Ajker Patrika

লোডশেডিং ও দুর্গন্ধ দুর্ভোগে রোগী-স্বজন

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
Thumbnail image

‘দিনে বিদ্যুৎ থাকে না, রাতেও থাকে না। ভ্যাপসা গরম আর দুর্গন্ধে রোগী নিয়ে এসে সুস্থ করব কি, আমিই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। পাখা দিয়ে বাতাস করতে করতে হাত-পায়ের শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। আর শয্যার নিচে দুদিন ধরে নোংরা-ময়লা পানি জমে আছে। এক গ্লাস পানি খেতে গেলেও দুর্গন্ধে বমি আসে।’

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি স্ত্রীকে হাতপাখায় বাতাস করতে করতে গত শুক্রবার বিকেলে হতাশার সুরে কথাগুলো বলছিলেন সোহাগ নামের এক ব্যক্তি। রোগী ও তাঁদের স্বজনদের অভিযোগ, লোডশেডিং ও দুর্গন্ধের কারণে এই হাসপাতালে এসে বরং অসুস্থতা বাড়ছে। জেনারেটর বা বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে অসহনীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ময়লা পানি উপচে পড়ছে। দুর্গন্ধযুক্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগীরা নাক চেপেই শৌচাগার ব্যবহার করছেন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ৫০ শয্যা থাকলেও সেখানে আরও বেশি রোগী চিকিৎসাধীন থাকেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের অধিকাংশ বৈদ্যুতিক পাখাই নষ্ট।
পুরুষ ওয়ার্ডে চার দিন ধরে চিকিৎসাধীন উপজেলার ছাতনাই এলাকার আব্দুল সামাদ। তাঁর স্ত্রী জানান, তাঁদের শয্যার ওপরের পাখাটি নষ্ট। কাউকে বলেও কোনো লাভ হচ্ছে না।

নারী ওয়ার্ডের ছয়টি পাখার মধ্যে চারটি প্রায় অচল। অন্যান্য ওয়ার্ডেরও একই অবস্থা। বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় লোডশেডিংয়ের সময় রোগীর স্বজনেরা হাতপাখা বা মোটা কাগজ দিয়ে বাতাস করেন।

রুবিয়া বেগম নামের রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘শৌচাগার থেকে উপচে পড়া পানির সঙ্গে ময়লা বেরিয়ে এসেছে। নার্স-চিকিৎসকদের আমরা জানিয়েছি। কিন্তু এগুলো পরিষ্কার করতে কেউ আসেননি। কী যে দুর্ভোগ, বলে বোঝানো যাবে না।’

স্বজনেরা জানান, বিদ্যুৎ যখন চলে যাচ্ছে, তখন হাতপাখা আর মোবাইল ফোনের আলো তাঁদের ভরসা। তাঁরা রোগীদের কষ্ট কিছুটা কমাতে লোডশেডিংয়ের সময় জেনারেটর বা অন্য কোনো উপায়ে বৈদ্যুতিক পাখাগুলো চালানোসহ আলো ও পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স জানান, পর্যাপ্ত আলো না থাকায় ব্যবস্থাপত্র লিখতেও সমস্যা হয়। ভ্যাপসা গরম আর দুর্গন্ধে চিকিৎসাসেবা দিতে এসে রোগীর পাশাপাশি তাঁরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও লোডশেডিংয়ের সময় চালানো হয় না। জেনারেটর চালানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তা চালানো হয় না বলে জানান আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা কুঞ্জকলি রায়।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘হাসপাতালের নষ্ট বৈদ্যুতিক পাখাগুলো মেরামত করার উদ্যোগ নিয়েছি। আইপিএস ও সোলারের সমস্যারও সমাধান করা হবে।’ দুর্গন্ধের ব্যাপারে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘হাসপাতালের কোনো একটি টয়লেট জ্যাম হয়েছে। এ কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আমরা তদারক করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত