Ajker Patrika

মানুষের জিন তৈরির বিতর্কিত কাজ শুরু

  • সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়ে গবেষণা শুরু হতে যাচ্ছে।
  • কৃত্রিম ডিএনএ তৈরিতে ১ কোটি পাউন্ড তহবিল সংগ্রহ।
  • গবেষকেরা বলছেন, জটিল রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হবে ডিএনএ।
  • বিরোধীরা বলছে, এর মধ্য দিয়ে কৃত্রিম মানুষ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মানবদেহের জিন এবার তৈরি হবে গবেষণাগারে। এ জন্য ইতিমধ্যে তহবিলও পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক দাতা সংস্থা ওয়েলকাম ট্রাস্ট এই গবেষণার জন্য এক কোটি পাউন্ড ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়ে গবেষণা শুরু হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রথম এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

জিন গবেষণা বা মানব শরীরের ডিএনএ গবেষণা নিয়ে নীতিগত এবং ধর্মীয় বিরোধ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, এই বিষয়ে গবেষণায় অগ্রগতি হলে বিজ্ঞানীরা শিশুর ডিজাইন করে ফেলতে পারবেন গবেষণাগারে। এ ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনও ঘটিয়ে দিতে পারবেন তাঁরা।

তবে এই গবেষণায় তহবিল দেওয়া ওয়েলকাম ট্রাস্ট জানিয়েছে, মন্দ কাজের চেয়ে অনেক ভালো কাজও কৃত্রিম ডিএনএর মাধ্যমে করা সম্ভব। যেসব রোগ সারা জীবন চিকিৎসা নিয়েও ভালো হয় না, সেগুলোর চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করা সম্ভব হবে এ গবেষণার মাধ্যমে।

কৃত্রিম ডিএনএ তৈরির গবেষণা কাজে যুক্ত আছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআরসি ল্যাবরেটরি অব মলিকুলার বায়োলজির গবেষক জুলিয়ান সেল। তাঁর মতে, এই গবেষণা জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশাল অগ্রগতি। জুলিয়ান বলেন, বয়স্ক মানুষেরা যাতে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারেন কিংবা কম রোগ নিয়ে বার্ধক্যে প্রবেশ করেন, সেই লক্ষ্যে এই গবেষণা।

জুলিয়ান বলেন, কৃত্রিম ডিএনএ তৈরির লক্ষ্য হলো, রোগপ্রতিরোধী কোষ তৈরি করা; যাতে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গ তৈরিতে সহযোগিতা করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, কারও লিভার, হৃদ্‌যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিংবা যাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের জন্য গবেষণাগারে তৈরি করা ডিএনএ বা কোষ ব্যবহার করা যেতে পারে।

তবে এই গবেষণার বিরোধী মানুষের সংখ্যাও কম নয়। এই দলের মধ্যে বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন। তাঁদের আশঙ্কা, ডিএনএ তৈরির এ গবেষণা গবেষকদের ইচ্ছেমতো মানুষ তৈরির পথ সৃষ্টি করে দেবে। বিজ্ঞানীরা তাঁদের পছন্দের বৈশিষ্ট্য এমন কৃত্রিম মানুষের ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে পারবেন।

জিন গবেষণার বিরোধিতা করে বিয়ন্ড জিএম নামের একটি সংগঠন। এর পরিচালক প্যাট থমাস বলেন, আমরা এটা বিশ্বাস করতে পছন্দ করি, সব বিজ্ঞানীই ভালো। তবে বিজ্ঞান তো ভিন্ন উদ্দেশ তথা ক্ষতি ও যুদ্ধের জন্যও ব্যবহার হতে পারে।

কোষের মূল অণু হলো ডিএনএ, যা জীবন্ত কোষের সব কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে। এই ডিএনএতেই সব জেনেটিক তথ্য থাকে। এই ডিএনএর বিন্যাসই নিয়ন্ত্রণ করে মানুষ কেমন হবে। হিউম্যান জেনোম প্রজেক্টের মাধ্যমে মানুষের কোষের সব জিনগত বৈশিষ্ট্য জানা গেছে। এখন বিজ্ঞানীরা এই কৃত্রিম জিনগত বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করতে ডিএনএ তৈরির পথে হাঁটছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেক সময় কিছু রোগ হয়। ডিএনএ তৈরি করা সম্ভব হলে এসব রোগের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।

ওয়েলকাম সেঙ্গার ইনস্টিটিউট মূলত মানুষের জিন বিশ্লেষণের (হিউম্যান জেনোম প্রজেক্টের) বড় অংশের কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ম্যাথু হার্লস বলেন, কৃত্রিম এই ডিএনএ তৈরি করা সম্ভব হলে আমরা বুঝতে পারব, আসলে ডিএনএ কীভাবে কাজ করে। এরপর নতুন নতুন তত্ত্বও পরীক্ষা করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যুদ্ধের পর এ যেন এক নতুন ইরান, জনগণের মতো বদলে গেছে সরকারও

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করল বিমান বাংলাদেশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত