ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে। আবার বিশ্বের কোথাও কোথাও এই চর্চা করা হয় এই বিশ্বাস থেকে যে মৃগীরোগী নিজের জিহ্বা গিলে ফেলতে পারে!
চামড়ার জুতা শুকলে মৃগীরোগীর আসলেই কোনো উপকার হয়?
মৃগীরোগীর খিঁচুনি প্রশমনে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার ধারণাটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। ২০১৮ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৃগীরোগের ব্যাপারে সচেতনতা নিয়ে দেশটির ৪২টি স্কুলের প্রায় ৪০০ শিক্ষকের ওপর ৮ মাসের একটি জরিপ চালানো হয়। এই জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪০ শতাংশ শিক্ষক বিশ্বাস করেন, মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা হলো চামড়ার জুতা বা পেঁয়াজের ঘ্রাণ নেওয়া।
বাংলাদেশে এমন কোনো জরিপ পাওয়া না গেলেও মানুষের মধ্যে যে এ ধারণা বিদ্যমান সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘RK SagaCity’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালে মৃগীরোগীকে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। যেখানে দেখা যায়, রাস্তায় এক ব্যক্তির খিঁচুনি উঠেছে। ব্যক্তিটি রাস্তায় পড়ে আছেন। আশপাশের মানুষজন তাঁর নাকে জুতা, চামড়ার বেল্ট ধরার চেষ্টা করছেন।
কেবল সাধারণ মানুষ নন, জনপ্রিয় বলিউড সিনেমা ‘দঙ্গল’-এর তারকা ফাতেমা সানা শেখকেও খিঁচুনি উপশমে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়া হয়েছিল। ভক্তদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ২০২২ সালে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
মৃগীরোগীকে জুতা বা চামড়াজাত পণ্যের ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর নিউরোটেকনোলজির নির্বাহী পরিচালক স্নায়ুবিজ্ঞানী এরিক চুডলারের একটি ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে তিনি লেখেন, খিঁচুনির সময় মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হয়। এ কারণে মৃগীরোগকে কখনো কখনো ‘বৈদ্যুতিক ব্রেন স্টর্ম’ বলা হয়। খিঁচুনি চলাকালীন মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিন্তা, নড়াচড়া, দেখা ও শোনার মতো কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এই খিঁচুনির তীব্রতা প্রতিরোধ বা কমানোর জন্য বিভিন্ন উপায় চেষ্টা করেছে। মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খিঁচুনি উপশমে বর্তমানে অনেক কার্যকর ওষুধ পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির বর্ণনাও পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা নামে ভারতীয় চিকিৎসকের একটি নিবন্ধের বরাত দিয়ে এরিক চুডলার জানান, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়া হয়। পদ্ধতিটি অবৈজ্ঞানিক এবং উদ্ভট। সর্বোপরি, মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার গন্ধের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।
যদিও হারিন্দার জাসেজা দাবি করেছেন, মৃগীরোগের চিকিৎসায় এটি কাজ করে থাকতে পারে। তাঁর মতে, এটি একধরনের অ্যারোমাথেরাপি। অ্যারোমাথেরাপি হচ্ছে রোগের চিকিৎসায় ঘ্রাণের ব্যবহার। যদিও কিছু কিছু গন্ধ খিঁচুনি শুরু করতে পারে, তবে আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, কিছু তীব্র গন্ধ খিঁচুনির তীব্রতা কমিয়ে দিতে পারে। এটা হতে পারে যে, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনির সময় নিউরনের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক উদ্দীপনায় ব্যাঘাত ঘটায়।
নেদারল্যান্ডস থেকে প্রকাশিত জার্নাল এলসেভিয়ারে ২০০৮ সালে প্রকাশিত হারিন্দার জাসেজার এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে অবস্থিত জি আর মেডিকেল কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের চিকিৎসক। তিনি গবেষণা নিবন্ধটিতে এশিয়ার দেশগুলোতে মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার প্রচলিত পদ্ধতিটির পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন। যদিও গবেষণাটির শেষে হারিন্দার জাসেজা বলেন, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনি প্রতিরোধ করতে পারে। তবে এ জন্য আরও অনেক বেশি গবেষণা প্রয়োজন। আর এ গবেষণা মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় না।
ধারণাটির উৎপত্তি সম্পর্কে হারিন্দার জাসেজা আরেকটি নিবন্ধে লেখেন, একসময় মৃগীরোগকে দেখা হয়েছে ‘দুষ্টু’ আত্মার আছর হিসেবে। তাই মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ প্রয়োগের ধারণা এই বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত যে জুতার বাজে গন্ধ এই ‘দুষ্টু’ আত্মাদের প্রতিহত করতে পারে। ব্যাপারটি কাটা দিয়ে কাটা তোলার মতো।
মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণে দুই যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্নায়ু বিশেষজ্ঞ নির্মল সূর্য। মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির ব্যাপারে তিনি বলেন, খিঁচুনির সময় রোগীর নাকে পেঁয়াজ বা জুতা ধরার পরামর্শটির কোনো ভিত্তি নেই। আবার অনেক সময় মৃগীরোগীর হাতে ধাতব বস্তু ধরিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো অযৌক্তিক সংস্কার, এগুলো রোগীর চিকিৎসায় কোনো কাজে আসে না।
মৃগীরোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটিও রোগীর কোনো উপকার করে না। বরং এভাবে রোগীর অন্যান্য সমস্যা যেমন, দাঁত, মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। যদি মৃগীরোগীর মুখ খোলা থাকে, তাহলে সেখানে প্রয়োজনে নরম বস্তু, যেমন, রুমাল রাখা যেতে পারে।
একই বিষয়ে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের সঙ্গে কথা হয় খিঁচুনি বা মৃগীরোগের চিকিৎসায় কাজ করা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ শাখওয়াত এমরানের সঙ্গে। খিঁচুনি রোগের চিকিৎসায় জুতার ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আসলে মৃগীরোগীর যখন খিঁচুনি হয়, তখন জিহ্বায় কামড় পড়ে রোগীর জিহ্বা কেটে যেতে পারে। এটি প্রতিরোধে মুখের ভেতর চামচ, জুতা এগুলো ঢুকিয়ে দেয়। এটিই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আসতে আসতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, মৃগীরোগীকে জুতা শুকতে দিলে রোগী ভালো হয়ে যায়।
এই চিকিৎসক বলেন, মৃগীরোগীর খিঁচুনি সাধারণত ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট স্থায়ী হয়। এরপর রোগী বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে কেউ রোগীর নাকে জুতা ধরলে মনে হতে পারে, জুতা দেওয়ার কারণেই তিনি সুস্থ হয়েছেন!
মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা কী
খিঁচুনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের খিঁচুনি আছে। তবে অধিকাংশ খিঁচুনি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। যেকোনো খিঁচুনিতে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে:
* খিঁচুনি শেষ না হওয়া এবং জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রোগীর পাশে থাকা।
* চোখে চশমা থাকলে সরিয়ে ফেলা।
* মাথার নিচে নরম কিছু দেওয়া।
* রোগীর মুখে কিছু না রাখা।
* রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাবার, পানি না দেওয়া।
* রোগীকে চেপে না ধরা বা তার নড়াচড়া বন্ধ করার চেষ্টা না করা।
* খিঁচুনি শেষ হলে রোগীকে বসতে সাহায্য করা এবং স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা।
* খিঁচুনি ৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে জরুরি চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে। আবার বিশ্বের কোথাও কোথাও এই চর্চা করা হয় এই বিশ্বাস থেকে যে মৃগীরোগী নিজের জিহ্বা গিলে ফেলতে পারে!
চামড়ার জুতা শুকলে মৃগীরোগীর আসলেই কোনো উপকার হয়?
মৃগীরোগীর খিঁচুনি প্রশমনে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার ধারণাটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। ২০১৮ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৃগীরোগের ব্যাপারে সচেতনতা নিয়ে দেশটির ৪২টি স্কুলের প্রায় ৪০০ শিক্ষকের ওপর ৮ মাসের একটি জরিপ চালানো হয়। এই জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪০ শতাংশ শিক্ষক বিশ্বাস করেন, মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা হলো চামড়ার জুতা বা পেঁয়াজের ঘ্রাণ নেওয়া।
বাংলাদেশে এমন কোনো জরিপ পাওয়া না গেলেও মানুষের মধ্যে যে এ ধারণা বিদ্যমান সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘RK SagaCity’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালে মৃগীরোগীকে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। যেখানে দেখা যায়, রাস্তায় এক ব্যক্তির খিঁচুনি উঠেছে। ব্যক্তিটি রাস্তায় পড়ে আছেন। আশপাশের মানুষজন তাঁর নাকে জুতা, চামড়ার বেল্ট ধরার চেষ্টা করছেন।
কেবল সাধারণ মানুষ নন, জনপ্রিয় বলিউড সিনেমা ‘দঙ্গল’-এর তারকা ফাতেমা সানা শেখকেও খিঁচুনি উপশমে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়া হয়েছিল। ভক্তদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ২০২২ সালে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
মৃগীরোগীকে জুতা বা চামড়াজাত পণ্যের ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর নিউরোটেকনোলজির নির্বাহী পরিচালক স্নায়ুবিজ্ঞানী এরিক চুডলারের একটি ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে তিনি লেখেন, খিঁচুনির সময় মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হয়। এ কারণে মৃগীরোগকে কখনো কখনো ‘বৈদ্যুতিক ব্রেন স্টর্ম’ বলা হয়। খিঁচুনি চলাকালীন মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিন্তা, নড়াচড়া, দেখা ও শোনার মতো কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এই খিঁচুনির তীব্রতা প্রতিরোধ বা কমানোর জন্য বিভিন্ন উপায় চেষ্টা করেছে। মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খিঁচুনি উপশমে বর্তমানে অনেক কার্যকর ওষুধ পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির বর্ণনাও পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা নামে ভারতীয় চিকিৎসকের একটি নিবন্ধের বরাত দিয়ে এরিক চুডলার জানান, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়া হয়। পদ্ধতিটি অবৈজ্ঞানিক এবং উদ্ভট। সর্বোপরি, মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার গন্ধের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।
যদিও হারিন্দার জাসেজা দাবি করেছেন, মৃগীরোগের চিকিৎসায় এটি কাজ করে থাকতে পারে। তাঁর মতে, এটি একধরনের অ্যারোমাথেরাপি। অ্যারোমাথেরাপি হচ্ছে রোগের চিকিৎসায় ঘ্রাণের ব্যবহার। যদিও কিছু কিছু গন্ধ খিঁচুনি শুরু করতে পারে, তবে আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, কিছু তীব্র গন্ধ খিঁচুনির তীব্রতা কমিয়ে দিতে পারে। এটা হতে পারে যে, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনির সময় নিউরনের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক উদ্দীপনায় ব্যাঘাত ঘটায়।
নেদারল্যান্ডস থেকে প্রকাশিত জার্নাল এলসেভিয়ারে ২০০৮ সালে প্রকাশিত হারিন্দার জাসেজার এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে অবস্থিত জি আর মেডিকেল কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের চিকিৎসক। তিনি গবেষণা নিবন্ধটিতে এশিয়ার দেশগুলোতে মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার প্রচলিত পদ্ধতিটির পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন। যদিও গবেষণাটির শেষে হারিন্দার জাসেজা বলেন, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনি প্রতিরোধ করতে পারে। তবে এ জন্য আরও অনেক বেশি গবেষণা প্রয়োজন। আর এ গবেষণা মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় না।
ধারণাটির উৎপত্তি সম্পর্কে হারিন্দার জাসেজা আরেকটি নিবন্ধে লেখেন, একসময় মৃগীরোগকে দেখা হয়েছে ‘দুষ্টু’ আত্মার আছর হিসেবে। তাই মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ প্রয়োগের ধারণা এই বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত যে জুতার বাজে গন্ধ এই ‘দুষ্টু’ আত্মাদের প্রতিহত করতে পারে। ব্যাপারটি কাটা দিয়ে কাটা তোলার মতো।
মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণে দুই যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্নায়ু বিশেষজ্ঞ নির্মল সূর্য। মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির ব্যাপারে তিনি বলেন, খিঁচুনির সময় রোগীর নাকে পেঁয়াজ বা জুতা ধরার পরামর্শটির কোনো ভিত্তি নেই। আবার অনেক সময় মৃগীরোগীর হাতে ধাতব বস্তু ধরিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো অযৌক্তিক সংস্কার, এগুলো রোগীর চিকিৎসায় কোনো কাজে আসে না।
মৃগীরোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটিও রোগীর কোনো উপকার করে না। বরং এভাবে রোগীর অন্যান্য সমস্যা যেমন, দাঁত, মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। যদি মৃগীরোগীর মুখ খোলা থাকে, তাহলে সেখানে প্রয়োজনে নরম বস্তু, যেমন, রুমাল রাখা যেতে পারে।
একই বিষয়ে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের সঙ্গে কথা হয় খিঁচুনি বা মৃগীরোগের চিকিৎসায় কাজ করা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ শাখওয়াত এমরানের সঙ্গে। খিঁচুনি রোগের চিকিৎসায় জুতার ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আসলে মৃগীরোগীর যখন খিঁচুনি হয়, তখন জিহ্বায় কামড় পড়ে রোগীর জিহ্বা কেটে যেতে পারে। এটি প্রতিরোধে মুখের ভেতর চামচ, জুতা এগুলো ঢুকিয়ে দেয়। এটিই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আসতে আসতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, মৃগীরোগীকে জুতা শুকতে দিলে রোগী ভালো হয়ে যায়।
এই চিকিৎসক বলেন, মৃগীরোগীর খিঁচুনি সাধারণত ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট স্থায়ী হয়। এরপর রোগী বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে কেউ রোগীর নাকে জুতা ধরলে মনে হতে পারে, জুতা দেওয়ার কারণেই তিনি সুস্থ হয়েছেন!
মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা কী
খিঁচুনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের খিঁচুনি আছে। তবে অধিকাংশ খিঁচুনি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। যেকোনো খিঁচুনিতে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে:
* খিঁচুনি শেষ না হওয়া এবং জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রোগীর পাশে থাকা।
* চোখে চশমা থাকলে সরিয়ে ফেলা।
* মাথার নিচে নরম কিছু দেওয়া।
* রোগীর মুখে কিছু না রাখা।
* রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাবার, পানি না দেওয়া।
* রোগীকে চেপে না ধরা বা তার নড়াচড়া বন্ধ করার চেষ্টা না করা।
* খিঁচুনি শেষ হলে রোগীকে বসতে সাহায্য করা এবং স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা।
* খিঁচুনি ৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে জরুরি চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।
ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে। আবার বিশ্বের কোথাও কোথাও এই চর্চা করা হয় এই বিশ্বাস থেকে যে মৃগীরোগী নিজের জিহ্বা গিলে ফেলতে পারে!
চামড়ার জুতা শুকলে মৃগীরোগীর আসলেই কোনো উপকার হয়?
মৃগীরোগীর খিঁচুনি প্রশমনে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার ধারণাটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। ২০১৮ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৃগীরোগের ব্যাপারে সচেতনতা নিয়ে দেশটির ৪২টি স্কুলের প্রায় ৪০০ শিক্ষকের ওপর ৮ মাসের একটি জরিপ চালানো হয়। এই জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪০ শতাংশ শিক্ষক বিশ্বাস করেন, মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা হলো চামড়ার জুতা বা পেঁয়াজের ঘ্রাণ নেওয়া।
বাংলাদেশে এমন কোনো জরিপ পাওয়া না গেলেও মানুষের মধ্যে যে এ ধারণা বিদ্যমান সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘RK SagaCity’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালে মৃগীরোগীকে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। যেখানে দেখা যায়, রাস্তায় এক ব্যক্তির খিঁচুনি উঠেছে। ব্যক্তিটি রাস্তায় পড়ে আছেন। আশপাশের মানুষজন তাঁর নাকে জুতা, চামড়ার বেল্ট ধরার চেষ্টা করছেন।
কেবল সাধারণ মানুষ নন, জনপ্রিয় বলিউড সিনেমা ‘দঙ্গল’-এর তারকা ফাতেমা সানা শেখকেও খিঁচুনি উপশমে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়া হয়েছিল। ভক্তদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ২০২২ সালে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
মৃগীরোগীকে জুতা বা চামড়াজাত পণ্যের ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর নিউরোটেকনোলজির নির্বাহী পরিচালক স্নায়ুবিজ্ঞানী এরিক চুডলারের একটি ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে তিনি লেখেন, খিঁচুনির সময় মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হয়। এ কারণে মৃগীরোগকে কখনো কখনো ‘বৈদ্যুতিক ব্রেন স্টর্ম’ বলা হয়। খিঁচুনি চলাকালীন মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিন্তা, নড়াচড়া, দেখা ও শোনার মতো কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এই খিঁচুনির তীব্রতা প্রতিরোধ বা কমানোর জন্য বিভিন্ন উপায় চেষ্টা করেছে। মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খিঁচুনি উপশমে বর্তমানে অনেক কার্যকর ওষুধ পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির বর্ণনাও পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা নামে ভারতীয় চিকিৎসকের একটি নিবন্ধের বরাত দিয়ে এরিক চুডলার জানান, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়া হয়। পদ্ধতিটি অবৈজ্ঞানিক এবং উদ্ভট। সর্বোপরি, মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার গন্ধের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।
যদিও হারিন্দার জাসেজা দাবি করেছেন, মৃগীরোগের চিকিৎসায় এটি কাজ করে থাকতে পারে। তাঁর মতে, এটি একধরনের অ্যারোমাথেরাপি। অ্যারোমাথেরাপি হচ্ছে রোগের চিকিৎসায় ঘ্রাণের ব্যবহার। যদিও কিছু কিছু গন্ধ খিঁচুনি শুরু করতে পারে, তবে আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, কিছু তীব্র গন্ধ খিঁচুনির তীব্রতা কমিয়ে দিতে পারে। এটা হতে পারে যে, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনির সময় নিউরনের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক উদ্দীপনায় ব্যাঘাত ঘটায়।
নেদারল্যান্ডস থেকে প্রকাশিত জার্নাল এলসেভিয়ারে ২০০৮ সালে প্রকাশিত হারিন্দার জাসেজার এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে অবস্থিত জি আর মেডিকেল কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের চিকিৎসক। তিনি গবেষণা নিবন্ধটিতে এশিয়ার দেশগুলোতে মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার প্রচলিত পদ্ধতিটির পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন। যদিও গবেষণাটির শেষে হারিন্দার জাসেজা বলেন, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনি প্রতিরোধ করতে পারে। তবে এ জন্য আরও অনেক বেশি গবেষণা প্রয়োজন। আর এ গবেষণা মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় না।
ধারণাটির উৎপত্তি সম্পর্কে হারিন্দার জাসেজা আরেকটি নিবন্ধে লেখেন, একসময় মৃগীরোগকে দেখা হয়েছে ‘দুষ্টু’ আত্মার আছর হিসেবে। তাই মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ প্রয়োগের ধারণা এই বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত যে জুতার বাজে গন্ধ এই ‘দুষ্টু’ আত্মাদের প্রতিহত করতে পারে। ব্যাপারটি কাটা দিয়ে কাটা তোলার মতো।
মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণে দুই যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্নায়ু বিশেষজ্ঞ নির্মল সূর্য। মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির ব্যাপারে তিনি বলেন, খিঁচুনির সময় রোগীর নাকে পেঁয়াজ বা জুতা ধরার পরামর্শটির কোনো ভিত্তি নেই। আবার অনেক সময় মৃগীরোগীর হাতে ধাতব বস্তু ধরিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো অযৌক্তিক সংস্কার, এগুলো রোগীর চিকিৎসায় কোনো কাজে আসে না।
মৃগীরোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটিও রোগীর কোনো উপকার করে না। বরং এভাবে রোগীর অন্যান্য সমস্যা যেমন, দাঁত, মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। যদি মৃগীরোগীর মুখ খোলা থাকে, তাহলে সেখানে প্রয়োজনে নরম বস্তু, যেমন, রুমাল রাখা যেতে পারে।
একই বিষয়ে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের সঙ্গে কথা হয় খিঁচুনি বা মৃগীরোগের চিকিৎসায় কাজ করা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ শাখওয়াত এমরানের সঙ্গে। খিঁচুনি রোগের চিকিৎসায় জুতার ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আসলে মৃগীরোগীর যখন খিঁচুনি হয়, তখন জিহ্বায় কামড় পড়ে রোগীর জিহ্বা কেটে যেতে পারে। এটি প্রতিরোধে মুখের ভেতর চামচ, জুতা এগুলো ঢুকিয়ে দেয়। এটিই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আসতে আসতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, মৃগীরোগীকে জুতা শুকতে দিলে রোগী ভালো হয়ে যায়।
এই চিকিৎসক বলেন, মৃগীরোগীর খিঁচুনি সাধারণত ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট স্থায়ী হয়। এরপর রোগী বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে কেউ রোগীর নাকে জুতা ধরলে মনে হতে পারে, জুতা দেওয়ার কারণেই তিনি সুস্থ হয়েছেন!
মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা কী
খিঁচুনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের খিঁচুনি আছে। তবে অধিকাংশ খিঁচুনি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। যেকোনো খিঁচুনিতে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে:
* খিঁচুনি শেষ না হওয়া এবং জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রোগীর পাশে থাকা।
* চোখে চশমা থাকলে সরিয়ে ফেলা।
* মাথার নিচে নরম কিছু দেওয়া।
* রোগীর মুখে কিছু না রাখা।
* রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাবার, পানি না দেওয়া।
* রোগীকে চেপে না ধরা বা তার নড়াচড়া বন্ধ করার চেষ্টা না করা।
* খিঁচুনি শেষ হলে রোগীকে বসতে সাহায্য করা এবং স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা।
* খিঁচুনি ৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে জরুরি চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে। আবার বিশ্বের কোথাও কোথাও এই চর্চা করা হয় এই বিশ্বাস থেকে যে মৃগীরোগী নিজের জিহ্বা গিলে ফেলতে পারে!
চামড়ার জুতা শুকলে মৃগীরোগীর আসলেই কোনো উপকার হয়?
মৃগীরোগীর খিঁচুনি প্রশমনে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার ধারণাটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত। ২০১৮ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মৃগীরোগের ব্যাপারে সচেতনতা নিয়ে দেশটির ৪২টি স্কুলের প্রায় ৪০০ শিক্ষকের ওপর ৮ মাসের একটি জরিপ চালানো হয়। এই জরিপে অংশগ্রহণকারী ৪০ শতাংশ শিক্ষক বিশ্বাস করেন, মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা হলো চামড়ার জুতা বা পেঁয়াজের ঘ্রাণ নেওয়া।
বাংলাদেশে এমন কোনো জরিপ পাওয়া না গেলেও মানুষের মধ্যে যে এ ধারণা বিদ্যমান সেটির প্রমাণ পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘RK SagaCity’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২১ সালে মৃগীরোগীকে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। যেখানে দেখা যায়, রাস্তায় এক ব্যক্তির খিঁচুনি উঠেছে। ব্যক্তিটি রাস্তায় পড়ে আছেন। আশপাশের মানুষজন তাঁর নাকে জুতা, চামড়ার বেল্ট ধরার চেষ্টা করছেন।
কেবল সাধারণ মানুষ নন, জনপ্রিয় বলিউড সিনেমা ‘দঙ্গল’-এর তারকা ফাতেমা সানা শেখকেও খিঁচুনি উপশমে চামড়ার জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়া হয়েছিল। ভক্তদের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ২০২২ সালে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
মৃগীরোগীকে জুতা বা চামড়াজাত পণ্যের ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির সত্যতা যাচাইয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর নিউরোটেকনোলজির নির্বাহী পরিচালক স্নায়ুবিজ্ঞানী এরিক চুডলারের একটি ব্লগ খুঁজে পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে তিনি লেখেন, খিঁচুনির সময় মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হয়। এ কারণে মৃগীরোগকে কখনো কখনো ‘বৈদ্যুতিক ব্রেন স্টর্ম’ বলা হয়। খিঁচুনি চলাকালীন মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিন্তা, নড়াচড়া, দেখা ও শোনার মতো কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ এই খিঁচুনির তীব্রতা প্রতিরোধ বা কমানোর জন্য বিভিন্ন উপায় চেষ্টা করেছে। মৃগীরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের খিঁচুনি উপশমে বর্তমানে অনেক কার্যকর ওষুধ পাওয়া যায়।
ব্লগটিতে মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির বর্ণনাও পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা নামে ভারতীয় চিকিৎসকের একটি নিবন্ধের বরাত দিয়ে এরিক চুডলার জানান, ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়া হয়। পদ্ধতিটি অবৈজ্ঞানিক এবং উদ্ভট। সর্বোপরি, মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার গন্ধের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো গবেষণা হয়নি।
যদিও হারিন্দার জাসেজা দাবি করেছেন, মৃগীরোগের চিকিৎসায় এটি কাজ করে থাকতে পারে। তাঁর মতে, এটি একধরনের অ্যারোমাথেরাপি। অ্যারোমাথেরাপি হচ্ছে রোগের চিকিৎসায় ঘ্রাণের ব্যবহার। যদিও কিছু কিছু গন্ধ খিঁচুনি শুরু করতে পারে, তবে আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করেছে, কিছু তীব্র গন্ধ খিঁচুনির তীব্রতা কমিয়ে দিতে পারে। এটা হতে পারে যে, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনির সময় নিউরনের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক উদ্দীপনায় ব্যাঘাত ঘটায়।
নেদারল্যান্ডস থেকে প্রকাশিত জার্নাল এলসেভিয়ারে ২০০৮ সালে প্রকাশিত হারিন্দার জাসেজার এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ পাওয়া যায়। হারিন্দার জাসেজা ভারতের মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে অবস্থিত জি আর মেডিকেল কলেজের শারীরবিদ্যা বিভাগের চিকিৎসক। তিনি গবেষণা নিবন্ধটিতে এশিয়ার দেশগুলোতে মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ শুকতে দেওয়ার প্রচলিত পদ্ধতিটির পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন। যদিও গবেষণাটির শেষে হারিন্দার জাসেজা বলেন, তীব্র ঘ্রাণ খিঁচুনি প্রতিরোধ করতে পারে। তবে এ জন্য আরও অনেক বেশি গবেষণা প্রয়োজন। আর এ গবেষণা মৃগীরোগের খিঁচুনি প্রশমনে জুতার ঘ্রাণ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় না।
ধারণাটির উৎপত্তি সম্পর্কে হারিন্দার জাসেজা আরেকটি নিবন্ধে লেখেন, একসময় মৃগীরোগকে দেখা হয়েছে ‘দুষ্টু’ আত্মার আছর হিসেবে। তাই মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ প্রয়োগের ধারণা এই বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত যে জুতার বাজে গন্ধ এই ‘দুষ্টু’ আত্মাদের প্রতিহত করতে পারে। ব্যাপারটি কাটা দিয়ে কাটা তোলার মতো।
মৃগীরোগ নিয়ন্ত্রণে দুই যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্নায়ু বিশেষজ্ঞ নির্মল সূর্য। মৃগীরোগের চিকিৎসায় জুতার ঘ্রাণ নিতে দেওয়ার পরামর্শটির ব্যাপারে তিনি বলেন, খিঁচুনির সময় রোগীর নাকে পেঁয়াজ বা জুতা ধরার পরামর্শটির কোনো ভিত্তি নেই। আবার অনেক সময় মৃগীরোগীর হাতে ধাতব বস্তু ধরিয়ে দেওয়া হয়। এগুলো অযৌক্তিক সংস্কার, এগুলো রোগীর চিকিৎসায় কোনো কাজে আসে না।
মৃগীরোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটিও রোগীর কোনো উপকার করে না। বরং এভাবে রোগীর অন্যান্য সমস্যা যেমন, দাঁত, মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। যদি মৃগীরোগীর মুখ খোলা থাকে, তাহলে সেখানে প্রয়োজনে নরম বস্তু, যেমন, রুমাল রাখা যেতে পারে।
একই বিষয়ে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের সঙ্গে কথা হয় খিঁচুনি বা মৃগীরোগের চিকিৎসায় কাজ করা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ শাখওয়াত এমরানের সঙ্গে। খিঁচুনি রোগের চিকিৎসায় জুতার ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, এটার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। আসলে মৃগীরোগীর যখন খিঁচুনি হয়, তখন জিহ্বায় কামড় পড়ে রোগীর জিহ্বা কেটে যেতে পারে। এটি প্রতিরোধে মুখের ভেতর চামচ, জুতা এগুলো ঢুকিয়ে দেয়। এটিই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আসতে আসতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, মৃগীরোগীকে জুতা শুকতে দিলে রোগী ভালো হয়ে যায়।
এই চিকিৎসক বলেন, মৃগীরোগীর খিঁচুনি সাধারণত ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিট স্থায়ী হয়। এরপর রোগী বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়। এ সময়ের মধ্যে কেউ রোগীর নাকে জুতা ধরলে মনে হতে পারে, জুতা দেওয়ার কারণেই তিনি সুস্থ হয়েছেন!
মৃগীরোগের প্রাথমিক চিকিৎসা কী
খিঁচুনি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের খিঁচুনি আছে। তবে অধিকাংশ খিঁচুনি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। যেকোনো খিঁচুনিতে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে:
* খিঁচুনি শেষ না হওয়া এবং জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রোগীর পাশে থাকা।
* চোখে চশমা থাকলে সরিয়ে ফেলা।
* মাথার নিচে নরম কিছু দেওয়া।
* রোগীর মুখে কিছু না রাখা।
* রোগী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খাবার, পানি না দেওয়া।
* রোগীকে চেপে না ধরা বা তার নড়াচড়া বন্ধ করার চেষ্টা না করা।
* খিঁচুনি শেষ হলে রোগীকে বসতে সাহায্য করা এবং স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা।
* খিঁচুনি ৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হলে জরুরি চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করা।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে।
১৫ মে ২০২৪
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫বাসস

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল বুধবার সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ নিয়ে নানা পোস্ট ছড়ানো হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল এ দিনের সহিংস ঘটনার মনগড়া বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একটি সংগঠিত প্রোপাগান্ডা অভিযানের অংশ হিসেবে প্রভাবশালী আ. লীগপন্থীরা পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন একাধিক ছবি শেয়ার করেছেন, যা এদিনের সহিংসতার দৃশ্য বলে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকনসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছবি পোস্ট করে দাবি করেন, ‘ইউনূস গ্যাং’ এবং বিরোধীদলীয় কর্মীরা সাধারণ মানুষকে হিংসাত্মকভাবে আক্রমণ করছে।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন এক আহত কিশোরকে বহন করছে, পেছনে আগুন জ্বলছে এবং উত্তেজিত জনতা রাস্তায় বিক্ষোভ করছে। ছবিটি গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া সহিংসতার নিদর্শন হিসেবে তুলে ধরা হয়। অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে-এই ছবিটি ২০২৪ সালের ১০ আগস্টের একটি ভিন্ন ঘটনার।
আরেকটি বহুল প্রচারিত পোস্টে দেখা যায়, জাকির হোসেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন একটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এক কর্মকর্তা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি ছুড়ছেন।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এসব পোস্টে ভুয়া তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। পোস্টে তাঁরা উল্লেখ করেন-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন এবং এনসিপি নেতা-কর্মীদের উসকানিতে এই সহিংসতা শুরু হয়। এতে বলা হয়, ‘বাস্তবতা হলো, ছবিটি ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের সময়ের, যেখানে ডিবি কর্মকর্তা কনককে জনতার দিকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।’
জাকির হোসেন আরেকটি ছবি পোস্ট করেন, যেখানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তিনিও দাবি করেন, এটি গোপালগঞ্জের আজকের সংঘর্ষের ফলাফল। তবে প্রেস উইং বলেছে, ‘তবে এই ছবিটিও ভিন্ন ঘটনার। ছবিটি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ এক সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনার সময় তোলা হয়েছিল।’
একই ভুয়া প্রচারণার অংশ হিসেবে একটি শিশুর ছবি ছড়ানো হয়—যেখানে তাকে লাঠি হাতে দেখা যায়। দাবি করা হয়, ছবিটি ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে তোলা এবং ওই শিশু নাকি সহিংসতায় অংশ নেয়। ছবিটি এই মিথ্যা বার্তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয় যে, রাজনৈতিক সহিংসতায় শিশুদের পর্যন্ত জড়ানো হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ছবির একটি ডিজিটালি সম্পাদিত (সম্ভবত এআই-নির্মিত) সংস্করণ শেয়ার করেন নিঝুম মজুমদার, যিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ একজন অনলাইন প্রোপাগান্ডিস্ট হিসেবে পরিচিত বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে এই বিষয়ে বলা হয়, ‘প্রকৃতপক্ষে, শিশুর এই ছবিটি গোপালগঞ্জে তোলা হয়নি, বরং গাজীপুরের সফিপুর এলাকায় ধারণ করা একটি ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট। মূল ভিডিওটি ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিল।’
এসব বিভ্রান্তিকর ছবির পাশাপাশি, আওয়ামী লীগপন্থী অ্যাকাউন্টগুলো ভিত্তিহীনভাবে দাবি করে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নাকি বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। এসব মিথ্যা প্রচারণা জনমতকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে ছড়ানো হয়। প্রেস উইংয়ের মতে এসব ভুয়া প্রচারণা ও যাচাইকৃত সূত্রভিত্তিক তথ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।
আজকের সহিংসতা শুরু হয় যখন গোপালগঞ্জ শহরে নির্ধারিত সমাবেশ শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাদের বহর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকেরা আক্রমণ করে। এই আক্রমণ দ্রুত বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। পুলিশের গাড়ির পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) একটি গাড়িও আক্রমণ ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয় ‘মাঠের বাস্তব ঘটনার বিপরীতে, আওয়ামী লীগপন্থী সামাজিক মাধ্যম চক্র ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর, প্রাসঙ্গিকতা-বর্জিত ও মনগড়া ছবি ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে।’

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে।
১৫ মে ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গতকাল রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে এবং ইওনসহ ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) নিহত ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ (৩৯) হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোহাগের বাবার নাম মো. আয়ুব আলী এবং মায়ের নাম আলেয়া বেগম। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী লাকি বেগম, বোন ফাতেমা এবং একমাত্র ছেলে সোহানকে রেখে গেছেন।
গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে একদল সন্ত্রাসী। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁর নিথর দেহেও বোল্ডার ছুড়ে মারা হয়। নৃশংস এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববার জানাজা শেষে সোহাগকে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নিজ গ্রাম বন্দরগাছিয়ায় তাঁর মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
ভারতের যেসব সংবাদমাধ্যম সোহাগকে হিন্দু বলে উল্লেখ করেছে, তারা তাদের প্রতিবেদনে তার ধর্ম বা পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট তথ্য উপস্থাপন করেনি। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যম নিয়মিত ভিত্তিহীন ও ভুল তথ্য প্রচার করে আসছে।

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে।
১৫ মে ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)

সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।
বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণী হাত বাঁধা অবস্থায় কংক্রিটের মেঝেতে পড়ে আছেন। পাশেই একজন মধ্যবয়সী তরুণীটির বাবা পরিচয়ে আর্তনাদ করছেন। তাঁকে আরেকজন যুবক সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি তরুণীকে ঘিরে পর্যবেক্ষণ করছেন। ভিডিওর শেষাংশে পুলিশকে তরুণীর মরদেহ ব্যাগে ভরতে দেখা যায়।
‘Md Nishad Hossain’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সোমবার (৩০ জুন) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘আহারে নির্মমতা এবং একজন বাবার আর্তনাদ। বাংলাদেশ ২০২৪’র আগস্ট মাস থেকে সারা দেশে নারী ধর্ষণ করেই চলছে বিএনপি জামাতের মব সন্ত্রাসীরা। একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করে রেখে গেছে। মেয়ের পিতার আহাজারী কে শুনবে দেশে এখন বিচার নাই। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হায়ানারা যা যা করছে ২০২৪ ’র বাংলাদেশে বিএনপি জামাত তার চেয়ে বেশি করছে।’ (বানান অপরিবর্তিত)
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভিডিওটি ১৯ হাজার বার দেখা হয়েছে এবং ৫১৫টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। এতে ৫৬টি কমেন্ট পড়েছে এবং শেয়ার হয়েছে ১৮৫ বার।
এসব কমেন্টে অনেকে ভিডিওটি নাটক উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে সত্য মনে করেও কমেন্ট করেছে। Shilvi Akther নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘আহারে জীবন! মানুষ কিভাবে এতো নির্মম হয়? একজন বাবার আর্তনাদ কি কারো মনকে মর্মাহত করে না?’ (বানান অপরিবর্তিত) Narayon Saha লিখেছে,’ এই দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট বাবার কান্দে সন্তানের লাশ হায়রে দুনিয়া।’ (বানান অপরিবর্তিত)
S M Salam Patwari, গর্জে ওঠো আরেকবার বাংলাদেশ এবং গাজীপুর জেলা যুবলীগ শাখা নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে ‘Short Film BD’ নামে একটি লোগো লক্ষ করা যায়। এই সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ‘Short Film BD’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি পাওয়া যায়। ভিডিওটি গত ২০ জুনে প্রকাশিত। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মেঝেতে পড়ে থাকা তরুণী, পুলিশের পোশাক পরিহিত ব্যক্তি, আহাজারি করা ব্যক্তি ও আশপাশের দৃশ্যের মিল পাওয়া যায়।

ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘মৌসুমীর সাথে কি হলো।’ ৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখে বোঝা যায়, এটি একটি নাটিকার দৃশ্য।
Short Film BD নামে ফেসবুক পেজটিতে একই তারিখে একই ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছে, ‘মেয়ের কি হইছে জানতে চায় অসহায় বাবা।’ (বানান অপরিবর্তিত)

Short Film BD ফেসবুক পেজটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এতে বিভিন্ন ধরনের নাটিকা নিয়মিত প্রকাশিত হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে অভিনয় করা একাধিক ব্যক্তিকে অন্যান্য ভিডিওতেও (১, ২) দেখা গেছে।
এ ছাড়া এই পেজের ইন্ট্রোতে লেখা, ‘শর্টফিল্ম ও নাটক দেখুন এবং উপভোগ করুন। আমাদের সঙ্গেই থাকুন।’ (ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাষান্তরিত)

সুতরাং, বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি প্রকৃতপক্ষে একটি নাটক।

হুট করে কারও খিঁচুনি শুরু হলে চামড়ার জুতা বা চামড়াজাত জিনিস নাকে ধরার পরামর্শ দেন অনেকে। বলা হয়, চামড়াজাত জিনিসের ঘ্রাণে মৃগীরোগীর খিঁচুনি বন্ধ হয়। আবার কখনো কখনো এ ধরনের রোগীর মুখে কাঠি, কলম বা চামচ ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যাতে রোগী জিহ্বা কামড়ে না ধরে।
১৫ মে ২০২৪
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১৭ জুলাই ২০২৫
রাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৪ জুলাই ২০২৫