Ajker Patrika

গ্রীষ্মে উচ্চ তাপমাত্রা: কর্মজীবী মায়েদের মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকি দ্বিগুণ

গ্রীষ্মে উচ্চ তাপমাত্রা: কর্মজীবী মায়েদের মৃত সন্তান প্রসবের ঝুঁকি দ্বিগুণ

প্রচণ্ড গরমে কাজ করার কারণে গর্ভবতী নারীদের মৃত সন্তান প্রসব ও গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে। এমনটিই বলছে ভারতের নারীদের নিয়ে নতুন এক সমীক্ষা। প্রতিবেদন অনুসারে, কর্মক্ষেত্রে প্রচণ্ড গরমে গর্ভবতী নারীদের ঝুঁকির পরিমাণ আগের ধারণার চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। 

গবেষকেরা বলছেন, গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি কেবল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ুর দেশের নারীদেরই নয়, যুক্তরাজ্যের মতো শীতপ্রধান দেশগুলোতেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিকভাবে গর্ভবতী কর্মজীবী নারীদের জন্য স্বাস্থ্য উপদেশ জারির পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা। 

ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তামিলনাড়ুর ৮০০ গর্ভবতী নারী এই গবেষণায় অংশ নেন। চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (এসআরআইএইচইআর) পাবলিক হেলথ ফ্যাকাল্টি ২০১৭ সালে এ গবেষণার উদ্যোগ নেয়। 

গবেষণায় অংশ নেওয়া অর্ধেক নারীই এমনসব কাজ করেন যেখানে তাঁদের উচ্চমাত্রার উষ্ণ পরিবেশে দীর্ঘ সময় থাকতে হয়। যেমন—কৃষি, ইটভাটা এবং লবণের মাঠ। বাকিরা স্কুল ও হাসপাতালের মতো তুলনামূলক ঠান্ডা পরিবেশে কাজ করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যেও অনেকে উচ্চ তাপমাত্রায় কাজ করে থাকেন। 

মানবশরীরের জন্য সর্বোচ্চ সহনীয় তাপমাত্রার কোনো সর্বজনীন মাপকাঠি নেই। গবেষণার সঙ্গে জড়িত এক বিজ্ঞানী অধ্যাপক জেন হার্স্ট বলেন, ‘ (তাপের প্রভাব) আপনি যেটিতে অভ্যস্ত এবং আপনার দেহ যেটিতে অভ্যস্ত এর সঙ্গে সম্পর্কিত।’ 

তামিলনাড়ুর একটি শহর তিরুবন্নমলাইয়ে শসার খেতে কাজ করেন সুমতী। জরিপে অংশগ্রহণকারী গর্ভবতী নারীদের মধ্যে তিনি একজন। সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় সুমতি জানান, তিনি দুই ঘণ্টা ধরে খেত থেকে শসা তুলছেন। হাতের মোটা দস্তানা খুলে আঙুলের ডগায় হাত বুলিয়ে তিনি বলেন, ‘এই গরমে আমার হাত জ্বলে।’ শসার ছোট ছোট কাঁটা থেকে ত্বক রক্ষা করতে দস্তানা পরেন তিনি। তবে গরমে হাত ঘেমে একাকার হয়ে যায়, অত্যন্ত অস্বস্তি লাগে। 

অথচ গ্রীষ্মকাল তখনো সে অর্থে শুরুই হয়নি। এরপরও তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কোঠা ছাড়িয়ে গেছে। আর আর্দ্রতার কারণে গরম অনুভূত হচ্ছেও বেশি। সুমতি বলেন, ‘আমার মুখও জ্বালা করে।’ 

স্কুলে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করেই মূলত জীবিকা নির্বাহ করেন সুমতি। এরপর শসার খেতে কাজ করতে যান। স্কুলের রান্না করে দৈনিক মাত্র ২০০ রুপি পান তিনি। এ দিয়ে জীবনযাপনের ব্যয় মেটানো যায় না। 

গবেষণায় অংশ নেওয়া নারীদের মধ্যে সুমতির গর্ভের সন্তান সবার আগে মারা গেছে। তিনি বলেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এত গরমে কাজ করে আমার অনেক ক্লান্ত লাগত।’ একদিন স্বামীর দুপুরের খাবার দিয়ে আসার সময় শরীর খারাপ করে। ওই সন্ধ্যায় চিকিৎসকের কাছে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, গর্ভে ১২ সপ্তাহের ভ্রূণটি আর জীবিত নেই! 

সুমতির মতো পরিবেশে যেসব নারী কাজ করেন তাঁদের তুলনামূলক ঠান্ডা পরিবেশে কাজ করা নারীদের চেয়ে মৃত সন্তান জন্ম দেওয়া ও গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ। 

যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রসূতি বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা দ্য জর্জ ইনস্টিটিউটের গ্লোবাল উইমেনস হেলথের অধ্যাপক হার্স্ট বলেন, ‘গবেষণায় অংশ নেওয়া ভারতীয় নারীরা প্রকৃতপক্ষেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছেন।’ 

চলতি শতকের শেষ নাগাদ পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রাক–শিল্পযুগের চেয়ে প্রায় তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গর্ভবতী নারীদের বিপজ্জনক পরিণতির মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি মানুষের অস্তিত্বের হুমকি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। 

পূর্ববর্তী গবেষণায় দীর্ঘ দাবদাহের কারণে অপরিণত শিশুর জন্ম এবং মৃত শিশুর জন্মের ঝুঁকি প্রায় ১৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ গবেষণাগুলো সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে পরিচালনা করা হয়েছিল। 

ভারতের এ গবেষণার ফলাফল বেশ উদ্বেগজনক বলে জানান অধ্যাপক হার্স্ট। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের গ্রীষ্মকাল আগের চেয়ে আরও উষ্ণ হয়ে উঠছে, যদিও সেখানে ভারতের মতো গরম পড়ে না। যুক্তরাজ্যের মতো অন্যান্য শীতপ্রধান অঞ্চলে অনেক কম তাপমাত্রা বৃদ্ধিতেও গর্ভাবস্থার ওপর এই প্রতিকূল প্রভাবগুলো দেখা যাচ্ছে।’ 

প্রচণ্ড গরমে কর্মজীবী নারীদের জন্য এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আন্তর্জাতিক পরামর্শ দেওয়া হয়নি। 

এদিকে এসআরআইএইচইআর–এর জনস্বাস্থ্য অনুষদের অধ্যাপক বিদ্যা বেণু গোপাল, যিনি ভারতে গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন, বলেন, গরমে কাজ করা গর্ভবতী নারীরা নিজেকে রক্ষা করতে কিছু উপায় অবলম্বন করতে পারেন: 

  • গরমে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা এড়িয়ে চলা। 
  • গরমের দিনে বাইরে কাজ করলে নিয়মিত বিরতিতে ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া। 
  • গরমের দিনে উষ্ণতম অংশে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকা। 
  • নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পানি পান করা। 

ভারত সরকারের অর্থায়নে এ গবেষণায় তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ু প্রবাহ ও মানবদেহে তাপমাত্রার প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। 

তাপ কীভাবে এবং কেন গর্ভবতী নারীদের এবং গর্ভে বেড়ে ওঠা ভ্রূণের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে তা এখনো স্পষ্ট করে জানা যায়নি। আগের একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, উচ্চ তাপমাত্রা ভ্রূণের হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দিতে পারে এবং নাড়ির মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দিতে পারে। 

মায়ের দেহের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে, সেটি প্রশমিত করতে ভ্রূণ থেকে মায়ের শরীরে রক্ত ফিরে আসতে পারে। 

সাবেক নার্স এবং এসআরআইএইচইআরের গবেষণার একজন গবেষক রেখা শানমুগামের ধারণা, এ ক্ষেত্রে শৌচাগারের অভাবও প্রভাব ফেলে থাকতে পারে। 

আগের এক গবেষণায় দেখা গেছে, অনেকে খোলামাঠে প্রাকৃতিক কাজ সারতে চান না বলে পানি কম খান। এতে তাঁদের নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তিনি বলেন, ‘ঝোপঝাড়ে নারীরা পোকামাকড় ও সাপের ভয় পান বা পুরুষেরা উঁকি দিতে পারে এ আশঙ্কা করেন। বাইরে নিরাপদ বোধ না করায় তাঁরা সারা দিন প্রস্রাব–পায়খানার বেগ আটকে রেখে বাড়িতে গিয়ে শৌচাগার ব্যবহার করেন।’ 

তামিলনাড়ুর জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মহাপরিচালক ড. টিএস সেলবাবিনয়াগাম বলেন, এই গবেষণার ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে গর্ভবতী নারীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। তবে সম্ভবত আমাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার বিকল্পগুলোও দেখতে হবে।’ 

গর্ভাবস্থা ১২ সপ্তাহে পৌঁছালে কিছুটা আর্থিক চাপ লাঘব করতে রাজ্য সরকার দরিদ্র নারীদের ১৮ হাজার রুপি ভাতা দেয়। এই স্বল্প বেতনের কর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি মূলত কর্মক্ষেত্রের কর্তাদের ওপর নির্ভর করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৭
আবহাওয়া অধিপ্তরের কার্যালয়, আগারগাঁও। ফাইল ছবি
আবহাওয়া অধিপ্তরের কার্যালয়, আগারগাঁও। ফাইল ছবি

দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। তবে এর প্রভাবে আজ দেশের কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই। অবশ্য ঢাকার আকাশ আংশিক মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে।

আজ বুধবার সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থেকে আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। সারা দিনের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৩ শতাংশ। গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় কোনো বৃষ্টি হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।

গতকালের পূর্বাভাসে আজকের বৃষ্টি সম্পর্কে জানানো হয়েছিল, চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ না-ও নিতে পারে। এটি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ভারতের তামিলনাড়ুর দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। তবে সারা দেশে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রাও খুব একটা কমবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০০
ঢাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, আবহাওয়া থাকবে শুষ্ক

কার্তিক মাস আসার পর সারা দেশে বৃষ্টি প্রায় হচ্ছেই না। এর সঙ্গে বেড়েছে গরম। আজ মঙ্গলবারও রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা আকাশ থাকতে পারে। সারা দিনের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় কোনো বৃষ্টি হয়নি।

এ ছাড়া সারা দেশে আজকের আবহাওয়াও প্রায় একই রকম শুষ্ক থাকতে পারে। তবে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে কিছুটা বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরে আজকের সারা দেশের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আবহাওয়া আংশিক মেঘলা আকাশসহ প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর, দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে আছে। বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সোমবার সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৫২। গতকাল রোববার সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটেও বায়ুমান একই ছিল।

বায়ুদূষণের শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় আজ ৭ম স্থানে রয়েছে ঢাকা। গতকালও একই অবস্থানে ছিল এই রাজধানী শহরটি।

আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির বায়ুমান আজ ৩০৩, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো— পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের মুম্বাই, উজবেকিস্তানের তাসখন্দ ও ভারতের কলকাতা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২৯৭, ১৭৭, ১৫৮ ও ১৫৬।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ, গতিপথ কোন দিকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১৪
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ,
গতিপথ কোন দিকে

বর্ষাকাল বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতিতে চলছে এখন হেমন্তকাল। কিন্তু আবহাওয়ার আচরণ অনেকটাই গ্রীষ্মকালের মতো। কয়েক দিন ধরে সকালে সূর্যের তাপ কিছুটা কম থাকলেও বেলা গড়িয়ে দুপুর থেকে বিকেলের আগপর্যন্ত এর তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এটি শক্তিশালী হয়ে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপে।

নিম্নচাপ সম্পর্কে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ২১ অক্টোবর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তীতে এটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, মধ্য অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর বৃষ্টি কমে গেছে। লঘুচাপ বা নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের আমেজ পড়বে সারা দেশে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজ সোমবার সকাল ৭টার পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল রোববার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫, আর সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টাঙ্গাইলে ৩৫ দশমিক ৭ সেলসিয়াস। সারা দেশে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

কার্তিক মাসে এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক কিনা জানতে চাইলে আজ সোমবার সকালে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন যে ধরনের গরম পড়ছে সেটি বৃষ্টি কমে যাওয়ার জন্য হয়েছে। সাধারণত অক্টোবর মাসের এই সময় মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর বৃষ্টি কম হয়। তখন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়।

লঘুচাপ বা নিম্নচাপ সৃষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির আগে সাগরে বা উপকূলীয় এলাকায় অনেক সময় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়। তবে বর্তমানে যে গরম পড়েছে, এর সঙ্গে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়া না-হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আপাতত মনে হচ্ছে কালকের (২১ অক্টোবর) মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি পরে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে যেতে পারে। তবে লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার আগপর্যন্ত এর গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। আর নিম্নচাপের প্রভাব কেটে গেলে দেশের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমে শীতের আমেজ পড়বে।

হাফিজুর রহমান আরও বলেন, সূর্যের দক্ষিণায়ন (দক্ষিণ দিকে হেলে পড়া) এখনো পুরোপুরি হয়নি। এই দক্ষিণায়ন হলে দিনের ব্যাপ্তি আরও কমবে, তাপমাত্রা তখন কমে শীতও বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত