Ajker Patrika

রাসেলস ভাইপার কি আসলেই ভয়ংকর, ছড়ানো তথ্যের কতটা সত্যি

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৪, ০৮: ৪৫
রাসেলস ভাইপার কি আসলেই ভয়ংকর, ছড়ানো তথ্যের কতটা সত্যি

এখন সারা দেশে সবচেয়ে বেশি আলোচনা যাকে ঘিরে সে মোটেই মানুষ নয়, বরং একটি সরীসৃপ। রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া নামের সাপটি অনেকের কাছেই এখন আতঙ্কের প্রতিশব্দে পরিণত হয়েছে। এটা এতটাই প্রকট যে চন্দ্রবোড়া মনে করে অনেক জায়গায় পিটিয়ে মারা হচ্ছে অজগর, ঘরগন্নিসহ বিষধর নয় কিংবা মৃদু বিষধর অনেক সাপ। 

নানা মাধ্যমে চন্দ্রবোড়া নিয়ে ছড়িয়েছে নানা ধরনের কাহিনি। এগুলোর অনেকগুলো নিঃসন্দেহে নিছক গুজব। কেউ কেউ বলছেন চন্দ্রবোড়াই দেশের সবচেয়ে বিষধর সাপ? কেউ আবার বলছেন এর অ্যান্টিভেনম নেই। তেমনি এটি বাংলাদেশের সাপ নাকি ভারত থেকে এসেছে তা নিয়েও আছে তর্ক। আবার এটি হিংস্র এবং আক্রমণাত্মক প্রকৃতির নাকি চুপচাপ স্বভাবের তা নিয়েও কথা হচ্ছে বিস্তর। সত্যি কতটা ভয়ংকর এই রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া? হঠাৎ এটি এভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এল কীভাবে? এসব নিয়েই সাপ নিয়ে সরীসৃপ ও প্রাণী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানানোর চেষ্টা করছি আজ। 

রাসেলস ভাইপার গত কিছুদিন থেকেই আলোচনায় থাকলেও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর প্রতিনিধির পাঠানো একটি নিউজ সম্পাদনা করতে গিয়ে প্রথম এই সাপের বিষয়টি মাথায় গাঁথে ভালোভাবে। তখনই জানতে পারি সেখানকার চরাঞ্চলে রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের আতঙ্কে ভুগছেন কৃষকেরা। জমির ফসল কাটা কিংবা গবাদিপশুর খাওয়ার জন্য ঘাস সংগ্রহ করতে যেতে পর্যন্ত সাহস পাচ্ছেন না। এমনকি এই সাপের দংশনে সেখানে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তারপর বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিনিধির পাঠানো কিংবা সংবাদমাধ্যমে আসা চন্দ্রবোড়ার খবরগুলো আরও একটু মনোযোগ দিয়ে দেখতে শুরু করি। 

শুরুতে চন্দ্রবোড়ার বিস্তৃতি নিয়ে একটু আলাপ করা যাক। ১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্রাণীবিজ্ঞানী এবং সাপ বিশেষজ্ঞ ড. মো. আলী রেজা খানের ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী’ বইয়ে দেশের বেশ কিছু স্থানে চন্দ্রবোড়া সাপের বিস্তৃতির কথা বলা হয়েছে। সেখানে উত্তরবঙ্গে দেশের অন্য এলাকা থেকে বেশি পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করা হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে কয়েকটি চন্দ্রবোড়া ধরা পড়ারও উল্লেখ করা হয়। দক্ষিণবঙ্গের কুষ্টিয়া, যশোর এবং খুলনায় সাপটি পাওয়া যায় বলে জানানো হয়। আর ঢাকা বিভাগের যমুনার পূর্বদিকে এদের সন্ধান পাওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। 

তবে কথা হলো বাংলাদেশের প্রকৃতিতে সাপটির অস্তিত্ব পুরোনো হলেও বহু বছর এর আক্রমণ বা এর কারণে মৃত্যুর তেমন খবর পাওয়া যায়নি। অনেকে তো ভাবতে শুরু করেছিলেন এই সাপ বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। 

২০১৮ সাল প্রকাশিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. ফরিদ আহসান এবং সর্প বিশেষজ্ঞ মো. আবু সাইদের গবেষণা প্রতিবেদন রাসেলস ভাইপার ইন বাংলাদেশ: ইটস বুম অ্যান্ড থ্রেট টু হিউম্যান লাইফ। সেখানে জানানো হয়, ২০১৩ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে একজনের মৃত্যুর পর নতুন করে আলোচনায় আসে সাপটি। এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার ১৮ বছর বয়স্ক এক তরুণ নির্বিষ অজগর ভেবে একটি চন্দ্রবোড়া ধরতে গিয়ে এর কামড় খান। ওঝাদের সাহায্য নিয়ে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নয় দিন চিকিৎসার পর প্রবল রক্তপাত, শরীরের টিস্যু ভেঙে যাওয়া, কিডনি কাজ করতে অক্ষম হয়ে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে মারা যান। এ ঘটনার পর বিভিন্ন জেলায় রাসেলস ভাইপারের কামড়ের আরও ঘটনা ঘটতে তাকে এবং তা চিকিৎসক ও গবেষকদের নজর কাড়ে। 

কোনো কোনো সূত্র অবশ্য বলছে ২০০৯ সাল থেকেই চন্দ্রবোড়ার নতুন করে এদেশে আবির্ভাবের খবর পাওয়া যেতে থাকে। 

এদিকে গবেষণা প্রতিবেদনটি অনুসারে ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত রাসেলস ভাইপারের কামড়ে দেশে প্রাণ হারান অন্তত ২০ জন মানুষ। এর মধ্যে ১৪ জনই মারা যান ২০১৬ সালে। অর্থাৎ তখন চন্দ্রবোড়ার কামড়ে মৃত্যু বাড়ছিল। অবশ্য ওই প্রতিবেদনে সব মৃত্যুর খবর সংযুক্তির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। 

অবশ্য ২০১৩ সালে সবার নজরে এলেও চন্দ্রবোড়ার কামড়ে এর আগে একেবারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি তা নয়। ১৯৯৫ সালে চন্দ্রবোড়ার কামড়ে এক সাঁওতাল নারীর মৃত্যু হয় বলে জানানো হয় প্রতিবেদনটিতে। ঘটনাটি রাজশাহীর তানোর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে। স্থানীয় একজন ওঝা ওই নারীর চিকিৎসা করান। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা পিটিয়ে সাপটিতে মেরে ফেলেন। 

২০১৮ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায় পুরোনো রেকর্ডে চন্দ্রবোড়ার বিস্তৃতি ১১টি জেলায় জানা গেলেও নতুন ঘটনাগুলো ৯টি জেলার। সব মিলিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ১৭ জেলায় চন্দ্রবোড়ার উপস্থিতির তথ্য মেলে তখন। 

সর্পবিদ প্যাট্রিক রাসেলের নামে এই সাপের নাম রাসেলস ভাইপারএই বিচিত্র সাপের আরেক অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য হলো, এরা বেশির ভাগ সাপের মতো ডিম দেয় না। সরাসরি বাচ্চা প্রসব করে। একবারে সর্বোচ্চ আশিটি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে চন্দ্রবোড়া। পরিত্যক্ত উইঢিবি চন্দ্রবোড়া বসবাসের প্রিয় জায়গা, এ জন্য উলুবোড়া নামেও কোথাও কোথাও পরিচিত সাপটি। পাতার স্তূপ, ধান কাটার পর খড়ের গাদার নিচেও থাকতে পছন্দ করে। 

চন্দ্রবোড়ার দুটি প্রজাতির কথা জানা যায়। একটির বৈজ্ঞানিক নাম Daboia russelii। এটি পাওয়া যায় বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানে। অপর দিকে Daboia siamensis নামের প্রজাতিটির দেখা মেলে চীন, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান এবং কম্বোডিয়ায়। 

সর্পবিদ প্যাট্রিক রাসেলের নামে এই সাপের নামকরণ। রাসেল ১৭৯৬ সালে ‘এন একাউন্ট অব ইন্ডিয়ান সার্পেন্ট’ শিরোনামের লেখায় এর সম্পর্কে জানান। ভারতের করোমানদেল উপকূল থেকে একটি নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। মুরগি ও কুকুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এটি যে প্রচণ্ড বিষধর তার প্রমাণ পান তিনি। 

চন্দ্রবোড়া খুব আক্রমণাত্মক এবং মানুষ দেখলেই তেড়ে এমন আসে এমন একটি তথ্য সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ডালপালা মেলেছে। বন্যপ্রাণীবিষয়ক লেখক, প্রকৃতিপ্রেমী ও ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা সরওয়ার পাঠান সাপ নিয়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তাঁর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সাধারণ মানুষ দেখলে আক্রমণের বদলে সরে পড়ে। চন্দ্রবোড়াও ব্যতিক্রম নয়। এদের মানুষ দেখলে তেড়ে আসার সুযোগ নেই। সাধারণত কৃষি জমিতে কাজ করার সময় বা চলাফেরার সময় অসাবধানবশত এর ওপর পা দিয়ে ফেললে বা একেবারে কাছাকাছি চলে যাওয়ায় কামড় খায় মানুষ। কখনো আবার নির্বিষ অজগরের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে ধরতে গিয়েও কামড় খাওয়ার ঘটনা ঘটে।’ 

তিনি বলেন, ‘বরং দুই ধরনের গোখরা বা কোবরা চন্দ্রবোড়ার তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক। কিন্তু চন্দ্রবোড়া খুব আক্রমণাত্মক এই গুজবটি এভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে শিশুরা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।’ 

চন্দ্রবোড়া নিয়ে নানা ধরনের সত্য-মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের মধ্যে চন্দ্রবোড়া ভীতি প্রকট হয় উঠেছে। চন্দ্রবোড়া মনে করে অজগর, ঘরগিন্নিসহ নানা ধরনের নির্বিষ সাপ মেরে ফেলছেন তারা। প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসছে সাপ মারার অসংখ্য খবর। এভাবে সাপ মারার ফলে ইকোসিস্টেমের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন প্রাণীবিজ্ঞানীরা। 

বন্যপ্রাণী গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোনো বন্যপ্রাণীই মেরে ফেলা উচিত নয়। এটি বিষধর ও বিষহীন সব ধরনের সাপের বেলায় খাটে। বরং একটু সতর্ক হয়ে চলাফেলা করলে সাপের কামড়ের ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব।’

মনিরুল খান আরও বলেন, ‘চন্দ্রবোড়ার বিষের অ্যান্টিভেনম নেই বলে যে কথাটি ছড়িয়েছে তা সঠিক নয়। এটা ঠিক একেক সাপের বিষ একেক রকম। কাজেই ওই নির্দিষ্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহার করলে ফল ভালো পাওয়া যায়। তবে আমাদের দেশে সহজলভ্য যে অ্যান্টিভেনমটি এটিকে ককটেল (পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম) বলা যায়। গোখরা, কেউটে কিংবা চন্দ্রবোড়া যে কোনো সাপ কাটলেই এটা ব্যবহার করা যায়। সময় মতো এই অ্যান্টিভেনম দিলে রোগী সুস্থও হবেন।’ 

একসময় অনেকে ভাবতে শুরু করেছিলেন চন্দ্রবোড়া সাপ বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেতবে নানা ধরনের গুজব ছড়ালেও চন্দ্রবোড়ার বিস্তৃতি যে বেড়েছে তা সম্ভবত বলাই যায়। অনেক গবেষকের ধারণা চন্দ্রবোড়ার বিস্তৃতি ও সংখ্যা বৃদ্ধির একটি বড় কারণ এদের শিকার করে খেত এমন প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়া। মানুষের কারণেই প্রকৃতিতে বাজ, ইগল, প্যাঁচার মতো পাখি যেমন কমেছে তেমনি বন বিড়াল, শিয়াল, খাটাশ, মেছো বিড়াল কিংবা বেজিদের নির্বিচারে মেরেছে মানুষ। অথচ এসব প্রাণী বিভিন্ন সাপ, সাপের বাচ্চা ও ডিম খেয়ে এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখত। চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা বৃদ্ধির বেলায় এটা কাজ করতে পারে। 

চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা বৃদ্ধির এই কারণটির বিষয়ে একমত প্রকাশ করে মনিরুল খান আরেকটি বিষয়ে নজরে এনেছেন। তিনি বলেন, চন্দ্রবোড়ার সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এরা পানির মাধ্যমে নতুন নতুন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। তা ছাড়া চন্দ্রবোড়া এমনিতেও পদ্মা নদী অববাহিকায় ভালো সংখ্যায় আছে। এর ফলে পদ্মা নদী এবং এর বিভিন্ন শাখা ধরে এর পক্ষে ছড়িয়ে পড়া সহজ। 

এবার চন্দ্রবোড়ার বিষ নিয়ে দু-চার কথা বলা যাক। স্বাভাবিকভাবেই এক সাপের বিষের ধরন একেক রকম। চন্দ্রবোড়া সাপের মূল বিষ হেমোটক্সিন। হেমোটক্সিন শরীরের রক্ত নষ্ট করে দেয়। এ কারণে এই সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগী দুসপ্তাহ পরও মারা যেতে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি সাইটোটক্সিন বিষও আছে। যেটি পেশির ক্ষতি করে। বিষের নেফ্রোটক্সিন কিডনির ক্ষতি করে। সব কিছু মিলিয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার পরও দীর্ঘ সময় নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগতে হয়। তবে সময়মতো এন্টিভেনম ব্যবহার করে চন্দ্রবোড়ার কামড় খাওয়া অনেক রোগীই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। 

সাপ সংরক্ষণে কাজ করা সংস্থা ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও সরীসৃপ গবেষক আদনান আজাদ বলেন, আমাদের হিসেবে ২৭ থেকে ২৯টি জেলায় চন্দ্রবোড়ার খোঁজ পাওয়া গেছে। একটি সাধারণ অনুমানের ভিত্তিতে এটা বলা হচ্ছে। পদ্মা অববাহিকার চরাঞ্চলে এদের বাস। সেখান থেকে নদী ধরে এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

আদনান আজাদ আরও বলেন, রাসেলস ভাইপারের বাসায় ঢুকে আক্রমণের রেকর্ড নেই। গোখরারা যেমন মানুষের মাটির বাড়িতে ঢুকে ইঁদুরের গর্তে বাসা বাঁধে। তবে ইঁদুরখেকো সাপেরা মানুষের আশপাশে থাকে। চন্দ্রবোড়াও ব্যতিক্রম নয়। ইঁদুর বেশি থাকায় কৃষি জমিতে এদের বেশি দেখা যায়। সাপটিকে মিডিয়ায় ভুলভাবে তুলে ধরায় এই সাপের প্রতি ফুঁসে উঠছে মানুষ। এটি দেশের সবচেয়ে ভয়ংকর সাপ বলে যে কথাটা প্রচলিত সেটাও সত্যি নয়। গোটা বিশ্বের সাপদের মধ্যে বিষের তীব্রতার বিবেচনায় চন্দ্রবোড়ার অবস্থান ৩৭তম। বাংলাদেশের এর চেয়ে বেশি তীব্র বিষ পাঁচ প্রজাতির সাপের। এদের মধ্যে আছে দুই প্রজাতির গোখরা অর্থাৎ মনোক্লেড কোবরা (পদ্ম গোখরা) এবং ইন্ডিয়ান কোবরা বা স্পেকটাকলড কোবরা (খৈয়া গোখরা)। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন একটি পরিকল্পনায় আসতে হবে যেন দুই পক্ষের ক্ষতি না হয়। সচেতনতাই এ ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ মানুষের জন্য। যারা ধান কাটে তারাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। চন্দ্রবোড়া অ্যামবুশ করে শিকারে অভ্যস্ত। শিকারের আশায় বসে থাকে। এ সময় মানুষ আশপাশে চলে এলে বা মাড়িয়ে দিলে কামড় খায়। সাপের কামড় দেওয়াটা ডিফেন্স মেকানিজম। আত্মরক্ষার জন্য এটি এরা করে। আর চন্দ্রবোড়ার বেশির ভাগ কামড় মানুষের পায়ে। গাম বুট পড়ে জমিতে গেলে ঝুঁকি কমে যাবে অনেকাংশে। সরকার যদি এসব অঞ্চলে গাম বুট পড়ার নির্দেশনা দেয় তবে মৃত্যু সম্ভাবনা এক শ থেকে এক ভাগে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।’ 

এই সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘এখন আপনি বলতেই পারেন রাসেল ভাইপারকে কেন আমরা বাঁচিয়ে রাখব? ঘটনা হলো চন্দ্রবোড়াদের উল্লেখযোগ্য খাবার হলো ইঁদুর। অসংখ্য ইঁদুর খেয়ে কৃষকের প্রচুর উপকার করে এরা। খাদ্যশৃঙ্খলের জন্য এটা জরুরি।’ 

কাজেই সবকিছু মিলিয়ে আমরা বলতে পারি আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকা, সাপে কামড়ালে ওঝার শরণাপন্ন না হয়ে দ্রুত এন্টিভেনম আছে এমন হাসপাতালে যাওয়াটা জরুরি। তেমনি ভয় পেয়ে ইচ্ছামতো সাপ মারাটাও পরিবেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৭
আবহাওয়া অধিপ্তরের কার্যালয়, আগারগাঁও। ফাইল ছবি
আবহাওয়া অধিপ্তরের কার্যালয়, আগারগাঁও। ফাইল ছবি

দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। তবে এর প্রভাবে আজ দেশের কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই। অবশ্য ঢাকার আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে।

আজ বুধবার সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থেকে আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। সারা দিনের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৩ শতাংশ। গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় কোনো বৃষ্টি হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।

গতকালের পূর্বাভাসে আজকের বৃষ্টি সম্পর্কে জানানো হয়েছিল, চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ না-ও নিতে পারে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ভারতের তামিলনাড়ুর দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। তবে সারা দেশে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রাও খুব একটা কমবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০০
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক

কার্তিক মাস আসার পর সারা দেশে বৃষ্টি প্রায় হচ্ছেই না। এর সঙ্গে বেড়েছে গরম। আজ মঙ্গলবারও রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা আকাশ থাকতে পারে। সারা দিনের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় কোনো বৃষ্টি হয়নি।

এ ছাড়া সারা দেশে আজকের আবহাওয়াও প্রায় একই রকম শুষ্ক থাকতে পারে। তবে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে কিছুটা বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরে আজকের সারা দেশের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আবহাওয়া আংশিক মেঘলা আকাশসহ প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আছে। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সোমবার সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৫২। গতকাল রোববার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটেও বায়ুমান একই ছিল।

বায়ুদূষণের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় আজ ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। গতকালও একই অবস্থানে ছিল এই রাজধানী শহরটি।

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির বায়ুমান আজ ৩০৩, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের মুম্বাই, উজবেকিস্তানের তাসখন্দ ও ভারতের কলকাতা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৯৭, ১৭৭, ১৫৮ ও ১৫৬।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ, গতিপথ কোন দিকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৪
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ,
গতিপথ কোন দিকে

বর্ষাকাল বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতিতে চলছে এখন হেমন্তকাল। কিন্তু আবহাওয়ার আচরণ অনেকটাই গ্রীষ্মকালের মতো। কয়েক দিন ধরে সকালে সূর্যের তাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা গড়িয়ে দুপুর থেকে বিকেলের আগপর্যন্ত এর তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি শক্তিশালী হয়ে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপে।

নিম্নচাপ সম্পর্কে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ২১ অক্টোবর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তীতে এটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, মধ্য অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর বৃষ্টি কমে গেছে। লঘুচাপ বা নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের আমেজ পড়বে সারা দেশে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সোমবার সকাল ৭টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল রোববার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫, আর সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইলে ৩৫ দশমিক ৭ সেলসিয়াস। সারা দেশে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

কার্তিক মাসে এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক কিনা জানতে চাইলে আজ সোমবার সকালে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যে ধরনের গরম পড়ছে সেটি বৃষ্টি কমে যাওয়ার জন্য হয়েছে। সাধারণত অক্টোবর মাসের এই সময় মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর বৃষ্টি কম হয়। তখন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়।

লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আগে সাগরে বা উপকূলীয় এলাকায় অনেক সময় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে যে গরম পড়েছে, এর সঙ্গে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়া না-হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আপাতত মনে হচ্ছে কালকের (২১ অক্টোবর) মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি পরে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে যেতে পারে। তবে লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার আগপর্যন্ত এর গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। আর নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে দেশের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে শীতের আমেজ পড়বে।

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, সূর্যের দক্ষিণায়ন (দক্ষিণ দিকে হেলে পড়া) এখনো পুরোপুরি হয়নি। এই দক্ষিণায়ন হলে দিনের ব্যাপ্তি আরও কমবে, তাপমাত্রা তখন কমে শীতও বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত