Ajker Patrika

কান পাকলে বা পর্দা ফেটে গেলে কী করবেন

ডা. ম. মঈনুল হাফিজ
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২২, ১৯: ২২
কান পাকলে বা পর্দা ফেটে গেলে কী করবেন

কান পাকা ও পর্দা ফেটে যাওয়ার কথা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। এই সমস্যা দেখা দিলে কানে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কানের পর্দা সুস্থ থাকলে অল্প আঘাতে ফেটে যাওয়ার কথা নয়। যদি এ রকম ঘটে তাহলে বুঝতে হবে, কানের পর্দা আগে থেকেই অসুস্থ বা দুর্বল ছিল। অবশ্য কানের ওপর প্রচণ্ড আঘাত লাগলে সুস্থ পর্দাও ফেটে যেতে পারে। অল্প সর্দি কাশিতে কানের পর্দা ফেটে গিয়ে পুঁজ-পানি বের হওয়ার ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। বয়স্ক রোগীদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছোটবেলা থেকে কানের পর্দা দুর্বল থাকে। অথবা ক্রমাগত নাক বা সাইনাসের প্রদাহের কারণে বা ক্ষেত্রবিশেষে টনসিলের ক্রমাগত প্রদাহের কারণে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে যায়।

উপসর্গ

  • কানে কম শোনা।
  •  কান পাকার জন্য কান দিয়ে পুঁজ-পানি বের হওয়া।
  •  অনেক সময় মাথা ঘোরা।
  •  মাথার ভেতরে ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া।
  •  অনেক সময় কানে ব্যথা হতে পারে।

প্রকারভেদ
সাধারণত কানের পর্দা ফাটা দুই রকমের হয়ে থাকে। একটিতে পর্দার সামনের অংশ ফুটো থাকে এবং অন্যটিতে কানের পর্দার পেছনের অংশটিতে ফুটো থাকে। পেছনের ফুটো সাধারণত মারাত্মক হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন কানের পর্দা ফুটো থাকলে এবং ঘনঘন কানে সংক্রমণ হলে পর্দা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

করণীয়
চিকিৎসা শুরুর আগে রোগীদের কিছু বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

  •  পর্দা ফাটা থাকলে অবশ্যই কান শুকনো রাখতে হবে। গোসল করার সময় তুলায় তেল দিয়ে ভিজিয়ে তারপর তুলা চিপে কানে দিয়ে গোসল করতে হবে।
  •  কানে সংক্রমণ থাকলে কানটি ঠিকমতো পরিষ্কার করতে হবে। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শে কানে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ দিতে হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে কান পরিষ্কার করতে হতে পারে। কখনো কখনো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হতে পারে বা ইনজেকশন দিতে হতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ কান শুকনা অবস্থায় দেওয়া নিষেধ। এটি মারাত্মক ক্ষতি করে ফেলতে পারে। এমনকি শ্রবণশক্তি নষ্ট করে দিতে পারে।
  • শ্রবণশক্তি এবং কানের অন্যান্য ক্ষমতা পরীক্ষা করার জন্য অডিওগ্রাম করানো দরকার। এতে বোঝা যায় কান কতখানি নষ্ট হয়েছে। অনেক সময় সমস্যা বোঝা চিকিৎসকের জন্যও কঠিন হতে পারে। কিন্তু ভেতরে-ভেতরে কানের ক্ষতি হতে থাকে এবং শ্রবণশক্তি ক্রমাগত কমতে থাকে। কাজেই প্রতি ৩ থেকে ৬ মাস অন্তর কানের হেয়ারিং টেস্ট করে শ্রবণশক্তির পরিমাণ রেকর্ড করা উচিত।

কান খুব স্পর্শকাতর অঙ্গ। যাই ঘটুক না কেন নিজে কিছু না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক: নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন
চেম্বার: ইএনটি সেন্টার
রোড-৩৫, হাউস-৩৮/এ, সানমার টাওয়ার-২
লেভেল-১৩, গুলশান-২, ঢাকা-১২১২।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত