Ajker Patrika

জলদস্যুর হানায় ভীত জেলেরা

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৫
জলদস্যুর হানায় ভীত জেলেরা

বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজারের টেকনাফ অংশে হঠাৎ জলদস্যুর উৎপাত বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহে ছয়-সাতটি জেলে নৌকায় জলদস্যুদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অল্পের জন্য জেলেরা প্রাণ নিয়ে ফিরলেও তাঁদের লাখো টাকার মালপত্র লুট হয়েছে। ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে নৌকা।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শামলাপুর উপকূলের গভীর সাগরে স্থানীয় সলিম উল্লাহর ইঞ্জিনচালিত নৌকা জলদস্যুর কবলে পড়ে। দস্যুরা হামলা করে নৌকায় থাকা মাছ, জালসহ অন্যান্য জিনিস লুট করে নিয়ে যায়। এমনকি দস্যুতা শেষে নৌকাটি ডুবিয়ে দেয়। এ সময় নৌকায় থাকা আট জেলে সাগরে ঝাঁপ দেন। এর পর কোনো রকমে ভেসে তীরে ফেরেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার সাগর উপকূল এলাকায় মাছ ধরার আনুমানিক এক হাজার ছোট-বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকা রয়েছে। জেলেরা সাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এসব নৌকার সাহায্যে মাছ শিকার করেন। একটি ছোট নৌকায় ৭ থেকে ৯ জন জেলে থাকেন।

গত এক সপ্তাহে এ অঞ্চলে ছয়-সাতটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা জলদস্যুর তাণ্ডবের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে শামলাপুরের ফরিদ আলম, আবদুল কাইয়ুম, সলিম উল্লাহ ও মাদারবনিয়ার আবদুর রহমানের মালিকানাধীনসহ আরও কয়েকজনের নৌকা জলদস্যুর কবলে পড়েছে। জলদস্যুদের কাছে অসহায় হয়ে নিজেদের মাছ, জাল, জ্বালানি তেল, অন্যান্য উপকরণ ও নৌকা হাতছাড়া করে বিপন্ন জীবন নিয়ে অর্ধশত জেলে কোনো রকমে তীরে ফিরে আসেন।

ইঞ্জিনচালিত নৌকার মালিক সলিম উল্লাহ তাঁর জেলেদের বরাত দিয়ে জানান, রাতে মাছ শিকারে যান জেলেরা। গভীর রাতে একটি ফিশিং ট্রলারে এসে দস্যুরা হামলা করে। তারা নৌকার মালপত্র লুট করে নৌকাটি ডুবিয়ে দেয়। এতে জেলেরা প্লাস্টিকের ট্যাংকের মাধ্যমে ভাসতে ভাসতে তীরে ফিরে আসেন।

মাঝিমাল্লা ও ঘাট সমিতির নেতারা জানান, এর আগেও জলদস্যুরা ডাকাতি করত। কিন্তু নৌকা ডোবানোর ঘটনা ঘটত না। কিন্তু বর্তমানে ডাকাতির সঙ্গে নৌকা ডুবিয়ে আরও ক্ষতি করছে জলদস্যুরা। যারা ডাকাতি করছে তারা আশপাশের নয় বলে দাবি করছেন নেতারা। নেতারা বলছেন, দূর-দূরান্ত থেকে এসে এসব অপকর্ম করা হচ্ছে। এ জন্য পার পেয়ে যাচ্ছে।

শামলাপুর দক্ষিণ ঘাট সমিতির সভাপতি মো. বেলাল উদ্দিন জানান, দিন দিন সাগরে জলদস্যুতা বেড়েই চলছে। দ্রুত এর সমাধান দরকার। দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে না পারলে ডাকাতির ঘটনা মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে মন্তব্য তাঁর।

বাহারছড়ার সমাজসেবক মো. শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘উপকূলের অন্যতম আয় হলো মাছ আহরণ। মাছ শিকার করতে না পারলে অনাহারে দিনাতিপাত করতে হবে জেলে ও সংশ্লিষ্টদের। সাগরে জলদস্যুর হানা কমাতে হলে দ্রুত কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর টহল বাড়াতে হবে।’

এ ব্যাপারে টেকনাফ কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাঈমুল হক বলেন, ‘সাগরে জলদস্যুর সংবাদ আমরা পাইনি। খোঁজখবর নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে আমাদের যে জনবল রয়েছে, তা দিয়েই টহল অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত