ডা. মো. আরমান হোসেন রনি
বর্তমানে অনেকের ডায়াবেটিসজনিত অন্ধত্ব দেখা দিচ্ছে। সারা বিশ্বে প্রায় ৫৩৭ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ দশমিক ১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। ২০৪৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা হবে প্রায় আড়াই কোটি। আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৫ শতাংশ রোগীর। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ধত্বের প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি।
রেটিনা হলো চোখের পেছনে অবস্থিত আলো সংবেদনশীল টিস্যু, যা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগে সাধারণত দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সঠিক চিকিৎসা করা না হলে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে থাকে। মাতৃগর্ভ থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেকোনো সময় ডায়াবেটিস হতে পারে।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই প্রকার: টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ সাধারণত ১০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। আর টাইপ-২ হয়ে থাকে ২৫ বছরের পর থেকে। টাইপ-২-এর তুলনায় টাইপ-১ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস রয়েছে ৩০ বছর পর তাদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা ৯০ শতাংশ।
কাদের ঝুঁকি বেশি
» যারা দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছে: ৩০ বছর বয়সের আগে যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে, ১০ বছর পর তাদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ। আর ৩০ বছর পর সেই আশঙ্কা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ শতাংশে। ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে অথবা বয়ঃসন্ধিকালের আগে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।
» যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত: দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এটি নিয়ন্ত্রণে থাকলে এর সুফল টাইপ-২-এর চেয়ে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের রোগীরাই বেশি পেয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এইচবিএ-১ টেস্টের মান ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখা বাঞ্ছনীয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের এইচবিএ-১ টেস্টের মান ১ শতাংশ কমিয়ে আনা গেলেও ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের ছোট ছোট রক্তনালিতে যে জটিলতা হয়, তা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব।
» যারা গর্ভবতী: গর্ভাবস্থার সঙ্গেও ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে রেটিনোপ্যাথি হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
» যাদের উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত: সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ ১৪০/৮০ মিলিমিটার পারদের নিচে থাকা বাঞ্ছনীয়।
এ ছাড়া যাদের কিডনি রোগ আছে, যারা ধূমপান করে, যাদের রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি, যাদের ছানি অপারেশন হয়েছে, যাদের স্থূলতা এবং যাদের রক্তশূন্যতার সমস্যা আছে, তারাও ডায়াবেটিসজনিত অন্ধত্বের ঝুঁকির মধ্যে আছে।
প্রতিরোধে যা করণীয়
» ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির পরিমাণ, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
» ধূমপান পরিহার করা।
» সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা।
» নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়ামের অভ্যাস।
» দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করা।
» নিয়মিত ওষুধ সেবন।
যা মনে রাখতে হবে
» ডায়াবেটিসের স্থায়িত্বকাল রেটিনাপ্যাথির তীব্রতা ও চোখের ক্ষতির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
» সময়মতো ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করতে পারলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা কমে যায়।
» ১০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ডায়াবেটিসের রোগী, যাদের এক বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস আছে এবং ৩০ বছরের বেশি বয়সের রোগীদের বছরে অন্তত একবার চক্ষুবিশেষজ্ঞ দিয়ে রেটিনা পরীক্ষা করা জরুরি।
ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, কনসালট্যান্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা
বর্তমানে অনেকের ডায়াবেটিসজনিত অন্ধত্ব দেখা দিচ্ছে। সারা বিশ্বে প্রায় ৫৩৭ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ দশমিক ১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ। ২০৪৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা হবে প্রায় আড়াই কোটি। আক্রান্ত রোগীদের ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৫ শতাংশ রোগীর। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অন্ধত্বের প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি।
রেটিনা হলো চোখের পেছনে অবস্থিত আলো সংবেদনশীল টিস্যু, যা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগে সাধারণত দুই চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সঠিক চিকিৎসা করা না হলে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে থাকে। মাতৃগর্ভ থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেকোনো সময় ডায়াবেটিস হতে পারে।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই প্রকার: টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ সাধারণত ১০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। আর টাইপ-২ হয়ে থাকে ২৫ বছরের পর থেকে। টাইপ-২-এর তুলনায় টাইপ-১ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের টাইপ-১ ডায়াবেটিস রয়েছে ৩০ বছর পর তাদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা ৯০ শতাংশ।
কাদের ঝুঁকি বেশি
» যারা দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিসে ভুগছে: ৩০ বছর বয়সের আগে যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে, ১০ বছর পর তাদের ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা ৫০ শতাংশ। আর ৩০ বছর পর সেই আশঙ্কা বেড়ে দাঁড়ায় ৯০ শতাংশে। ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে অথবা বয়ঃসন্ধিকালের আগে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম।
» যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত: দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে রেটিনোপ্যাথি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এটি নিয়ন্ত্রণে থাকলে এর সুফল টাইপ-২-এর চেয়ে টাইপ-১ ডায়াবেটিসের রোগীরাই বেশি পেয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এইচবিএ-১ টেস্টের মান ৬ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে রাখা বাঞ্ছনীয়। ডায়াবেটিসের রোগীদের এইচবিএ-১ টেস্টের মান ১ শতাংশ কমিয়ে আনা গেলেও ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের ছোট ছোট রক্তনালিতে যে জটিলতা হয়, তা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব।
» যারা গর্ভবতী: গর্ভাবস্থার সঙ্গেও ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে রেটিনোপ্যাথি হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
» যাদের উচ্চ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত: সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ ১৪০/৮০ মিলিমিটার পারদের নিচে থাকা বাঞ্ছনীয়।
এ ছাড়া যাদের কিডনি রোগ আছে, যারা ধূমপান করে, যাদের রক্তে চর্বির পরিমাণ বেশি, যাদের ছানি অপারেশন হয়েছে, যাদের স্থূলতা এবং যাদের রক্তশূন্যতার সমস্যা আছে, তারাও ডায়াবেটিসজনিত অন্ধত্বের ঝুঁকির মধ্যে আছে।
প্রতিরোধে যা করণীয়
» ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির পরিমাণ, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
» ধূমপান পরিহার করা।
» সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা।
» নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়ামের অভ্যাস।
» দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করা।
» নিয়মিত ওষুধ সেবন।
যা মনে রাখতে হবে
» ডায়াবেটিসের স্থায়িত্বকাল রেটিনাপ্যাথির তীব্রতা ও চোখের ক্ষতির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
» সময়মতো ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু করতে পারলে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা কমে যায়।
» ১০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ডায়াবেটিসের রোগী, যাদের এক বছরের বেশি সময় ধরে ডায়াবেটিস আছে এবং ৩০ বছরের বেশি বয়সের রোগীদের বছরে অন্তত একবার চক্ষুবিশেষজ্ঞ দিয়ে রেটিনা পরীক্ষা করা জরুরি।
ডা. মো. আরমান হোসেন রনি, কনসালট্যান্ট (চক্ষু), দীন মোহাম্মদ আই হসপিটাল, সোবহানবাগ, ঢাকা
নানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না...
২১ ঘণ্টা আগেঅফিসে বারবার ঘুম পেলে তা কাজের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। ডেডলাইন মিস করা, কাজ জমে যাওয়া, এমনকি চাকরিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসা জরুরি। তবে কিছু বিষয় মেনে চললে কাজের সময় ঘুম পাওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন।
২১ ঘণ্টা আগেবাতরোগ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের সমস্যা বলে বিবেচিত। কিন্তু শিশুরাও এতে আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় অভিভাবকেরা ভাবেন, এই বয়সে এমন ব্যথা বা অস্বস্তি সাময়িক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক শিশু দীর্ঘস্থায়ী বাতরোগে ভোগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগকে বলা হয় জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রারাইটিস...
২১ ঘণ্টা আগেশরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে জ্বর বলা হয়। জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ। ফলে জ্বর হওয়াকে শরীরের ভেতরের কোনো রোগের সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে।
২১ ঘণ্টা আগে