Ajker Patrika

ল্যাসিক সার্জারি: আধুনিক দৃষ্টি সংশোধনের এক বিপ্লব

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান যুগে দৃষ্টি সংশোধনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয় ও নিরাপদ প্রযুক্তিগুলোর একটি ল্যাসিক সার্জারি। আধুনিক লেজার চিকিৎসাপদ্ধতি এটি। এর মাধ্যমে চোখের কর্নিয়ার আকার পরিবর্তন করে দৃষ্টিশক্তির ত্রুটি ঠিক করা হয়। মায়োপিয়া বা কাছের জিনিস পরিষ্কার দেখা, হাইপারমেট্রোপিয়া বা দূরের জিনিস পরিষ্কার দেখা এবং অ্যাস্টিগমাটিজম বা অনিয়মিত দৃষ্টি—তিন ধরনের দৃষ্টি সমস্যা নিরাময়ে ল্যাসিক সার্জারি খুব কার্যকর।

ল্যাসিক সার্জারির প্রক্রিয়া

ল্যাসিক সার্জারির মূল কাজ হলো কর্নিয়ার পৃষ্ঠের গঠন সামান্য পরিবর্তন করে দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক করা। প্রথমে একটি সূক্ষ্ম যন্ত্র বা ফেমটোসেকেন্ড লেজার ব্যবহার করে কর্নিয়ার ওপর একটি পাতলা ফ্ল্যাপ তৈরি করা হয়। এরপর এক্সাইমার লেজার দিয়ে কর্নিয়ার ভেতরের নির্দিষ্ট অংশে লেজার রশ্মি দিয়ে তার আকার পরিবর্তন করা হয়। শেষে সেই ফ্ল্যাপ আগের স্থানে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সার্জারিটি ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয় এবং এটি সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত।

কারা ল্যাসিক করাতে পারবেন

ল্যাসিক সার্জারি করার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। সেগুলো হলো—

» বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে।

» দৃষ্টিশক্তির পাওয়ার অন্তত এক বছর ধরে স্থিতিশীল থাকতে হবে।

» কর্নিয়া পর্যাপ্ত পুরু হতে হবে।

» চোখে কোনো সংক্রমণ, কর্নিয়াল ডিজিজ বা গ্লুকোমা থাকা যাবে না।

» গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী নারীদের এই সার্জারি করা যাবে না।

ল্যাসিকের সুবিধা

ল্যাসিক সার্জারির বড় সুবিধা হলো, এটি চশমা ও কন্টাক্ট লেন্সের বিকল্প হিসেবে স্থায়ী সমাধান দেয়। অধিকাংশ রোগী সার্জারির পরপরই পরিষ্কার দৃষ্টি ফিরে পান এবং কয়েক দিনের মধ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। এতে ব্যথা কম, সেলাইয়ের প্রয়োজন নেই এবং পুনরুদ্ধারকাল তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত।

সম্ভাব্য ঝুঁকি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ল্যাসিক একটি নিরাপদ পদ্ধতি হলেও কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে। যেমন চোখে শুষ্ক ভাব, আলোতে ঝলকানি, রাতের দৃষ্টি কিছুটা অস্পষ্ট হওয়া ইত্যাদি। খুব বিরল ক্ষেত্রে সংক্রমণ বা কর্নিয়ার অতিরিক্ত পাতলা হয়ে যাওয়ার মতো জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তবে অভিজ্ঞ চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ঝুঁকি প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব।

সার্জারির পর যত্ন

ল্যাসিকের পর প্রথম কয়েক দিন চোখে পানি পড়া, হালকা জ্বালাপোড়া বা অস্পষ্ট দৃষ্টি দেখা দিতে পারে, যা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে চোখে ড্রপ ব্যবহার করা এবং কিছুদিন ধুলাবালু ও পানির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। নিয়মিত ফলো-আপ করানো জরুরি।

পরামর্শ দিয়েছেন: চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘জুলাই যোদ্ধাকে’ জুলাই ফাউন্ডেশনে পাইপ দিয়ে মারধর, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভারতের হারে বাংলাদেশের বিদায়, হামজার হতাশা

এবার দলগুলো পেল চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও স্বাক্ষরের আমন্ত্রণপত্র

সেনা কর্মকর্তাদের জন্য ‘সাবজেল’ ঘোষণার যৌক্তিকতা কী, টিআইবির প্রশ্ন

ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করলেন হাবিল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত