Ajker Patrika

শীতের পিঠায় বাড়তি আয়

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৫২
শীতের পিঠায় বাড়তি আয়

সাজেদা বেগম ও মিন্টু হোসেন দম্পতি পেশায় নির্মাণশ্রমিক। শীতের মৌসুমে তাঁদের জন্য বাড়তি আয়ের আরেকটি সুযোগ এসে হাজির হয়। আর তা হলো পিঠা বিক্রি।

গতকাল শনিবার তারাগঞ্জ থানার পাশে শিয়ালডাঙ্গা এলাকায় তিস্তা সেচ ক্যানেলে গিয়ে দেখা যায়, অস্থায়ী এক চালার নিচে বসানো চৌকি। সামনে বেঞ্চ। চৌকিতে দুটি চুলা জ্বলছে। একটি চুলাতে ভাপা ও অন্যটিতে চিতই পিঠার তাওয়া দেওয়া। সাজেদা তাওয়ায় পিঠা বানাচ্ছেন আর স্বামী মিন্টু চুলায় লাকড়ি ঠেলে সহযোগিতা করছেন। পিঠা নেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বেঞ্চে বসে আছেন কয়েকজন ক্রেতা।

কথা হয় সাজেদার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এইটা মৌসুমি ব্যবসা। সব সময় হয় না। শীতের সময় এই ব্যবসা করে ভালোই লাভ হয়। সব রকম মানুষ পিঠা খাইতে আসে। বিক্রি করে মনে আনন্দও পাই। তাই প্রতি বছর শীতের সময় পিঠা বিক্রি করি। আর বাকি সময় স্বামীসহ বিল্ডিং তৈরি কাজ করি।’

পিঠার উপকরণে কোনো ভেজাল নেই দাবি করে মিন্টু মিয়া বলেন, ‘ঢেঁকিছাঁটা চালের গুড়া দিয়া পিঠা বানাই, সব খাঁটি। পিঠার মান ভালো দেখে বিভিন্ন জায়গা থেকে কাস্টমার আসে পিঠা খাইতে। অনেকে নিয়ে যায়। গাড়িতে চড়েও পিঠা খেতে আসে। দিন দিন কাস্টমার বাড়ছে। তাই সন্ধ্যার পর স্ত্রীর কাজে সাহায্য করতে এখানে থাকি।’

ক্যানেলের সেতুর ওপর মনি বেগমের পিঠার দোকান। দোকান ঘিরে রয়েছে একদল যুবক। তাঁরা সবাই বন্ধু। পিঠা খাওয়ার জন্য সেখানে জড়ো হয়েছেন। কথা হয় যুবকদের একজন সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে তো সব সময় পিঠা তৈরি হয় না। তাই মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে পিঠা খাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ি। ৫ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে হরেক রকম পিঠা পাওয়া যায়।’

মনি বেগম জানান, তিনি ভাপা পিঠা ৫, চিতই ১০, ডিম চিতই ২৫ ও তেল পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি করেন। প্রতিদিন ৬০০ টাকার মতো আয় হয়। যা দিয়ে তাঁর সংসার ভালোভাবেই চলে।

শুধু সাজেদা ও মনি বেগমই নয়। উপজেলার প্রায় সব হাটবাজার ও সড়কের মোড়ে শীতের পিঠা তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন অনেকেই। দোকানগুলোতে সকাল ৬টা থেকে ৯টা এবং বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি চলে। বিশেষ করে চিতই ও ভাপা পিঠা বেশি তৈরি হয়।

স্কুলশিক্ষক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এখন হিম হিম শীতল আবহাওয়ায় পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। অনেকের বাড়িতে হরেক রকম পিঠা তৈরিও হচ্ছে। কিন্তু তা প্রতিদিন না। তা ছাড়া কর্মজীবী মানুষেরা তো বাড়িতে পিঠা তৈরির সময় পায় না। এসব মানুষের জন্য শীতের পিঠা খাওয়ার উপযুক্ত স্থান হলো পথের ধারের দোকান। রাস্তার পাশে চাদর মোড়া দিয়ে পিঠার স্বাদ নেওয়ার অনুভূতিটাই আলাদা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত