’

সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছাড়াও এর কয়েকটি ভ্যারিয়েন্টের অত্যন্ত সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ভ্যারিয়েন্টগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মূল করোনাভাইরাসের চেয়ে শক্তিশালী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত