Ajker Patrika

যখন যার টাকা পাই তার গান বাজাই

শিপুল ইসলাম, রংপুর
যখন যার টাকা পাই তার গান বাজাই

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের প্রচারণার শেষ সময় ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত। সেই হিসাবে হাতে আছে আর তিন দিন। প্রার্থী আর তাঁর কর্মীদের এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই, দৌড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। অল্প সময়ে অধিক প্রচারে নানা কৌশলও আঁটছেন প্রার্থীরা। সরাসরি ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা ছাড়াও জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া, পল্লিগীতি ও ছায়াছবির গানের সুরে প্রার্থী ও প্রতীক নিয়ে রচিত ভোটের গানে মুখর করে তুলেছেন পুরো নগর।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নগরীর জাহাজ কোম্পানি, ইন্দ্রিরা মোড়, গুপ্তপাড়া, কাচারি বাজার, চেক পোস্ট, ধাপ বাজার, বুড়িরহাট, আজিজনগর, আলমনগর, লালবাগ, শাপলা চত্বর, কামারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে ইজিবাইকে মাইক বেঁধে গানে গানে প্রচার-প্রচারণা চলছে। কখনো এক স্থানেই কয়েকজন প্রার্থীর পক্ষে গানে গানে মাইকিং চলছে। জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া, পল্লিগীতি ও ছায়াছবির গানের সুরে পৗরসভার প্রার্থীদের নিয়ে গান রচিত হয়েছে। সেই গানের সুরে সুরে প্রার্থীদের প্রতীকের পক্ষে চাওয়া হচ্ছে ভোট। নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে গানে গানে প্রচার-প্রচারণা বেশি চললেও সরাসরি কণ্ঠের চেয়ে গানের রেকর্ডিং বাজানো হচ্ছে বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি গান তৈরি ও রেকর্ডিংয়ের জন্য প্রতি প্রার্থীকে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়েছে। নিজের প্রতীক ভোটারদের চেনাতে এসব গানকে শেষ মুহূর্তে বিকল্প প্রচারমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন প্রার্থীরা।

বেলা আড়াইটার দিকে জাহাজ কোম্পানির মোড়ে কথা হয় লাঙ্গলের পক্ষে প্রচার মাইকিং চালানো ইজিবাইকচালক সিও বাজার এলাকার বাসিন্দা মিনারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, দুই দিন ধরে তিনি মোস্তফা ও লাঙ্গল প্রতীকে ভোট প্রার্থনার রেকর্ডিং করা গান বাজিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছেন। এ জন্য তিনি খাওয়াসহ ৬০০ টাকা করে পান। বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন।

মিনারুলের সঙ্গে কথা শেষ না হতেই সেখানে গান বাজাতে বাজাতে চলে আসে নৌকার মেয়র পদপ্রার্থী হোসনে আরা ডালিয়া লুৎফা ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলনের হাতি মার্কার দুটি ব্যাটারিচালিত রিকশা। নৌকার প্রচারকাজে নিয়োজিত রিকশাচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সকাল থাকি বেলা ১টা পর্যন্ত শহরোত রিকশা চালাই। দুপুরের খাওয়া শেষে নির্বাচনী মাইক নিয়া ঘুরি। যখন যার টাকা পাই, তখন তার গান বাজাই। নির্বাচন আসি কয় দিন থাকি কামাই ভালোয় হওছে।’

আলমনগরের খামার মোড়ের বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এ্যালা প্রার্থীরা আইসার সময় পাওছে না। রিকশা অটোত মাইক বান্দি ভোট চায়া গান বাজাওছে। মিনিটে মিনিটে মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীর মাইকিং আইসোছে। গানটা ভোত ভোতা হয়া যাওছে।’ 

ইভিএমে সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সমাধান
নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে। ইতিমধ্যে ইভিএমে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের ছয় দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে গতকাল সমাপনী অনুষ্ঠান হয় রংপুর সরকারি কলেজ অডিটরিয়ামে। সেখানে ইভিএম নিয়ে ভোটার ও প্রার্থীদের আশ্বস্ত করে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ভোট চলাকালীন ইভিএমে সমস্যা হলে এক্সপার্ট রয়েছে, তাৎক্ষণিক সমাধান করা হবে। নির্বাচনে যত ইভিএম দরকার তার থেকে দ্বিগুণ ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত