Ajker Patrika

বৃহৎ চার নদীর পানিশূন্যতায় সংকটে বঙ্গীয় বদ্বীপ, গবেষণায় মিলল বিপজ্জনক ইঙ্গিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৪৫
শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের ছবি। ছবি: সংগৃহীত
শুষ্ক মৌসুমে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের ছবি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ‘নদীমাতৃক দেশ’ হলেও বেশির ভাগ নদ-নদীর উৎপত্তি দেশের বাইরে। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলোর ৮০ শতাংশ উৎপত্তি হয়েছে প্রতিবেশী কোনো দেশ থেকে; বিশেষ করে ভারত থেকে। এ কারণে পানির প্রবাহ ও প্রাপ্যতা বাংলাদেশের জন্য হয়ে উঠেছে এক জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দ্রুত বর্ধনশীল নগরায়ণ, কৃষিকাজ এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের চাপ।

সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ভেতরে প্রবাহিত ১০টি বড় নদ-নদীর মধ্যে ৪টি এখন আর তাদের স্বাভাবিক এবং নিরাপদ পরিচালন সীমার মধ্যে নেই। এর মানে হলো, এসব নদীতে পানির প্রবাহ সেই পরিমাণেও নেই, যা নদীভিত্তিক সমাজ ও প্রকৃতির জন্য ন্যূনতম প্রয়োজন। এই চার নদ-নদী হলো—পদ্মা, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, গড়াই ও হালদা।

ফলে শুধু নিরাপদ খাদ্য ও পানির জোগানই নয়, এই অঞ্চলের লাখ লাখ জেলে, কৃষক ও সাধারণ মানুষের জীবিকাও পড়ে গেছে হুমকির মুখে। বাকি ছয়টি নদ-নদীতেও পানির প্রবাহ বিপজ্জনকভাবে কমে আসছে। এর প্রধান কারণ, উজানে বাঁধ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ও কৃষিকাজের জন্য প্রচুর পানি উত্তোলন।

নদীর Safe Operating Space বা নিরাপদ পরিচালন সীমা ধারণাটি ২০০৯ সালে স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা প্রবর্তন করেন। এতে বলা হয়, বৈশ্বিক উষ্ণতা, পানির ব্যবহার ও জীববৈচিত্র্য হ্রাসসহ মোট ৯টি পরিবেশগত সীমা আছে, যেগুলো অতিক্রম করলেই তা মানবজাতির জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক হালনাগাদ গবেষণায় বলা হয়েছে, এরই মধ্যে ৯টির মধ্যে ৬টি সীমা অতিক্রম করেছে পৃথিবী।

বিশ্বের বৃহত্তম ও ঘনবসতিপূর্ণ বদ্বীপগুলোর একটি বাংলাদেশ, যেখানে প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বসবাস। তাই নদীগুলোর নিরাপদ পরিচালন সীমা নিয়ে এই গবেষণা খুবই প্রাসঙ্গিক। ঢাকার মতো দ্রুত বাড়তে থাকা শহরগুলোর পানি চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি খাবার, মাছ এবং সুন্দরবনের মতো বিশ্বখ্যাত জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ বনাঞ্চল পড়েছে মারাত্মক চাপে।

শীতকাল ছাড়া বছরের সব ঋতুতে গত তিন দশকে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানিপ্রবাহ ক্রমাগত কমেছে। বিশ্লেষণ বলছে, বিদ্যমান রাজনৈতিক চুক্তিগুলো এই সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ। ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি থাকা সত্ত্বেও পদ্মা নদীর ‘স্বাস্থ্য ও সমাজ নির্ভরতা’ আজ চরমভাবে বিপন্ন।

এই অঞ্চলের নদীগুলো হাজার হাজার বছর ধরে দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতি, পরিবেশ ও অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। শুধু মানুষই নয়, নদীর ওপর নির্ভরশীল অনেক প্রাণীও আজ হুমকির মুখে। যেমন ইলিশ মাছ, যা স্বাদ ও কোমল গঠনের জন্য জনপ্রিয় এবং দেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ জোগান দেয়। কিন্তু পদ্মা নদীর উজানে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় এই মাছ সেখানে এখন বিলুপ্তপ্রায়।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ফারাক্কা ব্যারাজের মাধ্যমে অতিরিক্ত পানি প্রত্যাহারের ফলে গড়াই নদে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। একটি স্বাভাবিক নদীর জন্য লবণ ও মিষ্টিপানির মধ্যে ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন। কিন্তু নদীর পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় এখন লবণাক্ততা উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহভাবে বেড়েছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মিঠাপানির মাছের খামার, কৃষি উৎপাদন এবং পদ্মার ডলফিনের মতো জলজ প্রাণীরা।

নদীর ভাটিমুখী প্রবাহ ও লবণাক্ততা বাড়ার কারণে সুন্দরবনের অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। এই বন ধ্বংস হলে শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত ও নেপালের আঞ্চলিক জলবায়ুও বিপর্যস্ত হবে। সেই সঙ্গে বনে সংরক্ষিত বিপুল পরিমাণ কার্বন বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়বে, যা জলবায়ু পরিবর্তন ও হিমালয়ের বরফ গলন আরও ত্বরান্বিত করবে।

এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ সহজ নয়। জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং টেকসই নদী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহায়তা ও ন্যায্য চুক্তি প্রয়োজন, যাতে নদীগুলো তাদের নিরাপদ পরিচালন সীমার ভেতরে থাকে এবং নদীনির্ভর বাস্তুতন্ত্রগুলো টিকে থাকে।

বাংলাদেশের বদ্বীপ অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো শুধু ভারত নয়; চীন, নেপাল ও পাকিস্তানের ভেতর দিয়েও প্রবাহিত হয়। এসব দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ট্রান্সবাউন্ডারি (সীমানা পেরিয়ে যাওয়া) চুক্তিকে কঠিন করে তোলে, যদিও এর মাধ্যমেই ৭০০ মিলিয়ন মানুষের পানির চাহিদা মেটানোর পথ খুলে যেতে পারে।

তবু আশার কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মধ্যে হওয়া মেকং নদী চুক্তি একটি কার্যকর মডেল, যেটিকে অনুসরণ করে গঙ্গা নিয়ে ভারত ও নেপাল এবং যমুনা নিয়ে চীন ও ভুটানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় চুক্তি করা যেতে পারে।

একটি সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে ‘করভিত্তিক পানিবণ্টন ব্যবস্থা।’ এতে যে দেশ বেশি পানি ব্যবহার করবে, সে দেশ বেশি কর দেবে এবং সেই রাজস্ব অন্য অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে ভাগ হবে। তবে এই চুক্তির ভিত্তি হওয়া উচিত নদীর ঐতিহাসিক প্রবাহ—অর্থাৎ বর্তমান বাঁধ বা ভবিষ্যতের অনুমাননির্ভর পানির প্রবাহ নয়।

অন্যদিকে বন উজাড় বন্ধ, জমির ব্যবহারে বৈচিত্র্য আনা এবং জলাভূমি পুনরুদ্ধার করলে বন্যা ও খরার মতো জলবায়ু সংকটে টিকে থাকার ক্ষমতা বাড়বে এবং বাংলাদেশ বদ্বীপ অঞ্চলে পানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সবশেষে বলা যায়, নদীর জন্য নিরাপদ পরিচালন সীমা নিশ্চিত করা মানেই আমাদের সমাজের ভবিষ্যৎকেও নিরাপদ করা।

তথ্যসূত্র: ইংল্যান্ডের ইনস্টিটিউট ফিজিকসের আইওপি সায়েন্স জার্নাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় তাপমাত্রা কমবে কিনা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় পড়েছিল হালকা কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় পড়েছিল হালকা কুয়াশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পৌষ মাস আসতে আর মাত্র দিন সাতেক বাকি। কিন্তু রাজধানী ঢাকায় এখনো পুরোপুরি শীতের আমেজ পড়েনি। আজ সোমবার ভোরবেলা ঢাকায় সামান্য কুয়াশার সঙ্গে ছিল হালকা শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সকাল ৭টায় পরবর্তী ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় আজ সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৪ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৯ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে বাগদাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ শনিবার ঢাকার অবস্থান তৃতীয়। আর প্রথম স্থানে আছে ইরাকের শহর বাগদাদ।

আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ২৫২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

আর শীর্ষে থাকা বাগদাদের বায়ুমান ২৬৮, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো—ভারতের দিল্লি, পাকিস্তানের লাহোর ও ভারতের কলকাতা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৫৯, ২০৮ ও ২০৬।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় আজ ছুটির দিনে আবহাওয়া কেমন থাকবে জানা গেল পূর্বাভাসে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রৌদ্রোজ্জ্বল ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে হালকা কুয়াশার দেখা মিলেছে। তবে হাড়কাঁপানো শীত না পড়লেও বইছে মিষ্টি হিমেল বাতাস। আজ সারা দিন রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে আকাশ পরিষ্কার থাকবে, আবহাওয়াও থাকবে শুষ্ক।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও আশপাশ এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ। এদিন দুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে, আগামীকাল সূর্যাস্ত ৬টা ২৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২১ নভেম্বরের পর ভূমিকম্পে কতবার কাঁপল বাংলাদেশ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
নরসিংদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মাটিতে গতকাল ফাটলের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নরসিংদীতে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের মাটিতে গতকাল ফাটলের নমুনা সংগ্রহ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৬টা। সূর্যের আলো যখন পুরোপুরি ফুটে ওঠেনি, ঠিক তখনই ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠল রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল। রিখটার স্কেলে এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ১। উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার পাটুয়ারপাড় এলাকা।

আর এই ভূকম্পনেই আতঙ্কিত হয়ে ওঠে ঢাকার নগরজীবন থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ। আতঙ্কিত হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, এক-দুবার নয়, মাত্র ১৪ দিনে বাংলাদেশে একাধিকবার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী, গাজীপুরের মতো ঢাকার আশপাশের অঞ্চল ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয় গত ২১ নভেম্বর। ওই দিন ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এক ভূমিকম্পে ঢাকাসহ সারা দেশ কেঁপে উঠেছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশেই উৎপত্তিস্থল ছিল পাঁচটি ভূমিকম্পের। এর প্রথমটি ছিল ২১ নভেম্বরের ঠিক দুই মাস আগে ২১ সেপ্টেম্বর। এদিন ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তি হয় সিলেটের ছাতকে।

এরপরের ভূমিকম্প ছিল ২১ নভেম্বর, মাত্রা ৫ দশমিক ৭। পরদিন ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটে ৪ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী জেলার কালীগঞ্জ। এর ৫ দিন পর, ২৭ নভেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, উৎপত্তিস্থল ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের টঙ্গীর ঢালাদিয়া এলাকা।

কতবার ভূকম্পন হলো

তবে বারবার ভূমিকম্প কেবল বাংলাদেশেই নয়, সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার, ভারত, নেপাল, এমনকি চীনের তিব্বত সীমান্তেও ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে। চলতি বছরের ১১ মাসে এই অঞ্চলে ২৮৫ বার ভূমিকম্প হয়েছে। এর কোনোটিই ৪ মাত্রার নিচে ছিল না।

গত সোমবার ১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মিয়ানমারের ফালামে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেও এটি অনুভূত হয়েছে। ঢাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৪৩১ কিলোমিটার। ওই ভূমিকম্প বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫৫ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, টেকটোনিক প্লেটে বাংলাদেশের যে অবস্থান, তাতে দুটো প্লেটের সংযোগস্থল রয়েছে, পশ্চিমে ইন্ডিয়ান প্লেট আর পূর্ব দিকে বার্মা প্লেট। আর বাংলাদেশের উত্তর দিকে আছে ইউরেশিয়ান প্লেট।

রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের ক্ষতির আশঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পুরান ঢাকায় বংশাল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ অনেক ভবনের ক্ষতির আশঙ্কা। ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ভারতীয় প্লেটটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বার্মা প্লেটের নিচে, অর্থাৎ চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। আর এই তলিয়ে যাওয়ার কারণে একটা সাবডাকশন জোনের তৈরি হয়েছে।

হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, ‘এই জোনের ব্যাপ্তি সিলেট থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল এর মধ্যে পড়েছে। এখানে বিভিন্ন সেগমেন্ট আছে। আমাদের এই সেগমেন্টে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তি জমা হয়ে আছে। এটা বের হতেই হবে।’ তাঁর মতে, ‘এখানে প্লেট লকড হয়ে ছিল। এর অতি সামান্য ক্ষুদ্রাংশ খুলল বলেই শুক্রবারের ভূমিকম্প হয়েছে। এটিই ধারণা দেয় যে সামনে বড় ভূমিকম্প আমাদের দ্বারপ্রান্তে আছে।’

আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ

তবে ভূমিকম্প নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূতত্ত্ববিদ ও ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যেসব ভূকম্পন, সেগুলো হলো ২১ নভেম্বর ভূমিকম্পের ‘আফটার শক’।

২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের হনশু দ্বীপের টোহুকু অঞ্চলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প এবং এর জেরে সৃষ্ট সুনামির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর কেবল ৬ মাত্রারই ৪৫০ বার আফটার শক হয়েছিল জাপানে। আরও অসংখ্যবার ছোট ছোট আফটার শক হয়েছিল তখন।

ভূকম্পনবিদ্যার গবেষক মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ২১ নভেম্বরের পর একাধিকবার আফটার শক হচ্ছে। এই আফটার শক বহুদিন ধরে হতে পারে, কমপক্ষে আরও তিন মাস হতে পারে। ২ মাত্রার নিচের ভূকম্পনগুলো আমাদের (বাংলাদেশে) সিস্টেমে ধরা পড়ে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা, গৃহকর্মী পলাতক, দারোয়ান পুলিশ হেফাজতে

ওমর সানী ‘নারীশাসিত’ পুরুষ ও ‘ক্লীবলিঙ্গের মতো’ মানুষ, কিন্তু ভাইকে আমি ভালোবাসি— আসিফের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কাল আসছে না

খুলনার কমিশনার, ১৩ এসপিসহ পুলিশের ২২ কর্মকর্তাকে বদলি

জাতীয় পার্টিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না, নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত