Ajker Patrika

সৌদির শ্রমিক ভিসা ঘিরে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২২, ০৮: ২৬
সৌদির শ্রমিক ভিসা ঘিরে  ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ

সৌদি আরবে ভিসা ঘিরে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। সৌদি নাগরিক ও বাংলাদেশি কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি চক্র সৌদি আরবগামী শ্রমিকদের ভিসা প্রদানের জন্য ঢাকাস্থ দূতাবাসের নামে ঘুষ আদায় করছে। অভিযোগ আছে, প্রতি পাসপোর্টের জন্য ২২০ থেকে ২৫০ ডলার নিচ্ছে তারা।

এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দাহিলান দাবি করেছেন, শ্রমিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে এনযাজ ইলেকট্রনিক আবেদনের সঙ্গে গৃহীত নির্দিষ্ট ফির অতিরিক্ত কোনো টাকা দূতাবাস গ্রহণ করে না।

দূতাবাসের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী, কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালালের মাধ্যমে প্রতিটি ভিসার জন্য ২২০ থেকে ২৫০ ডলার পর্যন্ত নিয়ে থাকে বলে অভিযোগ আছে জানালে রাষ্ট্রদূত বলেন, কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালাল শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য দূতাবাসের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারেন।

দূতাবাসের নামে শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার এই প্রক্রিয়া অনেক দিন ধরে চলছে বলে অন্তত দুজন রিক্রুটিং এজেন্ট আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছে। একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক অভিযোগ করেন, শ্রমিকদের পাসপোর্ট দূতাবাসের নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দেওয়া হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিসা ছাড়া ফেরত দেওয়া হয়। আগে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হলে লিখে দেওয়া হতো—কেন ফেরত দেওয়া হলো। এখন ফেরত দেওয়ার সময় কোনো কারণ বলা হয় না। কিন্তু দূতাবাসের পেছনের দরজা দিয়ে প্রতি পাসপোর্টের সঙ্গে নগদ ২০০ থেকে ২৫০ ডলার দিলে ভিসা পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ করেছে কয়েকটি রিক্রুটিং এজেন্সি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সৌদি দূতাবাস সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। বর্তমানে একটি রিক্রুটিং এজেন্সি সপ্তাহে কেবল একবারই ভিসার জন্য শ্রমিকদের পাসপোর্ট জমা দিতে পারে। একবারে ২৫-৩০টির বেশি পাসপোর্ট জমা দেওয়া যায় না। এ অবস্থায় সৌদি আরব থেকে কোনো এজেন্সির কাছে যদি ১০০ বা ২০০ শ্রমিকের চাহিদা থাকে, তাহলে সব পাসপোর্টের বিপরীতে ভিসা করানোর জন্য দুই থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এ অবস্থায় কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি ভিসা পাওয়ার জন্য অন্য পথ অবলম্বন করে থাকতে পারে। এ ছাড়া একটি এজেন্সির কাছ থেকে সপ্তাহে একবার পাসপোর্ট নেওয়ার ব্যবস্থা চালু রেখেও ভিসার চাপ কমানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যার যতগুলো শ্রমিক পাঠানোর চাহিদা আছে, তার কাছ থেকে তত শ্রমিকের সবার ভিসার জন্য পাসপোর্ট দূতাবাস গ্রহণ করলে সমস্যা মিটতে পারে। এতে সৌদি আরবে শ্রমিক যাওয়া বাড়বে।

সৌদি আরবে লোক পাঠানোর জন্য প্রতি শ্রমিকের কাছ থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়ে থাকে কমপক্ষে সাড়ে তিন লাখ টাকা।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর হিসাবে, চলতি ২০২২ সালে বিভিন্ন দেশে মোট ৬ লাখ ১৬ হাজার শ্রমিক গেছেন। তাঁদের মধ্যে ৩ লাখ ৮৬ হাজার (৬৩ শতাংশ) গেছেন সৌদি আরবে।

সৌদি দূতাবাস ২০২১ সালে ছয় লাখ ভিসা ইস্যু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত