Ajker Patrika

প্রাণঘাতী অসুখ রক্তবমি ও কালো পায়খানা হলে

ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল 
প্রাণঘাতী অসুখ রক্তবমি ও কালো পায়খানা হলে

রক্তবমি ও কালো পায়খানার কারণ

বেশ কয়েকটি কারণে পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ হয়। এর মধ্যে রয়েছে-

  • ডুইডেনাল আলসার, গ্যাস্ট্রিক আলসার।
  • নন-স্টেরয়েডজনিত ওষুধ, ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার ফলে পাকস্থলীর ছোট ও বড় ঘা।
  • ইসোফোজিয়াল ভ্যারিকস।
  • লিভার সিরোসিস অসুখের ফলে খাদ্যনালির রক্তনালি ফুলে ওঠা।
  • পাকস্থলীর ক্যানসার ও ম্যালরিওয়েস টেয়ার বা বারবার বমির কারণে খাদ্যনালির নিচের অংশে ঝিল্লি ছিঁড়ে যাওয়া।

পাকস্থলীর আলসারজনিত প্রথম দুটি কারণই সাধারণত রক্তবমি ও কালো পায়খানার জন্য বেশি দায়ী।

উপসর্গ

  • রক্তক্ষরণের বমির রং কালচে অথবা কফি গোলা পানির মতো হতে পারে।
  • অতিরিক্ত ক্ষরণে বমির সঙ্গে জমাটবাঁধা রক্ত দেখা দিতে পারে।
  • পায়খানার রং সাধারণত আলকাতরার রঙের মতো হয়ে থাকে।
  • কিছু ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণে পায়খানার সঙ্গে টাটকা অথবা জমাট রক্ত পড়তে পারে।
  • কিছু ক্ষেত্রে রোগীর রক্তবমি ও কালো পায়খানা হওয়া ছাড়াও রক্তক্ষরণ হতে পারে।
  • কিছু রোগীর মাথা ঘোরা, বুকের ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • রক্তচাপ কমে যেতে পারে কারও কারও।
  • রক্তক্ষরণের ফলে চোখ-মুখ ফ্যাকাশে দেখায়।

নির্ণয় পদ্ধতি
অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিপাকতন্ত্রের ওপরের অংশ এনডোসকপি পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তবমি ও কালো  পায়খানার কারণ নির্ণয় করা সম্ভব। এছাড়া এই পদ্ধতিতে রক্তক্ষরণের স্থান নির্ণয় করা হয়। শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। বাকি ২০ ভাগ চিকিৎসা ছাড়া ভালো হয় না, এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। অনেক ক্ষেত্রে রোগ ও রোগীর বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে অনুমান করা যায় যে পুনরক্তক্ষরণ বা মারাত্মক কিছু ঘটার আশঙ্কা কতটুকু। গবেষণায় দেখা যায়, বয়স্ক রোগী বিশেষ করে যাঁদের অন্য কোনো বড় ধরনের রোগ আছে এবং রক্তক্ষরণের জন্য যাঁরা ৫ ব্যাগের বেশি রক্ত গ্রহণ করেছেন, এ রোগে তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়া পাকস্থলীর ক্ষতের বৈশিষ্ট্যের ওপর পুনরক্তক্ষরণ ও মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন
রক্তবমি ও কালো পায়খানা হলে অবহেলা করবেন না। এ ধরনের রোগীকে জরুরিভাবে হাসপাতালে পরিপাকতন্ত্র, কোলোরেক্টাল ও লিভার বিশেষজ্ঞের অধীনে ভর্তি করতে হবে। অবহেলার কারণে অনেক রোগী এ রোগে মৃত্যুমুখে পতিত হয়ে থাকে। বিশ্বের উন্নত দেশেও শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ রোগী পাকস্থলীর রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা যায়। নিজে নিজে ব্যথার ওষুধ খাওয়ার ফলে  আমাদের দেশে এ রোগের হার মারাত্মক হারে বাড়ছে। তাই নিজে থেকে ওষুধ নয়, যেকোনো অসুখ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেলে এ রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কোলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

চেম্বার: ১৯ গ্রিন রোড, এ. কে. কমপ্লেক্স লিফট-৪, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কেমোথেরাপি ছাড়া ক্যানসার চিকিৎসায় সফলতার দাবি আমিরাতে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আবুধাবি স্টেম সেলস সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
আবুধাবি স্টেম সেলস সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি স্টেম সেলস সেন্টারের বিজ্ঞানীরা ক্যানসার চিকিৎসায় এক যুগান্তকারী সাফল্যের দাবি করেছেন। এই সাফল্য ভবিষ্যতে ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপির বিকল্প হয়ে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। আমিরাতের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়ামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষকেরা প্রথমবারের মতো দেশটিতে স্তন ও ফুসফুসের ক্যানসার থেকে ‘টিউমার-ইনফিলট্রেটিং লিম্ফোসাইটস’ (টিআইএল) আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন।

এই পদ্ধতিতে রোগীর শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধী কোষকে ব্যবহার করে ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করা হয়। সাধারণ কেমোথেরাপি যেমন সুস্থ কোষ ও ক্যানসার কোষ উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করে, সেখানে টিআইএল থেরাপি ক্যানসার কোষকে নির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে ধ্বংস করে। প্রক্রিয়াটি হলো—রোগীর টিউমার থেকে রোগপ্রতিরোধী কোষ সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে তাদের সংখ্যা ও শক্তি বাড়ানো, তারপর তা রোগীর শরীরে ফিরিয়ে দেওয়া।

আবুধাবি স্টেম সেলস সেন্টার এখন এই প্রযুক্তির উন্নয়নে দেশের প্রথম বিশেষায়িত কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে। কেন্দ্রটির প্রধান বিজ্ঞানী ড. জায়মা মাজোরা হেরেরা বলেন, ‘এটি এক ধরনের জীবন্ত থেরাপি, যা প্রতিটি রোগীর শরীরের জন্য আলাদাভাবে তৈরি হয়। অনেক সময় শেষ পর্যায়ের ক্যানসার রোগীরা শোনেন—তাদের জন্য সব চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু টিআইএল থেরাপি তাদের জন্য নতুন এক সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেই টি-সেলগুলোকে শক্তিশালী করছি, যেগুলো ইতিমধ্যে নির্দিষ্ট ক্যানসার কোষ চিনে ফেলেছে। বিশ্বের অনেক দেশে ব্যর্থ চিকিৎসার পরও এই থেরাপি টিউমার সংকুচিত করতে সফল হয়েছে। আমরা চাই, এই সম্ভাবনাটি এখানকার রোগীরাও পান।’

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) আমিরাতের সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই থেরাপি বর্তমানে মেলানোমা, ফুসফুস, জরায়ুমুখ ও মাথা-ঘাড়ের ক্যানসারের মতো জটিল টিউমারে আশার আলো জ্বালাচ্ছে। কেন্দ্রটির প্রধান নির্বাহী প্রফেসর ইয়েন্দ্রি ভেনচুরা জানিয়েছেন, এখন থেকে রোগীদের আর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে না—দেশেই তারা পাবেন সর্বাধুনিক ইমিউনোথেরাপির সুবিধা।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠিত এই কেন্দ্রটি ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সম্প্রতি তারা টাইপ-১ ডায়াবেটিস নিরাময়ের লক্ষ্যে কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় ও রিজ নেফ্রো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। প্রফেসর ভেনচুরা বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই আমরা এমন এক চিকিৎসা তৈরি করতে পারব, যা শুধু স্টেম সেল নয়—মানব অগ্ন্যাশয় পুনর্গঠন করতেও সক্ষম হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে এক দিনে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯২৮

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯২৮ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৯২৮ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৩৪৫, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯৪, বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২০, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৮, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৬, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৩, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিনজন ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৭৮ জন মারা গেছে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬৯ হাজার ৩৫৬ জন।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও অপরজন নারী। তাঁদের মধ্যে দুজন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও আরও একজন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ২৩, ৩২ ও ৫০ বছর।

এদিকে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯২২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৬৬ হাজার ২৩৪ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বয়স বাড়লে দম্পতিদের আলাদা বিছানায় ঘুমের পরিণতি ভালো নয়: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে ‘স্লিপ ডিভোর্স’ বা দম্পতিদের আলাদা ঘরে ঘুমানোর প্রবণতা বাড়ছে। কেউ কেউ বলেন, এতে ঘুমের মান বাড়ে, ক্লান্তি ও ঝগড়া কমে। এমনকি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে একই বিছানায় দুটি আলাদা কম্বল ব্যবহারের চলও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু তাইওয়ানের এক সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে—অন্য ঘরে ঘুমানো সব সময় সম্পর্কের জন্য ভালো নয়, বরং এটি মানসিক সুস্থতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) ফক্স নিউজ জানিয়েছে, তাইওয়ানের উত্তরাঞ্চলে ৮৬০ জন বয়স্ক দম্পতিকে নিয়ে করা ওই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘বিএমসি পাবলিক হেলথ’ সাময়িকীতে। গবেষকেরা সুখ, জীবনে সন্তুষ্টি ও পরিপূর্ণতার মতো মানসিক সূচকের সঙ্গে ঘুমের ধরন ও অবস্থানের সম্পর্ক খুঁজে দেখেন। ফলাফলে দেখা যায়—যেসব দম্পতি আলাদা ঘরে ঘুমান, তাঁদের মানসিক সুস্থতা তুলনামূলকভাবে খারাপ।

গবেষকদের মতে, বয়সে প্রবীণ দম্পতিদের ক্ষেত্রে একসঙ্গে থাকা বা একই বাড়িতে বসবাসের চেয়ে একই বিছানা ভাগ করে নেওয়া মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের ভাষায়—ঘুমানোর জায়গা ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক উপাদান’ যা দাম্পত্য সম্পর্কের সামগ্রিক সুখকে প্রভাবিত করে।

বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের র‍্যান্ড করপোরেশনের ঘুম-বিশেষজ্ঞ ড. ওয়েন্ডি ট্রোক্সেলের দ্বারস্থ হয়েছিল ফক্স নিউজ। ট্রোক্সেল বলেন, ‘ঘুমের ধরন ও সম্পর্কের মানসিক ঘনিষ্ঠতার মধ্যে গভীর যোগসূত্র রয়েছে।’ তিনি জানান, আলাদা ঘুমানোর সিদ্ধান্ত অনেক সময় মানসিক দূরত্ব বা সম্পর্কের টানাপোড়েনের জন্যও হতে পারে। তবে এটি কারণ নাকি ফলাফল, তা স্পষ্ট নয়।

ট্রোক্সেল আরও বলেন, ‘বয়স্কদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকেরই অনিদ্রা বা ঘুমে বিঘ্নের সমস্যা থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমও হালকা হয়, রাতে ঘুম ভেঙে যায় এবং গভীর ঘুমের পরিমাণ কমে। পাশাপাশি একাকিত্ব, বিষণ্নতা ও উদ্বেগ ঘুমের মান আরও খারাপ করে, যা আবার মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়—এ যেন এক অবিরাম চক্র।’

ড. ট্রোক্সেল মনে করেন, ঘুমের ধরন নির্ধারণের জন্য একক কোনো সূত্র নেই। কারও জন্য একসঙ্গে ঘুমানো নিরাপত্তা ও ঘনিষ্ঠতার প্রতীক, আবার কারও জন্য আলাদা ঘুমানোই স্বাস্থ্যকর। গুরুত্বপূর্ণ হলো—দম্পতিদের খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

তাঁর মতে, একসঙ্গে ঘুমানো বা জড়িয়ে শোওয়া শরীরে ‘অক্সিটোসিন’ হরমোনের নিঃসরণ ঘটায়, যা ভালোবাসা ও নিরাপত্তার অনুভূতি বাড়ায়, স্ট্রেস কমায় এবং ঘুমকে গভীর করে। তবে নাক ডাকা, বিছানায় নড়াচড়া বা শরীরের তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে কারও ঘুম ব্যাহত হলে, তা সম্পর্কের মানসিক ভারসাম্যও নষ্ট করতে পারে।

ট্রোক্সেল তাই উপদেশ দিয়েছেন, যেসব দম্পতি আলাদা ঘুমান, তাঁরা ঘুমানোর আগে একসঙ্গে সময় কাটাতে পারেন—আলাপ, হাসি বা একসঙ্গে বই পড়ার মাধ্যমে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখা সম্ভব।

সবশেষে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ঘুমের ধরন সেটাই, যা একসঙ্গে মানসম্মত ঘুম, আবেগের সংযোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি সুখ নিশ্চিত করে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

থেমে নয়, একটানা হাঁটাই হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য ও আয়ু বাড়ায়—নতুন গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ০০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ সময় হাঁটার অভ্যাস শুধু মন ভালো রাখে না, বরং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আয়ু বাড়াতে সাহায্য করে। ‘অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন’-এ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণা এমনটাই জানিয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা একটানা ১০ মিনিটের বেশি সময় হাঁটেন, তাঁদের মধ্যে হৃদ্‌রোগ ও অকালমৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কম। অন্যদিকে, যাঁরা হাঁটেন কিন্তু ছোট ছোট সময় ধরে, তাঁদের মধ্যে এই উপকারিতা কম দেখা গেছে।

গবেষণার প্রধান লেখক স্পেনের ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব মাদ্রিদের সহযোগী অধ্যাপক ড. বোরখা দেল পোজো ক্রুজ বলেন, ‘আমরা সাধারণত দৈনিক পদক্ষেপের সংখ্যা নিয়ে কথা বলি—যেমন ১০ হাজার পদক্ষেপের লক্ষ্য। কিন্তু আমাদের গবেষণা দেখিয়েছে, কীভাবে সেই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হচ্ছে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষ করে যাঁরা কম সক্রিয়, তাঁরা যদি অল্প সময়ের বদলে কিছু দীর্ঘ হাঁটা যোগ করেন, তাতেও হৃদ্স্বাস্থ্যে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।’

এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সিএনএন জানিয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৩১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম করেন না। তাঁদের অনেকে সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের কম ব্যায়াম করেন, যা হৃদ্‌রোগ, অনিদ্রা ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল জিউইশ হেলথ ইনস্টিটিউটের হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থতা বিভাগের পরিচালক ড. অ্যান্ড্রু ফ্রিম্যান বলেন, ‘প্রায় সবাই কিছু সময় হাঁটতে পারেন, কিন্তু ২০, ৩০ বা ৬০ মিনিট একটানা হাঁটা কঠিন হয়ে যায়। তাই ধীরে ধীরে সেই ক্ষমতা তৈরি করাটাই আসল বিষয়।’

দীর্ঘ সময় হাঁটার ফলে শরীরে রক্তসঞ্চালন ভালো হয়, রক্তচাপ কমে এবং রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে প্রদাহ ও মানসিক চাপ কমে, হৃদ্‌পেশি শক্ত হয়। ফ্রিম্যান বলেন, ‘এটা অনেকটা ৪৫ কেজির ডাম্বেল তোলার মতো। প্রথমে পারা যায় না, কিন্তু অনুশীলনে সক্ষমতা বাড়ে—হৃদ্‌যন্ত্রও তেমনি।’

গবেষকেরা বলেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট ধাপের লক্ষ্য না রেখে বরং সময়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। দিনে অন্তত কিছু সময় একটানা হাঁটলে উপকার পাওয়া যায়। গতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে ধারাবাহিক ও দীর্ঘ সময় হাঁটা বেশি ফল দেয়।

ড. দেল পোজো ক্রুজ পরামর্শ দিয়েছেন, ‘দিনে একাধিকবার ২০-৩০ মিনিট করে টানা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে শরীর সক্রিয় থাকবে, হৃদ্‌যন্ত্র মজবুত হবে।’

হাঁটার সঠিক ভঙ্গিও জরুরি—শরীর সোজা রাখুন, কাঁধ পেছনে দিন এবং হাত দোলান। এতে ভারসাম্য বজায় থাকে ও শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়।

গবেষণাটি যুক্তরাজ্যের ৩৩ হাজার প্রাপ্তবয়স্কের তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা দৈনিক ৮ হাজার ধাপের কম হাঁটতেন এবং কারও বড় রোগ ছিল না। এক সপ্তাহের ডেটা সংগ্রহের মাধ্যমে গবেষণাটি সম্পন্ন হয়।

সবশেষে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নিয়মিত ও দীর্ঘ সময় হাঁটা এমন একটি সহজ উপায়, যা ব্যয়বহুল চিকিৎসা ছাড়াই হৃদ্‌স্বাস্থ্য রক্ষা এবং আয়ু বৃদ্ধিতে অসাধারণ ভূমিকা রাখতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসির তালিকায় যুক্ত নতুন নির্বাচনী প্রতীক ‘শাপলা কলি’

‘আমি আওয়ামী লীগ করি, এটাই অপরাধ’

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

গণভোট নিয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা: আসিফ নজরুল

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত