Ajker Patrika

কিডনি ভালো রাখার ৮ উপায়

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ০৩
কিডনি ভালো রাখার  ৮ উপায়

মানবদেহে পানি ও লবণের ভারসাম্য রক্ষা, দেহে পুষ্টি আহরণ, বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন—যেকোনো কাজেই কিডনির ভূমিকা অপরিহার্য। কিডনির দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয়, তেমনি বেঁচে থাকাকেও ফেলে দেয় ঝুঁকিতে। তাই কিডনি সুরক্ষিত রাখতে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।

 

প্রতীকী ছবিকিডনি রোগ হলো নীরব ঘাতক। জীবনের গুণগত মানের ওপর এর অনেক প্রভাব। তবে কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে আছে উপায়।

কিডনি ওয়াশিং মেশিনের মতো শরীরের সব জঞ্জাল রক্তে ফিল্টার করে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। প্রতিদিন এটি ১৮০ লিটার রক্ত ফিল্টার করে। রক্ত প্রতিদিন পরিশোধিত হয় ৫০ বার। এই বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রটিকে ঠিক রাখতে মানতে হবে বিশেষ ৮টি সূত্র।
 
⊲ ফিট ও সক্রিয় থাকতে হবে। দেহের ওজন রাখতে হবে আদর্শ। এতে কমে রক্তচাপ এবং ঝুঁকি কমে কিডনি রোগের। এ জন্য হাঁটা হলো কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
 
⊲ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। এতে দেহের ওজন ঠিক থাকে, কমে রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং হৃদ্‌রোগ থাকে নিয়ন্ত্রণে। এ জন্য খাবারে লবণের পরিমাণ কমাতে হবে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না। খাদ্য উপাদানেও লবণ থাকে। প্রসেস করা ও রেস্তোরাঁর খাবার খেতে হবে বুঝে-শুনে। খুব বেশি খাওয়া যাবে না। তাতে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 
 
⊲ রক্তের সুগার পরীক্ষা করানো এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের বেশির ভাগই জানেন না যে তাঁরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সাধারণ শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হিসেবেও রক্তে চিনির পরিমাণ দেখা দরকার। মধ্য বয়সে পৌঁছাচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ এটি। কারণ, ডায়াবেটিস যাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তাঁদের অর্ধেকের হয় কিডনি রোগ। আর রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকলে এর ঝুঁকি থাকে কম। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা কিডনি, প্রস্রাবের অ্যালবুমিন ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করাবেন।
 

প্রতীকী ছবি

⊲ পরীক্ষা করান রক্তচাপ এবং রাখুন নিয়ন্ত্রণে। রক্তচাপ আছে এমন লোকদের অর্ধেক জানেন না তাঁদের আছে উচ্চ রক্তচাপ। তাই সাধারণ শারীরিক পরীক্ষার সময় রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে হতে পারে কিডনির রোগ। সঙ্গে ডায়াবেটিস আর রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে ঝুঁকি আরও বাড়ে। ১২০ বাই ৮০ রক্তচাপ আদর্শ। তবে দুবার ১৪০ বাই ৯০ হলে রক্তচাপ অবশ্যই বেশি।
 
চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তাঁর পরামর্শমতো লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে চলতে হবে। প্রয়োজন হলে তিনি ওষুধ দেবেন। নতুন পরামর্শ রক্তচাপ ১৩০ বাই ৮০ হলেও ওষুধ শুরু করা যেতে পারে।
 
⊲ যথাযথ তরল খাবার খান। ব্যায়াম, আবহাওয়া, গর্ভাবস্থা অসুখ অনেক কিছু তরলের পরিমাণ নির্ধারণ করে। সাধারণত ৮ কাপ, অর্থাৎ ২ লিটার পানি পান করতে হবে প্রতিদিন।
 
⊲ ধূমপান বাদ দিন। ধূমপান করলে কিডনিতে রক্তের সরবরাহ কমে যায়। সেটা হলে কিডনির কাজ বাধাগ্রস্ত হয়। ধূমপান বাড়ায় কিডনি ও ক্যানসারের ঝুঁকি।
 
⊲ ব্যথানাশক ও প্রদাহ প্রতিরোধী ওষুধ বেশি খাওয়া যাবে না। এনএএসআইডি আর ব্যথানাশক ওষুধ অতিরিক্ত গ্রহণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বাজার থেকে নিজেরাই কিনে না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে খেতে হবে এ ধরনের ওষুধ।
 
⊲ স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকলে কিডনি পরীক্ষা করান। পাশাপাশি দেখতে হবে: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে কি না।
 
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত