ইশতিয়াক হাসান

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।
ইশতিয়াক হাসান

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’য় পরিণত হয়েছে। এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত তাফতান আগ্নেয়গিরি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৭ লাখ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই আগ্নেয়গিরির চূড়া গত এক বছরে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।
১৩ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার রাত ৯টায় আবহাওয়ার বিশেষ ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
১৪ ঘণ্টা আগে
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’য় পরিণত হয়েছে। এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে।
এটি আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মোন্থা’ ২৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থকে ১৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থকে ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থকে ১২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। ‘মোন্থা’ আগামীকাল মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা অথবা রাতের দিকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরর্বতী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। যার কিছুটা প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে কাল সন্ধ্যা বা এর পরবর্তী সময়। আজ বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়বে না। তবে কাল আঘাত হানার সময় বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। রাজধানী ঢাকায়ও কাল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মোন্থা’ প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ বেশ কিছু অঞ্চলে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। উত্তর উত্তরপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৫-১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’য় পরিণত হয়েছে। এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে।
এটি আজ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মোন্থা’ ২৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থকে ১৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থকে ১৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থকে ১২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। ‘মোন্থা’ আগামীকাল মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা অথবা রাতের দিকে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরর্বতী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। যার কিছুটা প্রভাব বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোন্থা’ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে কাল সন্ধ্যা বা এর পরবর্তী সময়। আজ বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়বে না। তবে কাল আঘাত হানার সময় বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। রাজধানী ঢাকায়ও কাল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মোন্থা’ প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ বেশ কিছু অঞ্চলে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। উত্তর উত্তরপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৫-১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত তাফতান আগ্নেয়গিরি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৭ লাখ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই আগ্নেয়গিরির চূড়া গত এক বছরে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।
১৩ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার রাত ৯টায় আবহাওয়ার বিশেষ ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
১৪ ঘণ্টা আগে
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত তাফতান আগ্নেয়গিরি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৭ লাখ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই আগ্নেয়গিরির চূড়া গত এক বছরে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আগ্নেয়গিরিটির নিচে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, যা কোনো না কোনোভাবে ভবিষ্যতে নির্গত হতে বাধ্য। এটি সহিংস বিস্ফোরণের মাধ্যমেও ঘটতে পারে, অথবা ধীরে ধীরে গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে।
গবেষণাটির প্রধান লেখক ও আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ পাবলো গনজালেস লাইভ সায়েন্সকে বলেছেন, ‘এটি আতঙ্ক তৈরির জন্য নয়, বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য একটি সতর্কবার্তা—যাতে তারা অঞ্চলটিতে পর্যবেক্ষণের জন্য রসদ বরাদ্দ করে।’
রোববার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারাও ইতিমধ্যে ২০২৩ সাল থেকেই আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি এলাকায় গ্যাস নিঃসরণের ধোঁয়া ও দুর্গন্ধ লক্ষ্য করেছেন। এমনকি চূড়া থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরেও এমনটি টের পাওয়া গেছে। ১২ হাজার ৯২৭ ফুট উচ্চতার এই বিশাল আগ্নেয়গিরি দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের সবচেয়ে বড় এবং পার্শ্ববর্তী ছোট পাহাড়গুলোকে ছাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত অবস্থানের কারণে এটিকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করাও কঠিন। এ অবস্থায় গবেষণারত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হোসেইন মোহাম্মদনিয়া ও পাবলো গনজালেস স্যাটেলাইট চিত্র ব্যবহার করে আগ্নেয়গিরির চূড়ার উচ্চতা বৃদ্ধির প্রমাণ পান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিবর্তনের কারণ সম্ভবত আগ্নেয়গিরির নিচের হাইড্রোথার্মাল ব্যবস্থায় পরিবর্তন, যা গ্যাস জমা বা ম্যাগমার স্থানচ্যুতি ঘটাতে পারে। তাঁরা জানিয়েছেন, তাফতান আগ্নেয়গিরির পরিস্থিতি এখন নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং গবেষণা অব্যাহত থাকবে।

ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত তাফতান আগ্নেয়গিরি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৭ লাখ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই আগ্নেয়গিরির চূড়া গত এক বছরে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, আগ্নেয়গিরিটির নিচে বিপুল পরিমাণ গ্যাসের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, যা কোনো না কোনোভাবে ভবিষ্যতে নির্গত হতে বাধ্য। এটি সহিংস বিস্ফোরণের মাধ্যমেও ঘটতে পারে, অথবা ধীরে ধীরে গ্যাস নিঃসরণের মাধ্যমে।
গবেষণাটির প্রধান লেখক ও আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ পাবলো গনজালেস লাইভ সায়েন্সকে বলেছেন, ‘এটি আতঙ্ক তৈরির জন্য নয়, বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য একটি সতর্কবার্তা—যাতে তারা অঞ্চলটিতে পর্যবেক্ষণের জন্য রসদ বরাদ্দ করে।’
রোববার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারাও ইতিমধ্যে ২০২৩ সাল থেকেই আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি এলাকায় গ্যাস নিঃসরণের ধোঁয়া ও দুর্গন্ধ লক্ষ্য করেছেন। এমনকি চূড়া থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরেও এমনটি টের পাওয়া গেছে। ১২ হাজার ৯২৭ ফুট উচ্চতার এই বিশাল আগ্নেয়গিরি দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের সবচেয়ে বড় এবং পার্শ্ববর্তী ছোট পাহাড়গুলোকে ছাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত অবস্থানের কারণে এটিকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করাও কঠিন। এ অবস্থায় গবেষণারত শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হোসেইন মোহাম্মদনিয়া ও পাবলো গনজালেস স্যাটেলাইট চিত্র ব্যবহার করে আগ্নেয়গিরির চূড়ার উচ্চতা বৃদ্ধির প্রমাণ পান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই পরিবর্তনের কারণ সম্ভবত আগ্নেয়গিরির নিচের হাইড্রোথার্মাল ব্যবস্থায় পরিবর্তন, যা গ্যাস জমা বা ম্যাগমার স্থানচ্যুতি ঘটাতে পারে। তাঁরা জানিয়েছেন, তাফতান আগ্নেয়গিরির পরিস্থিতি এখন নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং গবেষণা অব্যাহত থাকবে।

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’য় পরিণত হয়েছে। এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে।
৪ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার রাত ৯টায় আবহাওয়ার বিশেষ ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
১৪ ঘণ্টা আগে
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার রাত ৯টায় আবহাওয়ার বিশেষ ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় (১১.৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৬ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
গভীর নিম্নচাপটি আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০১ (এক) নম্বর (পুনঃ) ০১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার রাত ৯টায় আবহাওয়ার বিশেষ ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় (১১.৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৬ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
গভীর নিম্নচাপটি আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০১ (এক) নম্বর (পুনঃ) ০১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেসঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’য় পরিণত হয়েছে। এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত তাফতান আগ্নেয়গিরি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৭ লাখ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই আগ্নেয়গিরির চূড়া গত এক বছরে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।
১৩ ঘণ্টা আগে
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী শহর ঢাকায় দূষণ কমছেই না। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮০ একিউআই স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
আজ সকাল ৮টা ২০ মিনিটে আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকার বাকি শহরগুলো হলো —
(বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে)
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৯১, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৭৫, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে পাকিস্তানের করাচি (১৬১,সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।
শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:
৬. কায়রো, মিসর (১৫৮)
৭. বাকু, আজারবাইজান (১৫৭)
৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৫২)
৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৪৯)
১০. কলকাতা, ভারত (১৪৩)
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

রাজধানী শহর ঢাকায় দূষণ কমছেই না। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।
বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।
আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮০ একিউআই স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
আজ সকাল ৮টা ২০ মিনিটে আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকার বাকি শহরগুলো হলো —
(বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে)
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৯১, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৭৫, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে পাকিস্তানের করাচি (১৬১,সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।
শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:
৬. কায়রো, মিসর (১৫৮)
৭. বাকু, আজারবাইজান (১৫৭)
৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৫২)
৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৪৯)
১০. কলকাতা, ভারত (১৪৩)
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’য় পরিণত হয়েছে। এটি দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বর্তমানে অবস্থান করছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ইরান ও পাকিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত তাফতান আগ্নেয়গিরি আবার সক্রিয় হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৭ লাখ বছর ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা এই আগ্নেয়গিরির চূড়া গত এক বছরে প্রায় ৩.৫ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।
১৩ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামীকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আজ রোববার রাত ৯টায় আবহাওয়ার বিশেষ ৪ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
১৪ ঘণ্টা আগে