ডা. তাহমিদা খানম

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অধিকাংশ দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি যেমন—উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি-জটিলতা, বাত রোগ ইত্যাদি চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পরিমার্জন।
বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষে আমরা পরাজিত করেছি অসংখ্য সংক্রামক ব্যাধি, যেমন গুটিবসন্ত বা পোলিও। ভয়াবহতা কমেছে কলেরা, যক্ষ্মা, কালাজ্বর কিংবা ম্যালেরিয়া রোগের। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। পক্ষান্তরে প্রযুক্তির উৎকর্ষে শারীরিক শ্রমের ঘাটতি কিংবা বিশ্বায়নের বলয়ে প্রথাগত খাদ্যতালিকায় নিত্যনতুন সংযোজনে আমরা অসংক্রামক ব্যাধির মহামারির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই সময় এসেছে নৈমিত্তিক জীবনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বেছে নেওয়া ও এর চর্চা করার।
খাদ্যের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই উপাদানগুলোর কোনটি কীভাবে ও কী পরিমাণে গ্রহণ করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব—আসুন জেনে নিই।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চাল, গম, আলু, মিষ্টি আলু, মধু, গুড়, চিনি ইত্যাদি মূলত শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। শর্করা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো উক্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (প্রতি ৫০ গ্রাম শর্করা খাদ্য গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা)। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার; যেমন—চিনি, গুড়, পরিশোধিত চাল ও আটা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে আঁশ জাতীয় শর্করা; যেমন—লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, শিমের বিচি, ডাল জাতীয় খাদ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্যগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।
আমিষ
আমিষ জাতীয় খাবার বলতে প্রাণিজ আমিষ; যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ; যেমন–ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য বোঝায়। প্রতি গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৬৫ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ দৈনিক ৪০ গ্রামের কম হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত আমিষ খাবার পরিপাক থেকে তৈরি বর্জ্য কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া লাল মাংস; যেমন—গরু বা খাসির মাংসে অত্যধিক মাত্রায় চর্বি থাকায় এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। আমিষের উৎস হিসেবে তাই মাছ ও দুধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
চর্বি
চর্বি জাতীয় খাবার সর্বোচ্চ শক্তি প্রদান করে; যেমন—প্রতি গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বি উপাদান বর্তমানে সব ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি; যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত; তাই এই মৌলিক উপাদানটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় চর্বি থেকে তৈরি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড; যেমন–ঘি, বাটার, ডালডা ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মূল উৎস। অন্যদিকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে যোগ করতে হবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিকারী খাবার; যেমন মাছের তেল (মূলত সামুদ্রিক মাছ; যেমন—ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি) আখরোট, তিসির তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, চিয়াসিড, সবুজ পাতাওয়ালা সবজি ইত্যাদি। দৈনিক সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ১০ শতাংশের কম খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন
সব ধরনের খাবারে কিছু-না-কিছু ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তবে প্রধান উৎস বিবেচনায় ভিটামিন এ-এর জন্য কলিজা, দুধ, ডিম ও মাছের তেল; ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো ও মাছের তেল; ভিটামিন ই-এর জন্য সূর্যমুখী তেল, পাতাওয়ালা সবজি; ভিটামিন কে-এর জন্য প্রাণিজ আমিষ; ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের জন্য ডিম, দুধ, পনির, মাংস ইত্যাদি এবং ভিটামিন সি-এর জন্য টকজাতীয় ফল ও সবজি বিবেচিত। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের সুস্থতা ও বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
মিনারেল
খনিজ লবণসমূহের মধ্যে আয়োডিন, জিংক, লৌহ, ফসফরাস ও পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লৌহ রক্ত তৈরির অবিচ্ছেদ্য উপাদান। জিংক হাড়, নখ, চুল ও চামড়ার সুস্থতায় জরুরি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার খাদ্যে সোডিয়ামের অতিমাত্রা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা খাবার লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পানি
শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি শরীরের তাপমাত্রা ও অম্ল-ক্ষারের সাম্য বজায় রাখে। তাই সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তির খাদ্যগ্রহণ তার বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কাজের ধরন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। সুস্থ দেহের জন্য সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের তাই কোনো বিকল্প নেই।
ডা. তাহমিদা খানম: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অধিকাংশ দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি যেমন—উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি-জটিলতা, বাত রোগ ইত্যাদি চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পরিমার্জন।
বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষে আমরা পরাজিত করেছি অসংখ্য সংক্রামক ব্যাধি, যেমন গুটিবসন্ত বা পোলিও। ভয়াবহতা কমেছে কলেরা, যক্ষ্মা, কালাজ্বর কিংবা ম্যালেরিয়া রোগের। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। পক্ষান্তরে প্রযুক্তির উৎকর্ষে শারীরিক শ্রমের ঘাটতি কিংবা বিশ্বায়নের বলয়ে প্রথাগত খাদ্যতালিকায় নিত্যনতুন সংযোজনে আমরা অসংক্রামক ব্যাধির মহামারির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই সময় এসেছে নৈমিত্তিক জীবনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বেছে নেওয়া ও এর চর্চা করার।
খাদ্যের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই উপাদানগুলোর কোনটি কীভাবে ও কী পরিমাণে গ্রহণ করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব—আসুন জেনে নিই।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চাল, গম, আলু, মিষ্টি আলু, মধু, গুড়, চিনি ইত্যাদি মূলত শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। শর্করা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো উক্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (প্রতি ৫০ গ্রাম শর্করা খাদ্য গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা)। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার; যেমন—চিনি, গুড়, পরিশোধিত চাল ও আটা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে আঁশ জাতীয় শর্করা; যেমন—লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, শিমের বিচি, ডাল জাতীয় খাদ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্যগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।
আমিষ
আমিষ জাতীয় খাবার বলতে প্রাণিজ আমিষ; যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ; যেমন–ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য বোঝায়। প্রতি গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৬৫ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ দৈনিক ৪০ গ্রামের কম হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত আমিষ খাবার পরিপাক থেকে তৈরি বর্জ্য কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া লাল মাংস; যেমন—গরু বা খাসির মাংসে অত্যধিক মাত্রায় চর্বি থাকায় এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। আমিষের উৎস হিসেবে তাই মাছ ও দুধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
চর্বি
চর্বি জাতীয় খাবার সর্বোচ্চ শক্তি প্রদান করে; যেমন—প্রতি গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বি উপাদান বর্তমানে সব ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি; যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত; তাই এই মৌলিক উপাদানটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় চর্বি থেকে তৈরি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড; যেমন–ঘি, বাটার, ডালডা ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মূল উৎস। অন্যদিকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে যোগ করতে হবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিকারী খাবার; যেমন মাছের তেল (মূলত সামুদ্রিক মাছ; যেমন—ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি) আখরোট, তিসির তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, চিয়াসিড, সবুজ পাতাওয়ালা সবজি ইত্যাদি। দৈনিক সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ১০ শতাংশের কম খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন
সব ধরনের খাবারে কিছু-না-কিছু ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তবে প্রধান উৎস বিবেচনায় ভিটামিন এ-এর জন্য কলিজা, দুধ, ডিম ও মাছের তেল; ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো ও মাছের তেল; ভিটামিন ই-এর জন্য সূর্যমুখী তেল, পাতাওয়ালা সবজি; ভিটামিন কে-এর জন্য প্রাণিজ আমিষ; ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের জন্য ডিম, দুধ, পনির, মাংস ইত্যাদি এবং ভিটামিন সি-এর জন্য টকজাতীয় ফল ও সবজি বিবেচিত। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের সুস্থতা ও বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
মিনারেল
খনিজ লবণসমূহের মধ্যে আয়োডিন, জিংক, লৌহ, ফসফরাস ও পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লৌহ রক্ত তৈরির অবিচ্ছেদ্য উপাদান। জিংক হাড়, নখ, চুল ও চামড়ার সুস্থতায় জরুরি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার খাদ্যে সোডিয়ামের অতিমাত্রা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা খাবার লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পানি
শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি শরীরের তাপমাত্রা ও অম্ল-ক্ষারের সাম্য বজায় রাখে। তাই সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তির খাদ্যগ্রহণ তার বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কাজের ধরন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। সুস্থ দেহের জন্য সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের তাই কোনো বিকল্প নেই।
ডা. তাহমিদা খানম: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ডা. তাহমিদা খানম

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অধিকাংশ দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি যেমন—উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি-জটিলতা, বাত রোগ ইত্যাদি চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পরিমার্জন।
বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষে আমরা পরাজিত করেছি অসংখ্য সংক্রামক ব্যাধি, যেমন গুটিবসন্ত বা পোলিও। ভয়াবহতা কমেছে কলেরা, যক্ষ্মা, কালাজ্বর কিংবা ম্যালেরিয়া রোগের। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। পক্ষান্তরে প্রযুক্তির উৎকর্ষে শারীরিক শ্রমের ঘাটতি কিংবা বিশ্বায়নের বলয়ে প্রথাগত খাদ্যতালিকায় নিত্যনতুন সংযোজনে আমরা অসংক্রামক ব্যাধির মহামারির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই সময় এসেছে নৈমিত্তিক জীবনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বেছে নেওয়া ও এর চর্চা করার।
খাদ্যের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই উপাদানগুলোর কোনটি কীভাবে ও কী পরিমাণে গ্রহণ করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব—আসুন জেনে নিই।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চাল, গম, আলু, মিষ্টি আলু, মধু, গুড়, চিনি ইত্যাদি মূলত শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। শর্করা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো উক্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (প্রতি ৫০ গ্রাম শর্করা খাদ্য গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা)। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার; যেমন—চিনি, গুড়, পরিশোধিত চাল ও আটা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে আঁশ জাতীয় শর্করা; যেমন—লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, শিমের বিচি, ডাল জাতীয় খাদ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্যগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।
আমিষ
আমিষ জাতীয় খাবার বলতে প্রাণিজ আমিষ; যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ; যেমন–ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য বোঝায়। প্রতি গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৬৫ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ দৈনিক ৪০ গ্রামের কম হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত আমিষ খাবার পরিপাক থেকে তৈরি বর্জ্য কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া লাল মাংস; যেমন—গরু বা খাসির মাংসে অত্যধিক মাত্রায় চর্বি থাকায় এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। আমিষের উৎস হিসেবে তাই মাছ ও দুধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
চর্বি
চর্বি জাতীয় খাবার সর্বোচ্চ শক্তি প্রদান করে; যেমন—প্রতি গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বি উপাদান বর্তমানে সব ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি; যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত; তাই এই মৌলিক উপাদানটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় চর্বি থেকে তৈরি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড; যেমন–ঘি, বাটার, ডালডা ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মূল উৎস। অন্যদিকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে যোগ করতে হবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিকারী খাবার; যেমন মাছের তেল (মূলত সামুদ্রিক মাছ; যেমন—ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি) আখরোট, তিসির তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, চিয়াসিড, সবুজ পাতাওয়ালা সবজি ইত্যাদি। দৈনিক সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ১০ শতাংশের কম খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন
সব ধরনের খাবারে কিছু-না-কিছু ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তবে প্রধান উৎস বিবেচনায় ভিটামিন এ-এর জন্য কলিজা, দুধ, ডিম ও মাছের তেল; ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো ও মাছের তেল; ভিটামিন ই-এর জন্য সূর্যমুখী তেল, পাতাওয়ালা সবজি; ভিটামিন কে-এর জন্য প্রাণিজ আমিষ; ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের জন্য ডিম, দুধ, পনির, মাংস ইত্যাদি এবং ভিটামিন সি-এর জন্য টকজাতীয় ফল ও সবজি বিবেচিত। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের সুস্থতা ও বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
মিনারেল
খনিজ লবণসমূহের মধ্যে আয়োডিন, জিংক, লৌহ, ফসফরাস ও পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লৌহ রক্ত তৈরির অবিচ্ছেদ্য উপাদান। জিংক হাড়, নখ, চুল ও চামড়ার সুস্থতায় জরুরি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার খাদ্যে সোডিয়ামের অতিমাত্রা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা খাবার লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পানি
শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি শরীরের তাপমাত্রা ও অম্ল-ক্ষারের সাম্য বজায় রাখে। তাই সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তির খাদ্যগ্রহণ তার বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কাজের ধরন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। সুস্থ দেহের জন্য সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের তাই কোনো বিকল্প নেই।
ডা. তাহমিদা খানম: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, অধিকাংশ দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক ব্যাধি যেমন—উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি-জটিলতা, বাত রোগ ইত্যাদি চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও পরিমার্জন।
বর্তমান বিশ্বে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উৎকর্ষে আমরা পরাজিত করেছি অসংখ্য সংক্রামক ব্যাধি, যেমন গুটিবসন্ত বা পোলিও। ভয়াবহতা কমেছে কলেরা, যক্ষ্মা, কালাজ্বর কিংবা ম্যালেরিয়া রোগের। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। পক্ষান্তরে প্রযুক্তির উৎকর্ষে শারীরিক শ্রমের ঘাটতি কিংবা বিশ্বায়নের বলয়ে প্রথাগত খাদ্যতালিকায় নিত্যনতুন সংযোজনে আমরা অসংক্রামক ব্যাধির মহামারির দিকে ধাবিত হচ্ছি। তাই সময় এসেছে নৈমিত্তিক জীবনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বেছে নেওয়া ও এর চর্চা করার।
খাদ্যের মৌলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও পানি। এই উপাদানগুলোর কোনটি কীভাবে ও কী পরিমাণে গ্রহণ করলে আমরা সুস্থ থাকতে পারব—আসুন জেনে নিই।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার যেমন চাল, গম, আলু, মিষ্টি আলু, মধু, গুড়, চিনি ইত্যাদি মূলত শরীরে শক্তি জোগায়। প্রতি গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। শর্করা খাবার বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হলো উক্ত খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (প্রতি ৫০ গ্রাম শর্করা খাদ্য গ্রহণের দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা)। উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার; যেমন—চিনি, গুড়, পরিশোধিত চাল ও আটা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অন্যদিকে আঁশ জাতীয় শর্করা; যেমন—লাল আটা, লাল চাল, ভুট্টা, শিমের বিচি, ডাল জাতীয় খাদ্য, ফলের খোসা ইত্যাদি নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খাদ্যগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে।
আমিষ
আমিষ জাতীয় খাবার বলতে প্রাণিজ আমিষ; যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষ; যেমন–ডাল ও ডাল জাতীয় খাদ্য বোঝায়। প্রতি গ্রাম আমিষ জাতীয় খাবার ৪ কিলোক্যালরি শক্তি জোগায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে ৬৫ থেকে ১০০ গ্রাম আমিষ গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ দৈনিক ৪০ গ্রামের কম হতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত আমিষ খাবার পরিপাক থেকে তৈরি বর্জ্য কিডনির জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া লাল মাংস; যেমন—গরু বা খাসির মাংসে অত্যধিক মাত্রায় চর্বি থাকায় এই খাবারগুলো উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। আমিষের উৎস হিসেবে তাই মাছ ও দুধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
চর্বি
চর্বি জাতীয় খাবার সর্বোচ্চ শক্তি প্রদান করে; যেমন—প্রতি গ্রাম চর্বি থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। যেহেতু রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ও অন্যান্য চর্বি উপাদান বর্তমানে সব ধরনের অসংক্রামক ব্যাধি; যেমন—হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি হিসেবে বিবেচিত; তাই এই মৌলিক উপাদানটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় চর্বি থেকে তৈরি হয় ফ্যাটি অ্যাসিড। সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড; যেমন–ঘি, বাটার, ডালডা ইত্যাদি রক্তে কোলেস্টেরলের মূল উৎস। অন্যদিকে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও প্রদাহ কমায়। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে যোগ করতে হবে অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরিকারী খাবার; যেমন মাছের তেল (মূলত সামুদ্রিক মাছ; যেমন—ইলিশ, টুনা, স্যামন, সার্ডিন ইত্যাদি) আখরোট, তিসির তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল, চিয়াসিড, সবুজ পাতাওয়ালা সবজি ইত্যাদি। দৈনিক সম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড ১০ শতাংশের কম খাওয়া প্রয়োজন।
ভিটামিন
সব ধরনের খাবারে কিছু-না-কিছু ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। তবে প্রধান উৎস বিবেচনায় ভিটামিন এ-এর জন্য কলিজা, দুধ, ডিম ও মাছের তেল; ভিটামিন ডি-এর জন্য সূর্যের আলো ও মাছের তেল; ভিটামিন ই-এর জন্য সূর্যমুখী তেল, পাতাওয়ালা সবজি; ভিটামিন কে-এর জন্য প্রাণিজ আমিষ; ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের জন্য ডিম, দুধ, পনির, মাংস ইত্যাদি এবং ভিটামিন সি-এর জন্য টকজাতীয় ফল ও সবজি বিবেচিত। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে শরীরের হাড় গঠন ও মজবুত করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বকের সুস্থতা ও বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় এনজাইম হিসেবে কাজ করে।
মিনারেল
খনিজ লবণসমূহের মধ্যে আয়োডিন, জিংক, লৌহ, ফসফরাস ও পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়োডিন গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করে এবং শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লৌহ রক্ত তৈরির অবিচ্ছেদ্য উপাদান। জিংক হাড়, নখ, চুল ও চামড়ার সুস্থতায় জরুরি উপাদান। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার খাদ্যে সোডিয়ামের অতিমাত্রা উচ্চরক্তচাপ ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রামের বেশি সোডিয়াম বা খাবার লবণ খাওয়া উচিত নয়।
পানি
শরীরের যাবতীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি শরীরের তাপমাত্রা ও অম্ল-ক্ষারের সাম্য বজায় রাখে। তাই সুস্থতার জন্য দৈনিক কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা দরকার।
এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম তাজা ফল ও সবজি খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তির খাদ্যগ্রহণ তার বয়স, লিঙ্গ, ওজন, কাজের ধরন ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থাকা বা না থাকার ওপর ভিত্তি করে হওয়া প্রয়োজন। সুস্থ দেহের জন্য সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের তাই কোনো বিকল্প নেই।
ডা. তাহমিদা খানম: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১৫ ঘণ্টা আগে
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। মৃত ব্যক্তিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরগুনার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৪৩ জন রোগী। এ নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৪৪০ জনে।
এ বছরের শুরু থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল সেপ্টেম্বর মাসে, ১৫ হাজার ৮৬৬ জনের। চলতি অক্টোবরের সপ্তাহখানেক বাকি থাকতেই সংক্রমণের সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩১৯ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৮১, ময়মনসিংহে ৫৬, চট্টগ্রামে ১২১, খুলনায় ৬৫, রাজশাহীতে ৫৬, রংপুরে ৫০, বরিশালে ১৮৬ এবং সিলেটে ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২ হাজার ৭৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৩০, আর রাজধানীর বাইরে ১ হাজার ৮০৩ জন ভর্তি রয়েছে।
দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন রোগী। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১,২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২,২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯,২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
ডেঙ্গুবিষয়ক হালনাগাদ তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। মৃত ব্যক্তিরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বরগুনার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সংক্রমণ ও হাসপাতালে ভর্তির হারও ঊর্ধ্বমুখী। গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ১৪৩ জন রোগী। এ নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৪৪০ জনে।
এ বছরের শুরু থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ঘটেছিল সেপ্টেম্বর মাসে, ১৫ হাজার ৮৬৬ জনের। চলতি অক্টোবরের সপ্তাহখানেক বাকি থাকতেই সংক্রমণের সংখ্যা তা ছাড়িয়ে গেছে। অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ৯৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩১৯ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ২৮১, ময়মনসিংহে ৫৬, চট্টগ্রামে ১২১, খুলনায় ৬৫, রাজশাহীতে ৫৬, রংপুরে ৫০, বরিশালে ১৮৬ এবং সিলেটে ৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ২ হাজার ৭৩৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ৯৩০, আর রাজধানীর বাইরে ১ হাজার ৮০৩ জন ভর্তি রয়েছে।
দেশে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে বছর মারা যায় ১ হাজার ৭০৫ জন রোগী। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ১ লাখ ১ হাজার ২১১,২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২,২০২১ সালে ২৮ হাজার ৪২৯,২০২০ সালে ১ হাজার ৪০৫ এবং ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। ক
১৬ অক্টোবর ২০২১
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেডা. পূজা সাহা

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা
দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা
দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়
অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।
স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।
দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।
কিছু সাধারণ পরামর্শ
লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা
দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা
দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়
অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।
স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।
দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।
কিছু সাধারণ পরামর্শ
লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। ক
১৬ অক্টোবর ২০২১
দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১৫ ঘণ্টা আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেডা. মো. নূর আলম

স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
কশেরুকা কী
মানবদেহের মেরুদণ্ড অনেক কশেরুকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কশেরুকা অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে তৈরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স কিংবা ক্ষয়ের কারণে কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়, শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে। এতে দুই কশেরুকা একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায় এবং হাড়ে ধারালো দানা তৈরি হয়, যা এক্স-রেতে দেখা যায়। এ দানাগুলো স্নায়ুতে চাপ দিলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দিতে পারে।
ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, সেটাকে বলে ‘স্লিপড ডিস্ক’। সাধারণত দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া কিংবা ঘাড়ে আঘাতের কারণে এটি হয়। ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মেরুদণ্ডের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কেন বাড়ছে এই রোগ
আগের তুলনায় এখন স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে; বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন; যেমন আইটি কিংবা বিপিও খাতের কর্মীরা—তাঁদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৭ জন কোনো না কোনোভাবে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন।
স্পন্ডিলাইটিসের প্রধান ধরন
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস: ঘাড়ের অংশে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ, কলারবোন ও ঘাড়সংলগ্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা হতে পারে।
লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস: এতে কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়, যা পিঠ ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এটি একধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা মেরুদণ্ড এবং শ্রোণির সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্টকে প্রভাবিত করে। এতে নিতম্ব, কোমর এবং পিঠে ক্রমাগত
ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো একত্রে মিশে যেতে পারে, যাকে বলে ‘Bamboo Spine’। এতে রোগী ধীরে ধীরে চলাচলের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
সাধারণ লক্ষণ
সম্ভাব্য কারণ
পরামর্শ
যদি ঘাড়, পিঠ অথবা কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে, আঙুল অবশ হয় বা চলাফেরায় অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে স্পন্ডিলাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-৬

স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
কশেরুকা কী
মানবদেহের মেরুদণ্ড অনেক কশেরুকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কশেরুকা অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে তৈরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স কিংবা ক্ষয়ের কারণে কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়, শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে। এতে দুই কশেরুকা একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায় এবং হাড়ে ধারালো দানা তৈরি হয়, যা এক্স-রেতে দেখা যায়। এ দানাগুলো স্নায়ুতে চাপ দিলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দিতে পারে।
ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, সেটাকে বলে ‘স্লিপড ডিস্ক’। সাধারণত দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া কিংবা ঘাড়ে আঘাতের কারণে এটি হয়। ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মেরুদণ্ডের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কেন বাড়ছে এই রোগ
আগের তুলনায় এখন স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে; বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন; যেমন আইটি কিংবা বিপিও খাতের কর্মীরা—তাঁদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৭ জন কোনো না কোনোভাবে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন।
স্পন্ডিলাইটিসের প্রধান ধরন
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস: ঘাড়ের অংশে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ, কলারবোন ও ঘাড়সংলগ্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা হতে পারে।
লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস: এতে কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়, যা পিঠ ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এটি একধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা মেরুদণ্ড এবং শ্রোণির সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্টকে প্রভাবিত করে। এতে নিতম্ব, কোমর এবং পিঠে ক্রমাগত
ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো একত্রে মিশে যেতে পারে, যাকে বলে ‘Bamboo Spine’। এতে রোগী ধীরে ধীরে চলাচলের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
সাধারণ লক্ষণ
সম্ভাব্য কারণ
পরামর্শ
যদি ঘাড়, পিঠ অথবা কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে, আঙুল অবশ হয় বা চলাফেরায় অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে স্পন্ডিলাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-৬

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। ক
১৬ অক্টোবর ২০২১
দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১৫ ঘণ্টা আগে
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
২ দিন আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কখন বলবেন বেশি রক্ত যাচ্ছে
পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে তাকে বলা হয় ম্যানোরেজিয়া। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তপাত হলে, সংখ্যায় বেশি প্যাড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে এবং ব্লিডিংয়ের সঙ্গে চাকা চাকা রক্তপাত হলে।
কেন বেশি ব্লিডিং হতে পারে
করণীয়
হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের ক্ষেত্রে, রক্তপ্রবাহ এবং পেটের খিঁচুনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যদি অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের কারণে পিরিয়ডকে ভয় পান, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এর অনেক চিকিৎসা রয়েছে, যা সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। যেমন হরমোনের সমস্যা আছে কি না বা প্লিসটিক ওভারেসি সিনড্রোম আছে কি না অথবা থাইরো হরমোনের সমস্যা আছে কি না। আলট্রাসনো করেও অনেক সময় দেখা হয়, জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কি না। ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে, যাদের হরমনাল ইমব্যালেন্স থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হরমোন ব্যালেন্স করার জন্য প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমোন দিয়ে থাকি। আবার থাইরো হরমোনের তারতম্য থাকলে থাইরো হরমোনের রিপ্লেসমেন্ট বা যে কারণে হচ্ছে, সেটার ওষুধ দিয়ে থাকি। টিউমার থাকলে অনেক সময় অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এই অপারেশন সব সময় যে দরকার হয় এমন নয়; বা অতিরিক্ত ব্লিডিং হলেই যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
লেখক: হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কখন বলবেন বেশি রক্ত যাচ্ছে
পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে তাকে বলা হয় ম্যানোরেজিয়া। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তপাত হলে, সংখ্যায় বেশি প্যাড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে এবং ব্লিডিংয়ের সঙ্গে চাকা চাকা রক্তপাত হলে।
কেন বেশি ব্লিডিং হতে পারে
করণীয়
হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের ক্ষেত্রে, রক্তপ্রবাহ এবং পেটের খিঁচুনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যদি অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের কারণে পিরিয়ডকে ভয় পান, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এর অনেক চিকিৎসা রয়েছে, যা সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। যেমন হরমোনের সমস্যা আছে কি না বা প্লিসটিক ওভারেসি সিনড্রোম আছে কি না অথবা থাইরো হরমোনের সমস্যা আছে কি না। আলট্রাসনো করেও অনেক সময় দেখা হয়, জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কি না। ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে, যাদের হরমনাল ইমব্যালেন্স থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হরমোন ব্যালেন্স করার জন্য প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমোন দিয়ে থাকি। আবার থাইরো হরমোনের তারতম্য থাকলে থাইরো হরমোনের রিপ্লেসমেন্ট বা যে কারণে হচ্ছে, সেটার ওষুধ দিয়ে থাকি। টিউমার থাকলে অনেক সময় অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এই অপারেশন সব সময় যে দরকার হয় এমন নয়; বা অতিরিক্ত ব্লিডিং হলেই যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
লেখক: হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া, না খাওয়ার জন্য বাঁচা—এই নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী খাদ্যদ্রব্যের বাছবিচার বা পছন্দ-অপছন্দ থাকতেই পারে। ক
১৬ অক্টোবর ২০২১
দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিছুদিন ধরেই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কয়েকজন করে মারা যাচ্ছে মশাবাহিত এ রোগে। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৩ জনে।
১৫ ঘণ্টা আগে
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
২ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
২ দিন আগে