ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

‘১৯১১ সালের ১৪ জুন। ইতালির জেনেটি নামক এক কোম্পানি ঘোষণা করল, তারা তাদের নতুন একটি ট্রেন লঞ্চ করতে চলেছে। যেটার প্রথম সফরে যাত্রীদের দেওয়া হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যাত্রার সুযোগ। সেকালের হিসেবে ট্রেনটির সাজ সরঞ্জাম, খাবার দাবার ছিল যথেষ্টই লোভনীয়। বেশ আকর্ষণীয় সুযোগই বলতে হয়। ফলে অনেকেই প্রথম সফরে যাওয়ার আর্জি জানালেন। শেষমেশ সফরের দিন দেখা গেল গাড়ির চালক মিলিয়ে মোট ১০৬ জন যাত্রী ট্রেনটিতে যাত্রা করছেন। গ্রীষ্মের সকালে মোট ১০৬ জন যাত্রী নিয়ে সেই জেনেটি ট্রেন তার যাত্রা শুরু করল। সব ঠিকই ছিল। ট্রেন চলছিল নিয়মমাফিক। যাত্রীরা বেজায় খুশি। সকলেই গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত চুটিয়ে উপভোগ করছেন এই ট্রেন জার্নি। এমন সময়ই ট্রেনটি এসে পৌছাল লম্বারডি পাহাড়ের কাছাকাছি। এই পাহাড়ের পেটের ভিতর দিয়ে একটি অন্ধকার টানেল। এই টানেল পার করেই ট্রেনটিকে পৌঁছতে হবে গন্তব্যে। যদিও টানেলে ঢোকার আগে সেই ট্রেনের যাত্রীরা ভাবতেও পারেনি তাদের সঙ্গে কি ঘটতে চলেছে।...’
এমন একটি রহস্যগল্প কয়েক বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমেও প্রচার হয়ে আসছে।
রহস্যময় ট্রেনটি সম্পর্কে দাবি করা হয়, ট্রেনটি যাত্রাপথে ওই টানেলে প্রবেশ করার পর আর বের হয়নি। ট্রেনটির কোনো হদিসও মেলেনি। তবে ওই ট্রেনেরই দুজন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরাই সেই টানেলের ভেতরে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
কথিত ওই দুই যাত্রীর বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, ‘ট্রেনটি টানেলের মাঝামাঝি পৌঁছাতেই অদ্ভুত সাদা কুয়াশা ঘিরে ফেলে। সেই অদ্ভুত কুয়াশায় ট্রেনের যাত্রীদের সবারই দম বন্ধ হয়ে আসে। সবাই ছটফট করতে থাকে। ট্রেন জুড়ে হইচই পড়ে যায়। আতঙ্কে যাত্রীরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকে। ঠিক সেই সময়, একদম শেষ মুহূর্তে এই দুজন যাত্রী ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। এরপর তাঁদের চোখের সামনে ট্রেনটি মিলিয়ে যায়!’
ট্রেনটি সম্পর্কে আরও দাবি করা হয়, একই ট্রেন নাকি টাইম ট্রাভেল করে ১৮৪৫ সালে মেক্সিকোতে গিয়ে পৌঁছেছিল!
আসলেই কি এমন কোনো ঘটনা ঘটেছিল? জেনেটি নামের কোনো রেল কোম্পানি এবং তাদের এমন ট্রেনের আসলেই কোনো অস্তিত্ব ছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
সূত্রের খোঁজে
জেনেটি নামের ট্রেনটি সম্পর্কে অনুসন্ধানে গুগল অ্যাডভান্স সার্চে সম্ভাব্য প্রথম কনটেন্টটি পাওয়া যায় অ্যানসিয়েন্টস বিজি নামের একটি ওয়েবসাইটে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এটি প্রকাশিত। বাংলা ভাষায় ট্রেনটি নিয়ে সম্ভাব্য প্রথম প্রতিবেদন পাওয়া যায় ভারতীয় বাংলা ভাষার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার ওয়েবসাইটে, ২০২১ সালে। ভারতীয়সহ ইংরেজি ভাষার বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমেও ট্রেনটি নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়াতেও ওই সময় থেকেই ট্রেনটি সম্পর্কে প্রচার হয়ে আসছে। সবখানেই ঘটনার বর্ণনা প্রায় একই। কোনো প্রতিবেদনেই নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ নেই।
প্রতিবেদনগুলোতে যেসব ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো যাচাই করে করে দেখা গেছে, একেক প্ল্যাটফর্মে একেক স্থানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, কিছু প্রতিবেদনে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অবস্থিত ফিনিক্স পার্ক টানেল নামে একটি রেলওয়ে টানেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আবার কোথাও ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনশায়ারে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত রেলওয়ে টানেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
জেনেটি ট্রেনের অস্তিত্ব অনুসন্ধানে
অনুসন্ধানে জেনেটি ট্যুরিজিমো নামে ইতালির একটি ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের অ্যাবাউট সেকশনের তথ্য অনুযায়ী, ইতালির ভেনেতো অঞ্চলে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে জেনেটি ট্যুরিজিমো। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৭ সালে মারিও জেনেটি নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসের সঙ্গে রেল সেবা দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
যেখানে রহস্যময় জেনেটি ট্রেনটির ইতিহাস সম্পর্কে দাবি করা হয়, এটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯১১ সালে। অর্থাৎ জেনেটি ট্যুরিজিমোর প্রায় ৫০ বছর আগে।
ইতালিতেই ম্যাসিমো জেনেটি নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান একটি ইতালীয় কফি শপ চেইন।
ইতালির বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে জেনেটি নামে একটি পোশাক ব্র্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে নির্মাণ সামগ্রী বিক্রয়কারী আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়।
অন্তত ইন্টারনেটে জেনেটি নামে কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি রেলওয়ে কোম্পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ইতালিতে ট্রেনসেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে ইন্টারনেটে অনুসন্ধানে জেনেটি নামে কোনো কোম্পানির নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৮৩৯ সালে ইতালিতে প্রথম ট্রেন যাত্রা শুরু হয়। দেশটিতে রেল সেবাদানকারী তিনটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানা যায়। এর মধ্যে ট্রেনিটালিয়া রেলওয়ে কোম্পানিটি ইতালির সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রধান রেল কোম্পানি। এর বাইরে আছে— ইতালো রেলওয়ে কোম্পানি ও ট্রেনর্দ–মিলানো লমবার্ডি রেলওয়ে।
এ ছাড়া ইতালির রেলওয়ের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৮৮৪ সালে দেশটিতে তিনটি বেসরকারি রেলওয়ে কোম্পানি ছিল। ১৯০৫ সালে এসে সরকারি রেলসেবা প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। এরপরের ইতিহাস থেকেও জেনেটি নামের কোনো কোম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
যেহেতু দাবি অনুযায়ী, জেনেটি ট্রেনটি ১০৬ জন যাত্রীসহ হারিয়ে গেছে, নিঃসন্দেহে এটি অনেক বড় ঘটনা। এই ট্রেনের যাত্রীদের নামের তালিকা, ট্রেনটির দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সংবাদ নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্বের মূল ধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে এই ঘটনা স্মরণে কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায় না।
অথচ দাবিকৃত এই ঘটনার প্রায় এক বছর পরই ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায় টাইটানিক। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ইংল্যান্ডের সাদাম্পটন থেকে ছেড়ে যায় জাহাজটি। এটিই ছিল সেকালের সর্ববৃহৎ জাহাজটির প্রথম সমুদ্রযাত্রা। আটলান্টিকে একটি হিমবাহের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দেড় হাজারের বেশি আরোহী নিয়ে ডুবে যায় টাইটানিক। ঘটনাটি সে সময়কার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। এমনকি এখনো আলোচিত হয়, এ নিয়ে হলিউডে ব্যবসাসফল সিনেমাও হয়েছে।

ইউরোপে রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ খুঁজে বিশ শতকে ইতালিতে বড় দুটি রেল দুর্ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়। যার একটি ঘটেছিল ১৯৬২ সালের ৩১ মে। এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল ইতালির ভোগেরা শহরে যাত্রীবাহী ট্রেনে পণ্যবাহী ট্রেনের ধাক্কায়। এতে ৬৪ জন নিহত হন এবং আহত হন ৪০ জন। আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে এর আগের বছর, ১৯৬১ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ইতালির ফিউমারেলাতে ঘটা এই দুর্ঘটনায় একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে গেলে ৭১ জন নিহত হন এবং ২৮ জন আহত হন।
এ ছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৪ সালের ২ মার্চ ইতালির সালেরনো শহরের কাছে একটি টানেলে ট্রেনে ৫০০ জনেরও বেশি আরোহীর দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুর তথ্যও ইন্টারনেট সূত্রে জানা যায়। এই ঘটনা নিয়ে ট্রেনটির নম্বর উল্লেখ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইতিহাস ভিত্তিক ওয়েবসাইট হিস্ট্রি ডটকম। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ট্রেনটির নম্বর ছিল ৮০১৭।
কিন্তু কথিত জেনেটি কোম্পানির ট্রেনটির গল্পে ঘটনাস্থল, টানেলের নাম বা ট্রেনে নম্বর— এমন কোনো তথ্যই নেই।
ইন্টারনেটে ভাইরাল ঘটনাটি নিয়ে যা জানা যায়
ইন্টারনেটে ভাইরাল জেনেটি ট্রেনের ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপস। ২০২২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ইতালির জেনেটি রেল কোম্পানির ট্রেনটির যাত্রা শুরুর পর কুয়াশাচ্ছন্ন টানেলে হারিয়ে যাওয়া কোনো বাস্তব ঘটনা নয়; এটির মূল একটি কল্পকাহিনী। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে নানাভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং অনেকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করেছেন।
স্নোপস জেনেটি ট্রেনের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করা ই–বরঘি নামের একটি ইতালীয় ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, জেনেটি ট্রেনের গল্পটি ইউক্রেনের লেখক নিকোলে চেরকাশিনের একটি কল্পকাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত।

‘১৯১১ সালের ১৪ জুন। ইতালির জেনেটি নামক এক কোম্পানি ঘোষণা করল, তারা তাদের নতুন একটি ট্রেন লঞ্চ করতে চলেছে। যেটার প্রথম সফরে যাত্রীদের দেওয়া হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যাত্রার সুযোগ। সেকালের হিসেবে ট্রেনটির সাজ সরঞ্জাম, খাবার দাবার ছিল যথেষ্টই লোভনীয়। বেশ আকর্ষণীয় সুযোগই বলতে হয়। ফলে অনেকেই প্রথম সফরে যাওয়ার আর্জি জানালেন। শেষমেশ সফরের দিন দেখা গেল গাড়ির চালক মিলিয়ে মোট ১০৬ জন যাত্রী ট্রেনটিতে যাত্রা করছেন। গ্রীষ্মের সকালে মোট ১০৬ জন যাত্রী নিয়ে সেই জেনেটি ট্রেন তার যাত্রা শুরু করল। সব ঠিকই ছিল। ট্রেন চলছিল নিয়মমাফিক। যাত্রীরা বেজায় খুশি। সকলেই গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত চুটিয়ে উপভোগ করছেন এই ট্রেন জার্নি। এমন সময়ই ট্রেনটি এসে পৌছাল লম্বারডি পাহাড়ের কাছাকাছি। এই পাহাড়ের পেটের ভিতর দিয়ে একটি অন্ধকার টানেল। এই টানেল পার করেই ট্রেনটিকে পৌঁছতে হবে গন্তব্যে। যদিও টানেলে ঢোকার আগে সেই ট্রেনের যাত্রীরা ভাবতেও পারেনি তাদের সঙ্গে কি ঘটতে চলেছে।...’
এমন একটি রহস্যগল্প কয়েক বছর ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমেও প্রচার হয়ে আসছে।
রহস্যময় ট্রেনটি সম্পর্কে দাবি করা হয়, ট্রেনটি যাত্রাপথে ওই টানেলে প্রবেশ করার পর আর বের হয়নি। ট্রেনটির কোনো হদিসও মেলেনি। তবে ওই ট্রেনেরই দুজন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরাই সেই টানেলের ভেতরে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
কথিত ওই দুই যাত্রীর বরাত দিয়ে দাবি করা হয়, ‘ট্রেনটি টানেলের মাঝামাঝি পৌঁছাতেই অদ্ভুত সাদা কুয়াশা ঘিরে ফেলে। সেই অদ্ভুত কুয়াশায় ট্রেনের যাত্রীদের সবারই দম বন্ধ হয়ে আসে। সবাই ছটফট করতে থাকে। ট্রেন জুড়ে হইচই পড়ে যায়। আতঙ্কে যাত্রীরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকে। ঠিক সেই সময়, একদম শেষ মুহূর্তে এই দুজন যাত্রী ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন। এরপর তাঁদের চোখের সামনে ট্রেনটি মিলিয়ে যায়!’
ট্রেনটি সম্পর্কে আরও দাবি করা হয়, একই ট্রেন নাকি টাইম ট্রাভেল করে ১৮৪৫ সালে মেক্সিকোতে গিয়ে পৌঁছেছিল!
আসলেই কি এমন কোনো ঘটনা ঘটেছিল? জেনেটি নামের কোনো রেল কোম্পানি এবং তাদের এমন ট্রেনের আসলেই কোনো অস্তিত্ব ছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
সূত্রের খোঁজে
জেনেটি নামের ট্রেনটি সম্পর্কে অনুসন্ধানে গুগল অ্যাডভান্স সার্চে সম্ভাব্য প্রথম কনটেন্টটি পাওয়া যায় অ্যানসিয়েন্টস বিজি নামের একটি ওয়েবসাইটে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এটি প্রকাশিত। বাংলা ভাষায় ট্রেনটি নিয়ে সম্ভাব্য প্রথম প্রতিবেদন পাওয়া যায় ভারতীয় বাংলা ভাষার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার ওয়েবসাইটে, ২০২১ সালে। ভারতীয়সহ ইংরেজি ভাষার বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমেও ট্রেনটি নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়াতেও ওই সময় থেকেই ট্রেনটি সম্পর্কে প্রচার হয়ে আসছে। সবখানেই ঘটনার বর্ণনা প্রায় একই। কোনো প্রতিবেদনেই নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ নেই।
প্রতিবেদনগুলোতে যেসব ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো যাচাই করে করে দেখা গেছে, একেক প্ল্যাটফর্মে একেক স্থানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, কিছু প্রতিবেদনে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অবস্থিত ফিনিক্স পার্ক টানেল নামে একটি রেলওয়ে টানেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আবার কোথাও ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনশায়ারে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত রেলওয়ে টানেলের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
জেনেটি ট্রেনের অস্তিত্ব অনুসন্ধানে
অনুসন্ধানে জেনেটি ট্যুরিজিমো নামে ইতালির একটি ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের অ্যাবাউট সেকশনের তথ্য অনুযায়ী, ইতালির ভেনেতো অঞ্চলে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে জেনেটি ট্যুরিজিমো। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৭ সালে মারিও জেনেটি নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসের সঙ্গে রেল সেবা দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
যেখানে রহস্যময় জেনেটি ট্রেনটির ইতিহাস সম্পর্কে দাবি করা হয়, এটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯১১ সালে। অর্থাৎ জেনেটি ট্যুরিজিমোর প্রায় ৫০ বছর আগে।
ইতালিতেই ম্যাসিমো জেনেটি নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠান একটি ইতালীয় কফি শপ চেইন।
ইতালির বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে জেনেটি নামে একটি পোশাক ব্র্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে নির্মাণ সামগ্রী বিক্রয়কারী আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়।
অন্তত ইন্টারনেটে জেনেটি নামে কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি রেলওয়ে কোম্পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ইতালিতে ট্রেনসেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে ইন্টারনেটে অনুসন্ধানে জেনেটি নামে কোনো কোম্পানির নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি। ১৮৩৯ সালে ইতালিতে প্রথম ট্রেন যাত্রা শুরু হয়। দেশটিতে রেল সেবাদানকারী তিনটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানা যায়। এর মধ্যে ট্রেনিটালিয়া রেলওয়ে কোম্পানিটি ইতালির সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রধান রেল কোম্পানি। এর বাইরে আছে— ইতালো রেলওয়ে কোম্পানি ও ট্রেনর্দ–মিলানো লমবার্ডি রেলওয়ে।
এ ছাড়া ইতালির রেলওয়ের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ১৮৮৪ সালে দেশটিতে তিনটি বেসরকারি রেলওয়ে কোম্পানি ছিল। ১৯০৫ সালে এসে সরকারি রেলসেবা প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। এরপরের ইতিহাস থেকেও জেনেটি নামের কোনো কোম্পানির অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
যেহেতু দাবি অনুযায়ী, জেনেটি ট্রেনটি ১০৬ জন যাত্রীসহ হারিয়ে গেছে, নিঃসন্দেহে এটি অনেক বড় ঘটনা। এই ট্রেনের যাত্রীদের নামের তালিকা, ট্রেনটির দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার সংবাদ নিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারিত হওয়ার কথা। কিন্তু বিশ্বের মূল ধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে এই ঘটনা স্মরণে কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায় না।
অথচ দাবিকৃত এই ঘটনার প্রায় এক বছর পরই ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায় টাইটানিক। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ইংল্যান্ডের সাদাম্পটন থেকে ছেড়ে যায় জাহাজটি। এটিই ছিল সেকালের সর্ববৃহৎ জাহাজটির প্রথম সমুদ্রযাত্রা। আটলান্টিকে একটি হিমবাহের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দেড় হাজারের বেশি আরোহী নিয়ে ডুবে যায় টাইটানিক। ঘটনাটি সে সময়কার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে। এমনকি এখনো আলোচিত হয়, এ নিয়ে হলিউডে ব্যবসাসফল সিনেমাও হয়েছে।

ইউরোপে রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ খুঁজে বিশ শতকে ইতালিতে বড় দুটি রেল দুর্ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়। যার একটি ঘটেছিল ১৯৬২ সালের ৩১ মে। এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল ইতালির ভোগেরা শহরে যাত্রীবাহী ট্রেনে পণ্যবাহী ট্রেনের ধাক্কায়। এতে ৬৪ জন নিহত হন এবং আহত হন ৪০ জন। আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে এর আগের বছর, ১৯৬১ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ইতালির ফিউমারেলাতে ঘটা এই দুর্ঘটনায় একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে গেলে ৭১ জন নিহত হন এবং ২৮ জন আহত হন।
এ ছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ১৯৪৪ সালের ২ মার্চ ইতালির সালেরনো শহরের কাছে একটি টানেলে ট্রেনে ৫০০ জনেরও বেশি আরোহীর দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুর তথ্যও ইন্টারনেট সূত্রে জানা যায়। এই ঘটনা নিয়ে ট্রেনটির নম্বর উল্লেখ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইতিহাস ভিত্তিক ওয়েবসাইট হিস্ট্রি ডটকম। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ট্রেনটির নম্বর ছিল ৮০১৭।
কিন্তু কথিত জেনেটি কোম্পানির ট্রেনটির গল্পে ঘটনাস্থল, টানেলের নাম বা ট্রেনে নম্বর— এমন কোনো তথ্যই নেই।
ইন্টারনেটে ভাইরাল ঘটনাটি নিয়ে যা জানা যায়
ইন্টারনেটে ভাইরাল জেনেটি ট্রেনের ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপস। ২০২২ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ইতালির জেনেটি রেল কোম্পানির ট্রেনটির যাত্রা শুরুর পর কুয়াশাচ্ছন্ন টানেলে হারিয়ে যাওয়া কোনো বাস্তব ঘটনা নয়; এটির মূল একটি কল্পকাহিনী। পরবর্তীতে ইন্টারনেটে নানাভাবে পরিবর্তিত হয়েছে এবং অনেকে বাস্তব দাবিতে প্রচার করেছেন।
স্নোপস জেনেটি ট্রেনের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করা ই–বরঘি নামের একটি ইতালীয় ভ্রমণ বিষয়ক ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, জেনেটি ট্রেনের গল্পটি ইউক্রেনের লেখক নিকোলে চেরকাশিনের একটি কল্পকাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

রহস্যময় ট্রেনটি সম্পর্কে দাবি করা হয়, ট্রেনটি যাত্রাপথে ওই টানেলে প্রবেশ করার পর আর বের হয়নি। ট্রেনটির কোনো হদিসও মেলেনি। তবে ওই ট্রেনেরই দুজন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরাই সেই টানেলের ভেতরে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
১২ জানুয়ারি ২০২৪
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫বাসস

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

রহস্যময় ট্রেনটি সম্পর্কে দাবি করা হয়, ট্রেনটি যাত্রাপথে ওই টানেলে প্রবেশ করার পর আর বের হয়নি। ট্রেনটির কোনো হদিসও মেলেনি। তবে ওই ট্রেনেরই দুজন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরাই সেই টানেলের ভেতরে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
১২ জানুয়ারি ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

রহস্যময় ট্রেনটি সম্পর্কে দাবি করা হয়, ট্রেনটি যাত্রাপথে ওই টানেলে প্রবেশ করার পর আর বের হয়নি। ট্রেনটির কোনো হদিসও মেলেনি। তবে ওই ট্রেনেরই দুজন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরাই সেই টানেলের ভেতরে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
১২ জানুয়ারি ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)

সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)

সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।

রহস্যময় ট্রেনটি সম্পর্কে দাবি করা হয়, ট্রেনটি যাত্রাপথে ওই টানেলে প্রবেশ করার পর আর বের হয়নি। ট্রেনটির কোনো হদিসও মেলেনি। তবে ওই ট্রেনেরই দুজন যাত্রীর খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরাই সেই টানেলের ভেতরে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
১২ জানুয়ারি ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫