Ajker Patrika

ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকাকে জাতীয় ক্লিনিক্যাল নির্দেশনায় অন্তর্ভুক্তির আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জায় প্রাণ হারায়। বাংলাদেশেও এর সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সাম্প্রতিক এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এ বছরের জুনে দেশের ১৯টি হাসপাতালে জ্বর ও কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত ছিলেন, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি।

এই পরিস্থিতিতে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসায় ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকাকে জাতীয় ক্লিনিক্যাল নির্দেশনায় অন্তর্ভুক্ত করার জোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদেরা।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা কেন্দ্র (আইইডিসিআর) ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) যৌথভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) কারিগরি সহায়তায় ১ ও ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ‘বাংলাদেশে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসায় ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকার ভূমিকা: ভবিষ্যৎ পথনির্দেশনা’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করে।

এতে চিকিৎসক, নীতিনির্ধারক, গবেষক ও ওষুধশিল্পের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী—৬০ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ, পাঁচ বছরের নিচে শিশু, গর্ভবতী নারী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, শ্বাসতন্ত্র বা কিডনি রোগে আক্রান্তদের জন্য ফেব্রুয়ারি-মার্চে টিকা গ্রহণ জরুরি; যাতে মৌসুম শুরুর আগেই সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য বার্ষিক ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকাদানকে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সুপারিশ করলেও দেশে টিকা গ্রহণের হার এখনো খুবই কম।

এর পেছনে সচেতনতার অভাব, টিকার দাম ও প্রাপ্যতা সংকট, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা, কোল্ড চেইনের সীমাবদ্ধতা এবং জাতীয় গাইডলাইনের অভাব অন্যতম কারণ।

কর্মশালায় প্রথম দিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসায় টিকাদানকে নিয়মিত ক্লিনিক্যাল সেবার অন্তর্ভুক্তির কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। দ্বিতীয় দিন আইইডিসিআরের অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন ২০০৭ সাল থেকে চলমান হাসপাতালভিত্তিক ইনফ্লুয়েঞ্জা পর্যবেক্ষণের ফলাফল উপস্থাপন করে বলেন, সময়মতো টিকা দিলে গুরুতর অসুস্থতা ও মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।

কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা টিকার সহজলভ্যতা বৃদ্ধি, দাম কমানো, সংবাদমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা, চিকিৎসক সমাজকে সম্পৃক্ত করা এবং জাতীয় ক্লিনিক্যাল গাইডলাইনে ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করেন।

আইসিডিডিআর,বির সহযোগী বিজ্ঞানী ডা. মো. জাকিউল হাসান জানান, স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণ মানুষের তুলনায় চার গুণ বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকলেও তাঁদের টিকা গ্রহণের হার এখনো উদ্বেগজনকভাবে কম।

কর্মশালায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ড. ফেরদৌসী কাদরী, ডা. কে জামান, অধ্যাপক ডা. চৌধুরী আলী কাওসার ও অধ্যাপক ডা. ফারহাদ হোসেন।

তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে অগ্রসর হওয়ায় এখনই টিকার টেকসই প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ ও চিকিৎসকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো গেলে টিকা গ্রহণযোগ্যতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (জনস্বাস্থ্য) ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) কান্ট্রি ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. দিমিত্রি প্রিবিলস্কি প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো লতিফ সিদ্দিকীর ভাইকে

গোয়ালন্দে ‘নুরাল পাগলার’ লাশ তুলে পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধরা, আহত অর্ধশত

গরম মাড় পড়ে শিশু দগ্ধ, গলা টিপে হত্যার পর বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলেন চাচি

পবায় মাইকে স্লোগান দিয়ে খানকা ভাঙচুর, নীরব ছিল দুই গাড়ি পুলিশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত