আলমগীর আলম
এখনকার মানুষ অনেক স্বাস্থ্যসচেতন। ফলে খাবারে বৈচিত্র্য এসেছে। ভাত-রুটি খাওয়ার প্রবণতা কমেছে। এবার এমন একটি খাবারের কথা জেনে রাখুন, যা শরীরে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখবে। তাতে শরীর থাকবে রোগমুক্ত। খাবারটি হলো স্প্রাউট বা অঙ্কুরিত বীজ। এই বীজ খাওয়া শুরু করা উচিত শীতেই।
অঙ্কুরিত বীজ আকারে ক্ষুদ্র হলেও পুষ্টিতে বড়। পাঁচ-সাত দিন বয়সী বীজ স্প্রাউটগুলো পরিপক্ব গাছের চেয়ে বেশি পুষ্টির জোগান দিতে পারে। ছোলা, মুগ, সয়াবিন কিংবা শিমের বীজের স্প্রাউট নিরামিষ খাবারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।
বীজ কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে তার অঙ্কুরোদ্গম শুরু হয়। দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে সেগুলো বড় হতে থাকে। বীজ থেকে অঙ্কুরিত খুব অল্প বয়সী এ উদ্ভিদই হলো স্প্রাউট। এগুলোর পুষ্টিগুণ বীজের চেয়ে বেশি।
স্প্রাউটে যে পুষ্টি পাওয়া যায়
এক কাপ ছোলার স্প্রাউটে রয়েছে ৮ গ্রাম ক্যালরি, প্রোটিন ১ গ্রাম, চর্বি ১ গ্রামের কম, শর্করা ১ গ্রাম, আঁশ ১ গ্রাম, চিনি ১ গ্রামের কম। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন কে-এর বড় উৎস এগুলো। এই ভিটামিন হাড়ের সুস্থতা, সঠিক রক্ত জমাট বাঁধা এবং অন্যান্য অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অঙ্কুরিত বীজ রোগ প্রতিরোধের সক্ষমতা বাড়ায়। এতে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফোলেট (ভিটামিন-বি) উচ্চমাত্রায় থাকে। জীবনধারণের অত্যাবশ্যকীয় ২০টি অ্যামিনো অ্যাসিডের মধ্যে স্প্রাউটে থাকে ১৯টি। বাকি একটি পাওয়া যায় প্রাণিদেহে। মানুষ নিজের দেহে তৈরি করতে পারে মাত্র ১০টি অ্যামিনো অ্যাসিড। বাকি অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়। এর সবই থাকে অঙ্কুরিত বীজে।
স্প্রাউটের উপকারিতা
রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়: অঙ্কুরিত না হওয়া বীজ এবং শস্যের তুলনায় স্প্রাউটে শর্করার মাত্রা কম থাকে। ফলে এটি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এ জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এটি খেতে পারেন।
হজম শক্তি উন্নত করে: স্প্রাউট খেলে হজমের উন্নতি হয়। বীজ অঙ্কুরিত হলে তাতে থাকা আঁশের পরিমাণ বাড়ে। এই আঁশের বেশির ভাগ পেটে দ্রবীভূত হয় না। এটি প্রোবায়োটিকস হিসেবে কাজ করে এবং অন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়ার খাবার হয়ে ওঠে। এই ব্যাকটেরিয়া স্থিতিশীল ও স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্র বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো পেট ফোলা ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাসের মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে: স্প্রাউট খাওয়া হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। এটি ডায়াবেটিস বা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। ফলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়: শীতকালে সর্দি-কাশি এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। স্প্রাউটে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ঠিক থাকলে এই সমস্যা হয় না।
স্প্রাউট তৈরির পদ্ধতি: খোসাসহ মসুর/মুগ/ছোলা ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে পরিষ্কার কাপড়ে পেঁচিয়ে বক্সে ভরে ঠান্ডা ও শুষ্ক জায়গায় রেখে দিন। দুই দিন পর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে আবার আগের মতো কাপড় পেঁচিয়ে রেখে দিন। পঞ্চম দিন বের করুন। তৈরি হয়ে যাবে অঙ্কুরিত বীজ বা স্প্রাউট। এ ছাড়া ইদানীং স্প্রাউট বানানোর মেশিন পাওয়া যায়। সেটিও ব্যবহার করতে পারেন। এটি চালানো খুব সহজ।
কীভাবে খাবেন: অঙ্কুরিত বীজ কাঁচা মরিচ, আদা, লেবুর রস, পেঁয়াজ ও লবণ একসঙ্গে মেখে বিকেলে খেতে পারেন। এটা খেলে রাতের খাবারের প্রয়োজন হবে না।
কারা খাবেন না: যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এবং যাঁদের ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা আছে।
লেখক: আলমগীর আলম, খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
এখনকার মানুষ অনেক স্বাস্থ্যসচেতন। ফলে খাবারে বৈচিত্র্য এসেছে। ভাত-রুটি খাওয়ার প্রবণতা কমেছে। এবার এমন একটি খাবারের কথা জেনে রাখুন, যা শরীরে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখবে। তাতে শরীর থাকবে রোগমুক্ত। খাবারটি হলো স্প্রাউট বা অঙ্কুরিত বীজ। এই বীজ খাওয়া শুরু করা উচিত শীতেই।
অঙ্কুরিত বীজ আকারে ক্ষুদ্র হলেও পুষ্টিতে বড়। পাঁচ-সাত দিন বয়সী বীজ স্প্রাউটগুলো পরিপক্ব গাছের চেয়ে বেশি পুষ্টির জোগান দিতে পারে। ছোলা, মুগ, সয়াবিন কিংবা শিমের বীজের স্প্রাউট নিরামিষ খাবারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।
বীজ কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে তার অঙ্কুরোদ্গম শুরু হয়। দুই থেকে সাত দিনের মধ্যে সেগুলো বড় হতে থাকে। বীজ থেকে অঙ্কুরিত খুব অল্প বয়সী এ উদ্ভিদই হলো স্প্রাউট। এগুলোর পুষ্টিগুণ বীজের চেয়ে বেশি।
স্প্রাউটে যে পুষ্টি পাওয়া যায়
এক কাপ ছোলার স্প্রাউটে রয়েছে ৮ গ্রাম ক্যালরি, প্রোটিন ১ গ্রাম, চর্বি ১ গ্রামের কম, শর্করা ১ গ্রাম, আঁশ ১ গ্রাম, চিনি ১ গ্রামের কম। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন কে-এর বড় উৎস এগুলো। এই ভিটামিন হাড়ের সুস্থতা, সঠিক রক্ত জমাট বাঁধা এবং অন্যান্য অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অঙ্কুরিত বীজ রোগ প্রতিরোধের সক্ষমতা বাড়ায়। এতে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ফোলেট (ভিটামিন-বি) উচ্চমাত্রায় থাকে। জীবনধারণের অত্যাবশ্যকীয় ২০টি অ্যামিনো অ্যাসিডের মধ্যে স্প্রাউটে থাকে ১৯টি। বাকি একটি পাওয়া যায় প্রাণিদেহে। মানুষ নিজের দেহে তৈরি করতে পারে মাত্র ১০টি অ্যামিনো অ্যাসিড। বাকি অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো খাদ্যের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হয়। এর সবই থাকে অঙ্কুরিত বীজে।
স্প্রাউটের উপকারিতা
রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়: অঙ্কুরিত না হওয়া বীজ এবং শস্যের তুলনায় স্প্রাউটে শর্করার মাত্রা কম থাকে। ফলে এটি ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এ জন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা এটি খেতে পারেন।
হজম শক্তি উন্নত করে: স্প্রাউট খেলে হজমের উন্নতি হয়। বীজ অঙ্কুরিত হলে তাতে থাকা আঁশের পরিমাণ বাড়ে। এই আঁশের বেশির ভাগ পেটে দ্রবীভূত হয় না। এটি প্রোবায়োটিকস হিসেবে কাজ করে এবং অন্ত্রে থাকা ভালো ব্যাকটেরিয়ার খাবার হয়ে ওঠে। এই ব্যাকটেরিয়া স্থিতিশীল ও স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্র বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো পেট ফোলা ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাসের মতো সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে: স্প্রাউট খাওয়া হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী। এটি ডায়াবেটিস বা স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারে। ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। ফলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়: শীতকালে সর্দি-কাশি এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। স্প্রাউটে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ঠিক থাকলে এই সমস্যা হয় না।
স্প্রাউট তৈরির পদ্ধতি: খোসাসহ মসুর/মুগ/ছোলা ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে পরিষ্কার কাপড়ে পেঁচিয়ে বক্সে ভরে ঠান্ডা ও শুষ্ক জায়গায় রেখে দিন। দুই দিন পর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে আবার আগের মতো কাপড় পেঁচিয়ে রেখে দিন। পঞ্চম দিন বের করুন। তৈরি হয়ে যাবে অঙ্কুরিত বীজ বা স্প্রাউট। এ ছাড়া ইদানীং স্প্রাউট বানানোর মেশিন পাওয়া যায়। সেটিও ব্যবহার করতে পারেন। এটি চালানো খুব সহজ।
কীভাবে খাবেন: অঙ্কুরিত বীজ কাঁচা মরিচ, আদা, লেবুর রস, পেঁয়াজ ও লবণ একসঙ্গে মেখে বিকেলে খেতে পারেন। এটা খেলে রাতের খাবারের প্রয়োজন হবে না।
কারা খাবেন না: যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এবং যাঁদের ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা আছে।
লেখক: আলমগীর আলম, খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
ক্যানসারের টিকা নিয়ে সুখবর দিচ্ছে রাশিয়া। দেশটির গামালিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, তারা চলতি বছরের গ্রীষ্মে ক্যানসারের টিকার অনুমোদন পাবে। আগামী সেপ্টেম্বরে এই টিকা রোগীদের দেওয়া শুরু হতে পারে।
৩ দিন আগেস্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের প্রস্তাব দিতে গঠিত সংস্কার কমিশন ওষুধের প্রাপ্যতা, চিকিৎসা শিক্ষার মান ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনার ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেবে।
৫ দিন আগেশিশুদের কানে ব্যথা হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। সাধারণত ৬ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে কানের সংক্রমণ বেশি হতে দেখা যায়। তিন বছরের কম বয়সী শতকরা ৩০ ভাগ শিশু কোনো না কোনো কারণে কানে ব্যথায় ভুগে থাকে।
৭ দিন আগেদিন দিন ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে এর চিকিৎসাপদ্ধতি এবং ওষুধ সহজলভ্য করার বিভিন্ন গবেষণা। এবার স্কটল্যান্ডের গবেষকেরা তৈরি করেছেন একটি বিশেষ এআই টুল। এটি চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।
৭ দিন আগে