Ajker Patrika

দায় স্বীকার করে প্রধান আসামির জবানবন্দি

সিলেট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ০৯
Thumbnail image

দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম রাহাতকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন মামলার প্রধান আসামি শামসুদ্দোহা সাদী। তিনি গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন ভুইয়ার আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি সিলেট কার্যালয়ের উপপরিদর্শক রিপন কুমার দেব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উপপরিদর্শক রিপন কুমার দেব জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুমন ভুইয়া কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যামামলার প্রধান আসামি শামসুদ্দোহা সাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শুরু করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা জবানবন্দি দেন সাদী। এরপর আদালতের নির্দেশে তাঁকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সাদী জানান, সিনিয়র হিসেবে না মানায় রাহাতকে শায়েস্তা করতে পরিকল্পনা করেন তিনি। এ জন্য তাঁকে অনুসরণ করতে থাকেন সাদী। ওই দিন (২১ অক্টোবর) সাদী দুই সহযোগী তানভীর ও সানীকে নিয়ে কলেজে যান। এ সময় কেউ আসছে কি না তার খেয়াল রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয় সানীকে। ছোরা দিয়ে আঘাত করেন সাদী। এর পরপরই তানভীর তাঁকে মোটরসাইকেলে করে জালালপুর বাজারে নিয়ে যান। পথে হাজিপুরে রাস্তার পাশের কাদায় ছোরাটি ফেলে যান সাদী। এ সময় তিনি জানতে পারেন রাহাত মারা গেছেন। পরে জালালপুর হয়ে চলে যান শেরপুর। সেখান থেকে চলে যান ঢাকায়।

জবানবন্দিতে সাদী আরও বলেন, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পেরে এক সময় রাহাতের সঙ্গে ভর্তি হন তিনি। বয়সে বড় হলেও রাহাত নাম ধরে ডাকতেন সাদীকে। তেমন পাত্তাও দিতেন না। অনেক বলার পরও রাহাত বড় ভাই বা বয়সে সিনিয়র হিসেবে সাদীকে পাত্তা দেননি। এর ফলে সাদী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং রাহাতকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাহাতের ওপর ছোরা নিয়ে হামলা করা হয়। কিন্তু, এই হামলায় রাহাত মারা যাবেন তা তাঁরা মনে করেননি।

ঘটনার পর এক সাংবাদিকের কাছ থেকে প্রথমে রাহাতের মৃত্যুর খবর পান সাদী। এরপর পালিয়ে ঢাকার মিরপুরে গিয়ে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলে আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান।

খবর পেয়ে সিআইডি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে সিলেটে নিয়ে আসে। গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সাদীকে সিলেটে নিয়ে আসার পরই ছোরা উদ্ধারের জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ সুরমার হাজিপুর এলাকার রাস্তার পাশে থেকে কাদা মাটি মাখা ছোরাটি উদ্ধার করে সিআইডি।

২১ অক্টোবর দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের গেটের মাত্র ১০ গজ দূরে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম রাহাতকে (১৮) ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাহাত দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুরের সৌদিপ্রবাসী সুলাইমান মিয়ার একমাত্র ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহতের চাচা শফিফুল ইসলাম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫-৭ জনকে আসামি করে হত্যামামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন, মোগলাবাজার থানার সিলাম টিকরপাড়ার শামসুদ্দোহা সাদী, সিলাম পশ্চিম পাড়ার তানভীর আহমদ ও আহমদপুর গ্রামের ওলিদুর রহমান সানী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত