ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
২ দিন আগেআমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
২ দিন আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
২ দিন আগেদীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৬, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭০, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৭, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত চারজনের মধ্যে তিনজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। অন্যজন বরিশাল বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১৬, ৭০, ৩০ ও ৫৫ বছর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৫২১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর অক্টোবরে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২৬, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৪, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১৭০, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১০৭, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪১ ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত চারজনের মধ্যে তিনজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। অন্যজন বরিশাল বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ১৬, ৭০, ৩০ ও ৫৫ বছর।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৫২১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ১০, ফেব্রুয়ারিতে তিন, এপ্রিলে সাত, মে মাসে তিন, জুনে ১৯, জুলাইয়ে ৪১, আগস্টে ৩৯ ও সেপ্টেম্বরে ৭৬ জন মারা গেছে। মার্চে কারও মৃত্যু হয়নি। আর অক্টোবরে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
২ দিন আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
২ দিন আগেদীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের আবাসস্থল!
গবেষণা অনুসারে, ব্রাশের আর্দ্র প্লাস্টিক তন্তুগুলোতে প্রতিনিয়ত জমা হয় মুখগহ্বরের লালা, ত্বকের কোষ, খাবারের কণা এবং পরিবেশ থেকে আসা জীবাণু। এই ক্ষুদ্র জীবজগৎ আমাদের হার্পিস ভাইরাস, ক্যানডিডা ইস্ট এবং শৌচাগারের ফ্লাশ থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।
জার্মানির রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. মার্ক-কেভিন জিন-এর মতে, টুথব্রাশে জীবাণু আসার প্রধান তিনটি উৎস হলো—ব্যবহারকারীর মুখ, ব্যবহারকারীর ত্বক এবং ব্রাশটি যেখানে রাখা হয় সেই পরিবেশ (বাথরুম)।
সাধারণত মুখের জীবাণু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক নয়। তবে এগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক বিপজ্জনক অতিথি! যেসব ক্ষতিকর জীবাণু টুথব্রাশে জমে এর মধ্যে অন্যতম হলো:
দাঁত ক্ষয়ের কারণ: দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টিকারী স্ট্রেপটোকক্কি এবং স্ট্যাফাইলোকক্কি।
পেটের সংক্রমণ: ই-কোলাই, সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং এন্টারোব্যাকটেরিয়া-এর মতো জীবাণু, যা সাধারণত পেটের সংক্রমণ ও খাদ্য বিষক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত।
হাসপাতালের জীবাণু: ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া-এর মতো রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুও টুথব্রাশে পাওয়া গেছে। এগুলো সাধারণত হাসপাতালে সংক্রামিত রোগের সাধারণ কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাথরুম উষ্ণ ও আর্দ্র থাকায় এটি জীবাণুর বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ স্থান। সবচেয়ে উদ্বেগের কারণটি হলো—শৌচাগার।
যখনই ফ্লাশ করা হয়, তখন মল ও পানির সূক্ষ্ম কণার (অ্যারোসল) একটি মেঘ ১ দশমিক ৫ মিটার (৫ ফুট) পর্যন্ত বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই স্প্রে-এর সঙ্গে ফ্লু, কোভিড-১৯ এবং নরোভাইরাসের মতো সংক্রামক ভাইরাস এবং মলে থাকা ব্যাকটেরিয়া বহন করে। আপনার টুথব্রাশ যদি শৌচাগারের কাছাকাছি থাকে, তাহলে এই দূষণ ব্রাশের তন্তুগুলোতে জমা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, ফ্লাশ করার আগে কমোড সিট নামিয়ে দেওয়া উচিত।
ঝুঁকি কতটা এবং প্রতিকার কী?
শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. এরিকা হার্টম্যান বলেছেন, বেশির ভাগ সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে টুথব্রাশ থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব কম। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই জীবাণুগুলো বড় উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যেমন:
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু: ইতালির এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষিত টুথব্রাশগুলোর শতভাগেই একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মধ্যম উদ্বেগের বিষয়।
পরিষ্কার রাখার সহজ উপায়
চিকিৎসা ও দন্ত্যচিকিৎসকেরা টুথব্রাশ যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কয়েকটি সহজ কৌশল অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন:
১. বাতাসে শুকানো: ব্যবহারের পর টুথব্রাশের মাথা ঢেকে না রেখে সোজা করে, উন্মুক্ত স্থানে রাখুন। কভার বা বদ্ধ পাত্র ব্যবহার করলে সেখানে আর্দ্রতা জমে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে।
২. দূরে রাখুন: শৌচাগার থেকে যতটা সম্ভব দূরে টুথব্রাশ রাখুন।
৩. ডিসইনফেকশন: সপ্তাহে একবার ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ব্রাশের মাথা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ-এর (যেমন ০.১২% ক্লোরহেক্সিডিন বা ০.০৫% সিটিলপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত দ্রবণ) মধ্যে চুবিয়ে রাখা যেতে পারে। কেউ কেউ ১ শতাংশ ভিনেগার দ্রবণে ডুবিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন।
৪. সময়মতো পরিবর্তন: দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতি তিন মাস বা ১২ সপ্তাহ অন্তর টুথব্রাশ বদলানোর পরামর্শ দেয়। ড. জিনের গবেষণা অনুযায়ী, ব্যবহারের ১২ সপ্তাহ পর ব্রাশে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ব্রাশের তন্তুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হলে দ্রুত বদলে ফেলা উচিত।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের আবাসস্থল!
গবেষণা অনুসারে, ব্রাশের আর্দ্র প্লাস্টিক তন্তুগুলোতে প্রতিনিয়ত জমা হয় মুখগহ্বরের লালা, ত্বকের কোষ, খাবারের কণা এবং পরিবেশ থেকে আসা জীবাণু। এই ক্ষুদ্র জীবজগৎ আমাদের হার্পিস ভাইরাস, ক্যানডিডা ইস্ট এবং শৌচাগারের ফ্লাশ থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে।
জার্মানির রাইন-ওয়াল ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেসের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. মার্ক-কেভিন জিন-এর মতে, টুথব্রাশে জীবাণু আসার প্রধান তিনটি উৎস হলো—ব্যবহারকারীর মুখ, ব্যবহারকারীর ত্বক এবং ব্রাশটি যেখানে রাখা হয় সেই পরিবেশ (বাথরুম)।
সাধারণত মুখের জীবাণু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক নয়। তবে এগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক বিপজ্জনক অতিথি! যেসব ক্ষতিকর জীবাণু টুথব্রাশে জমে এর মধ্যে অন্যতম হলো:
দাঁত ক্ষয়ের কারণ: দাঁত ক্ষয় এবং মাড়ির প্রদাহ সৃষ্টিকারী স্ট্রেপটোকক্কি এবং স্ট্যাফাইলোকক্কি।
পেটের সংক্রমণ: ই-কোলাই, সিউডোমোনাস এরুগিনোসা এবং এন্টারোব্যাকটেরিয়া-এর মতো জীবাণু, যা সাধারণত পেটের সংক্রমণ ও খাদ্য বিষক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত।
হাসপাতালের জীবাণু: ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া-এর মতো রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুও টুথব্রাশে পাওয়া গেছে। এগুলো সাধারণত হাসপাতালে সংক্রামিত রোগের সাধারণ কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাথরুম উষ্ণ ও আর্দ্র থাকায় এটি জীবাণুর বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ স্থান। সবচেয়ে উদ্বেগের কারণটি হলো—শৌচাগার।
যখনই ফ্লাশ করা হয়, তখন মল ও পানির সূক্ষ্ম কণার (অ্যারোসল) একটি মেঘ ১ দশমিক ৫ মিটার (৫ ফুট) পর্যন্ত বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই স্প্রে-এর সঙ্গে ফ্লু, কোভিড-১৯ এবং নরোভাইরাসের মতো সংক্রামক ভাইরাস এবং মলে থাকা ব্যাকটেরিয়া বহন করে। আপনার টুথব্রাশ যদি শৌচাগারের কাছাকাছি থাকে, তাহলে এই দূষণ ব্রাশের তন্তুগুলোতে জমা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, ফ্লাশ করার আগে কমোড সিট নামিয়ে দেওয়া উচিত।
ঝুঁকি কতটা এবং প্রতিকার কী?
শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. এরিকা হার্টম্যান বলেছেন, বেশির ভাগ সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে টুথব্রাশ থেকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুব কম। তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য এই জীবাণুগুলো বড় উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যেমন:
অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণু: ইতালির এক গবেষণায় দেখা গেছে, পরীক্ষিত টুথব্রাশগুলোর শতভাগেই একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত ছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মধ্যম উদ্বেগের বিষয়।
পরিষ্কার রাখার সহজ উপায়
চিকিৎসা ও দন্ত্যচিকিৎসকেরা টুথব্রাশ যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কয়েকটি সহজ কৌশল অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন:
১. বাতাসে শুকানো: ব্যবহারের পর টুথব্রাশের মাথা ঢেকে না রেখে সোজা করে, উন্মুক্ত স্থানে রাখুন। কভার বা বদ্ধ পাত্র ব্যবহার করলে সেখানে আর্দ্রতা জমে জীবাণুর বৃদ্ধি ঘটে।
২. দূরে রাখুন: শৌচাগার থেকে যতটা সম্ভব দূরে টুথব্রাশ রাখুন।
৩. ডিসইনফেকশন: সপ্তাহে একবার ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য ব্রাশের মাথা অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ-এর (যেমন ০.১২% ক্লোরহেক্সিডিন বা ০.০৫% সিটিলপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত দ্রবণ) মধ্যে চুবিয়ে রাখা যেতে পারে। কেউ কেউ ১ শতাংশ ভিনেগার দ্রবণে ডুবিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন।
৪. সময়মতো পরিবর্তন: দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতি তিন মাস বা ১২ সপ্তাহ অন্তর টুথব্রাশ বদলানোর পরামর্শ দেয়। ড. জিনের গবেষণা অনুযায়ী, ব্যবহারের ১২ সপ্তাহ পর ব্রাশে ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। এ ছাড়া ব্রাশের তন্তুগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হলে দ্রুত বদলে ফেলা উচিত।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
২ দিন আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
২ দিন আগেদীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন। সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছি। সে অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য এলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যানসার জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালও রয়েছে।’
ডা. জাকির হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মীভূত হওয়ায় শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, ওষুধ শিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় শতভাগ পূরণ ছাড়াও রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশে তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
সমিতি জানায়, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন, ভারত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া প্যাকেজিং উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টসও আমদানি করা হয়। এসব কাঁচামালের বড় অংশ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মাদ হালিমুজ্জামান বলেন, ‘কিছু স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার আমদানি সময়সাপেক্ষ। এখনো সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে না, তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’
সমিতির নেতারা বলেন, যেসব পণ্য অন্যান্য বিমানবন্দরে নামানো হয়েছে, সেসব নিয়েও আমরা চিন্তিত—কারণ এসব কাঁচামাল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এখানেও আমরা এক ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছি। পুড়ে যাওয়া পণ্যের একটি বড় অংশ ছিল নারকোটিকস বিভাগ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত। এসব পণ্য পুনরায় আমদানি জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে বহু অনুমোদন নিতে হয়।
সমিতির ধারণা, পুড়ে যাওয়া পণ্যের হিসাব আরও বাড়বে। প্রতিটি কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত পণ্যের উৎপাদন অনিশ্চয়তায় পড়বে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে বলেও সমিতির হিসাব।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ফার্মা খাতের ঝুঁকি ও সম্ভাব্য সংকট এড়াতে সরকারের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সমিতি। এর মধ্যে রয়েছে—পুড়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে পরিশোধিত শুল্ক, ডিউটি, ট্যাক্স ও ভ্যাট ফেরতের ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের এলসি-সংক্রান্ত ব্যাংক চার্জ ও সুদ মওকুফ, পুনরায় আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংক মার্জিন ও অন্যান্য চার্জ মওকুফ করে সহজ শর্তে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া, কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের বিপরীতে ধার্য চার্জ/দণ্ড মওকুফ করা, নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদিত পণ্য পুনরায় আগের অনুমোদনের ভিত্তিতে দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়া, অফিস ছুটির দিনেও কাস্টমস কার্যক্রম আংশিকভাবে চালু রাখা, কোল্ড চেইন পণ্য দ্রুত রিলিজ নিশ্চিত করা, অক্ষত চালান দ্রুত মূল্যায়ন ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে অবহিত করা, ডিজিডিএ, নারকোটিকস, কাস্টমস, এনবিআর, বিমান কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করে সমাধানমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তেজগাঁওয়ে সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন সমিতির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন। সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করেছি। সে অনুযায়ী, ইতিমধ্যে দেশের শীর্ষ ৪৫টি কোম্পানির প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য এলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া পণ্যের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যানসার জাতীয় ওষুধ উৎপাদনের কাঁচামালও রয়েছে।’
ডা. জাকির হোসেন জানান, অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল ভস্মীভূত হওয়ায় শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এই আকস্মিক ক্ষতি বহুবিধ ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
তিনি আরও জানান, ওষুধ শিল্প দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় শতভাগ পূরণ ছাড়াও রপ্তানি সম্ভাবনা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ খাত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। বাংলাদেশে তৈরি মানসম্পন্ন ওষুধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
সমিতি জানায়, দেশের ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশ চীন, ভারত ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া প্যাকেজিং উপকরণ, যন্ত্রপাতি ও স্পেয়ার পার্টসও আমদানি করা হয়। এসব কাঁচামালের বড় অংশ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
সমিতির কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মাদ হালিমুজ্জামান বলেন, ‘কিছু স্পেয়ার পার্টস ও মেশিনারিজও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার আমদানি সময়সাপেক্ষ। এখনো সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হচ্ছে না, তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’
সমিতির নেতারা বলেন, যেসব পণ্য অন্যান্য বিমানবন্দরে নামানো হয়েছে, সেসব নিয়েও আমরা চিন্তিত—কারণ এসব কাঁচামাল নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এখানেও আমরা এক ধরনের ক্ষতির মুখে রয়েছি। পুড়ে যাওয়া পণ্যের একটি বড় অংশ ছিল নারকোটিকস বিভাগ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত। এসব পণ্য পুনরায় আমদানি জটিল ও সময়সাপেক্ষ, কারণ এতে ধাপে ধাপে বহু অনুমোদন নিতে হয়।
সমিতির ধারণা, পুড়ে যাওয়া পণ্যের হিসাব আরও বাড়বে। প্রতিটি কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট চূড়ান্ত পণ্যের উৎপাদন অনিশ্চয়তায় পড়বে। প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে বলেও সমিতির হিসাব।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ফার্মা খাতের ঝুঁকি ও সম্ভাব্য সংকট এড়াতে সরকারের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে সমিতি। এর মধ্যে রয়েছে—পুড়ে যাওয়া পণ্যের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে পরিশোধিত শুল্ক, ডিউটি, ট্যাক্স ও ভ্যাট ফেরতের ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের এলসি-সংক্রান্ত ব্যাংক চার্জ ও সুদ মওকুফ, পুনরায় আমদানির ক্ষেত্রে ব্যাংক মার্জিন ও অন্যান্য চার্জ মওকুফ করে সহজ শর্তে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া, কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের বিপরীতে ধার্য চার্জ/দণ্ড মওকুফ করা, নারকোটিকস বিভাগের অনুমোদিত পণ্য পুনরায় আগের অনুমোদনের ভিত্তিতে দ্রুত আমদানির অনুমতি দেওয়া, অফিস ছুটির দিনেও কাস্টমস কার্যক্রম আংশিকভাবে চালু রাখা, কোল্ড চেইন পণ্য দ্রুত রিলিজ নিশ্চিত করা, অক্ষত চালান দ্রুত মূল্যায়ন ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে অবহিত করা, ডিজিডিএ, নারকোটিকস, কাস্টমস, এনবিআর, বিমান কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করে সমাধানমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ।
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
২ দিন আগেআমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
২ দিন আগেদীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়ের গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
এই বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নেচার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং জার্নালে। সেই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্সএলার্ট জানিয়েছে, কানাডা ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল গবেষক এমন এক ‘সর্বজনীন’ কিডনি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা তাত্ত্বিকভাবে যেকোনো রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।
গবেষণার অংশ হিসেবে এই কিডনি এক ব্রেইন-ডেড রোগীর (যে অবস্থায় কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কৃত্রিমভাবে চালু রাখা হয়) দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়েই এটি করা হয়েছিল। কিডনিটি কয়েক দিন ধরে কার্যকর অবস্থায় ছিল।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার জৈব রসায়নবিদ স্টিফেন উইদার্স বলেন, ‘মানুষের দেহে এই প্রক্রিয়া সফলভাবে কাজ করতে দেখা এটাই প্রথম। এটা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি ফল আরও উন্নত করার বিষয়ে অমূল্য ধারণা দিচ্ছে।’
বর্তমানে রক্তের গ্রুপ টাইপ ‘ও’ যাঁদের, তাঁরা কেবল টাইপ ‘ও’ দাতার কাছ থেকে কিডনি নিতে পারেন। কিন্তু যেহেতু টাইপ ‘ও’ কিডনি অন্য রক্তের গ্রুপের মানুষের শরীরেও কাজ করতে পারে, তাই এ ধরনের কিডনির চাহিদা বেশি, জোগান কম। ফলে অপেক্ষার তালিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ টাইপ ‘ও’ কিডনির জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
রক্তের ভিন্ন গ্রুপের কিডনি প্রতিস্থাপন এখন সম্ভব হলেও সেটি অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। এতে সময় লাগে অনেক, ঝুঁকিও বেশি। পাশাপাশি এতে জীবিত দাতা দরকার হয়। কারণ, গ্রহীতার শরীরকে আগেই প্রস্তুত করতে হয়। গবেষকেরা এবার এমন এক কৌশল ব্যবহার করেছেন, যেখানে বিশেষ এনজাইম দিয়ে টাইপ ‘এ’ কিডনিকে টাইপ ‘ও’ কিডনিতে রূপান্তর করা যায়। এই এনজাইমগুলো টাইপ ‘এ’ রক্তের বিশেষ সুগার মলিকিউল বা চিনির অণু (অ্যান্টিজেন) কেটে সরিয়ে দেয়।
গবেষকেরা এই এনজাইমগুলোর তুলনা করেছেন ‘আণবিক কাঁচি’র সঙ্গে। উইদার্স বলেন, ‘যেভাবে গাড়ির লাল রং ঘষে তুলে নিলে নিচের নিরপেক্ষ প্রাইমার দেখা যায়, ঠিক সেভাবেই এই প্রক্রিয়ায় কিডনির ওপর থেকে রক্তের গ্রুপের চিহ্ন মুছে দেওয়া যায়। তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা আর কিডনিটিকে ‘বাইরের অপরিচিত’ অঙ্গ হিসেবে বিচার করে না।’
তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ বাকি। জীবিত মানুষের শরীরে এই পরীক্ষা শুরু করার আগে আরও গবেষণা দরকার। পরীক্ষায় দেখা গেছে, তৃতীয় দিনে কিডনিতে আবার টাইপ ‘এ’-ব্লাড গ্রুপের কিডনির কিছু চিহ্ন দেখা দিতে শুরু করে। ফলে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে প্রতিক্রিয়াটি সাধারণ সময়ের তুলনায় অনেক কম ছিল, বরং শরীর কিডনিটিকে সহ্য করার চেষ্টা করছিল বলেও ইঙ্গিত পেয়েছেন গবেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ১১ জন মানুষ কিডনি না পেয়ে মারা যান, আর তাঁদের অধিকাংশই টাইপ ‘ও’ কিডনির অপেক্ষায় থাকেন। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা বিকল্প পথ খুঁজছেন। এমনকি শূকরের কিডনি ব্যবহার বা নতুন অ্যান্টিবডি তৈরি করে এই সংকট কমানোর চেষ্টা চলছে।
উইদার্স বলেন, ‘বছরের পর বছর মৌলিক বিজ্ঞানের কাজ শেষ পর্যন্ত যখন রোগীর চিকিৎসায় কাজে লাগে, তখনই বোঝা যায়, আমরা কত দূর এসেছি। আমাদের আবিষ্কার এখন বাস্তবের কাছাকাছি—এটাই আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়।’
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় গবেষণার পর কিডনি প্রতিস্থাপনে এক বড় অগ্রগতির খুব কাছাকাছি পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন এক যুগান্তকারী সাফল্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যাতে দাতার ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ আলাদা হলেও কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হতে পারে। এতে অপেক্ষার সময় অনেক কমবে, আর অসংখ্য প্রাণ বাঁচানো যাবে।
এই বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে নেচার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং জার্নালে। সেই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিজ্ঞানবিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্সএলার্ট জানিয়েছে, কানাডা ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল গবেষক এমন এক ‘সর্বজনীন’ কিডনি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা তাত্ত্বিকভাবে যেকোনো রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।
গবেষণার অংশ হিসেবে এই কিডনি এক ব্রেইন-ডেড রোগীর (যে অবস্থায় কোনো ব্যক্তির মস্তিষ্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কৃত্রিমভাবে চালু রাখা হয়) দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অনুমতি নিয়েই এটি করা হয়েছিল। কিডনিটি কয়েক দিন ধরে কার্যকর অবস্থায় ছিল।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার জৈব রসায়নবিদ স্টিফেন উইদার্স বলেন, ‘মানুষের দেহে এই প্রক্রিয়া সফলভাবে কাজ করতে দেখা এটাই প্রথম। এটা আমাদের দীর্ঘমেয়াদি ফল আরও উন্নত করার বিষয়ে অমূল্য ধারণা দিচ্ছে।’
বর্তমানে রক্তের গ্রুপ টাইপ ‘ও’ যাঁদের, তাঁরা কেবল টাইপ ‘ও’ দাতার কাছ থেকে কিডনি নিতে পারেন। কিন্তু যেহেতু টাইপ ‘ও’ কিডনি অন্য রক্তের গ্রুপের মানুষের শরীরেও কাজ করতে পারে, তাই এ ধরনের কিডনির চাহিদা বেশি, জোগান কম। ফলে অপেক্ষার তালিকার অর্ধেকের বেশি মানুষ টাইপ ‘ও’ কিডনির জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
রক্তের ভিন্ন গ্রুপের কিডনি প্রতিস্থাপন এখন সম্ভব হলেও সেটি অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। এতে সময় লাগে অনেক, ঝুঁকিও বেশি। পাশাপাশি এতে জীবিত দাতা দরকার হয়। কারণ, গ্রহীতার শরীরকে আগেই প্রস্তুত করতে হয়। গবেষকেরা এবার এমন এক কৌশল ব্যবহার করেছেন, যেখানে বিশেষ এনজাইম দিয়ে টাইপ ‘এ’ কিডনিকে টাইপ ‘ও’ কিডনিতে রূপান্তর করা যায়। এই এনজাইমগুলো টাইপ ‘এ’ রক্তের বিশেষ সুগার মলিকিউল বা চিনির অণু (অ্যান্টিজেন) কেটে সরিয়ে দেয়।
গবেষকেরা এই এনজাইমগুলোর তুলনা করেছেন ‘আণবিক কাঁচি’র সঙ্গে। উইদার্স বলেন, ‘যেভাবে গাড়ির লাল রং ঘষে তুলে নিলে নিচের নিরপেক্ষ প্রাইমার দেখা যায়, ঠিক সেভাবেই এই প্রক্রিয়ায় কিডনির ওপর থেকে রক্তের গ্রুপের চিহ্ন মুছে দেওয়া যায়। তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা আর কিডনিটিকে ‘বাইরের অপরিচিত’ অঙ্গ হিসেবে বিচার করে না।’
তবে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ বাকি। জীবিত মানুষের শরীরে এই পরীক্ষা শুরু করার আগে আরও গবেষণা দরকার। পরীক্ষায় দেখা গেছে, তৃতীয় দিনে কিডনিতে আবার টাইপ ‘এ’-ব্লাড গ্রুপের কিডনির কিছু চিহ্ন দেখা দিতে শুরু করে। ফলে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা প্রতিক্রিয়া দেখায়। তবে প্রতিক্রিয়াটি সাধারণ সময়ের তুলনায় অনেক কম ছিল, বরং শরীর কিডনিটিকে সহ্য করার চেষ্টা করছিল বলেও ইঙ্গিত পেয়েছেন গবেষকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ১১ জন মানুষ কিডনি না পেয়ে মারা যান, আর তাঁদের অধিকাংশই টাইপ ‘ও’ কিডনির অপেক্ষায় থাকেন। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা বিকল্প পথ খুঁজছেন। এমনকি শূকরের কিডনি ব্যবহার বা নতুন অ্যান্টিবডি তৈরি করে এই সংকট কমানোর চেষ্টা চলছে।
উইদার্স বলেন, ‘বছরের পর বছর মৌলিক বিজ্ঞানের কাজ শেষ পর্যন্ত যখন রোগীর চিকিৎসায় কাজে লাগে, তখনই বোঝা যায়, আমরা কত দূর এসেছি। আমাদের আবিষ্কার এখন বাস্তবের কাছাকাছি—এটাই আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা দেয়।’
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৫৩ জনের মৃত্যু হলো। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮১৪ ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে ৬১ হাজার ৬০৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
২ দিন আগেআমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অপরিহার্য বস্তু টুথব্রাশ। দাঁত পরিষ্কারের এই উপকরণটি আসলে লাখ লাখ জীবাণু—ছত্রাক ও ভাইরাসের একটি আখড়া! দাঁতের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আমরা দিনে সাধারণত দুবার এটিকে মুখে দিলেও, বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আপনার ব্যবহৃত টুথব্রাশটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের
২ দিন আগেহজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে গত শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে এই শিল্প খাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতি। সমিতির দাবি, দেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৫টি...
২ দিন আগে