Ajker Patrika

টেস্টিকুলার ক্যানসার থেকে সেরে ওঠা তরুণের কথা

ডয়চে ভেলে
টেস্টিকুলার ক্যানসার থেকে সেরে ওঠা তরুণের কথা

টেস্টিকুলার ক্যানসার। সাধারণত ২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী পুরুষেরা এতে আক্রান্ত হন। এই ক্যানসার বিরল ঘটনা হলেও সময়মতো খেয়াল করে চিকিৎসা করাতে না পারলে প্রাণঘাতী হতে পারে। এই ক্যানসার কি সারানো যায়? 

মাল্টে কুয়র একজন ট্রাইঅ্যাথলিট। প্রতিদিন অনুশীলন করেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। কিন্তু একসময় এসবের প্রতি ক্রমেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। কারণ পাঁচ বছর আগে তার জগৎ উলটে গিয়েছিল, তার অণ্ডকোষে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। 

তিনি জানান, ‘অণ্ডকোষে এক ধরনের ভার অনুভব করছিলাম। হালকা টান আর চাপও অনুভব হতো। তখন ভেবেছিলাম, আমি কি এখন সাঁতারে যাব, নাকি সরাসরি ইউরোলজিস্টের কাছে চলে যাব? কারণ...তখন আমার ভালো অনুভব হচ্ছিল না।’ 

মাল্টের বয়স তখন ছিল ২২, পড়াশোনা করতেন। এমন বয়সেই টেস্টিকুলার ক্যানসার হতে পারে। সাধারণত ২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সী পুরুষেরা এতে আক্রান্ত হন। 

শুক্রাণু যেখানে গঠিত হয় সাধারণত সেখানে টেস্টিকুলার ক্যানসার হয়। চিহ্নিত করা না গেলে এটি অন্যান্য টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যেমন এপিডিডিমিস। ক্যানসারের কোষ যদি রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে তাহলে তা পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এই অবস্থায় ব্যথা না করার বিষয়টি বিপজ্জনক। 

টেস্টিকুলার টিউমার খুব দ্রুত বড় হতে পারে-১০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে আকার দ্বিগুণ হতে পারে। তাই ধরা পড়ার পর দ্রুত চিকিৎসা করাতে হয়। 

মাল্টের এখন মাত্র একটি অণ্ডকোষ আছে। তবে টেস্টোস্টেরনের মতো গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরির জন্য তা যথেষ্ট। অস্ত্রোপচারের পরও তার চিকিৎসা চলেছে। 

তিনি বলেন, ‘ভাবছি, টিউমার চলে গেছে। সবকিছু ঠিক আছে। লাইফ গোজ অন। আমি পড়াশোনা করতে পারব, ডিগ্রি নিতে পারব। একদিন চাকরি পাব। তবে পেছন ফিরে তাকালে মনে হয়, এগুলো হয়ত সম্ভব ছিল না।’ 

কারণ, মাল্টের ক্যানসার সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল-যাকে বলে মেটাস্ট্যাটিস। তলপেটে পাঁচ সেন্টিমিটার দীর্ঘ একটি টিউমার ছিল। ২২ বছর বয়সে তাঁকে কেমোথেরাপি নিতে হয়েছে। 

মাল্টে বলেন, ‘দুদিন খুব বিষণ্ন ছিলাম। নিজেকে প্রশ্ন করেছিলাম, এমনকি, আমার শেষকৃত্য নিয়েও ভেবেছিলাম, কারণ আপনার একটা প্ল্যান বি থাকা প্রয়োজন। আমার আসলেই ভয়ংকর চিন্তা হয়েছিল। ২২ বছর বয়সে সেগুলো ভালো চিন্তা ছিল না। তবে এও ভেবেছিলাম যে, আমাকে লড়তে হবে।’ 

তিন মাস ধরে তাকে তিনবার কেমোথেরাপি নিতে হয়েছে। তার চুল পড়ে গিয়েছিল। জীবন পুরো বদলে গিয়েছিল। 

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ইয়াএল বোনিন-গ্রুবার মাল্টের চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বলছেন, কেমো ছাড়া বিকল্প ছিল না। 

কুঁচকিতে চাপের কারণে মাল্টেকে প্রায় চার মাস ক্যানসারের চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ভাগ্য ভালো যে, তার সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা এখনো আছে। ফলোআপ বলছে, ক্যানসার আর ফিরে আসেনি। তবে সবার ভাগ্য এত ভালো হয় না। কারণ অল্পসংখ্যক রোগী ডাক্তারের কাছে যান। ক্যানসার যে আছে, সেটা হঠাৎ করেই ধরা পড়ে। 

মাল্টে বলেন, ‘যদি খেয়াল না করতাম তাহলে হয়ত এত দিনে আমার জীবন শেষ হয়ে যেত। আমার মেটাস্ট্যাসিস হতো। সে ক্ষেত্রে কেমোতে কাজ হতো না। তাই আমি যে সমস্যাটা খেয়াল করতে পেরেছি, তাতে আমি খুব খুশি। সবাইকে বলব, তারা যেন পরীক্ষা করান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত