Ajker Patrika

রিমান্ডের আসামির বক্তৃতা

শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২২, ১০: ৪৮
রিমান্ডের আসামির বক্তৃতা

তিনি হত্যা মামলার আসামি। রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। কারাগার থেকে তাঁকে প্রাইভেট কারে করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। থানাফটকে পুলিশের হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দিলেন বক্তৃতা। দাবি করলেন নির্দোষ নিজেকে। সেই বক্তৃতা লাইভে সম্প্রচার হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ঘটনা ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায়। আসামির নাম শফিকুল ইসলাম শিমুল। তিনি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বগুড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে সম্প্রতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনি ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাঁর গ্রামের বাড়ি শৈলকুপার বড়বাড়ি বগুড়া গ্রামে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনের বিরোধের জেরে গত ৮ জানুয়ারি দিনের বেলা পেঁয়াজখেতে হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় কল্লোল খন্দকার নামের বড়বাড়ি বগুড়া গ্রামের এক যুবককে। তাঁর ভাই মিল্টন খন্দকার ১২ জানুয়ারি ৮২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে করা হয় হুকুমের আসামি।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রথম থেকেই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অনীহাসহ বাদীর পরিবার নিরাপত্তা-হীনতার অভিযোগ করে। থানা-পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে তারা লিখিত অভিযোগ দেয়, করে সংবাদ সম্মেলনও। এর মধ্যে আফান ও সজীব নামের দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাসির বিশ্বাস, ফরিদ মুন্সি, আতিয়ার মিয়া, আখির মুন্সি নামের পাঁচ আসামি ২ মার্চ আত্মসমর্পণ করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তৌফিক আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ পাঁচ আসামিকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পরপরই রিমান্ডের আসামিদের তিনটি প্রাইভেট কারে করে শৈলকুপা থানায় আনা হয়। চেয়ারম্যানের কর্মী-সমর্থকেরা সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা থানার ভেতরেও স্লোগান দিতে থাকেন, মুক্তি দাবি করেন। একপর্যায়ে থানার ওসি (তদন্ত) মহসীন হোসেন পুলিশের একটি হ্যান্ডমাইক তুলে দেন রিমান্ডের আসামি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের হাতে। তিনি পুলিশ বক্সে দাঁড়িয়ে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে বক্তৃতা করেন।

রিমান্ডের আসামিদের নিয়ে পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হত্যা মামলার বাদী মিল্টন খন্দকার। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা নজিরবিহীন। আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে মনে হচ্ছে না।’

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তৌফিক জানান, আসামিদের কারও ব্যক্তিগত গাড়িতে আনা হয়নি, গাড়িগুলো ভাড়া করা। আর আসামিদের হাতে হাতকড়া না থাকা এবং পুলিশের হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে ওসি তদন্ত এবং থানা-পুলিশ বলতে পারবে।

আসামির হাতে মাইক তুলে দেওয়ার বিষয়ে ওসি (তদন্ত) মহসীন হোসেন বলেন, পরিস্থিতি শান্ত করতে আসামির হাতে হ্যান্ডমাইক তুলে দেওয়া হয়।

শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রিমান্ডের আসামি এভাবে বক্তব্য দিতে পারেন না। আমি থানায় ছিলাম না। ঢাকা থেকে সকালে এসেছি। তবে যতটুকু শুনেছি বক্তৃতায় তিনি তাঁর এলাকার লোকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত