ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
শৈশব-কৈশোরে লুকিয়ে লুকিয়ে রাতের বেলা ঘুমের সময় কাঁথা-কম্বল মুড়ে গল্পের বই পড়েছেন নিশ্চয়ই। আবার এভাবে পড়তে গিয়ে ধরা খেয়ে মা-বাবার কাছে বোকা শুনেছেন, ‘কম আলোতে পড়লে চোখ নষ্ট হয়ে যায় বা চোখের পাওয়ার কমে যায়।’ শুধু আপনার বাবা-মা নয়, পৃথিবীজুড়েই এই ধারণা প্রচলিত। আসলেই কি কম আলোতে বই পড়া চোখের ক্ষতি করে? এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ২০০৭ সালে মেডিকেল বা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রচলিত ধারণা বা শ্রুতিকথা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে উল্লিখিত অন্যতম ধারণা ছিল ‘আবছা বা কম আলোতে পড়া দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে।’ ধারণাটির উৎপত্তি নিয়ে সেখানে বলা হয়, আই স্ট্রেইন বা চোখের অবসাদ, ক্লান্তির ফলে ভোগা শারীরবৃত্তীয় অভিজ্ঞতা থেকে এর সম্ভাব্য উৎপত্তি। চোখের অবসাদ বা ক্লান্তি সাময়িক কিছু নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। এটি চোখের কাঠামো বা কার্যক্রমে স্থায়ী প্রভাব ফেলে না।
মূলত, স্বল্প আলো চোখের ফোকাস প্রক্রিয়াতে জটিলতা তৈরি করে। পাশাপাশি চোখের পাতা নড়ার হার কমিয়ে দেয়। এর ফলে চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞের মতে, কম আলোতে পড়া চোখের ক্ষতি করে না।
ইউনিভারর্সিটি অব আরকানসাস ফর মেডিক্যাল সায়েন্সেসের জোন্স আই ইনস্টিটিউটের চক্ষুবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক নিকোলা কিম বলেন, কম আলো বা বেশি আলোতে পড়া চোখের কার্যক্রম বা স্বাস্থ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। আলো কম হলে চোখের ফোকাস করতে সমস্যা হয়। কিন্তু এটি চোখের কাঠামোতে স্থায়ী কোনো প্রভাব ফেলে না। বরং এটি সাময়িক এবং আইড্রপ ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই এর চিকিৎসা সম্ভব। একইভাবে খুব কাছ বা দূর থেকে টিভি দেখাও চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।
স্বল্প আলোয় পড়লে চোখ নষ্ট হয়ে যায় বা চোখের পাওয়ার কমে যায়- এই ধারণার পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই উল্লেখ করে আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক কোল আই ইনস্টিটিউটের চক্ষু বিশেষজ্ঞ রিচারর্ড জেন্স বলেন, স্বল্প আলো চোখের ফোকাসে জটিলতা তৈরি করে, যার ফলে চোখের সাময়িক ক্লান্তি ঘটে। তবে এর কোনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব নেই।
কানাডার টরেন্টোর চক্ষু বিশেষজ্ঞ নাঈম আব্দুল্লাহ কম আলোতে পড়াকে কাদার মধ্যে গাড়ি চালানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। সংবাদমাধ্যম সিবিসিকে বলেন, পড়ার মতো চোখের দৃষ্টিশক্তির মূল কাজ করে কোন্স (cones) নামে এক ফটোরিসেপ্টর। উজ্জ্বল আলো পেলে কোন্স সক্রিয় হয়।
যখন কেউ স্বল্প আলোয় পড়ে, তখন সে চোখের রডস (rods) কোষ ব্যবহার করে, যা কোন্স কোষের মতো ততটা সংবেদনশীল নয়। এ কারণে চোখকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এর ফলে আই স্ট্রেইন বা চোখের অবসাদ, ক্লান্তির মতো ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, রডস ও কোন্স- চোখের রেটিনায় আলো-সংবেদী দুধরনের কোষ। চোখে রডস কোষের সংখ্যা ১২ কোটি থেকে ১২ কোটি ৫০ লক্ষ, অন্যদিকে কোন্স কোষের সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ কোষগুলো উজ্জ্বল আলো ও রঙিন বস্তু দর্শনের জন্য এবং ছবির সঠিক বিশ্লেষণের জন্য উপযোগী। রডস কোষ অনুজ্জ্বল বা স্বল্প আলোয় দর্শনের উপযোগী।
তবে আই স্ট্রেইনের ঘটনা কেবল স্বল্প আলোতে পড়ার জন্যই হয় না। এর বাইরে গাড়ি চালানো, ফোন ব্যবহার, ভিডিও গেম খেলা,
কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করা থেকেও আই স্ট্রেইনের ঘটনা ঘটতে পারে।
সিদ্ধান্ত
ওপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, স্বল্প আলোতে পড়ার সঙ্গে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার ধারণা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি ভুল ধারণা। স্বল্প আলো চোখের ফোকাসে জটিলতা তৈরি করে, যার ফলে চোখের সাময়িক অবসাদের ঘটনা ঘটে। এর দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রভাব নেই। সাময়িক অবসাদের এই ঘটনাই স্বল্প আলোতে পড়ার ফলে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে।
শৈশব-কৈশোরে লুকিয়ে লুকিয়ে রাতের বেলা ঘুমের সময় কাঁথা-কম্বল মুড়ে গল্পের বই পড়েছেন নিশ্চয়ই। আবার এভাবে পড়তে গিয়ে ধরা খেয়ে মা-বাবার কাছে বোকা শুনেছেন, ‘কম আলোতে পড়লে চোখ নষ্ট হয়ে যায় বা চোখের পাওয়ার কমে যায়।’ শুধু আপনার বাবা-মা নয়, পৃথিবীজুড়েই এই ধারণা প্রচলিত। আসলেই কি কম আলোতে বই পড়া চোখের ক্ষতি করে? এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন ২০০৭ সালে মেডিকেল বা চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রচলিত ধারণা বা শ্রুতিকথা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে উল্লিখিত অন্যতম ধারণা ছিল ‘আবছা বা কম আলোতে পড়া দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে।’ ধারণাটির উৎপত্তি নিয়ে সেখানে বলা হয়, আই স্ট্রেইন বা চোখের অবসাদ, ক্লান্তির ফলে ভোগা শারীরবৃত্তীয় অভিজ্ঞতা থেকে এর সম্ভাব্য উৎপত্তি। চোখের অবসাদ বা ক্লান্তি সাময়িক কিছু নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। এটি চোখের কাঠামো বা কার্যক্রমে স্থায়ী প্রভাব ফেলে না।
মূলত, স্বল্প আলো চোখের ফোকাস প্রক্রিয়াতে জটিলতা তৈরি করে। পাশাপাশি চোখের পাতা নড়ার হার কমিয়ে দেয়। এর ফলে চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞের মতে, কম আলোতে পড়া চোখের ক্ষতি করে না।
ইউনিভারর্সিটি অব আরকানসাস ফর মেডিক্যাল সায়েন্সেসের জোন্স আই ইনস্টিটিউটের চক্ষুবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক নিকোলা কিম বলেন, কম আলো বা বেশি আলোতে পড়া চোখের কার্যক্রম বা স্বাস্থ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। আলো কম হলে চোখের ফোকাস করতে সমস্যা হয়। কিন্তু এটি চোখের কাঠামোতে স্থায়ী কোনো প্রভাব ফেলে না। বরং এটি সাময়িক এবং আইড্রপ ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই এর চিকিৎসা সম্ভব। একইভাবে খুব কাছ বা দূর থেকে টিভি দেখাও চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।
স্বল্প আলোয় পড়লে চোখ নষ্ট হয়ে যায় বা চোখের পাওয়ার কমে যায়- এই ধারণার পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই উল্লেখ করে আমেরিকার ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক কোল আই ইনস্টিটিউটের চক্ষু বিশেষজ্ঞ রিচারর্ড জেন্স বলেন, স্বল্প আলো চোখের ফোকাসে জটিলতা তৈরি করে, যার ফলে চোখের সাময়িক ক্লান্তি ঘটে। তবে এর কোনো দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব নেই।
কানাডার টরেন্টোর চক্ষু বিশেষজ্ঞ নাঈম আব্দুল্লাহ কম আলোতে পড়াকে কাদার মধ্যে গাড়ি চালানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। সংবাদমাধ্যম সিবিসিকে বলেন, পড়ার মতো চোখের দৃষ্টিশক্তির মূল কাজ করে কোন্স (cones) নামে এক ফটোরিসেপ্টর। উজ্জ্বল আলো পেলে কোন্স সক্রিয় হয়।
যখন কেউ স্বল্প আলোয় পড়ে, তখন সে চোখের রডস (rods) কোষ ব্যবহার করে, যা কোন্স কোষের মতো ততটা সংবেদনশীল নয়। এ কারণে চোখকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এর ফলে আই স্ট্রেইন বা চোখের অবসাদ, ক্লান্তির মতো ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, রডস ও কোন্স- চোখের রেটিনায় আলো-সংবেদী দুধরনের কোষ। চোখে রডস কোষের সংখ্যা ১২ কোটি থেকে ১২ কোটি ৫০ লক্ষ, অন্যদিকে কোন্স কোষের সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ কোষগুলো উজ্জ্বল আলো ও রঙিন বস্তু দর্শনের জন্য এবং ছবির সঠিক বিশ্লেষণের জন্য উপযোগী। রডস কোষ অনুজ্জ্বল বা স্বল্প আলোয় দর্শনের উপযোগী।
তবে আই স্ট্রেইনের ঘটনা কেবল স্বল্প আলোতে পড়ার জন্যই হয় না। এর বাইরে গাড়ি চালানো, ফোন ব্যবহার, ভিডিও গেম খেলা,
কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করা থেকেও আই স্ট্রেইনের ঘটনা ঘটতে পারে।
সিদ্ধান্ত
ওপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, স্বল্প আলোতে পড়ার সঙ্গে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার ধারণা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি ভুল ধারণা। স্বল্প আলো চোখের ফোকাসে জটিলতা তৈরি করে, যার ফলে চোখের সাময়িক অবসাদের ঘটনা ঘটে। এর দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রভাব নেই। সাময়িক অবসাদের এই ঘটনাই স্বল্প আলোতে পড়ার ফলে চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার দাবি করে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার হয়ে আসছে।
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের একটি সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পুরোনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি পোস্ট করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
১০ দিন আগেরাজধানী ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তথা মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে হত্যাকাণ্ডের শিকার সোহাগকে হিন্দু বলে প্রচার করেছে ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম। এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের শিকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো...
১৩ দিন আগেবিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেখে গেছে—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে। এটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ থেকে একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে।
৩০ জুন ২০২৫পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নে এক তরুণীকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবেও ছড়িয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, রাতের বেলা একজন তরুণীকে তিন থেকে চারজন পুরুষ মিলে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। ওই তরুণী...
২৯ জুন ২০২৫