Ajker Patrika

জেলের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ

শাহীন শাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার) 
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৫০
জেলের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ

কয়েক মাস ধরে কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। এতে খুশি জেলেরা।

মৎস্য অধিদপ্তর বলেছে, সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তে মাছের প্রজনন ও বিচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলেদের জালে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ ধরা পড়ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে জেলেরা মাছ শিকার করলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, গত বছরের মে থেকে জুলাই মাসে ৬৫ দিন এবং অক্টোবরে ২২ দিন দুই দফা সাগরে মাছ শিকার বন্ধ ছিল। এর পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই সাগরে প্রচুর মাছ পাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে টেকনাফের বাহারছড়া, শাহপরীর দ্বীপ, সদর ও সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলেদের জালে বেশি মাছ ধরা পড়ছে। বেশি মাছ পেয়ে জেলে পরিবারের মধ্যে বইছে খুশির আমেজ।

জানা গেছে, সর্বশেষ গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে হ্নীলায় এক জেলের জালে প্রায় দুই কেজি ওজনের চারটি ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। একই ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার জেলে আবদুর রশিদের জালে ইলিশ মাছ চারটি ধরা পড়েছিল।

আবদুর রশিদ জানান, গত সোমবার বিকেলে জাল ফেলার প্রায় তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যার দিকে জাল ওঠানো হলে একসঙ্গে চারটি ইলিশ মাছ পান। পরে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী আবদুল হামিদের কাছে তিনি চারটি মাছ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

এর আগে ১০ জানুয়ারি শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সৈকতের মাঝেরপাড়া এলাকার মো. কলিম উল্লাহর টানা জালে ধরা পড়ে ৩০০ মণ মাছ। মাছগুলো বিক্রি করেন ছয় লাখ টাকায়। তাঁর জালে এর আগের দিন ধরা পড়ে চার লাখ টাকার মাছ।

গত বছরের ১৪ নভেম্বর টেকনাফ পৌর এলাকার সালেহ আহমদের মালিকানাধীন জালে ধরা পড়ে ৩২ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের একটি কালো পোপ মাছ। কক্সবাজারে নিয়ে মাছটি বিক্রি করেন ১০ লাখ টাকায়।

৪ নভেম্বর সেন্টমার্টিনে একদল জেলের জালে ধরা পড়ে ৩৫ মণ ওজনের ১০৪টি লাল কোরাল। মাছগুলো ছয় লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।

এর কিছুদিন আগে সেন্টমার্টিনের আব্দুর রহমানের বড়শিতে ৭৫ কেজি ওজনের একটি বোল মাছ ধরা পড়ে। মাছটি এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।

জেলেরা জানান, উপকূলে তাঁদের জালে প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে পোপা, ছোট ফাইস্যা, বড় ফাইস্যা, মলা, ছুরি, বাটা, কোরাল, লাল কোরালসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।

সাবরাং উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জামাল হোছাইন বলেন, ‘সরকারের সঠিক সিদ্ধান্তে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ পড়ছে।’ ভবিষ্যতেও সরকারের সময়মতো মাছ ধরা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জেলেদের মাছ শিকার বন্ধ রাখতে উদ্বুদ্ধ করা হবে বলে জানান তিনি।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বছর সাগরে মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধির জন্য ভরা প্রজনন মৌসুমে দুই দফায় ৮৭ দিন মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। ২০১৯ সাল থেকে এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে সাগরে অবৈধ মৎস্য শিকারের সরঞ্জাম বন্ধে নানা অভিযান চলমান রয়েছে। সামগ্রিক প্রচেষ্টায় আগের চেয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সোনালি ফসল হিসেবে সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে নানা প্রজাতির মাছ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত